ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা আজ শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি)। বেলা ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত দেড় ঘণ্টা এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

আবেদনের হিসাবে সবচেয়ে বেশি প্রতিযোগিতা হবে ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (আইবিএ) ইউনিটে। আর সবচেয়ে কম প্রতিযোগিতা হবে ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটে। ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটে ১ হাজার ৫০ আসনে ভর্তি হতে ৪০ হাজার ৯৭৩ শিক্ষার্থী আবেদন করেছেন। প্রতি আসনের বিপরীতে প্রতিযোগিতা হবে ৩৯ ভর্তি–ইচ্ছুক শিক্ষার্থীর মধ্য।

আরও পড়ুনকলেজশিক্ষকদের পদোন্নতি পেতে লাগবে গবেষণা২১ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির প্রশ্নের ধরন, নম্বর বিভাজন ও মূল্যায়ন নির্দেশিকা প্রকাশ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ১ হাজার ৮৯৬টি আসনের বিপরীতে ১ লাখ ৪৬ হাজার ৬৯৪ জন শিক্ষার্থী আবেদন করেছেন এ ইউনিটে। প্রতি আসনের বিপরীতে লড়বেন ৭৭ জন শিক্ষার্থী।

এর আগে কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটে, চারুকলা ইউনিট, ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে (আইবিএ) ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সব ইউনিটের পরীক্ষা (আইবিএ ছাড়া) শুরু হবে বেলা ১১টায়। পরীক্ষা চলবে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত। আইবিএর ভর্তি পরীক্ষা সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত।

আরও পড়ুনতুরস্কে স্কলারশিপ, স্নাতকোত্তর-পিএইচডিতে সুযোগ১ ঘণ্টা আগেনম্বর ও সময় বণ্টন—

*বিজ্ঞান ইউনিটে এমসিকিউ পরীক্ষা হবে ৬০ নম্বরে। পরীক্ষার নির্ধারিত সময় ৪৫ মিনিট। লিখিত পরীক্ষা ৪০ নম্বরে হবে ৪৫ মিনিটে।
*ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটে এমসিকিউ পরীক্ষা হবে ৬০ নম্বরে। পরীক্ষার নির্ধারিত সময় ৪৫ মিনিট। লিখিত পরীক্ষা ৪০ নম্বরে হবে ৪৫ মিনিটে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবস য় শ ক ষ পর ক ষ আইব এ ইউন ট

এছাড়াও পড়ুন:

গুরুত্ব পাবে রোহিঙ্গা সংকট ও মানবাধিকার প্রসঙ্গ

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস আগামী বৃহস্পতিবার চার দিনের সফরে বাংলাদেশে আসছেন। প্রায় সাত বছরের মাথায় তাঁর দ্বিতীয় দফা সফরে মূলত রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট এবং মানবাধিকারের প্রসঙ্গ অগ্রাধিকার পাবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জাতিসংঘ মহাসচিব শুক্রবার ঢাকায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এরপর তাঁরা দুজনে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে একসঙ্গে কক্সবাজার যাবেন। সেখানে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি দেখার পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ইফতার করবেন।

গুতেরেসের সফর সম্পর্কে জানতে চাইলে বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস বলেন, প্রধান উপদেষ্টার আমন্ত্রণে তিনি (আন্তোনিও গুতেরেস) রমজান মাসে সংহতি জানাতে বাংলাদেশে আসছেন। প্রতিবছর তিনি রমজান মাসে মুসলিম দেশগুলোতে সফর করে থাকেন। এই সফরে তিনি রোহিঙ্গাদের নিয়ে আলোচনা করবেন। সেখানে আন্তর্জাতিক সহায়তার বিষয়টিও উঠে আসবে।

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশে সংস্কার, নির্বাচন এবং জাতিসংঘের সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হবে কি না, জানতে চাইলে গোয়েন লুইস বলেন, জাতিসংঘ বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারের সময়ে বাংলাদেশিদের পাশে থেকেছে। ফলে জাতিসংঘের সহযোগিতা ও সংহতি চলবে। কী ধরনের সহযোগিতা চাওয়া হবে এবং অগ্রাধিকারের বিষয়গুলো কী, তা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার বা ভবিষ্যতে নির্বাচিত সরকার জাতিসংঘকে জানাবে। জাতিসংঘ বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত।

রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ইফতার

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের মহাসচিবকে স্বাগত জানাবেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে জাতিসংঘ মহাসচিব সরাসরি হোটেলে যাবেন।

পরদিন সকালে মহাসচিবের অবস্থানরত হোটেলে তাঁর সঙ্গে প্রথমে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সমস্যা ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলি-সংক্রান্ত বিশেষ প্রতিনিধি খলিলুর রহমান সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।

এরপর প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে তাঁর দপ্তরে বৈঠক করবেন জাতিসংঘ মহাসচিব। বৈঠক শেষে একটি ফ্লাইটে কক্সবাজারে যাবেন তাঁরা। সেখান থেকে তাঁরা রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবির পরিদর্শনে যাবেন।

রোহিঙ্গা শিবিরে জাতিসংঘের কাজ করা বিভিন্ন সংস্থা নিজ নিজ কার্যক্রম সম্পর্কে জাতিসংঘ মহাসচিবকে ব্রিফ করবেন। শরণার্থীশিবির পরিদর্শনের পর রোহিঙ্গা ও পবিত্র রমজানের প্রতি সংহতি জানিয়ে সেখানেই জাতিসংঘ মহাসচিবের সম্মানে ইফতারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাতে কক্সবাজার থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেবেন জাতিসংঘ মহাসচিব ও প্রধান উপদেষ্টা।

আগামী শনিবার ঢাকায় জাতিসংঘের কার্যালয়ে যাবেন আন্তোনিও গুতেরেস। সেখানে জাতিসংঘের কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন তিনি। এরপর দুপুরে হোটেলে ফিরে গোলটেবিল বৈঠকে যোগ দেবেন আন্তোনিও গুতেরেস। এ ছাড়া সেখানে বাংলাদেশে যুবসমাজ ও নাগরিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন তিনি।

এদিন বিকেলে একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলন হওয়ার কথা রয়েছে। সন্ধ্যায় জাতিসংঘ মহাসচিবের সম্মানে ইফতার ও নৈশভোজের আয়োজন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস। পরদিন রোববার সকালে ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার কথা রয়েছে জাতিসংঘ মহাসচিবের।

রাখাইনের দুর্ভিক্ষ মোকাবিলায় বাংলাদেশের সহায়তা প্রত্যাশা

গৃহযুদ্ধের কারণে মিয়ানমারের রাখাইনের পুরো অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় সেখানে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছে জাতিসংঘ। সংস্থাটির বাংলাদেশকে জানিয়েছে, রাখাইনের দুর্ভিক্ষ মোকাবিলা না করা গেলে এবার শুধু রোহিঙ্গা নয়, সেখানে বসবাসরত অন্য জনগোষ্ঠীর সদস্যরাও সীমান্ত অতিক্রম করতে পারে। তাই সেখানকার দুর্ভিক্ষ মোকাবিলায় বাংলাদেশের সহযোগিতা চাইছে জাতিসংঘ।

তবে বাংলাদেশ জাতিসংঘের এমন অনুরোধকে এখনো ইতিবাচকভাবে দেখছে না। নিরাপত্তাসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে এ প্রস্তাবকে ঝুঁকি হিসেবে বিবেচনা করছে।

গত অক্টোবরে জাতিসংঘের উন্নয়ন প্রকল্প (ইউএনডিপি) রাখাইন পরিস্থিতি নিয়ে ১২ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন তৈরি করে। প্রতিবেদনটিতে রাখাইনের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির অবনতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, রাখাইনের পণ্য প্রবেশে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ সীমান্ত বন্ধ রয়েছে। কোনো আয়ের উৎস নেই। ভয়াবহ মূল্যস্ফীতির পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ খাদ্য উৎপাদনে ধস নেমেছে। জরুরি সেবা ও সামাজিক সুরক্ষায় ঘাটতি দেখা দিয়েছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে সেখানে ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর পরিস্থিতি আরও অবনতির আশঙ্কা করছে জাতিসংঘ।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি মার্চ অথবা আগামী এপ্রিল মাসের মধ্যে রাখাইন রাজ্যে দুর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হয়েছে।

জাতিসংঘ ইতিমধ্যে রাখাইনের পরিস্থিতিসহ সার্বিক বিষয় বাংলাদেশকে জানিয়েছে। বৈশ্বিক সংস্থাটি বাংলাদেশ হয়ে রাখাইনে সহায়তা পাঠাতে চায়। ইতিমধ্যে কক্সবাজার হয়ে আন্তর্জাতিক সীমান্ত দিয়ে সহায়তার একটি চালান সেখানে পাঠিয়েছে জাতিসংঘ।

তবে দ্বিতীয় চালান পাঠাতে গিয়ে সমস্যায় পড়ে সংস্থাটি। দ্বিতীয় চালানটি আর বাংলাদেশ অতিক্রম করতে দেয়নি সরকার। দীর্ঘদিন ধরেই রাখাইনে সহায়তা দিতে বাংলাদেশকে মাধ্যম হিসেবে ব্যবহারের আহ্বান জানিয়ে আসছে জাতিসংঘ। প্রতিবেদনে বাংলাদেশকে সীমান্ত দিয়ে পণ্য ব্যবসায়ীদের মধ্যে সরাসরি সরবরাহব্যবস্থার সুপারিশ করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ