Samakal:
2025-02-08@06:06:18 GMT

মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় আইসিসি

Published: 8th, February 2025 GMT

মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় আইসিসি

যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলকে টার্গেট করা হচ্ছে দাবি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার তিনি এ-সংক্রান্ত একটি নির্বাহী আদেশে সই করেন। আদেশে হুমকি দেওয়া হয়, যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েলসহ তার মিত্রদের বিরুদ্ধে যারা তদন্ত করবেন, তাদের বিরুদ্ধে ট্রাম্প প্রশাসন বাস্তবিক ও শক্ত পদক্ষেপ নেবে। এ ধরনের তদন্ত জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি। 

গতকাল শুক্রবার দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। এ ধরনের বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা অত্যন্ত বিরল। গাজায় গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অভিযোগে গত নভেম্বরে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও তাঁর সরকারের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আইসিসি। এ সিদ্ধান্তকে বিশ্বব্যাপী স্বাগত জানানো হলেও কড়া সমালোচনা করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল।

ট্রাম্প তাঁর আদেশে বলেন, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আদালতের আদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রকে কেন্দ্র করে এর প্রারম্ভিক তদন্ত ভয়ানক নজির স্থাপন করেছে। এর সঙ্গে সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ত করা হয়েছে। এতে তাদের অপমানিত হওয়া বা আদালতে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার ঝুঁকি আছে। এটা করার কোনো আইনি বৈধতা আইসিসির নেই। তিনি আইসিসির বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারেরও অভিযোগ তোলেন।

ট্রাম্প প্রশাসন যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, তার মধ্যে আছে– আইসিসি যুক্তরাষ্ট্রে কোনো সম্পদ ক্রয় করতে পারবে না, আদালতের কোনো কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারের সদস্য দেশটিতে প্রবেশ করতে পারবেন না।  

বিবিসির প্রতিবেদন জানায়, নির্বাহী আদেশে এ নিষেধাজ্ঞার নিন্দা জানিয়েছেন নেদারল্যান্ডসের হেগের আদালত। শুক্রবার এক বিবৃতিতে আইসিসি বলেছেন, তারা তাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীর সঙ্গে দৃঢ়ভাবে আছেন। ট্রাম্পের এ ধরনের আদেশ স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বিচার প্রক্রিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। বিবৃতিতে বিশ্বব্যাপী ন্যায়বিচার চালিয়ে যাওয়া ও লাখ লাখ নির্দোষ ভুক্তভোগীর আশা হয়ে থাকার অঙ্গীকারও পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে। এর আগে ইউক্রেন আগ্রাসনের জন্য রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও রোহিঙ্গা নিপীড়নের দায়ে মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইংয়ের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আইসিসি। যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের ১২০টি দেশ এর সদস্য হলেও যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েল সেখানে নেই। 

প্রশ্ন উঠছে, ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞায় কতটুকু ক্ষতির মুখে পড়বে আইসিসি। আদালতের সাবেক কর্মকর্তা এরিক উইট ব্রাসেলস থেকে আলজাজিরাকে বলেন, এটা নির্ভর করছে সদস্য দেশগুলোর ওপর। তাদের অবশ্যই আইসিসির সমর্থনে এগিয়ে আসতে হবে। আইসিসি দুর্বল হলে কেবল ফিলিস্তিনিই নয়, ইউক্রেন, সুদান, আফগানিস্তানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কার্যক্রম চালানো কঠিন হবে। 

জার্মানি বলেছে, ট্রাম্প নিষেধাজ্ঞা দিলেও তারা আইসিসিকে সমর্থন দিয়ে যাবে। আর ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান বলেছেন, কোনো ধরনের বাধা ছাড়া আইসিসিকে অবশ্যই বিশ্বব্যাপী দায়মুক্তির বিরুদ্ধে কাজ করতে দিতে হবে। সামাজিক মাধ্যম এক্সে তিনি লেখেন, আন্তর্জাতিক অপরাধের জবাবদিহির নিশ্চয়তা দেন এ আদালত। ইউরোপ সব সময় ন্যায়বিচার ও আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের পাশে থাকবে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ল ব নন ইসর য় ল আইস স ইসর য় ল ধরন র আইস স

এছাড়াও পড়ুন:

গুমাই বিলে ঝাঁক বেঁধে উড়ছে বক

শস্যভান্ডারখ্যাত চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার গুমাই বিলে এখন ধান চাষের মৌসুম। বোরো রোপণের জন্য ব্যস্ত কৃষক। চলছে জমি প্রস্তুতের কাজ। পাওয়ার টিলার দিয়ে মাঠে নামতেই চারপাশে ঝাঁক বেঁধে ঘিরে ধরছে সাদা বক। মাটির ভেতর থেকে উঠে আসা পোকামাকড় খেয়ে ক্ষুধা নিবারণ করছে এই পাখি। বিলজুড়ে বকের ওড়াউড়ির দৃশ্য কঠোর পরিশ্রমের মাঝে কৃষকের মনে প্রশান্তি দেয়।

রাঙ্গুনিয়ার চন্দ্রঘোনা-কদমতলী ইউনিয়নের আধুরপাড়া অংশে গুমাই বিলের অবস্থান। কথিত আছে, এই বিলে উৎপাদিত ফসল দেশের মানুষের তিন দিনের অন্ন জোগান দিতে পারবে। বর্ষায় সেখানে থইথই পানি থাকে। অন্য সময়ে চলে আবাদ। এখন বোরো ধান চাষের মৌসুম। বিলে পানি সেচে মাটি প্রস্তুত করতে চলছে জোর প্রস্তুতি। এ সময়ে বিলে আসে হাজারও বক। খাদ্য আহরণের জন্য তারা ঝাঁক বেঁধে উড়ে বেড়ায়।

স্থানীয়রা বলছেন, গেল বছরের চেয়ে এবার বেশি বক উড়তে দেখা যাচ্ছে। শিকারিরা সুযোগ খুঁজলেও এলাকাবাসীর সচেতনতার কারণে শিকার করতে পারছে না। এতে বাধাহীন নিরাপদে উড়ছে বকের দল।

চন্দ্রঘোনার পাঠানগাড়া গ্রামের কৃষক নুরুল ইসলাম বলেন, গুমাই বিলে এক সময় ঝিল ছিল। তখন বিলজুড়ে ছিল মাছ আর মাছ। ওড়াউড়ি করত নানা প্রজাতির পাখি। এখন এগুলো শুধুই স্মৃতি।

চন্দ্রঘোনার ছুফিপাড়া গ্রামের মো. লোকমান বলেন, চাষাবাদের জন্য বিলে পানি দেওয়ার পর সাদা বক পোকামাকড় খেতে ছুটে আসে। স্থানীয় ভাষায় এই বককে ‘ধলা বোঘা’ বলে।

উপজেলা সহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা দীন মোহাম্মদ জানান, বাংলাদেশে ১৮ প্রজাতির বক রয়েছে। এসব পাখি প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষাসহ নানান ভূমিকা রাখছে। মাছ ছাড়াও জলজ পোকামাকড় খেয়ে ফসলের উপকার করে থাকে বক। এ পাখির খাদ্য ও নিরাপত্তার অভাব রয়েছে। পরিবেশ রক্ষার জন্য বক রক্ষা জরুরি।

রাঙ্গুনিয়ার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা উত্তম কুমার বলেন, বিলে পানি পড়ার সঙ্গে সঙ্গে সাদা বক দল বেঁধে আসতে শুরু করেছে। বকের ওড়াউড়ি দেখতে বিলে পাখিপ্রেমীরা ভিড় করছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস জানান, চলতি বোরো মৌসুমে জমি প্রস্তুতের সময় সাদা বক দলে দলে পোকামাকড় খাওয়ার জন্য বিলে বিচরণ করছে। এই পাখি চাষাবাদের জন্য খুবই উপকারী। তাই সবাইকে সচেতন হয়ে বক রক্ষা করতে হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদুল হাসান বলেন, সাদা বক আমাদের এলাকায় অতিথি হয়ে আসে। এই পাখি শিকার করা যাবে না। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে অবৈধভাবে পাখি শিকার করলে সাজার বিধান রয়েছে। যারা আইন অমান্য করে পাখি শিকার করবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ