দ্রুত নবম পে স্কেল ঘোষণা করাসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে ‘১১-২০ গ্রেডধারী সরকারি চাকরিজীবী জাতীয় ফোরাম’।

শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি তুলে ধরা হয়।

এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ফোরামের সভাপতি মো. মিরাজুল ইসলাম।

দাবিগুলো হলো– দ্রুত পে কমিশন গঠন করে বেতন বৈষম্য দূর করার মাধ্যমে নবম পে স্কেল ঘোষণা ও বর্তমান বাজার ব্যবস্থা অনুযায়ী পে স্কেল দেওয়ার আগ পর্যন্ত সর্বনিম্ন ৫০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা দেওয়া, গ্রেড সংখ্যা কমানো এবং পে স্কেল বাস্তবায়ন কমিটিতে ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারী প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করা। টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড পুনর্বহালসহ এক ও অভিন্ন নিয়োগবিধি প্রণয়ন। ব্লকপোস্ট প্রথা বিলুপ্ত করে সব পদে সমহারে পদোন্নতি এবং আউটসোর্সিং প্রথা বাতিল।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সব দপ্তর, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও করপোরেশনে কর্মরত-কর্মচারীদের সচিবালয়ের মতো পদ-পদবি ও গ্রেড দিতে হবে। বর্তমান বাজার ব্যবস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা, টিফিন ভাতা, যাতায়াত ভাতা, শিক্ষা ভাতাসহ সব ভাতা বাড়াতে হবে। পেনশনের হার ৯০ শতাংশের স্থলে ১০০ শতাংশ করা, ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত সবাইকে ঝুঁকি ভাতা দেওয়া, টেকনিক্যাল কাজে নিয়োজিত সবাইকে টেকনিক্যাল স্কেল দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

অতিরিক্ত কাজের জন্য ওভারটাইম ভাতা দেওয়াসহ ১০০ শতাংশ পেনশন সমর্পণ এবং রেলওয়েতে প্রচলিত প্রহসনের ৫০ টাকা রেশন ভাতা বাতিল করে ১১ থেকে ২০ গ্রেডের কর্মচারীদের বর্তমান বাজার ব্যবস্থা অনুযায়ী রেশন দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র ব যবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

ঘরোয়া রান্নার স্মৃতিময় বই ‘খাদ্যবিলাস’

নাম বললেই চেনা যাবে, আনোয়ারা তরফদার এমন কোনো বিখ্যাত রন্ধনশিল্পী নন। তাঁর রান্না একান্তই ঘরোয়া, তবে তাঁর সৃজনশীলতা ভিন্নতর। সেসব রান্নার রেসিপি নিয়েই প্রকাশিত তাঁর রান্নার বই ‘খাদ্যবিলাস’–এর মোড়ক উন্মোচন হলো আজ বুধবার সন্ধ্যায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে।

একসময়ের জনপ্রিয় সাময়িকী সাপ্তাহিক ‘বিচিত্রা’য় প্রায় ৩০ বছর আগে আনোয়ারা তরফদারের রান্নার রেসিপিগুলো প্রকাশিত হয়েছিল। পরে সেই লেখাগুলো নিয়ে বইও প্রকাশিত হয়। অনেক দিন থেকেই বইটি বাজারে ছিল না। আনোয়ারা তরফদারের মেয়ে কবি শামীম আজাদ বইটি নতুন করে সম্পাদনা ও পরিবর্ধন করেছেন। প্রকাশ করেছে পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। তিনি বলেন, ষাটের দশকে মধ্যবিত্ত পরিবারের রান্নার বিলাস বাহুল্য ছিল না বটে, কিন্তু তার মধ্যেও বিশেষ বিশেষ দিনে প্রিয়জনদের সামনে ভালোমন্দ রান্না তুলে ধরতে চাইতেন সব গৃহিণী। সীমিত বাজেটে কীভাবে হৃদয়, বুদ্ধি, মমতা এবং ভালোবাসায় সাধারণ রান্নাকে অসাধারণ সুস্বাদু করে আপনজনের রসনা তৃপ্ত করা যায়, সে ব্যাপারটি আনোয়ারা তরফদারের ‘খাদ্যবিলাস’ বইটিতে রয়েছে।

অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘আমরা এখন বাণিজ্যের পৃথিবীতে বসবাস করছি। একটা সময় প্রকৃতি ও সভ্যতা জড়াজড়ি করে থাকত। এখন চলছে প্রকৃতি বিনাশী কর্মকাণ্ড। এই রান্নাগুলো কেবল খাদ্য প্রস্তুত করা নয়, এর সঙ্গে সেই সময়ের যৌথ জীবন, সংস্কৃতি, প্রকৃতি সংলগ্নতা আর মায়া–মমতার বিষয়ও মিলে মিশে আছে। এই রান্না একান্তই বাঙালির ঘরোয়া রান্না। ঘরে ঘরে বাঙালির রান্না যেন টিকে থাকে, সেই কামনা করি।’

অর্থনীতিবিদ সেলিম জাহানের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন শাহীন আনাম, আফজাল হোসেন, আব্দুন নূর তুষার, আলপনা হাবিব ও প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের পক্ষে মজুমদার বিপ্লব। মায়ের স্মৃতিচারণা করেন ছেলে ফজলে আকবর তফরদার ও বইটির সম্পাদক কবি শামীম আজাদ। ধন্যবাদ জানান নাতি লাবিব তালুকদার।

‘খাদ্যবিলাস’ বইটি নিয়ে আলোচকেরা বলেছেন, এই রান্নার মধ্যে জড়িয়ে আছে স্মৃতি। একটি সময়কে ধরে রাখা আছে। এগুলো আসলে মায়ের হাতের রান্না। আর মায়ের হাতের রান্না শুধু খাদ্য নয়, অমৃতের মতো।

আনোয়ারা তরফদারের জন্ম গত শতকের ত্রিশের দশকে বৃহত্তর সিলেটে। স্বামী ছিলেন পদস্থ সরকারি কর্মকর্তা। স্বামীর চাকরিসূত্রে অবিভক্ত ভারতের আসাম ও পরে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে থেকেছেন। স্বামীর সীমিত আয়ে তিনি নিপুণভাবে সংসার পরিচালনা করেছেন। বাঙালির চিরায়ত রান্নায় তাঁর ছিল বিশেষ পারদর্শিতা। এ ছাড়া সূচিকর্ম, মৃৎপাত্রে অঙ্কনসহ বিভিন্ন কারুকর্মেও তাঁর বিশেষ সৃজনশীলতা ছিল। একটা সময় তিনি ঢাকায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে মেয়েদের পুঁতির গয়না তৈরির প্রশিক্ষণ দিয়েছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ