বিবৃতি না, সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে: টিআইবি
Published: 7th, February 2025 GMT
গত দুই দিনের সহিংসতায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। শুক্রবার এক বিবৃতিতে সংস্থাটি বলেছে, দায়সারা বিবৃতি না, সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বিবৃতিতে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও এর চেতনার অপূরণীয় ক্ষতি করেছে শেখ হাসিনা ও তাঁর দোসররা। হাসিনা ও তাঁর সহযোগীদের প্রচারণায় দেশবাসীর ক্ষোভের মাত্রা বেড়েছে। তাই বলে আইনসিদ্ধ প্রতিক্রিয়ার পথ অনুসরণ না করে যে ভাঙচুর ও সহিংসতা চলেছে, তা গ্রহণযোগ্য নয়। এটি জুলাই অভ্যুত্থান-পরবর্তী একটি স্থিতিশীল বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক বার্তা দেবে।’
নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, ‘আগে থেকে কর্মসূচির ঘোষণা থাকার পরও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা ও সেনাবাহিনী তথা সরকার সহিংসতা ঠেকাতে নির্লিপ্ততার পরিচয় দিয়েছে। পরে ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত বলে বিবৃতি দিয়ে দায় এড়ানোর চেষ্টাও লক্ষণীয়। কর্তৃত্ববাদের ১৬ বছরের পুঞ্জীভূত বিশাল জঞ্জাল অপসারণ করে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় অন্তর্বর্তী সরকারের সদিচ্ছা হয়তো বিতর্কের ঊর্ধ্বে। তবে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো কতটা সক্রিয়, এ প্রশ্ন উঠতে পারে। তাই শুধু দায়সারা বিবৃতি দিয়ে নয়, যে কোনো পরিস্থিতি আইনসিদ্ধভাবে মোকাবিলায় সরকারকে দৃশ্যমান ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।’
উদ্ভূত পরিস্থিতি কর্তৃত্ববাদের পুনরুত্থানকে সুযোগ করে দেওয়ার শঙ্কা তৈরি করছে বলে মনে করেন নির্বাহী পরিচালক। তিনি বিবৃতিতে বলেন, ‘এমনটি অব্যাহত থাকলে নজিরবিহীন আত্মত্যাগের বিনিময়ে সূচিত নতুন বাংলাদেশের লক্ষ্য অর্জনের পথ রুদ্ধ হয়ে পড়বে। একই সঙ্গে গণতান্ত্রিক উত্তরণ, সুশাসন এবং সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতার সম্ভাবনাকে খাদের কিনারায় ঠেলে দেওয়া হবে। মনে রাখা দরকার, কর্তৃত্ববাদের সব দোসরকে সুনির্দিষ্ট অপরাধে শাস্তি ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা নতুন বাংলাদেশের প্রাধান্য। তবে এ জন্য প্রতিশোধপ্রবণ ও আত্মঘাতী মব জাস্টিস নয়, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক আইনের পথ অনুসরণ করা বাধ্যতামূলক।’
এদিকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়েছে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি। অনতিবিলম্বে গত দুই দিনব্যাপী সারাদেশে ঘটে যাওয়া সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবিও জানিয়েছে দলটি। গতকাল ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর এক বিবৃতিতে এই নিন্দা ও ক্ষোভ জানানো হয়।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সৎমেয়েকে গরম ছুরি দিয়ে ঝলসে দিয়েছিলেন বাবা, ৬ মাসের দণ্ড
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় সৎমেয়েকে ছুরি গরম করে ছেঁকা ও নির্যাতনের ঘটনায় বাবাকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। গতকাল রোববার রাতে সহকারী কমিশনার (ভূমি) আতার শাকিল এই সাজা দেন।
সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম শামসুজ্জামান মান্নান (৩৫)। তিনি সপরিবার মাওনা চৌরাস্তার পাশে মুন্সিবাড়ি এলাকায় একটি বাড়িতে ভাড়া থাকেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার তালুয়াচাঁদপুর গ্রামে।
গত শুক্রবার রাত ৯টায় দিকে মরিয়ম (৪) নামের শিশুটি নির্যাতনের শিকার হয়। শিশুটির মা জানান, গত শুক্রবার রাতে তিনি পাশের ঘরে ছিলেন। এ সময় চিৎকারের শব্দ শুনে মেয়ের কাছে দৌড়ে আসেন। দেখেন, তাঁর স্বামী ছুরি গরম করে মরিয়মের বাহুতে ছেঁকা দিচ্ছেন। পরে তাকে স্থানীয় একটি ফার্মেসিতে নিয়ে চিকিৎসা করান। দুই দিন পর থেকে ক্ষতস্থানে সংক্রমণ দেখা দেয়। তাকে আবার চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান।
শিশুটির মা অভিযোগ করেন, রাগ উঠলেই তাঁর স্বামী মরিয়মকে নৃশংসভাবে মারধর করেন। মাঝেমধ্যে নেশা করে বাসায় এসে তাঁকে ও তাঁর সন্তানকেও মারধর করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সজীব আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় লোকজনের কাছে তাঁরা খবর পেয়েছিলেন মাদকাসক্ত অবস্থায় এক ব্যক্তি তাঁর স্ত্রী ও কন্যাশিশুকে নির্যাতন করছেন। পুলিশ সদস্যদের নিয়ে সেখানে অভিযান চালানো হয়। ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে শামসুজ্জামানকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।