খুলনায় যৌতুকের জন্য গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন এলাকার বাসিন্দারা। আজ শুক্রবার বিকেলে নগরের টুটুল নগর মোস্তফার মোড় এলাকায় আয়োজিত কর্মসূচি থেকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান নিহত গৃহবধূর স্বজন ও প্রতিবেশীরা।

নিহত মারিয়া সুলাতানা বৈশাখী (২২) নগরের মুজগুন্নী ভিক্টোরিয়া ক্লাবের বিপরীতে সরদার বাড়ির মাসুম বিল্লাহর স্ত্রী। মারিয়ার বাবার বাড়ির লোকজনের অভিযোগ, যৌতুকের জন্য মারিয়াকে নির্যাতন করে মেরে ফেলা হয়েছে। ৪ ফেব্রুয়ারি এ ঘটনার দিনই খালিশপুর থানায় মারিয়ার স্বামী মাসুম বিল্লাহ (৩৪) ও শাশুড়ি নুরজাহান বেগমের (৫৫) বিরুদ্ধে যৌতুকের দাবিতে মারপিট করে হত্যার অভিযোগে মামলা করা হয়।

আজ বেলা সাড়ে তিনটার দিকে মারিয়ার বাবার বাড়ি নগরের টুটুলনগর মোস্তফার মোড় এলাকায় স্বজন ও প্রতিবেশীরা দীর্ঘ মানববন্ধন তৈরি করেন। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলা মানববন্ধনে মারিয়া হত্যার বিচার দাবি জানানো হয়। এ সময় তাঁরা আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় তাঁরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভও করেন।

মারিয়ার বাবা মোহাম্মদ মিলন হোসেন বলেন, ‘বিয়ের পর থেকেই আমার মেয়েকে স্বামী ও শাশুড়ি দুজন সব সময় অত্যাচার করত। যৌতুকের টাকা চাইত। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে আমি একাধিকবার যৌতুক দিয়েছি। মাসখানেক আগেও আমার মেয়েকে যৌতুকের টাকা এনে দিতে বলায় সে রাজি না হওয়ায় স্বামী ও শাশুড়ি মিলে মারধর করে।’

মিলন হোসেন বলেন, ৪ ফেব্রুয়ারি তাঁর মেয়েকে মারধর করে মেরে ফেলে হাসপাতালে নেওয়া হয়। মেয়ের মৃত্যুর কারণ জানতে চাইলে জামাতাসহ তাঁদের সঙ্গে থাকা লোকজন তাঁকে হুমকি দেন। তাঁরা মারিয়ার মৃতদেহ বাবার বাড়িতে নিয়ে দাফন করার জন্য চাপ দেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁকে জানায় মৃত অবস্থায় মারিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। মারিয়ার শরীরে মারধরের আঘাতের চিহ্ন ছিল।

মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা খালিশপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মিলন সরকার প্রথম আলোকে বলেন, আইনানুগ প্রক্রিয়ায় তদন্ত চলছে। আসামি দুজন পলাতক আছে। তাঁদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

ব্যাটারিচালিত যানের লাইসেন্স ও নীতিমালা দাবি

ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান, ইজিবাইকের লাইসেন্স, চলাচল-সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন ও আধুনিকায়নের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুর ১২টার দিকে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে রিকশা, ব্যাটারি রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদ নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখা এ মানববন্ধনের আয়োজন করে।

মানববন্ধন শেষে একটি প্রতিনিধি দল বিআরটিএ চেয়ারম্যান বরাবর জেলার সহকারী পরিচালকের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। মানববন্ধনে বক্তব্য দেন সংগ্রাম পরিষদের জেলা শাখার উপদেষ্টা সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি আবু নাঈম খান বিপ্লব, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি সেলিম মাহমুদ, জেলার সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শরীফ, রি-রোলিং স্টিল মিলস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি জামাল হোসেন, সংগ্রাম পরিষদ নেতা হাসনাত কবীর, কামাল হোসেন, তাজুল ইসলাম, শফিক, মাসুদ প্রমুখ।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, রিকশা চালানো অমানুষিক পরিশ্রমের কাজ। প্রচণ্ড দাবদাহ, প্রবল বৃষ্টি কিংবা তীব্র শীতেও নিজের জীবিকা ও যাত্রীর সুবিধার কথা ভেবে দিনে এবং রাতে রিকশাচালকরা রাস্তায় রিকশা চালিয়ে থাকেন। চালকদের পরিশ্রম লাঘব করা, যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্য ও খরচ কমানোর কথা বিবেচনা করে সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে রিকশায় ব্যাটারি স্থাপন করা শুরু হয়। প্রথমদিকে নির্মাণজনিত কিছুটা দুর্বলতা থাকলেও ইতোমধ্যে তার অনেকাংশই দূর করে আধুনিকায়ন করা সম্ভব হয়েছে। ফলে দ্রুত এই বাহন যেমন জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে, তেমনি ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশে।

এইসব বাহন ব্যবহার সহজ, সস্তা এবং শহরের ছোট রাস্তায় চলতে পারে বলে স্বল্প আয়ের মানুষের দৈনন্দিন কাজে অপরিহার্য এক বাহন হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু প্রায়ই দেখা যায়, ব্যাটারিচালিত যানবাহনের মালিক ও চালকরা অমানবিক নির্যাতনের শিকার হন। ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলে বাধা সৃষ্টি করা হয়, অস্বাভাবিক জরিমানা করা হয়, অনেক সময় ভেঙে ফেলা হয়। দরিদ্র রিকশাচালক, অল্প পুঁজির রিকশা মালিকদের কথা ভাবা হয় না।

তারা আরও বলেন, সারাদেশে প্রায় ৫০ লাখ চালক ও তাদের পরিবার এইসব ব্যাটারিচালিত থ্রি হুইলার ও সমজাতীয় যানবাহনের ওপর প্রত্যক্ষভাবে নির্ভরশীল। এইসব যানবাহন তৈরি, মেরামত, খুচরা যন্ত্রাংশ নির্মাণ, বিক্রি, চার্জিংসহ নানা ধরনের কাজে অসংখ্য মানুষের জীবন ও জীবিকা নির্ভরশীল। নারায়ণগঞ্জসহ দেশের সব জেলা ও বিভাগে নগর পরিবহন নেই, ফলে কোটি কোটি মানুষ ব্যাটারিচালিত যানবাহন ব্যবহার করে থাকে। এই খাত যেমন বিপুল কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে, তেমনি দেশের অর্থনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এইসব বাহন বিদ্যুতে চলে বলে পরিবেশ দূষণ কম হয়।

বিদ্যুৎ ব্যবহারের কারণে এদের বিরুদ্ধে বিদ্যুৎ চুরি এবং অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ব্যবহারের অভিযোগ করা হয়। অথচ এইসব বাহন বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী, চালকরা বিদ্যুৎ চুরি করে না বরং বর্ধিত দামে (প্রায় ২৫ টাকা ইউনিট) বিদ্যুৎ কিনে থাকে। তাই কর্মসংস্থান, জীবিকা, যাতায়াত এবং দেশের অর্থনীতির বিকাশের কথা বিবেচনা করে তারা ৫০ লাখ ব্যাটারিচালিত বাহনকে নিবন্ধন ও চালকদের লাইসেন্স দেওয়ার দাবি জানান। এর মাধ্যমে সরকারের কয়েক হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় হবে বলে তারা জানান।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সৌদি আরবের বিমানভাড়া এত বাড়ল কেন, প্রশ্ন রাশেদ খাঁনের
  • ব্যাটারিচালিত যানের লাইসেন্স ও নীতিমালা দাবি
  • ব্যবসায়ীদের মানববন্ধন, মালয়েশিয়ায় ফের সিন্ডিকেটের শঙ্কা
  • মামলা না করে আসামি গ্রেপ্তারের দাবি, পুলিশ বলছে চাপ সৃষ্টি
  • ‘বাবার শেষ চিহ্নটুকু ফিরিয়ে দিন’
  • রূপগঞ্জে সরকারী আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাদের মানববন্ধন
  • রূপগঞ্জে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাদের মানববন্ধন