গাজীপুরে মোজাম্মেলের বাড়িতে আহতদের দেখতে হাসপাতালে হাসনাত ও সারজিস
Published: 8th, February 2025 GMT
গাজীপুরে সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলায় আহত শিক্ষার্থীদের দেখতে গতকাল শুক্রবার রাতেই হাসপাতালে গেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক সারজিস আলম। গতকাল রাত তিনটার দিকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আহত ব্যক্তিদের খোঁজখবর নিতে যান তাঁরা।
এদিকে শিক্ষার্থীদের ওপর এ হামলার প্রতিবাদে আজ শনিবার বেলা ১১টায় গাজীপুর জেলা শহরের রাজবাড়ি মাঠে বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আজ সকাল ১০টা পর্যন্ত ওই ঘটনায় কোনো অভিযোগ বা মামলা হয়নি।
আরও পড়ুনগাজীপুরে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন২ ঘণ্টা আগেএর আগে গতকাল রাত ৯টার দিকে গাজীপুর মহানগরীর ধীরাশ্রম দক্ষিণখান এলাকায় সাবেক মন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোজাম্মেল হকের বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ তুলে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এতে অন্তত ১৫ শিক্ষার্থী আহত হন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন গাজীপুরের নেতা-কর্মীরা বলেন, হামলায় আহত ব্যক্তিদের প্রায় সবাইকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হামলায় আহতদের দেখতে গতকাল রাত তিনটার দিকে হাসপাতালটিতে যান হাসনাত ও সারজিস।
আরও পড়ুনগাজীপুরে মোজাম্মেলের বাড়িতে আহত ৫ জন ঢাকা মেডিকেলে, মাথায়-হাতে গুরুতর আঘাত২৪ মিনিট আগেবৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের দাবি, গতকাল রাতে কাছে খবর আসে, ধীরাশ্রম এলাকায় সাবেক মন্ত্রীর বাড়িতে হামলা ও লুটপাট হচ্ছে। এটি শোনার পর প্রতিহত করতে শিক্ষার্থীরা রওনা হয়। দ্রুত ১৫ থেকে ২০ জন ঘটনাস্থলে চলে যায়। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িটিতে লুটপাট হচ্ছে। এ সময় মাইকে ঘোষণা দিয়ে শত শত মানুষকে জড়ো করা হয়। অন্য শিক্ষার্থীরা আসার আগেই ওই শিক্ষার্থীদের কয়েকজনকে বাসার ছাদে নিয়ে পেটানো হয়। পরে অন্য শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে গেলে তাঁদেরও পেটায় স্থানীয় বাসিন্দারা।
গাজীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গতক ল র ত
এছাড়াও পড়ুন:
‘গুম’ হওয়ার ১৩ বছর: ইলিয়াস আলীর ফেরার আশায় আছেন সিলেটবাসী
‘আয়নাঘর’ (গোপন বন্দিশালা) থেকে গুম হওয়া ব্যক্তিদের কয়েকজন ফিরলে নিখোঁজ ইলিয়াস আলীর সন্ধান পাওয়ার ব্যাপারেও সিলেটবাসী আশাবাদী হন। কিন্তু ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে গুম হওয়া ইলিয়াসের সন্ধান এখনো মেলেনি। সিলেট বিএনপি এখনো তাঁর অপেক্ষায় আছে। ইলিয়াস আলী একদিন নিশ্চয়ই ফিরবেন, এ আশায় আছেন সিলেটবাসী।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেট নগরের কোর্ট পয়েন্টে সিলেট জেলা বিএনপি আয়োজিত এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলীর ‘নিখোঁজ’ হওয়ার ১৩ বছর পূর্তিতে তাঁকে অক্ষত ফিরে পেতে এ কর্মসূচি পালিত হয়। মানববন্ধন শেষে ইলিয়াস ও বিএনপির ‘গুম’ হওয়া নেতা–কর্মীদের সন্ধান ও মুক্তির দাবি করে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার কাছে একটি স্মারকলিপি দেন দলটির নেতা–কর্মীরা।
২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল ঢাকার বনানী থেকে গাড়িচালক আনসার আলীসহ নিখোঁজ হন ইলিয়াস আলী। বিএনপির অভিযোগ, তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার তাঁকে ‘গুম’ করেছে। ওই সময় ইলিয়াস আলীর সন্ধানের দাবিতে টানা এক সপ্তাহ হরতাল পালিত হয় তাঁর উপজেলা সিলেটের বিশ্বনাথে। হরতাল চলাকালে পুলিশের সংঘর্ষে ছাত্রদল ও যুবদলের তিন কর্মী নিহত হন। এ ছাড়া বিএনপি ও ‘ইলিয়াস মুক্তি সংগ্রাম পরিষদ’ একই দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে।
আজ মানববন্ধন কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী। এ সময় তিনি বলেন, ‘ইলিয়াস আলীর পরিবারের অপেক্ষার অবসান হয়নি, রহস্য এখনো অমীমাংসিত। সিলেট বিএনপি এখনো ইলিয়াস আলীর অপেক্ষায় আছে। তৎকালীন সরকারের নানা আশ্বাস সত্ত্বেও ইলিয়াস আলীর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। আমরা বিশ্বাস করি, তিনি এখনো জীবিত এবং তৎকালীন সরকারের কিছু ক্ষমতাসীন ব্যক্তি তাঁর অবস্থান সম্পর্কে অবগত।’
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরীর সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম, জেলা বিএনপির সহসভাপতি আশিক উদ্দিন (আশুক), সহসভাপতি মামুনুর রশিদ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে একের পর এক গুমের ঘটনা জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে দেশকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য আন্তর্জাতিক মানের নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন গঠন করা একান্ত প্রয়োজন। এ ছাড়া অতীতে যেসব ভুলের কারণে ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিদায় নিতে হয়েছিল, বর্তমান সরকার যেন সে ভুলগুলো না করে। এ জন্য সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। জনগণ যেসব অপকর্ম দেখে ক্ষুব্ধ, সেগুলো পরিহার করে সামনের দিকে এগোতে হবে।
কর্মসূচিতে জেলা বিএনপির সহসভাপতি নাজিম উদ্দিন লস্কর, সামিয়া বেগম চৌধুরী, গৌছ আলী, লিলু মিয়া ও জিল্লুর রহমান (সুয়েব), যুগ্ম সম্পাদক ইশতিয়াক আহমদ সিদ্দিকী, তাজরুল ইসলাম (তাজুল), আনোয়ার হোসেন (মানিক), কোহিনুর আহমদ, আবুল কাশেম, মাহবুবুল হক চৌধুরী ও শাকিল মোর্শেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আহমদ ও আল আসলাম মুমিন, বিএনপি নেতা লোকমান আহমদ, বদরুল ইসলাম চৌধুরী, তাসনিম শারমিন (তামান্না), আল মামুন খান, মাহবুব আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সভাপতির বক্তব্যে আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ‘সিলেটবাসীর হৃদয়ের নেতা ইলিয়াস আলীর খোঁজ না পাওয়া আমাদের জন্য গভীর বেদনা ও ক্ষোভের বিষয়। এটি একটি জাতির জন্য চরম লজ্জার। আমরা ন্যায়বিচারের আশায় এখনো আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। গুম ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোর নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্তের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক মানের তদন্ত কমিশন গঠনের জোর দাবি জানাই।’
মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তারা ইলিয়াস আলীর পাশাপাশি ২০১২ সালের ৩ এপ্রিল ঢাকা থেকে ‘নিখোঁজ’ হওয়া সিলেটের ছাত্রদল নেতা ইফতেখার আহমদ দিনার ও জুনেদ আহমদের সন্ধান ও মুক্তির দাবি জানান।