বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা এবং জনস্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের ২১ নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) প্রশাসন। তাদের মধ্যে ১৮ জনকে বিভিন্ন হল থেকে বহিষ্কার; বাকি তিনজনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার স্টুডেন্টস ডিসিপ্লিন কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে গতকাল শুক্রবার ২১টি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এসব তথ্য জানানো হয়।
পাঁচটি আবাসিক হল থেকে বহিষ্কৃতরা হলেন– শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি তোফাইয়া রাব্বি, ইমাম হোসেন, মো.

সাদিকুজ্জামান, ইউসুফ আব্দুল্লাহ রনি, তানভীর জনি, ইফতেখার সাজিদ সম্রাট ও শাকিল ফরাজী; যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ তৌফিকুর রহমান, সৌমিক জয়, তালহা জুবায়ের, মাহমুদুল হাসান জাহিদ, রিফাত হোসাইন ও মইনুল হক; সাংগঠনিক সম্পাদক আজহারুল ইসলাম মুন্না, ইরফানুল করিম তোহা, আশিকুল ইসলাম, তাহসিন ইশতিয়াক ইফতি ও আব্দুর রহমান জিহাদ।

এ ছাড়া সাধারণ সম্পাদক বিজয় হোসেন, সহসভাপতি চিন্ময় কুমার দেবনাথ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাকিব উদ্দিন চৌধুরীকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীকে বহিষ্কার ও মদপানে অভিযুক্ত পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষক শাফকাত আর রুম্মানের শাস্তির দাবিতে প্রশাসনিক ভবনের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে রাতেই প্রশাসন থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

ছাত্রকল্যাণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সাইফুল ইসলাম বলেন, ২৬ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৩টার মধ্যে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে। জবাব ও অভিযোগ প্রমাণ সাপেক্ষে অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী একাডেমিক বহিষ্কার করা হতে পারে।

উপাচার্য মাহমুদ আব্দুল মতিন ভূঁইয়া জানান, শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে সাময়িকভাবে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। অভিযোগের বিষয়ে সাক্ষ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করা হচ্ছে। সন্দেহাতীতভাবে অভিযোগ প্রমাণিত হলে শাস্তি আরও বাড়বে। সংশ্লিষ্টতা ছিল না কেউ প্রমাণ করতে পারলে শাস্তি স্থগিত করা হবে।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

দুদিনব্যাপী জাতীয় গণিত উৎসব শুরু

ঢাকায় আজ শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো জাতীয় গণিত উৎসব ২০২৫ ও ২৩ তম বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড। দুদিনব্যাপী এই উৎসবে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা হাজারো শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে।

আজ সকালে রাজধানীর সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুল প্রাঙ্গণে ‘গণিত শেখো, স্বপ্ন দেখো’—এই স্লোগান নিয়ে এই উৎসবের ২৩ তম পর্বের উদ্বোধন হয়।

উদ্বোধনী পর্বে জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা ও আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উদ্বোধনী পর্বে উত্তোলন করা হয়।

আয়োজনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের অধ্যক্ষ ব্রাদার লিও পেরেরা। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা স্বপ্ন দেখার পাশাপাশি সেই স্বপ্নের মানুষ হয়ে নিজের ও দেশের জন্য কাজ করবে।

বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সহসভাপতি এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের অধ্যাপক ইলিয়াস উদ্দিন বিশ্বাস সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, যে স্বপ্ন নিয়ে শিক্ষার্থীরা এখানে এসেছে, তার লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে হবে। সহসভাপতি

ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কাশেম মো. শিরিন বলেন, যারা প্রতিযোগিতা করে এখানে এসেছে, সবাই মেধাবী। গত ২১ বছর ধরে প্রথম আলো ও ডাচ্-বাংলা ব্যাংক একসঙ্গে ভালো কিছু করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। এই উৎসবের বিজয়ীরা বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় দেশের নাম উজ্জ্বল করছে। তিনি শিক্ষার্থীদের বলেন, ‘যা-ই পড়ো, গণিত লাগবে।’

এই দিনের জন্য সবাই সারা বছর অপেক্ষা করে বলে উল্লেখ করেন প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান। তিনি বলেন, এই শিক্ষার্থীদের মধ্য দিয়েই দেশের স্বপ্ন পূরণ হবে। সবার একটাই লক্ষ্য, দেশের বিজয়।

ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের পৃষ্ঠপোষকতায় ও প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি এই উৎসবের আয়োজন করেছে।

আয়োজকেরা জানান, চলতি বছরের জুলাইয়ে অস্ট্রেলিয়ায় ৬৬ তম আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত হবে। এতে অংশ নেওয়ার জন্য এই উৎসবের মাধ্যমে বাংলাদেশ দল নির্বাচন করা হবে।

এবার সারা দেশ থেকে ৭৫ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী গণিত উৎসবে অংশ নিয়েছে। আর এর মধ্যে ১ হাজার ২০০ জন শিক্ষার্থী জাতীয় পর্বে অংশ নিচ্ছে।

উদ্বোধনী আয়োজনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের অধ্যাপক ও বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সহসভাপতি আব্দুল হাকিম খান, বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সাধারণ সম্পাদক এবং প্রথম আলো ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন ও যুব কার্যক্রমের প্রধান সমন্বয়ক মুনির হাসান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সহসাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন, বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানিয়া শরমিন খালেক, বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সদস্য ও টালি খাতার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহাদাত উল্লাহ্ খান প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দুদিনব্যাপী জাতীয় গণিত উৎসব শুরু
  • ভোগবিলাসে ব্যস্ত উপদেষ্টাদের পদত্যাগ করা দরকার: আসাদুজ্জামান রিপন