চুয়েটের হল থেকে ছাত্রলীগের ১৮ নেতা বহিষ্কার
Published: 8th, February 2025 GMT
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা এবং জনস্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের ২১ নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) প্রশাসন। তাদের মধ্যে ১৮ জনকে বিভিন্ন হল থেকে বহিষ্কার; বাকি তিনজনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার স্টুডেন্টস ডিসিপ্লিন কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে গতকাল শুক্রবার ২১টি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এসব তথ্য জানানো হয়।
পাঁচটি আবাসিক হল থেকে বহিষ্কৃতরা হলেন– শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি তোফাইয়া রাব্বি, ইমাম হোসেন, মো.
এ ছাড়া সাধারণ সম্পাদক বিজয় হোসেন, সহসভাপতি চিন্ময় কুমার দেবনাথ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাকিব উদ্দিন চৌধুরীকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীকে বহিষ্কার ও মদপানে অভিযুক্ত পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষক শাফকাত আর রুম্মানের শাস্তির দাবিতে প্রশাসনিক ভবনের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে রাতেই প্রশাসন থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
ছাত্রকল্যাণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সাইফুল ইসলাম বলেন, ২৬ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৩টার মধ্যে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে। জবাব ও অভিযোগ প্রমাণ সাপেক্ষে অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী একাডেমিক বহিষ্কার করা হতে পারে।
উপাচার্য মাহমুদ আব্দুল মতিন ভূঁইয়া জানান, শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে সাময়িকভাবে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। অভিযোগের বিষয়ে সাক্ষ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করা হচ্ছে। সন্দেহাতীতভাবে অভিযোগ প্রমাণিত হলে শাস্তি আরও বাড়বে। সংশ্লিষ্টতা ছিল না কেউ প্রমাণ করতে পারলে শাস্তি স্থগিত করা হবে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
‘পিপল ওয়েলফেয়ার স্টেট অব বাংলাদেশ’ নাম চায় ইসলামী আন্দোলন
বাংলাদেশের বর্তমান নাম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের পরিবর্তে নাগরিকতন্ত্র ও জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশ চালুর প্রস্তাব করেছিল সংবিধান সংস্কার কমিশন। তবে নতুন এ প্রস্তাবনায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের পরিবর্তে ‘পিপল ওয়েলফেয়ার স্টেট অব বাংলাদেশ’ তথা ‘বাংলাদেশ জনকল্যাণ রাষ্ট্র’ নামের প্রস্তাব দেয় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় সংসদ ভবনে অবস্থিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কার্যালয়ে কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের হাতে সংস্কার প্রস্তাব তুলে দেয় ইসলামী আন্দোলনের প্রতিনিধিদল। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ১৬৬টি প্রস্তাবের মধ্যে দলটি ১৩০টি প্রস্তাবে একমত, ২৫টি দ্বিমত এবং ১১টিতে আংশিকভাবে একমত। এ ছাড়া দলটি ৪১টি নতুন প্রস্তাব এবং ৪টি মৌলিক প্রস্তাব দিয়েছে।
ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন বলেন, রাষ্ট্রের নাম হিসেবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ প্রস্তাব করেছে ‘ওয়েলফেয়ার স্টেট অব বাংলাদেশ’। কারণ, এই নামের মধ্যেই জনকল্যাণ নিশ্চিত করার কথা বলা আছে।
আশরাফ আলী আকন বলেন, ‘রাষ্ট্রের সব ক্ষেত্রে সুশাসন, ন্যায়বিচার, উন্নয়ন, মানবাধিকার রক্ষা এবং দুর্নীতি ও সন্ত্রাসমুক্ত কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় আমরা চারটি মৌলিক প্রস্তাব পেশ করেছি, যা বাস্তবায়ন একান্ত প্রয়োজন। আর এসব প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত হবে। প্রস্তাবগুলো হলো আত্মশুদ্ধি, জবাবদিহি, শরিয়াহ আইন ও সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন।’
বিদ্যমান আইনে দুর্নীতি, দুঃশাসন, চুরি, ধর্ষণসহ অন্যায়-অনাচার বন্ধ করা যায়নি জানিয়ে শরিয়াহ আইন করার দাবি জানান আশরাফ আলী আকন। সংখ্যানুপাতিক হারে নির্বাচনের দাবি জানান তিনি।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, সব প্রস্তাবে সবাই একমত হবে বলে কমিশন মনে করে না। কমিশনের পক্ষ থেকে মতামতগুলো পর্যালোচনা করা হবে বলেন তিনি।
আগামী শনিবার থেকে প্রতিদিনই জাতীয় ঐকমত্য কমিশন একাধিক দলের সঙ্গে সংলাপ করবে বলে জানান আলী রীয়াজ। আগামী ১৫ মের মধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা শেষ করা হবে বলেন তিনি। তারপর দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনার কথা জানান।
ইসলামী আন্দোলনের পক্ষে দলটির মহাসচিব মাওলানা ইউনুস আহম্মেদ সেখ, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম মহাসচিব প্রকৌশলী মুহাম্মদ আশরাফুল আলম, মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম, মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ুম উপস্থিত ছিলেন।
এ পর্যন্ত ৩২টি রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে মতামত পেয়েছে বলে জানিয়েছে কমিশন।