জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত হয়ে যারা ক্লিনিকে (বেসরকারি হাসপাতালে) চিকিৎসাসেবা নিয়েছিলেন, তাদের খরচের টাকা ফেরত দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এরই মধ্যে চিকিৎসা ব্যয়ের নথি গণঅভ্যুত্থান সংক্রান্ত বিশেষ সেল বা সংশ্লিষ্ট জেলার সিভিল সার্জন কার্যালয়ে জমা দিতে বলা হয়েছে। যাচাই শেষে অর্থ পরিশোধ করা হবে।

গত মঙ্গলবার গণঅভ্যুত্থান সংক্রান্ত বিশেষ সেলের দলনেতা (যুগ্ম সচিব) মশিউর রহমানের সই করা প্রজ্ঞাপনে এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়। গতকাল শুক্রবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে জুলাই ও আগস্টে রাজধানীসহ সারাদেশে ৮৩৪ জন শহীদ হয়েছেন। এ সময় ২২ হাজারের বেশি মানুষ আহত হন। তাদের বড় একটি অংশ বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এছাড়া এ পর্যন্ত ৩০ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হয়েছে। আরও ১২ জনকে বিদেশে পাঠানোর প্রস্তুতি চলমান। পাশাপাশি বিদেশ থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এনে দেশের হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টাও অব্যাহত আছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আন্দোলনে আহতদের মধ্যে যারা বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন, তাদের বিলের নথি গণঅভ্যুত্থান সংক্রান্ত বিশেষ সেল অথবা সংশ্লিষ্ট জেলার সিভিল সার্জন কার্যালয়ে দাখিল করতে হবে। নথিগুলো যাচাই করে গণঅভ্যুত্থান সংক্রান্ত বিশেষ সেলে পাঠাবে। সেল মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার আলোকে দাবি করা অর্থ পরিশোধের ব্যবস্থা নেবে। গণঅভ্যুত্থান সংক্রান্ত বিশেষ সেলের ওয়েসাইটে (www.

musc.portal.gov.bd) পাওয়া যাবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গণঅভ য ত থ ন স ক র ন ত ব শ ষ স ল সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রুথ অ্যান্ড হিলিং কমিশন গঠনের আহ্বান বিশিষ্টজনদের

জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে খুনী ও তাদের দোসরদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত এবং ভিক্টিমদের মানসিক ক্ষত থেকে সারিয়ে তুলতে ট্রুথ অ্যান্ড হিলিং কমিশন (টিএইচসি) গঠনের আহ্বান জানিয়েছে বিশিষ্টজনরা।

ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ল এন্ড ডিপ্লোম্যাসি (আইআইএলডি) এবং বাংলাদেশ ২.০ ইনিশিয়েটিভ যৌথভাবে ‘ট্রুথ অ্যান্ড হিলিং কমিশন (টিএইচসি) বিরোধ-পরবর্তী বাংলাদেশ: একটি ভিকটিম-কেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি’ শীর্ষক একটি গোলটেবিল বৈঠকে তারা এই আহ্বান করেন।

রবিবার (৯ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদে অবস্থিত ড. আব্দুল্লাহ ফারুক কনফারেন্স হলে এ গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আরো পড়ুন:

ধর্ষণের বিরুদ্ধে ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে প্রতিবাদী কণ্ঠ

ধর্ষক ও নারী নিপীড়কদের শাস্তির দাবিতে ঢাবিতে লাঠি মিছিল

সুপ্রীম কোর্টের অ্যাডভোকেট ব্যারিস্টার তাজরিয়ান আকরামের সঞ্চালনায় গোলটেবিল বৈঠকে অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক তাতসুসি আরা, ফটোগ্রাফার ও অ্যাক্টিভিস্ট শহিদুল আলম, জাতিসংঘ রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটর বাংলাদেশ অফিসের সিনিয়র মানবাধিকার উপদেষ্টা হুমা খান, বিএনপি নেতা হুম্মাম কাদের চৌধুরী প্রমুখ।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কেন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক তাতসুসি আরা। তিনি সুদীর্ঘ সময় নেপাল, ভারত এবং পাকিস্তানে কাজ করেছেন। তিনি ট্রুথ এবং হিলিং সংক্রান্ত ধারণাগুলোর ব্যাখ্যা প্রদান করেন এবং এ কমিশনের জন্য অভিজ্ঞতালব্ধ পরামর্শ প্রদান করেন।

এক্টিভিস্ট শহিদুল আলম বলেন, “ভিক্টিমরা ন্যায়বিচার চায়। যার জন্য প্রয়োজন জাতীয় ডায়ালগ এবং এদের গল্পগুলো তুলে আনার জন্য প্রয়োজন নির্দিষ্ট ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করা।”

জাতিসংঘ রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটর বাংলাদেশ অফিসের সিনিয়র মানবাধিকার উপদেষ্টা হুমা খান জুলাই অভ্যুত্থানে সরকারের একটা অংশেরই কেবল পরিবর্তন হয়েছে উল্লেখ করে বলেন, “পুলিশ, বিচার বিভাগসহ অধিকাংশ জায়গায় পূর্ববর্তী লোকদের উপস্থিতিতে কিভাবে ভিক্টিমদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। এই অঞ্চলের নির্যাতনের ইতিহাস কেবল ১৬ বছরের নয়, বরং দক্ষিণ এশিয়ার সুদীর্ঘ সময়ের এমন নিভৃত অনেক রাজনৈতিক, ঐতিহাসিক নির্যাতন রয়েছে।”

এ গোলটেবিল আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বিশিষ্ট নেতা, অ্যাক্টিভিস্ট আলী আহসান জুনায়েদ। তিনি জুলাই আন্দোলনে যাত্রাবাড়ীতে তার লোমহর্ষক অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন।

এছাড়া বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ প্রফেশনালসের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আতাউর রহমান তালুকদার, ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইম ট্রাইব্যুনালের সিনিয়র গবেষক খন্দকার রাকীব, সাংবাদিক সাকিব সরকার, নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক ওমর নাসিফ আব্দুল্লাহ ও জাহিদুল ইসলাম মিয়াজি, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক খন্দকার রাকিব, ওমর নাফিস আব্দুল্লাহ, জাহিদুল ইসলাম মিয়াজী, বিইউপির শিক্ষক আতাউর রহমান অপূর্ব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ট্রুথ অ্যান্ড হিলিং কমিশন (টিএইচসি) এর উপর আইআইএলডি এর নির্বাহী পরিচালক শফিউল আলম শাহীনের প্রস্তাবনায় একটি ওয়ার্কিং কমিটি গঠিত হয়। কমিটির সদস্যগণ হলেন মুহাম্মদ আসাদুল্লাহ, হুমা খান, সাইফুদ্দিন আহমেদ, আতাউর রহমান তালুকদার, আলী আহসান জুনায়েদ, সাকীব সরকার, হারুন ওর রশীদ, তাজরিয়ান আকরাম, নওশিন শর্মিলা রিতু, শফিউল আলম শাহীন এবং রাজীব মন্ডল।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গণঅভ্যুত্থানের পরে সমাজে কোনো পরিবর্তন আসেনি
  • ট্রুথ অ্যান্ড হিলিং কমিশন গঠনের আহ্বান বিশিষ্টজনদের
  • নতুন রাজনৈতিক দলের কাছে তরুণদের প্রত্যাশা
  • আশা করি আমরা এই নির্বাচনে জিতব: এএফপিকে নাহিদ
  • ‘চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে নারীর বীরত্ব অসামান্য’
  • রাজশাহীতে বিএনপির ২ গ্রুপের সংঘর্ষ, গুলি, ককটেল বিস্ফোরণ
  • ‌‘জুলাই কমিউনিটি এলায়েন্স মিরপুর’র আত্মপ্রকাশ
  • জুলাই কমিউনিটি অ্যালায়েন্স মিরপুর’র আত্মপ্রকাশ