ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড কোচ রুবেন আমোরিমের দাবি, তাঁর দলের জয়ের সঙ্গে ‘ফার্গি টাইমের কোনো সম্পর্ক নেই।’ লেস্টার সিটির কোচ রুদ ফন নিস্টলরয়ের মূল কথাও অবশ্য এমনই, ‘আমরা ফার্গি টাইমে হারিনি’। তবে পরের কথাটাই আসল, ‘অফসাইড টাইমে হেরেছি।’

স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসন ইউনাইটেডের কোচ থাকতে ‘ফার্গি টাইম’ কথাটার জন্ম হয়েছিল সমর্থকদের মুখে। ম্যাচের একদম শেষ দিকে করা গোলে জয় তুলে নেওয়াটা ফার্গির সময়ে প্রায় অভ্যাসে পরিণত করেছিল ইউনাইটেড। নিস্টলরয় সেই সময়ের ভেতর দিয়ে উঠে আসাদের একজন। এই ডাচ ফুটবলার ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত খেলেছেন ইউনাইটেডে। আর ইউনাইটেডের বর্তমান কোচ আমোরিম তখন পর্তুগালের বয়সভিত্তিক দলের খেলোয়াড়।

কাল রাতে এফএ কাপের চতুর্থ রাউন্ডের ম্যাচে লেস্টারকে ২–১ গোলে হারিয়েছে ইউনাইটেড। ম্যাচে ইউনাইটেডের জয়সূচক গোলটি এসেছে ৯৩তম মিনিটে। এরপর দলটির কোচের দাবি, ম্যাচের শেষ মুহূর্ত পর্যন্তও জয়ে আত্মবিশ্বাসী ছিল দল, তাই জিতেছে। এর সঙ্গে ফার্গি টাইম এর সম্পর্ক নেই।

আরও পড়ুন‘জীবনের সঙ্গী’কে বিদায়ী বার্তা রোনালদোর২১ ঘণ্টা আগে

কিন্তু প্রতিপক্ষ দলের কোচ নিস্টলরয় ইউনাইটেডের জয়টাই মানতে পারছেন না। তাঁর কাছে যুক্তিও আছে। অফসাইড হয়েও ইউনাইটেডের গোলটি বৈধতা পেয়েছে, আর সেই গোলে হেরেই বাদ পড়েছে তাঁর দল লেস্টার। শুধু তা–ই নয়, কোচ হিসেবে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে পণ্ড হয়েছে তাঁর ফেরাও। ডাচ এই কোচ কেন ছেড়ে কথা বলবেন? সে কারণেই ‘অফসাইড টাইম’ এর কৌতুক।

অবশ্য কৌতুক চলছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও। কেউ কেউ বলছেন, ‘ফুটবল ইতিহাসের সর্বোচ্চ অফসাইড’ থেকে গোল করেছেন হ্যারি ম্যাগুয়ার।

পঞ্চম রাউন্ডে ওঠার ম্যাচটিতে লেস্টারই এগিয়ে ছিল। ৪২ মিনিটে ইউনাইটেড গোলকিপার আন্দ্রে ওনানার সেভের পর ফিরতি বলে হেডে গোল করেন লেস্টারের ফরোয়ার্ড ববি দে কর্ডোভা–রেইড। ৬৮ মিনিটে ইউনাইটেডও সমতাসূচক গোল করে ফিরতি বলে। রাসমুস হয়লুন্দের শট লেস্টারের গোলকিপার ম্যাডস হারমানসেন রুখে দেওয়ার পর ফিরতি বল গোল করেন ইউনাইটেড ফরোয়ার্ড জির্কজে।

যোগ করা সময়ে ফ্রি কিক পেয়েছিল ইউনাইটেড। ব্রুনো ফার্নান্দেজের ফ্রি কিক থেকে হেডে গোল করার সময় অফসাইড ছিলেন ম্যাগুয়ার। কিন্তু লাইন্সম্যানের চোখ এড়িয়ে যায় তা। ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি (ভিএআর) প্রযুক্তিও এফএ কাপের এ পর্যায়ে ব্যবহার করা হয় না। গত ডিসেম্বরে ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এফএ) জানিয়েছিল, এফএ কাপে পঞ্চম রাউন্ডের আগপর্যন্ত ভিএআর প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে না।

আরও পড়ুনদাপুটে জয়ে ফাইনালে উঠেও খুশি নন লিভারপুল অধিনায়ক০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সিদ্ধান্তটি তাই মাঠের অফিশিয়ালদের নিতে হতো। অবিশ্বাস্য বিষয়, শুধু ম্যাগুয়ার নয়, ইউনাইটেডের মোট চারজন তখন অফসাইড ছিলেন, যেটার ছবি পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এসেছে। কিন্তু মাঠে অফিশিয়ালদের কেউ অফসাইডের বাঁশি বাজাননি। যদিও ইউনাইটেডের সাবেক মিডফিল্ডার ও স্কাই স্পোর্টসের ফুটবল–পণ্ডিত রয় কিনের দাবি, লাইন্সম্যানের না দেখার কোনো কারণই থাকতে পারে না। আইটিভিকে বলেছেন, ‘লাইন্সম্যানকে এটা দেখতেই হবে। ইউনাইটেড যেন জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে!’

ইউনাইটেড কোচ আমোরিমও ম্যাচ শেষে স্বীকার করেছেন, ভিএআর প্রযুক্তি থাকলে গোলটি হতো না, ‘ভিএআরে এটা গোল নয়। খেলায় ন্যায্যতার জন্যই ভিএআর থাকা গুরুত্বপূর্ণ। অফসাইড খেলায় হার মেনে নেওয়া কঠিন। তবে কিছুটা সৌভাগ্য আমাদেরও প্রাপ্য।’

খটকাটা হলো, আমোরিম খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাস ধরে রাখার কথাও বলেছেন। সেটা থাকলে অবশ্য কেউ সৌভাগ্যের পরশ পাওয়ার কথা ভাবে না। সে যা–ই হোক, আইটিভিকে আমোরিম বলেছেন, ‘আমাদের শেষ পর্যন্ত বিশ্বাস রাখতে হয়েছে, তবে এই ম্যাচের সঙ্গে ফার্গি টাইমের কোনো সম্পর্ক নেই।’

প্রথমার্ধে আমোরিমের দল লেস্টারের পোস্টে কোনো শট রাখতে পারেনি। এ মৌসুমে যা তৃতীয়বার দেখা গেল। শিষ্যদের খেলায় অসন্তোষের কথাও অবশ্য বলেছেন আমোরিম।

লেস্টার কোচ নিস্টলরয় হারের পর কোনো রাখঢাক রেখে সরাসরি বলেছেন, ‘ফার্গি টাইম নয়, আমরা অফসাইড টাইমে হেরেছি। এটা পরিষ্কার যে একটি ভুল ম্যাচের ফল ঠিক করে দিয়েছে। এটার দরকার ছিল না। ভিএআরে কয়েক সেন্টিমিটার, কয়েক ইঞ্চিতেও অফসাইড হয়। আর এটায় আধমিটার, পরিষ্কার। অতিরিক্ত সময়ে যাওয়াটা আমাদের প্রাপ্য ছিল। তারপর হয়তো পেনাল্টি। এই পর্যায়ে এমন সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া কঠিন।’

এফএ কাপের পঞ্চম রাউন্ডে এবারই প্রথমবারের মতো ভিএআর প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। এ নিয়ে গত ১৬ ডিসেম্বর দেওয়া বিবৃতিতে ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এফএ) জানিয়েছিল, ‘অবকাঠামো, খরচ ও কর্মব্যাপ্তি বিচারে এফএ কাপে এর আগে ভিএআর শুধু ওয়েম্বলি ও প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচগুলোয় ব্যবহার করা হয়েছে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বল ছ ন আম র ম গ ল কর পর ক ন অবশ য ফ টবল

এছাড়াও পড়ুন:

‘ফার্গি টাইম’ নয়, ইউনাইটেডে এবার ‘অফসাইড টাইম’

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড কোচ রুবেন আমোরিমের দাবি, তাঁর দলের জয়ের সঙ্গে ‘ফার্গি টাইমের কোনো সম্পর্ক নেই।’ লেস্টার সিটির কোচ রুদ ফন নিস্টলরয়ের মূল কথাও অবশ্য এমনই, ‘আমরা ফার্গি টাইমে হারিনি’। তবে পরের কথাটাই আসল, ‘অফসাইড টাইমে হেরেছি।’

স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসন ইউনাইটেডের কোচ থাকতে ‘ফার্গি টাইম’ কথাটার জন্ম হয়েছিল সমর্থকদের মুখে। ম্যাচের একদম শেষ দিকে করা গোলে জয় তুলে নেওয়াটা ফার্গির সময়ে প্রায় অভ্যাসে পরিণত করেছিল ইউনাইটেড। নিস্টলরয় সেই সময়ের ভেতর দিয়ে উঠে আসাদের একজন। এই ডাচ ফুটবলার ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত খেলেছেন ইউনাইটেডে। আর ইউনাইটেডের বর্তমান কোচ আমোরিম তখন পর্তুগালের বয়সভিত্তিক দলের খেলোয়াড়।

কাল রাতে এফএ কাপের চতুর্থ রাউন্ডের ম্যাচে লেস্টারকে ২–১ গোলে হারিয়েছে ইউনাইটেড। ম্যাচে ইউনাইটেডের জয়সূচক গোলটি এসেছে ৯৩তম মিনিটে। এরপর দলটির কোচের দাবি, ম্যাচের শেষ মুহূর্ত পর্যন্তও জয়ে আত্মবিশ্বাসী ছিল দল, তাই জিতেছে। এর সঙ্গে ফার্গি টাইম এর সম্পর্ক নেই।

আরও পড়ুন‘জীবনের সঙ্গী’কে বিদায়ী বার্তা রোনালদোর২১ ঘণ্টা আগে

কিন্তু প্রতিপক্ষ দলের কোচ নিস্টলরয় ইউনাইটেডের জয়টাই মানতে পারছেন না। তাঁর কাছে যুক্তিও আছে। অফসাইড হয়েও ইউনাইটেডের গোলটি বৈধতা পেয়েছে, আর সেই গোলে হেরেই বাদ পড়েছে তাঁর দল লেস্টার। শুধু তা–ই নয়, কোচ হিসেবে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে পণ্ড হয়েছে তাঁর ফেরাও। ডাচ এই কোচ কেন ছেড়ে কথা বলবেন? সে কারণেই ‘অফসাইড টাইম’ এর কৌতুক।

অবশ্য কৌতুক চলছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও। কেউ কেউ বলছেন, ‘ফুটবল ইতিহাসের সর্বোচ্চ অফসাইড’ থেকে গোল করেছেন হ্যারি ম্যাগুয়ার।

পঞ্চম রাউন্ডে ওঠার ম্যাচটিতে লেস্টারই এগিয়ে ছিল। ৪২ মিনিটে ইউনাইটেড গোলকিপার আন্দ্রে ওনানার সেভের পর ফিরতি বলে হেডে গোল করেন লেস্টারের ফরোয়ার্ড ববি দে কর্ডোভা–রেইড। ৬৮ মিনিটে ইউনাইটেডও সমতাসূচক গোল করে ফিরতি বলে। রাসমুস হয়লুন্দের শট লেস্টারের গোলকিপার ম্যাডস হারমানসেন রুখে দেওয়ার পর ফিরতি বল গোল করেন ইউনাইটেড ফরোয়ার্ড জির্কজে।

যোগ করা সময়ে ফ্রি কিক পেয়েছিল ইউনাইটেড। ব্রুনো ফার্নান্দেজের ফ্রি কিক থেকে হেডে গোল করার সময় অফসাইড ছিলেন ম্যাগুয়ার। কিন্তু লাইন্সম্যানের চোখ এড়িয়ে যায় তা। ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি (ভিএআর) প্রযুক্তিও এফএ কাপের এ পর্যায়ে ব্যবহার করা হয় না। গত ডিসেম্বরে ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এফএ) জানিয়েছিল, এফএ কাপে পঞ্চম রাউন্ডের আগপর্যন্ত ভিএআর প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে না।

আরও পড়ুনদাপুটে জয়ে ফাইনালে উঠেও খুশি নন লিভারপুল অধিনায়ক০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সিদ্ধান্তটি তাই মাঠের অফিশিয়ালদের নিতে হতো। অবিশ্বাস্য বিষয়, শুধু ম্যাগুয়ার নয়, ইউনাইটেডের মোট চারজন তখন অফসাইড ছিলেন, যেটার ছবি পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এসেছে। কিন্তু মাঠে অফিশিয়ালদের কেউ অফসাইডের বাঁশি বাজাননি। যদিও ইউনাইটেডের সাবেক মিডফিল্ডার ও স্কাই স্পোর্টসের ফুটবল–পণ্ডিত রয় কিনের দাবি, লাইন্সম্যানের না দেখার কোনো কারণই থাকতে পারে না। আইটিভিকে বলেছেন, ‘লাইন্সম্যানকে এটা দেখতেই হবে। ইউনাইটেড যেন জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে!’

ইউনাইটেড কোচ আমোরিমও ম্যাচ শেষে স্বীকার করেছেন, ভিএআর প্রযুক্তি থাকলে গোলটি হতো না, ‘ভিএআরে এটা গোল নয়। খেলায় ন্যায্যতার জন্যই ভিএআর থাকা গুরুত্বপূর্ণ। অফসাইড খেলায় হার মেনে নেওয়া কঠিন। তবে কিছুটা সৌভাগ্য আমাদেরও প্রাপ্য।’

খটকাটা হলো, আমোরিম খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাস ধরে রাখার কথাও বলেছেন। সেটা থাকলে অবশ্য কেউ সৌভাগ্যের পরশ পাওয়ার কথা ভাবে না। সে যা–ই হোক, আইটিভিকে আমোরিম বলেছেন, ‘আমাদের শেষ পর্যন্ত বিশ্বাস রাখতে হয়েছে, তবে এই ম্যাচের সঙ্গে ফার্গি টাইমের কোনো সম্পর্ক নেই।’

প্রথমার্ধে আমোরিমের দল লেস্টারের পোস্টে কোনো শট রাখতে পারেনি। এ মৌসুমে যা তৃতীয়বার দেখা গেল। শিষ্যদের খেলায় অসন্তোষের কথাও অবশ্য বলেছেন আমোরিম।

লেস্টার কোচ নিস্টলরয় হারের পর কোনো রাখঢাক রেখে সরাসরি বলেছেন, ‘ফার্গি টাইম নয়, আমরা অফসাইড টাইমে হেরেছি। এটা পরিষ্কার যে একটি ভুল ম্যাচের ফল ঠিক করে দিয়েছে। এটার দরকার ছিল না। ভিএআরে কয়েক সেন্টিমিটার, কয়েক ইঞ্চিতেও অফসাইড হয়। আর এটায় আধমিটার, পরিষ্কার। অতিরিক্ত সময়ে যাওয়াটা আমাদের প্রাপ্য ছিল। তারপর হয়তো পেনাল্টি। এই পর্যায়ে এমন সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া কঠিন।’

এফএ কাপের পঞ্চম রাউন্ডে এবারই প্রথমবারের মতো ভিএআর প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। এ নিয়ে গত ১৬ ডিসেম্বর দেওয়া বিবৃতিতে ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এফএ) জানিয়েছিল, ‘অবকাঠামো, খরচ ও কর্মব্যাপ্তি বিচারে এফএ কাপে এর আগে ভিএআর শুধু ওয়েম্বলি ও প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচগুলোয় ব্যবহার করা হয়েছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ