ইসরায়েলের কাছে ৭৪০ কোটি ডলারের অস্ত্র–সরঞ্জাম বিক্রিতে ট্রাম্প প্রশাসনের অনুমোদন
Published: 8th, February 2025 GMT
ইসরায়েলের কাছে প্রায় ৭৪০ কোটি ডলারের অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম বিক্রির প্রস্তাবে গতকাল শুক্রবার অনুমোদন দিয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। যদিও এ বিক্রির বিষয়ে আরও তথ্য না পাওয়া পর্যন্ত তা স্থগিত রাখতে ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতারা অনুরোধ জানিয়েছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন দেওয়া অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম বিক্রির প্যাকেজে ৬৭৫ কোটি ডলারের গোলাবারুদ, গাইডেন্স ও ফিউজ বিক্রির কথা রয়েছে। বোয়িংসহ কয়েকটি বড় মার্কিন ঠিকাদারের এসব সরঞ্জাম সরবরাহ করার কথা।
আরও পড়ুনগাজাকে দখলে নেওয়ার ট্রাম্পের পরিকল্পনায় কী আছে০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫এ ছাড়া প্যাকেজের আওতায় ইসরায়েলের কাছে ৬৬ কোটি ডলারের হেলফায়ার ক্ষেপণাস্ত্র বিক্রির কথা রয়েছে। এসব ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করবে লকহেড মার্টিনসহ কয়েকটি মার্কিন প্রতিষ্ঠান।
এমন একসময় এ ঘোষণা দেওয়া হলো, যখন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ওয়াশিংটন সফর শেষ করলেন। সফরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, তাঁর প্রশাসনের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ও মার্কিন কংগ্রেসের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন নেতানিয়াহু।
নিউইয়র্কের ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসসদস্য ও প্রতিনিধি পরিষদের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটির সদস্য গ্রেগরি মেকস বলেন, অস্ত্র বিক্রি–সংক্রান্ত যেকোনো বড় প্রকল্পের অনুমোদনের আগে কংগ্রেসে দীর্ঘ পর্যালোচনার যে নজির ছিল, সেটা ভঙ্গ করার সিদ্ধান্তে আমি নিন্দা জানিয়েছি।
আরও পড়ুনগাজায় দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি আলোচনা ঘিরে অনিশ্চয়তা০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫এ আইনপ্রণেতার মতে, ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রির প্রস্তাব অনুমোদন করার প্রক্রিয়ায় কংগ্রেসকে যথাযথ সম্মান জানানো হয়নি।
যদিও অনুরোধ করার পরও বিষয়টি নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি হোয়াইট হাউস।
আরও পড়ুনগাজার মানুষদের উৎখাতে ট্রাম্পের পরিকল্পনার মধ্যে অন্যায় দেখছেন না নেতানিয়াহু০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫এ বছরের জানুয়ারিতে সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন কংগ্রেসকে ইসরায়েলের কাছে ৮০০ কোটি ডলারের অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম বিক্রির প্রকল্পের কথা জানায়। ওই সময় দুজন মার্কিন কর্মকর্তা বিষয়টি জানিয়েছিলেন। দীর্ঘদিনের রীতি অনুযায়ী, এ নিয়ে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত ঘোষণার আগে বিক্রির বিষয় পর্যালোচনা করা ও এ ব্যাপারে আরও তথ্য চাওয়ার সুযোগ পায় মার্কিন কংগ্রেস ও সিনেটের বৈদেশিক সম্পর্কবিষয়ক কমিটি।
এর মধ্যেই গত ২০ জানুয়ারি নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
আরও পড়ুনবাসিন্দাদের অন্য দেশে পাঠিয়ে গাজা খালি করতে চান ট্রাম্প২৬ জানুয়ারি ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র ক ছ সরঞ জ ম ব ক র
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশের কৃষিখাতে ৫ লাখ ডলার বিনিয়োগ করবে পাইওনিয়ার ফ্যাসিলিটি
প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত প্রভাব ফেলে এমন উদ্যোগে অর্থায়নকারী আন্তর্জাতিক তহবিল ‘পাইওনিয়ার ফ্যাসিলিটি’। কৃষকদের সহায়তা করতে দেশীয় প্রতিষ্ঠান আই-ফার্মারকে পাঁচ লাখ ডলারের এই সহায়তা দিচ্ছে তহবিলটি।
সংশ্লিষ্টরা জানান, নেক্সাস ফর ডেভেলপমেন্টের ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত এই তহবিলের অর্থায়ন আই-ফার্মারের মাধ্যমে দেশের ক্ষুদ্র কৃষকদের সরাসরি উপকৃত করবে। এই তহবিল কৃষকদের কাছ থেকে ন্যায্যমূল্যে কৃষিপণ্য সংগ্রহ ও উৎপাদনকারীদের কাছ থেকে মানসম্পন্ন কৃষি উপকরণ সময়মতো সরবরাহ নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে।
এই বিনিয়োগের মাধ্যমে পাইওনিয়ার ফ্যাসিলিটি ২০২৪ সালে তাদের আঞ্চলিক কার্যক্রমে বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্ত করার পর প্রথমবারের মতো এই খাতে প্রবেশ করল। ক্ষুদ্র কৃষকদের অর্থনৈতিকভাবে সক্ষম করে তুলছে আই-ফার্মার। প্রতিষ্ঠানটি কৃষকদের উচ্চমানের কৃষি উপকরণ, আর্থিক সহায়তা, কৃষি পরামর্শ, বিমা সুবিধা ও ন্যায্য বাজার সংযোগ নিশ্চিত করছে। কৃষক, সরবরাহকারী ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে আই-ফার্মার উৎপাদন বাড়াতে, আয় বাড়াতে ও টেকসই কৃষি চর্চা প্রসারে ভূমিকা রাখছে।
নেক্সাস ফর ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক লরা আলসেনাস বলেন, বাংলাদেশে ক্ষুদ্র কৃষকেরা এখনও সহজ শর্তে অর্থ ও মানসম্মত কৃষি উপকরণ পাওয়ার জন্য নানারকম বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন। আইফার্মারের উদ্ভাবনী মডেল কৃষি সরবরাহ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন এনেছে এবং কৃষকদের জন্য অর্থনৈতিক সম্ভাবনা তৈরি করছে। পাইওনিয়ার ফ্যাসিলিটির এই বিনিয়োগের ঘোষণা তাদের প্রভাব আরও বিস্তৃত করতে এবং বাংলাদেশে আরও টেকসই ও স্থিতিশীল খাদ্য ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।
আইফার্মারের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহাদ ইফাজ বলেন, পাইওনিয়ার ফ্যাসিলিটির এই অর্থায়নের ঘোষণা আমাদের আরও বেশি কৃষককে সহায়তা দিতে সক্ষম করবে। এর মাধ্যমে আমরা আরও ভালো মানের কৃষি উপকরণ, সহজতর আর্থিক সহায়তা ও শক্তিশালী সাপ্লাই চেইন নিশ্চিত করতে পারবো, যা সরাসরি কৃষকের আয় ও জীবনমান উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।
পাইওনিয়ার ফ্যাসিলিটির মাধ্যমে নেক্সাস ফর ডেভেলপমেন্ট জলবায়ু পরিবর্তন, লিঙ্গ সমতা ও দারিদ্র্য বিমোচনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কাজ করা প্রভাবশালী উদ্যোগগুলোকে সহায়তা করে আসছে। সিঙ্গাপুরে নিবন্ধিত এই তহবিলটি, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও বাংলাদেশে জলবায়ুবিষয়ক উদ্যোগগুলোর জন্য এই তহবিল আর্থিক সাহায্য প্রদান করে থাকে। এখন পর্যন্ত এই তহবিল থেকে ৩ দশমিক ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি অর্থ বিতরণ করা হয়েছে।