কোটা পেতে ভুয়া ঠিকানা, ১০ বছর পর চাকরিচ্যুত
Published: 8th, February 2025 GMT
সরকারি চাকরিপ্রাপ্তদের ঠিকানা ও প্রাক-জীবনবৃত্তান্ত যাচাই করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সেই মন্ত্রণালয়েই জেলা কোটা পেতে চাকরির আবেদনে ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করেন এক কর্মী। চাকরিও পান। এর মধ্যে ভুয়া ঠিকানার তথ্য মিললেও নেওয়া হয়নি ব্যবস্থা। ১০ বছর চাকরির পর সেই কর্মীকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানা যায়, সাঁটমুদ্রাক্ষরিক-কাম কম্পিউটার অপারেটর ফারজানা আক্তার নামে ওই কর্মীর স্থায়ী ঠিকানা পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার ধানীসাফা গ্রামে। এ পদে নিয়োগে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর বিজ্ঞপ্তি হয়। সেখানে পিরোজপুর জেলার প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন না উল্লেখ ছিল। তবে চাকরি পেতে ফারজানা রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরের একটি ঠিকানা ব্যবহার করেন। ২০১৬ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর মন্ত্রণালয়ে যোগ দেন তিনি।
চাকরিতে যোগদানের পর প্রাক-জীবনবৃত্তান্ত যাচাইয়ে ফারজানার ভুয়া ঠিকানা ব্যবহারের বিষয়টি জানতে পারে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি)। প্রতিবেদনে বিষয়টি উল্লেখ করাও হয়। তবে কোনো ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। উল্টো তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের প্রশ্রয় পান ফারজানা। এ কারণে পুরো বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়া হয়। অবশ্য ভুয়া ঠিকানা দেওয়ায় তাঁর চাকরি স্থায়ীকরণ হয়নি।
আরও জানা যায়, সম্প্রতি ফারজানা আক্তার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.
এর পর সুরক্ষা সেবা বিভাগ ফারজানার ব্যক্তিগত নথি বের করে দেখতে পায়, তিনি ঠিকানা জালিয়াতি করে চাকরি করছেন। বিষয়টি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নজরে আনা হলে গত ২৮ জানুয়ারি চাকরিচ্যুত হন ফারজানা। তাঁকে যাবতীয় বেতন-ভাতা ফেরত দিতে নির্দেশও দিয়েছে মন্ত্রণালয়।
ফারজানার অব্যাহতিপত্রে বলা হয়, চাকরির আবেদনে ফারজানা স্থায়ী ঠিকানা গোপন করেছেন বলে পুলিশ ভেরিফিকেশনে উল্লেখ রয়েছে। জেলা কোটা পেতে তিনি স্থায়ী ঠিকানা পিরোজপুরের ধানীসাফা গ্রামের পরিবর্তে ঢাকা জেলা দেখান। অথচ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে পিরোজপুর জেলার প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন না উল্লেখ ছিল। এ জন্য তাঁর চাকরি স্থায়ী হয়নি।
এতে আরও বলা হয়, জাতীয় গোয়েন্দা নিরাপত্তা সংস্থার (এনএসআই) মাধ্যমেও তাঁর স্থায়ী ঠিকানা যাচাই করা হয়। দুই সংস্থার প্রতিবেদনে ভুয়া ঠিকানা ব্যবহারের সত্যতা মেলায় ফারজানাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় তাঁকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো। এ পর্যন্ত গৃহীত বেতন-ভাতাদি ফেরতের নির্দেশও দেওয়া হলো।
এ বিষয়ে জানতে ফারজানা আক্তারকে কল করলে তিনি মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি মোবাইল ফোনে কোনো ধরনের মন্তব্য করতে চাই না। আপনি সামনাসামনি এসে কথা বলুন। আমার অফিসে আসুন। এই কথা বলে তিনি কল কেটে দেন। পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগে গিয়ে জানা যায়, চাকরিচ্যুতির কারণে ফারজানা আর অফিসে আসছেন না।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: চ কর সরক র চ কর চ কর চ য ত ব যবহ র র চ কর ব ষয়ট
এছাড়াও পড়ুন:
গভীর রাতে বিএসএমএমইউ লেখার ওপর ‘বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়’ সাটিয়ে দিল একদল লোক
গভীর রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) বিভিন্ন দেখালে ‘বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়’ সাটিয়ে দিয়েছে একদল লোক। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) এর জায়গায় ‘বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়’ লেখা ব্যানার ও সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। শনিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে এ দৃশ্য দেখা গেছে।
তবে এখন পর্যন্ত নাম পরিবর্তনের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কিংবা ছাত্র-জনতার পক্ষে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য বা বিবৃতি পাওয়া যায়নি।
একটি সূত্র জানিয়েছে, ‘এই নামটি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দেয়নি, এটা নিশ্চিত হওয়া গেছে। সরকারি অনুমতি ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করতে পারেন না বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।’
শনিবার সকাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের চোখে পড়ে এমন সবগুলো স্থানে প্লাস্টিক ব্যানারে আগের নামের ওপরে নতুন নাম ‘বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়’ সাটিয়ে দিয়েছে। সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, সি ব্লক, ডি ব্লক, বি ব্লক, সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল, এফ ব্লকসহ মেইন গেটগুলোতে নতুন নাম সাটিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরতরা বেশি কিছু বলতে না পারলেও কয়েকজন জানিয়েছেন, তারা শুনেছেন গভীর রাতে ‘ছাত্র-জনতা’ পরিচয় দিয়ে একদল লোক নামের নতুন সাইনবোর্ডটি লাগিয়ে দিয়ে গেছে।