১৮ বছর পর বেসরকারি উদ্যোগে চালু হচ্ছে কুড়িগ্রাম টেক্সটাইল মিলস
Published: 7th, February 2025 GMT
দীর্ঘ প্রায় ১৮ বছর বন্ধ থাকার পর বেসরকারি উদ্যোগে চালু হচ্ছে কুড়িগ্রাম টেক্সটাইল মিলস। কুড়িগ্রাম পৌর শহরের নাজিরাপাড়ায় অবস্থিত বস্ত্রকলটি দীর্ঘ মেয়াদে নবায়নযোগ্য লিজ পদ্ধতিতে পরিচালনা করবে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং প্রাইভেট লিমিটেড। বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস করপোরেশন (বিটিএমসি) আজ শুক্রবার কারখানাটি নতুন উদ্যোক্তার কাছে হস্তান্তর করেছে। এ উপলক্ষে কুড়িগ্রাম টেক্সটাইল মিলস চত্বরে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
কুড়িগ্রাম টেক্সটাইল মিলস কর্তৃপক্ষের সূত্রে জানা গেছে, চুক্তি অনুযায়ী ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনয়ারিং লিজ পদ্ধতিতে ৩০ বছর মেয়াদে কুড়িগ্রাম টেক্সটাইল মিলস পরিচালনা করবে। তারা বস্ত্রকলটিতে চারটি পণ্য উৎপাদন করবে। নতুন উদ্যোগে পরিচালনার ফলে এ কারখানায় স্থানীয় প্রায় দুই হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে।
বিটিএমসির কর্মকর্তারা জানান, ১৯৮৬ সালে তৎকালীন সরকার এ অঞ্চলের বেকার সমস্যা দূরীকরণ ও আর্থসামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে বস্ত্রকলটি স্থাপন করে। শুরুর দিকে এটি ভালোভাবে চললেও পরে সমস্যা দেখা দেয়। ২০০৭ সালে উৎপাদন জটিলতার কারণে কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং লিজ পদ্ধতিতে এটি পরিচালনা করবে।
কুড়িগ্রাম টেক্সটাইল মিলসের হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বিটিএমসির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার এস এম জাহিদ হোসেন, মহাব্যবস্থাপক (জিএম) কাজী ফিরোজ হোসেন, ওয়েস্টার্ন গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বসির আহমেদসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বসির আহমেদ বলেন, ‘উত্তরবঙ্গের মতো ভালো মানুষ বাংলাদেশের আর কোথাও আছে কি না, আমার জানা নেই। এখানকার মানুষকে আমি খুব পছন্দ করি। এখানে শিল্পপ্রতিষ্ঠান করলে খুব একটা লাভজনক হবে বলে আমরা মনে করি না। তবু এ অঞ্চলের মানুষের প্রতি ভালোবাসা থেকে এখানে আমরা কাজ করতে চাইছি।’
বসির আহমেদ আরও বলেন, ‘আমার বিশ্বাস, এ অঞ্চলের মানুষের কাছ থেকে আমরা সহযোগিতা পাব। আমি এখানে এমন কিছু শিল্প করতে চাই, যাতে স্থানীয় লোকদের জন্য বিশাল কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
বোনের মরদেহ রিকশায় করে বাড়ি নিয়ে আসি: চিরঞ্জীবী
ভারতের বরেণ্য অভিনয়শিল্পী, অন্ধ্রপ্রদেশের প্রাক্তন মন্ত্রী চিরঞ্জীবী। চার দশকের অভিনয় ক্যারিয়ারে তেলেগু, তামিল, হিন্দি, কন্নড় ভাষার অনেক সফল সিনেমা উপহার দিয়েছেন। বিশেষ করে তেলেগু ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে তার অবদান অনেক।
চিরঞ্জীবী তার একজীবনে যশ-খ্যাতি যেমন কুড়িয়েছেন, তেমনি অঢেল সম্পদেরও মালিক। উত্তরাধিকার হিসেবে পুত্র রাম চরণ নিজেকে উচ্চ অবস্থানে নিয়ে গেছেন। আপাত দৃষ্টিতে মনে হয়, তার জীবনে অপূর্ণতা বলতে কিছু নেই! কিন্তু আদতে জীবন এমন নয়। কারণ মানুষের জীবনের ভাঁজে ভাঁজে গল্প লুকিয়ে থাকে। চিরঞ্জীবী তার পারিবারিক অজানা অধ্যায় শেয়ার করেছেন একটি পডকাস্টে।
চিরঞ্জীবীর আসল নাম শিব শংকর ভারা প্রসাদ কোন্দিলা। তবে চিরঞ্জীবী নামেই অধিক পরিচিত। তার বাবার নাম কোন্দিলা ভেঙ্কট রাও আর মায়ের নাম অঞ্জনা। তার বাবা-মা সংগ্রামী জীবনযাপন করেছেন। বিশেষ করে তার মা বড় ধরনের ট্র্যাজেডির মধ্য দিয়ে জীবন কাটিয়েছেন।
চিরঞ্জীবী বলেন, “এমন একটি ঘটনা আছে, যা নিয়ে ভাবলেই চোখে জল চলে আসে। গর্ভপাতের কারণে আম্মা তিন সন্তানকে হারান। অথবা এক বছর, দুই বছর এবং আড়াই বছরের সন্তানকে হারান আমার আম্মা।”
ভাই-বোনদের একা সামলাতেন চিরঞ্জীবীর মা। তা জানিয়ে এই অভিনেতা বলেন, “আমি যখন ক্লাস সিক্সে পড়ি, তখন আমার একটি বোনের জন্ম হয়, তার নাম ছিল রমনা। সেই সময়ে বাবা প্রতিদিন বাইরে চলে যেতেন আর আম্মা একাই আমাদের সামলাতেন।”
চিরঞ্জীবীর এক বোন মারা যায়। সেই ঘটনার বর্ণনা দিয়ে এই মেগাস্টার বলেন, “আমার বোন রমনার ব্রেইন টিউমার ধরা পড়ে। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। আমি আর আম্মা বোনের মরদেহ রিকশায় করে বাড়ি নিয়ে এসেছিলাম। আমরা জানতাম না কীভাবে শেষকৃত্য সম্পন্ন করতে হয়। সেই সময়ে আমাদের প্রতিবেশী ছিল একটি মুসলিম পরিবার। তারা আমাদের সহযোগিতা করে। খবর পেয়ে বাবা বাড়ি আসেন। এরপর আমরা বোনের শেষকৃত্য সম্পন্ন করি।”
সর্বশেষ কোন্দিলা ভেঙ্কট রাও এবং অঞ্জনা দম্পতির চার সন্তান জীবিত রয়েছেন। তারা হলেন— চিরঞ্জীবী, নাগেন্দ্র বাবু, পবন কল্যাণ ও বিজয়া দুর্গা।
১৯৭৮ সালে তেলেগু ভাষার ‘পুনাধিরুলু’ সিনেমার মাধ্যমে রুপালি পর্দায় পা রাখেন চিরঞ্জীবী। দীর্ঘ অভিনয় ক্যারিয়ারে বিভিন্ন ভাষার ১৫০টির বেশি সিনেমায় কাজ করেছেন। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমার মধ্যে রয়েছে— ‘খাইদি’, ‘পাসিবাড়ি প্রণাম’, ‘ইয়ামুডিকি মুগুডু’, ‘গ্যাং লিডার’, ‘ঘরনা মুগুডু’ প্রভৃতি।
কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ গত বছর ভারত সরকার চিরঞ্জীবীকে পদ্মবিভূষণ পুরস্কার দিয়েছে। ২০০৬ সালে এই দক্ষিণী মেগাস্টারকে পদ্মভূষণ পুরস্কারে সম্মানিত করা হয়।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
ঢাকা/শান্ত