Samakal:
2025-02-07@22:11:59 GMT

সাজানো মঞ্চের নায়ক তামিম

Published: 7th, February 2025 GMT

সাজানো মঞ্চের নায়ক তামিম

মাঠ থেকে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ইতি টানতে পারেননি তামিম ইকবাল। অবসরের সঙ্গে মিশে আছে বিশাদের গল্প। বিপিএল ফাইনালের ভরা গ্যালারিতে ওই তামিমকে দেওয়া হয় বিদায়ী সংবর্ধনা। সঙ্গে ফরচুন বরিশালকে নেতৃত্ব দিয়ে টানা দু’বার চ্যাম্পিয়ন করে এবং ফাইনালের সেরা ক্রিকেটার হয়ে সাজানো মঞ্চের নায়ক বনে গেছেন তামিম। 

বিপিএলের ফাইনালে জিততে হলে ইতিহাস গড়তে হতো তামিমের দলের। পূর্বে ১৯০ রানের গন্ডি মাড়িয়ে জিততে পারেনি কোন দল। ওই বৃত্ত ভাঙতে শুরু থেকে ঝড়ো ব্যাটিং করেন তামিম। তাওহীদ হৃদয়ের সঙ্গে ৭৬ রানের জুটিতে একাই যোগ করেন ২৯ বলে ৫৪ রান। নয়টি চারের সঙ্গে একটি ছক্কায় সাজান ঝড়ো ইনিংস। 

ফাইনালের আগে তামিম বলেছিলেন, জিততে হলে নির্ভার থাকবে হবে। একাদশ সাজাতেই ঠান্ডা মস্তিষ্কের প্রমাণ দেন তিনি। ফাইনালের জন্য জিমি নিশামকে উড়িয়ে আনলেও তাকে বেঞ্চ করে পেসার মোহাম্মদ আলীকে রাখেন একাদশে। তাকে কাজেও লাগিয়েছেন পরিকল্পনা মাফিক। যার ফলাফল- বড় রানের ম্যাচে পাকিস্তানের আলী ৪ ওভারে মাত্র ২১ রান দিয়ে নেন ১ উইকেট। 

বিদায়ী সংবর্ধনা মঞ্চেও শক্ত বার্তা দিয়েছেন তামিম ইকবাল। সাকিব, তামিম, মাশরাফির সমর্থক না হয়ে তরুণ এই দলটাকে সমর্থনের অনুরোধ করেছেন তিনি, ’ক্যারিয়ার জুড়ে ভক্তদের সমর্থন ছিল দারুণ। সেখানেই খেলতে গিয়েছি তাদের সমর্থন পেয়েছি। তবে ভক্তদের জন্য আমার একটা শেষ অনুরোধ থাকবে। সাকিব, তামিম, মাশরাফি নয় বাংলাদেশ ক্রিকেটকে ভালোবাসুন। এগুলো বন্ধ করুণ। এটা বাংলাদেশ ক্রিকেটকে নষ্ট করছে। আমাদের এই দলটা খুব তরুণ তাদের সমর্থন করুণ।’ 

তামিমের জন্য সাজানো বিদায়ী সংবর্ধনা মঞ্চে স্মৃতিচারণ করেন সাবেক ক্রিকেটার মোহাম্মদ আশরাফুল ও তামিমের সঙ্গে দীর্ঘদিন ড্রেসিংরুম ভাগাভাগি করা মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিকুর রহিম। বিপিএলে তামিমের দল বরিশালে খেলা মাহমুদউল্লাহ বলেন, আমরা মাঠ থেকে তার জাদুকরী ব্যাটিং দেখিছে। অনেক বছর দেশকে সার্ভিস দিয়েছেন। তার কারিশমা মিস করা হবে। মুশফিক জানান, তামিম বাংলাদেশের ইতিহাস সেরা ব্যাটার। তামিম সবার প্রতি খুবই দয়ালু। এটাই তার ব্যক্তিত্ব।

তামিমের বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে কথা বলেন তার স্ত্রীও। এ সময় তামিমের হাতে জাতীয় দলের তিন ফরম্যাটের জার্সি স্মরক হিসেবে তুলে দেওয়া হয়। তার সঙ্গে ছিলেন দুই সন্তান এবং বড় ভাই নাফিস ইকবাল ও তার পরিবার।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ত ম ম ইকব ল র সমর

এছাড়াও পড়ুন:

সাহসী সাহাবি হজরত যুবাইর (রা.)

খন্দকের যুদ্ধের সময়ের কথা। মদিনার ইহুদি গোত্র বনু কুরাইজা মুসলমানদের  সঙ্গে সম্পাদিত মৈত্রী চুক্তি ভেঙে ফেলে। রাসুল (সা.) তাঁদের অবস্থা জানতে গুপ্তচর হিসেবে কাউকে পাঠাতে চাইলেন। সাহাবাদের উদ্দেশ্য করে তিনি তিনবার জিজ্ঞেস করলেন, তোমাদের মধ্যে এমন কে আছে, যে তাদের সংবাদ নিয়ে আসতে পারবে? প্রত্যেকবারই যুবাইর (রা.) বললেন, আমি! ইয়া রাসুলুল্লাহ!

রাসুল (সা.) যুবাইর (রা.)-এর উদ্দীপনায় সংকট হয়ে বলেছিলেন, প্রত্যেক নবীরই একজন ঘনিষ্ঠ অনুসারী থাকে। যুবাইর আমার অনুসারী।

মক্কায় একবার এই গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল যে অবিশ্বাসীরা রাসুল (সা.)–কে বন্দী অথবা হত্যা করেছে। খবরটি শোনামাত্র একটি বালক ক্ষিপ্ত হয়ে তলোয়ার হাতে বেরিয়ে পড়ল। ঘটনাটির সত্য–অসত্য নিশ্চিত হওয়ার জন্য সে হাজির হলো রাসুল (সা.) এর দরবারে। রাসুল (সা.) তাঁকে দেখে জিজ্ঞেস করলেন, কী হয়েছে?

সে উত্তর দিল, আমি শুনেছি আপনি বন্দী অথবা নিহত হয়েছেন। তাই আমি প্রতিশোধ নিতে বেরিয়েছি।

তাঁর প্রতি বালকটির এমন ভালোবাসা আর সাহস দেখে রাসুল (সা.) অত্যন্ত মুগ্ধ হন। তিনি বালকটির জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করেন।

আরও পড়ুনজানাজার নামাজের নিয়ম ও ফজিলত ২৩ নভেম্বর ২০২৩

যুবাইর ইবনুল আওয়াম (রা.) নামে সেই বালকটিই ছিলেন জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত  সাহাবিদের একজন। মাত্র ১৬ বছর বয়সে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। তিনি প্রথম পর্বে ইসলাম গ্রহণকারীদের একজন।

যুবাইর (রা.)–এর মা হজরত সাফিয়া ছিলেন রাসুল (সা.)–এর ফুপু এবং যুবাইর (রা.)–এর স্ত্রী আসমা বিনতে আবু বকর ছিলেন উম্মুল মুমিনীন আয়েশা (রা.)–এর বোন।

অল্প বয়স থেকেই যুবাইর (রা.) ছিলেন খুব দুঃসাহসী। ছোটবেলা থেকেই তিনি বড় বড় পালোয়ান ও শক্তিশালী লোকদের সঙ্গে কুস্তি লড়তেন। যুদ্ধে অংশগ্রহণের ব্যাপারে তিনি ছিলেন অনন্য। অত্যন্ত বীরত্বের সঙ্গে ইসলামের প্রায় সব যুদ্ধেই অসামান্য অবদান রেখেছেন।

বদরের যুদ্ধে শত্রুপক্ষের আঘাতে যুবাইর (রা.)–র শরীর ক্ষতবিক্ষত হয়ে গিয়েছিল। একটি ক্ষতের গভীরতা গর্তের মতো হয়ে যায়। পরে তাঁর ছেলে বলেছিল, আমরা বাবার সেই গর্তে আঙুল ঢুকিয়ে খেলা করতাম।

আরও পড়ুনপাঁচ ওয়াক্ত নামাজ যেভাবে এল২৬ ডিসেম্বর ২০২৩

উহুদের ময়দানে যখন পরিস্থিতি মুসলিমদের প্রতিকূলে গিয়ে রাসুল (সা.) অরক্ষিত হয়ে পড়েন, সে সময় যে ১৪ জন সাহাবি নিজেদের জীবনের বিনিময়ে রাসুল (সা.)-কে কেন্দ্র করে প্রতিরোধ করেন যুবাইর (রা.) ছিলেন তাঁদের অন্যতম। তাঁর এমন দুঃসাহসী ও আত্মপ্রত্যয়ী হয়ে ওঠার পেছনে তাঁর মা সাফিয়া (রা.)–র অবদান ছিল অনেক।

মক্কা বিজয়ের দিন রাসুল (সা.) মুসলিম সেনাবাহিনীকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করেন। সর্বশেষ এবং ছোট দলটিতে ছিলেন রাসুল (সা.) নিজে। এ দলটির পতাকাবাহী ছিলেন যুবাইর (রা.)।

উহুদ যুদ্ধে তাঁর মামা হজরত হামজা (রা.) শাহাদত বরণ করেন তাঁর মা  সাফিয়া  (রা.) ভাইয়ের কাফনের জন্য দু টুকরো কাপড় নিয়ে আসেন। মামার পাশেই ছিল একজন আনসারি সাহাবির লাশ। একটি লাশের জন্য দুটি কাপড় হবে, আরেকটি লাশ থাকবে কাফনহীন—এ ব্যাপারটি তিনি মেনে নিতে পারছিলেন না। তাই তিনি দুজনের মধ্যে ভাগ করার জন্য কাপড় দুটি মাপলেন। লটারি করে বিষয়টি সমাধান করে  দুজনের জন্য দু টুকরো কাপড় দিয়ে কাফন করলেন।

উমর (রা.)–এর শাসনামলে ইয়ারমুক নামে একটি যুদ্ধ হয়। সে যুদ্ধে  যুবাইর  (রা.)  অসাধারণ ভূমিকা পালন করেন। যুদ্ধে যুবায়ের (রা.) মারাত্মকভাবে আহত হয়েছিলেন। উমর (রা.)–র মৃত্যুর পর শূরা কমিটিতে খলিফা নির্বাচনের জন্য যে ছয়জন  সাহাবির নাম ছিল, তাঁদের একজন ছিলেন যুবাইর (রা.)।

ইসলামের ইতিহাসে যুবাইর (রা.)–র অসামান্য অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে চিরদিন।

আরও পড়ুননামাজে অন্য চিন্তা আসবে না অর্থ বুঝে পড়লে১৯ জানুয়ারি ২০২৪

সম্পর্কিত নিবন্ধ