ধানমন্ডি ৩২ নম্বরসহ বিভিন্ন স্থাপনায় ভাঙচুরের নিন্দা ব্লাস্টের
Published: 7th, February 2025 GMT
রাজধানীর ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িসহ সারা দেশের বিভিন্ন স্থাপনায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় নিন্দা ও উদ্বেগ জানিয়েছে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট)। গতকাল শুক্রবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থাটি এ নিন্দা ও উদ্বেগ জানায়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জুলাই-আগস্ট ২০২৪–এর হত্যাকাণ্ডের ঘটনা এখনো বিচারাধীন, আহত ব্যক্তিরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা এবং পুনর্বাসনের জন্য অপেক্ষা করছেন। এই পরিস্থিতিতে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখনো তার সরকারের স্বৈরাচারী কর্মকাণ্ড, মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং জুলাই-আগস্টের গণহত্যার জন্য দায় স্বীকার না করে, ওই ঘটনাগুলোর জন্য কোনো প্রকারের অনুতাপ প্রকাশ না করে, বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এই পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনার বক্তৃতাকে কেন্দ্র করে গত বুধবার রাতে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়ি, শেখ হাসিনার বাসভবন সুধা সদনসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়িঘরে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। এর নিন্দা জানিয়ে ব্লাস্ট বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, দ্রুততার সঙ্গে জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের যথাযথ তদন্ত ও বিচারসম্পন্ন, আহত ব্যক্তিদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে।
ব্লাস্টের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যর্থতার ফলে দেশব্যাপী বিশৃঙ্খল ও সংঘাতময় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, পুলিশ প্রশাসন যথাসময়ে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থ হয়েছে। এ ধরনের সংঘবদ্ধ হামলা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এভাবে স্থাপনা-সম্পত্তি ধ্বংস করা প্রচলিত আইনে ফৌজদারি অপরাধ। অনতিবিলম্বে এ ধরনের সহিংসতা প্রতিরোধ, শান্তি-শৃঙ্খলা ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি।
এ ধরনের ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম, সহিংসতা ও বিশৃঙ্খলা প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছে ব্লাস্ট।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জাপার ইফতার মাহফিল পণ্ড, গাড়ি ঘুরিয়ে ফিরে গেলেন জি এম কাদের
রাজধানীর পল্লবীতে বাধার মুখে জাতীয় পার্টির (জাপা) ইফতার মাহফিল ভন্ডুল হয়ে গেছে। আজ শনিবার পল্লবী থানাসংলগ্ন দুই নম্বর কমিউনিটি সেন্টারে এই ইফতার মাহফিল হওয়ার কথা ছিল। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের স্লোগান দিয়ে একদল উচ্ছৃঙ্খল যুবক ইফতার মাহফিল বন্ধ করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছে জাতীয় পার্টি। ওই ইফতারে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেওয়ার কথা ছিল।
জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রথমে পুলিশ এসে কমিউনিটি সেন্টারের তত্ত্বাবধায়ককে নিয়ে যায়। কিছু সময় পর তত্ত্বাবধায়ক ফিরে আসেন। তখন পুলিশ কমিউনিটি সেন্টারের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এরপর ২০-২৫ জন ছেলে এসে অশালীন স্লোগান দিয়ে ইফতার মাহফিলের ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে। উপস্থিত নেতা-কর্মীদের গালাগাল দিয়ে সেন্টার থেকে বের করে দেয়।’
জাতীয় পার্টির দায়িত্বশীল নেতারা জানিয়েছেন, যখন কমিউনিটি সেন্টারে গোলযোগ চলছিল, তখন জাপার চেয়ারম্যান জি এম কাদের পথে ছিলেন। খবর শুনে তিনি গাড়ি ঘুরিয়ে নিয়ে ফিরে যান।
অন্তর্বর্তী সরকার পক্ষপাতদুষ্টএ ঘটনার তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন জি এম কাদের। বিবৃতিতে তিনি বলেন,‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আমরা মাঠে ছিলাম। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যোগ দিয়ে জাতীয় পার্টির দুজন নেতা শহীদ হয়েছেন। অনেকেই মামলা ও হামলার শিকার হয়ে কারাবাস করেছেন। এ ছাড়া বিগত সরকারের সব দুর্নীতি ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে আমরা সোচ্চার ছিলাম। অথচ বর্তমান সরকার আমাদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করছে।’
জাতীয় পার্টিকে স্বাভাবিক রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনে বাধা দেওয়া হচ্ছে উল্লেখ করে জি এম কাদের বলেন, ‘বিভিন্ন স্থানে আমাদের পার্টি অফিস ভাঙচুর করা হয়েছে। প্রায় ক্ষেত্রেই পুলিশের সহযোগিতা চাওয়ার পরও পাওয়া যায়নি। এমনকি পরে থানায় জিডি (সাধারণ ডায়েরি) করতে গেলেও দায়িত্বরত ব্যক্তিরা তা গ্রহণে অনীহা প্রকাশ করেছেন। বিভিন্ন স্থানে মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার ও হয়রানি করা হচ্ছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আটক ব্যক্তিদের জামিন দেওয়া হচ্ছে না।’
জাপার চেয়ারম্যান অভিযোগ করেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার অনেক আগেই নিরপেক্ষতা হারিয়েছে। এই সরকারের প্রত্যক্ষ সহায়তায় একটি নতুন রাজনৈতিক দল সৃষ্টি হয়েছে। সরকারের আনুকূল্যে নতুন দলটি ক্ষমতার জন্য ভোটের মাঠে লড়াই করতে চাইবে। এমন বাস্তবতায় পক্ষপাতদুষ্ট অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলাই বোকামি। তা ছাড়া বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দৃষ্টে এ কথা বলা যায়, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে যে শক্তি ও সামর্থ্য দরকার, তা এই সরকারের নেই।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কথা উল্লেখ করে জি এম কাদের বলেন, এভাবে বেশি দিন চলতে থাকলে দেশ ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হবে বলে আশঙ্কা হয়।