শস্যভান্ডারখ্যাত চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার গুমাই বিলে এখন ধান চাষের মৌসুম। বোরো রোপণের জন্য ব্যস্ত কৃষক। চলছে জমি প্রস্তুতের কাজ। পাওয়ার টিলার দিয়ে মাঠে নামতেই চারপাশে ঝাঁক বেঁধে ঘিরে ধরছে সাদা বক। মাটির ভেতর থেকে উঠে আসা পোকামাকড় খেয়ে ক্ষুধা নিবারণ করছে এই পাখি। বিলজুড়ে বকের ওড়াউড়ির দৃশ্য কঠোর পরিশ্রমের মাঝে কৃষকের মনে প্রশান্তি দেয়।
রাঙ্গুনিয়ার চন্দ্রঘোনা-কদমতলী ইউনিয়নের আধুরপাড়া অংশে গুমাই বিলের অবস্থান। কথিত আছে, এই বিলে উৎপাদিত ফসল দেশের মানুষের তিন দিনের অন্ন জোগান দিতে পারবে। বর্ষায় সেখানে থইথই পানি থাকে। অন্য সময়ে চলে আবাদ। এখন বোরো ধান চাষের মৌসুম। বিলে পানি সেচে মাটি প্রস্তুত করতে চলছে জোর প্রস্তুতি। এ সময়ে বিলে আসে হাজারও বক। খাদ্য আহরণের জন্য তারা ঝাঁক বেঁধে উড়ে বেড়ায়।
স্থানীয়রা বলছেন, গেল বছরের চেয়ে এবার বেশি বক উড়তে দেখা যাচ্ছে। শিকারিরা সুযোগ খুঁজলেও এলাকাবাসীর সচেতনতার কারণে শিকার করতে পারছে না। এতে বাধাহীন নিরাপদে উড়ছে বকের দল।
চন্দ্রঘোনার পাঠানগাড়া গ্রামের কৃষক নুরুল ইসলাম বলেন, গুমাই বিলে এক সময় ঝিল ছিল। তখন বিলজুড়ে ছিল মাছ আর মাছ। ওড়াউড়ি করত নানা প্রজাতির পাখি। এখন এগুলো শুধুই স্মৃতি।
চন্দ্রঘোনার ছুফিপাড়া গ্রামের মো.
উপজেলা সহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা দীন মোহাম্মদ জানান, বাংলাদেশে ১৮ প্রজাতির বক রয়েছে। এসব পাখি প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষাসহ নানান ভূমিকা রাখছে। মাছ ছাড়াও জলজ পোকামাকড় খেয়ে ফসলের উপকার করে থাকে বক। এ পাখির খাদ্য ও নিরাপত্তার অভাব রয়েছে। পরিবেশ রক্ষার জন্য বক রক্ষা জরুরি।
রাঙ্গুনিয়ার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা উত্তম কুমার বলেন, বিলে পানি পড়ার সঙ্গে সঙ্গে সাদা বক দল বেঁধে আসতে শুরু করেছে। বকের ওড়াউড়ি দেখতে বিলে পাখিপ্রেমীরা ভিড় করছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস জানান, চলতি বোরো মৌসুমে জমি প্রস্তুতের সময় সাদা বক দলে দলে পোকামাকড় খাওয়ার জন্য বিলে বিচরণ করছে। এই পাখি চাষাবাদের জন্য খুবই উপকারী। তাই সবাইকে সচেতন হয়ে বক রক্ষা করতে হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদুল হাসান বলেন, সাদা বক আমাদের এলাকায় অতিথি হয়ে আসে। এই পাখি শিকার করা যাবে না। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে অবৈধভাবে পাখি শিকার করলে সাজার বিধান রয়েছে। যারা আইন অমান্য করে পাখি শিকার করবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র জন য ব শ ক র কর উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
বিপিএলে বিদেশিদের পারিশ্রমিকের দায়িত্ব আগামীতে বিসিবির
বিপিএলের ২০২৫ সালের আসর শেষ হয়েছে। চট্টগ্রাম কিংসকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ফরচুন বরিশাল। এবারের টুর্নামেন্টে ভালো রান হয়েছে। যে কারণে গ্যালারিতে ছিল উপচে পড়া ভীড়। তবে কিছু বিতর্কিত বিষয়ও ছিল। যেমন দুটি ফ্র্যাঞ্চাইজি দেশি ও বিদেশি ক্রিকেটারদের ঠিক মতো পারিশ্রমিক দেয়নি।
দলের খেলা শেষ হওয়ার পর ক্রিকেটারদের দেশে ফেরার যথাযথ ব্যবস্থা করা হয়নি। এছাড়া ক্রিকেটারদের নিয়ে অনাকাঙ্খিত মন্তব্যও দেখা গেছে। বিষয়টি নিয়ে বিসিবি কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামীতে বিপিএলে অংশ নেওয়া বিদেশি ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক, ম্যাচ ফি, হোটেল ব্যবস্থাপনা ও টুর্নামেন্ট শেষে দেশে ফেরার ব্যবস্থা বিসিবি করবে।
বিসিবি এক বার্তায় জানিয়েছে, বিসিবি বিপিএলে অংশ নেওয়া বিদেশিদের ব্যবস্থাপনা নিজেরাই করবে। বিপিএল ড্রাফটে থাকা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারদের সঙ্গে বিসিবি নিজেরাই যোগাযোগ করবে। তাদের ম্যাচ ফি’র নিশ্চয়তা দেবে এবং সময় মতো পারিশ্রমিক পরিশোধের বিষয়টি নিজেরাই দায়িত্ব নিয়ে প্রদাণ করবে।
বিসিবি বিদেশি ক্রিকেটারদের থাকা-খাওয়ার বিষয়টি নিজেরাই দেখভাল করবে। টুর্নামেন্ট শেষে যাতে তারা ঠিকঠাক দেশে ফিরে যেতে পারে সেই ব্যবস্থা করবে বোর্ড। বিসিবি ফ্র্যাঞ্চাইজির জন্য আর্থিক স্বচ্ছতার বিষয়ে কঠোর হবে, খেলোয়াড়দের সেফগার্ডিং ও পারিশ্রমিকের পদ্ধতি কঠোর করবে।
বিসিবির বার্তায় বোর্ড সভাপতি ফারুক আহমেদ বলেছেন, ‘বিসিবির উদ্যোগ প্রমাণ করে বিপিএলের সততা নিশ্চিত করতে এবং দেশি-বিদেশি ক্রিকেটারদের পেশাদার অভিজ্ঞতা দিতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিপিএলের পরিচালনা ও আর্থিক বিষয় শক্তিশালী করতে বোর্ড সকল স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে সর্বদা যুক্ত থাকবে।’