বসতঘরে হামলা ও পিটিয়ে নারী-শিশুসহ চারজনকে আহত করার প্রতিবাদে গাজীপুরের কাপাসিয়ায় সংবাদ সম্মেলন করেছে একটি পরিবার। 

শুক্রবার বিকেলে সিংহশ্রী ইউনিয়নের নয়ানগর গ্রামের বাড়িতে আয়োজন করা হয় সংবাদ সম্মেলনের।

ভুক্তভোগী রফিকুল ইসলামের মেয়ে মোসা. তাহমিনা লিখিত বক্তব্যে বলেন, প্রতিবেশী মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে মো.

নাইম দুই বছর আগে থেকে তাদের দুই বিঘা ধানক্ষেত দখলের পাঁয়তারা শুরু করেন। এ বিষয়ে সিংহশ্রী ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ দেন।

মো. নাইমের দাবি, জমিসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। প্রতিপক্ষের লোকজন থানা ও আদালতে একাধিক মামলা করেছে।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

লক্ষ্মীপুর বেড়িবাঁধে আশ্রিতরা উচ্ছেদ আতঙ্কে, পুনর্বাসনের দাবি

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মজুচৌধুরীর হাটের দক্ষিণে বুড়ির ঘাট পর্যন্ত যে বেড়িবাঁধটি রয়েছে, তার দুইপাশে অন্তত ৫ শতাধিক বসতঘর রয়েছে। বসবাসকৃত বাসিন্দাদের সংখ্যা কয়েক হাজার। নদীর ভাঙার কবলে পড়ে ভোলার জেলার বিভিন্ন অঞ্চলের ভূমিহীন লোকজন এখানে এসে বসতি গড়েছেন। বাসিন্দাদের বেশিরভাগই নিম্নআয়ের। নদীতে মাছ শিকার এবং অন্যের জমিতে কৃষিকাজ কিংবা দিনমজুরি দিয়ে চলে তাদের সংসার। ফলে নিজস্ব জমি কেনার মতো সাধ্য নেই এসব পরিবারের।
 
বাঁধের সংস্কার কাজ চলায় এসব আশ্রিত পরিবার এখন উচ্ছেদ আতঙ্কে ভূগছে। পুনর্বাসনের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে বেড়িবাঁধের পাশে বসবাসরত এই ভূমিহীন বাসিন্দারা। 

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করে তারা। পরে জেলা প্রশাসকের কাছে একটি স্মারকলিপি দেয়। 

বেড়িবাঁধের মজুচৌধুরীর হাটের উত্তর অংশে কাজ চলমান রয়েছে, কিন্তু দক্ষিণ অংশের বাসিন্দারা উচ্ছেদ আতঙ্কে বাঁধের সংস্কার কাজে আপত্তি জানিয়েছেন। সংস্কারের আগে তারা পুনর্বাসনের দাবি জানিয়ে আসছেন।

মানববন্ধনকারীরা জানান, তাদের নিজস্ব কোন জায়গা নেই। কবরের জায়গা পর্যন্ত নেই। বেড়িবাঁধের পাশে ঘর করে তারা বসবাস করছেন। নদীতে মাছ শিকার আর অন্যের জমিতে কৃষিকাজ করে সংসার চালাচ্ছেন।

তাদের দাবি, বাঁধ সংস্কারের কারণে তাদের উচ্ছেদ করে দিলে তাদের আর কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। তাই পুনর্বাসনের আগে তারা বাঁধের কাজ শুরু করতে দেবে না। 

মানববন্ধনে আসা ভূমিহীন বৃদ্ধ এবং বিধবা আফিয়া খাতুন জানান, মজুচৌধুরীর হাটের দক্ষিণে নিমতলা নামক এলাকায় দুটি বসতঘর রয়েছে। ৮ সদস্য নিয়ে তারা ওই দুইঘরে বসবাস করেন। বাঁধ সংস্কারের কারণে তাদের দুটি বসতঘরও উচ্ছেদের মধ্যে পড়বে। কিন্তু কোথায় যাবেন তিনি, সে দুঃচিন্তা ভর করছে তার উপর। 

আফিয়া খাতুন আরও জানান, তাদের আদি নিবাস ভোলা জেলাতে। অর্ধশত বছর আগে মেঘনা নদীর ভাঙনের পর পরিবারের সাথে চলে আসেন লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরীর হাট এলাকায়। প্রায় ৩০ বছর আগে মজুচৌধুরীর হাটের দক্ষিণে বেড়িবাঁধে ঢালে অস্থায়ী ঘর তৈরি করে পরিবার নিয়ে বসবাস শুরু করেন। পূর্বে তার বাবা-মার সাথে ছিলেন, এখানেই তার বিয়ে হয়েছে। স্বামী-সন্তানদের নিয়ে থাকতেন। স্বামী মারা গেছে, এখন সন্তান এবং নাতি-নাতনীদের নিয়ে বসবাস করছেন। নিম্ন আয়ের পরিবার হওয়ায় এতো বছরেরও নিজস্ব জমি কেনার সাধ্য হয়নি। 

মানববন্ধনে আসা রহিমা বেগম বলেন, “আমার বসবাস ওই বেড়িবাঁধের পাশেই। ভোলাতে আমাদের বসতি ছিল, সাতবার ভাঙার কবলে পড়ে। জন্মের পর থেকে এখানেই আছি। আমাদের পরিবারের মোট পাঁচটি ঘর। বাঁধ সংস্কার হলে তাদের ঘরগুলো সরিয়ে নিতে হবে।” 

৬০ বছরের বৃদ্ধ তৈয়বা বেগম জানান, তার পরিবারের ৫ সদস্য। ঘরে বিবাহ উপযুক্ত মেয়ে রয়েছে। তাকে নিয়ে রয়েছেন বেকাদায়। এরই মধ্যে ঘর ভেঙে চলে যেতে হবে। তিনিও এখন চোখেমুখে অন্ধকার দেখছেন। 

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার বলেন, “পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে কথা বলে ভূমিহীনদের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।”

ঢাকা/লিটন/টিপু

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • লক্ষ্মীপুর বেড়িবাঁধে আশ্রিতরা উচ্ছেদ আতঙ্কে, পুনর্বাসনের দাবি