ভারত-চীন-যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখব
Published: 7th, February 2025 GMT
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বাসসকে বলেছেন, ‘বাংলাদেশকে ভারত, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। কারণ তিনটি দেশই আমাদের জন্য কৌশলগত গুরুত্ব বহন করে।’
ছয় মাসে বৈদেশিক সম্পর্ক সম্পর্কিত সরকারের অর্জন সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমরা সেই চ্যালেঞ্জগুলো কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছি ও বিশ্বব্যাপী বিপুল সমর্থন পেয়েছি। অর্থনীতি হোক বা রাজনীতি, দেশ সঠিক পথে এগিয়ে চলেছে এবং আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এ বিষয়ে সফলভাবে বোঝাতে পেরেছি।’
তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস গত ছয় মাসে বেশ কয়েকটি হাই-প্রোফাইল আন্তর্জাতিক সমাবেশে যোগ দিয়েছেন এবং যথাযথ সম্মান অর্জন করেছেন। আমাদের কূটনৈতিক কর্মকাণ্ডে আমরা ড.
বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানের সঙ্গে বৈরিতার সম্পর্ক বজায় রাখার কোনো কারণ নেই। আওয়ামী লীগ শাসনামলে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক টানাপোড়েনে রাখার একটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রয়াস ছিল। তবে আমরা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনতে কাজ করেছি। পাকিস্তানও সম্পর্ক উন্নয়নের উদ্যোগ নিয়েছে এবং আমরা তা স্বাগত জানিয়েছি। অন্তর্বর্তী সরকারের বিবেচনা অনুসারে দক্ষিণ এশীয় দুটি দেশ বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে অভিন্ন স্বার্থ রয়েছে এবং এই দৃষ্টিভঙ্গির ফলে দুই দেশের মধ্যে সমুদ্র যোগাযোগ পুনরায় চালু করা উভয়ের জন্যই লাভজনক। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরও দুই দেশের মধ্যে কিছু সমস্যা অমীমাংসিত রয়ে গেছে। তবে আমরা এই বিষয়গুলোতে স্থির থাকলে কোনো পক্ষই লাভবান হবে না। আমরা অবশ্যই আমাদের স্বার্থ রক্ষা ও পুনরুদ্ধার করার চেষ্টা করব। তবে একইসঙ্গে পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে অন্য যেকোনো দেশের মতোই দেখতে চাই।’
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে অস্বস্তির অনুভূতি তৈরি হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে আমরা নয়াদিল্লির সঙ্গে এই অস্বস্তি দূর করার চেষ্টা করেছি। অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্য ছিল ভারতের সঙ্গে এমন একটি সম্পর্ক স্থাপন করা, যা পারস্পরিক সুবিধা নিশ্চিত করতে পারে এবং উভয় দেশের স্বার্থ সুরক্ষিত করতে পারে এবং সেই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ড. ইউনূসের টেলিফোনে কথোপকথন এবং জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ফাঁকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে সাক্ষাৎসহ দ্বিপাক্ষিক আলাপচারিতা উন্নত সম্পর্কের ক্ষেত্র তৈরি করেছে। কিছু বাধা আসতে পারে, এটা স্বাভাবিক। উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এলে বাধা আসে। আমরা উভয় পক্ষের সুবিধার জন্য এই বাধাগুলো কাটিয়ে একটি ভালো কার্যকরী সম্পর্ক তৈরি করার লক্ষ্য রাখি।’
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক উপদেষ্টা বলেন, ‘সাম্প্রতিক পররাষ্ট্র উপদেষ্টার বেইজিং সফরে দ্বিপাক্ষিক বিষয়, উন্নয়ন প্রকল্প ও বাণিজ্য নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে। চীনকে তার নীতিগত অবস্থান সম্পর্কে আশ্বস্ত করতে সক্ষম হয়েছে ঢাকা। বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে এবং আমরা আশাবাদী, সম্পর্ক সঠিক পথে এগোবে ও অগ্রগতি অব্যাহত থাকবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক বেইজিংয়ের সঙ্গে তার সম্পর্কের ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে না। চীন দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা জোরদার করার এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতি বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। বেইজিংকে ঋণের সুদের হার কমাতে এবং ঋণ পরিশোধের সময়কাল ২০ থেকে ৩০ বছর বাড়ানোর অনুরোধ করেছি। চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঋণ পরিশোধের সময়কাল বাড়ানোর বিষয়ে আমাকে আশ্বস্ত করেছেন এবং সুদের হার কমানোর অনুরোধটি খতিয়ে দেখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।’
বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পর বাংলাদেশ-মার্কিন সম্পর্কের ক্ষেত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে বলে ঢাকা মনে করে না। ওয়াশিংটনের সঙ্গে সম্পর্ক স্থিতিশীল থাকবে।’
ট্রাম্পের সাহায্য হ্রাসের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে বলতে গিয়ে উপদেষ্টা এটিকে প্রত্যাশিত’ বলে বর্ণনা করেছেন এবং সবাইকে মনে করিয়ে দিয়েছেন, ইউএসএইডের অস্থায়ী সাহায্য স্থগিতাদেশ কোনো নির্দিষ্ট দেশকে লক্ষ্য করে নয়। তিনি বলেন, ‘নতুন মার্কিন প্রশাসন এমন নীতি চালু করেছে, যা তার পূর্বসূরির থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে ভিন্ন। আমাদের চূড়ান্ত ফলাফল দেখতে হবে এবং সেই অনুযায়ী মানিয়ে নিতে হবে।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: পরর ষ ট র উপদ ষ ট পরর ষ ট র সরক র র উপদ ষ ট আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
দলকে জিতিয়েও সোহানের ৩ রানের আক্ষেপ
২৮১ রানের লক্ষ্য তাড়ায় দারুণ ব্যাটিং করলেন কাজী নুরুল হাসান সোহান। সেঞ্চুরিতে রাঙানোর সুযোগ ছিল তার ইনিংস। সেদিকেই এগিয়ে যেতে থাকলেন। কিন্তু ধানমন্ডি স্পোর্টস ক্লাবের অধিনায়ক আটকে গেলেন ৯৭ রানে। তার ৩ রানের আক্ষেপের দিনে অবশ্য দল জয় হাতছাড়া করেনি। রূপগঞ্জ টাইগার্সের করা ২৮০ রান তারা পেরিয়ে যায় ৪৭.১ ওভারে ৫ উইকেট হাতে রেখে।
চায়নাম্যান নুহায়েল সানজিদের শর্ট বল পুল করতে গিয়ে মিড উইকেটে ক্যাচ দেন সোহান। ৯৫ বলে ৯ চার ও ২ ছক্কায় ইনিংসটি সাজান এই ব্যাটসম্যান। সেঞ্চুরি মিস হলেও ম্যাচসেরার পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। এছাড়া ধানমন্ডির হয়ে রান পেয়েছেন ইয়াসির আলী চৌধুরী। ৪০ বলে ৫ চার ও ৩ ছক্কায় ৫৫ রান করেন তিনি। এছাড়া চল্লিশের ঘরে আটকে যান ফজলে মাহমুদ (৪৭), আজমির আহমেদ (৪০)। ওপেনার হাবিবুর রহমান সোহানের ব্যাট থেকে আসে ৩৩ রান।
আরো পড়ুন:
অদ্ভুতুড়ে আউট ঢাকা লিগে বিতর্ক
পারিশ্রমিক না পেলে ম্যাচ বয়কটের হুমকি পারটেক্সের
রূপগঞ্জ টাইগার্সের হয়ে বল হাতে ৬৫ রানে ৩ উইকেট নেন নুহায়েল। এর আগে ব্যাটিংয়ে তাদের সেরা ছিলেন নাসির হোসেন ও আসাদুল্লাহ গালিব। নাসির ৮৪ বলে ৮ চার ও ৩ ছক্কায় ৭৭ রান করেন। আসাদুল্লাহ ৮০ বলে ৫ চার ও ১ ছক্কায় করেন ৬৫ রান। শেষ দিকে আরিফুল হক ২৮ বলে ৬ ছক্কায় ৪৮ রান করেন। তাকে সঙ্গ দিয়ে নুহায়েল ২৬ বলে ৩৪ রান করলে তিনশর কাছাকাছি পুঁজি পায় রূপগঞ্জ। কিন্তু সোহানের দৃঢ়তায় ওই রান অনায়েসে টপকে যায় ধানমন্ডি। ধানমন্ডির হয়ে বল হাতে ৫৯ রানে ৩ উইকেট নেন ফজলে মাহমুদ।
১০ ম্যাচে এটি ধানমন্ডির চতুর্থ জয়। শেষ রাউন্ডের ম্যাচ জিতলেও তাদের সুপার লিগে উঠা হচ্ছে না। রূপগঞ্জ টাইগার্সের এটি সমান ম্যাচে সপ্তম হার।
ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল