গত দুই দিনের সহিংসতায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। শুক্রবার এক বিবৃতিতে সংস্থাটি বলেছে, দায়সারা বিবৃতি না, সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বিবৃতিতে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও এর চেতনার অপূরণীয় ক্ষতি করেছে শেখ হাসিনা ও তাঁর দোসররা। হাসিনা ও তাঁর সহযোগীদের প্রচারণায় দেশবাসীর ক্ষোভের মাত্রা বেড়েছে। তাই বলে আইনসিদ্ধ প্রতিক্রিয়ার পথ অনুসরণ না করে যে ভাঙচুর ও সহিংসতা চলেছে, তা গ্রহণযোগ্য নয়। এটি জুলাই অভ্যুত্থান-পরবর্তী একটি স্থিতিশীল বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক বার্তা দেবে।’

নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, ‘আগে থেকে কর্মসূচির ঘোষণা থাকার পরও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা ও সেনাবাহিনী তথা সরকার সহিংসতা ঠেকাতে নির্লিপ্ততার পরিচয় দিয়েছে। পরে ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত বলে বিবৃতি দিয়ে দায় এড়ানোর চেষ্টাও লক্ষণীয়। কর্তৃত্ববাদের ১৬ বছরের পুঞ্জীভূত বিশাল জঞ্জাল অপসারণ করে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় অন্তর্বর্তী সরকারের সদিচ্ছা হয়তো বিতর্কের ঊর্ধ্বে। তবে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো কতটা সক্রিয়, এ প্রশ্ন উঠতে পারে। তাই শুধু দায়সারা বিবৃতি দিয়ে নয়, যে কোনো পরিস্থিতি আইনসিদ্ধভাবে মোকাবিলায় সরকারকে দৃশ্যমান ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।’

উদ্ভূত পরিস্থিতি কর্তৃত্ববাদের পুনরুত্থানকে সুযোগ করে দেওয়ার শঙ্কা তৈরি করছে বলে মনে করেন নির্বাহী পরিচালক। তিনি বিবৃতিতে বলেন, ‘এমনটি অব্যাহত থাকলে নজিরবিহীন আত্মত্যাগের বিনিময়ে সূচিত নতুন বাংলাদেশের লক্ষ্য অর্জনের পথ রুদ্ধ হয়ে পড়বে। একই সঙ্গে গণতান্ত্রিক উত্তরণ, সুশাসন এবং সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতার সম্ভাবনাকে খাদের কিনারায় ঠেলে দেওয়া হবে। মনে রাখা দরকার, কর্তৃত্ববাদের সব দোসরকে সুনির্দিষ্ট অপরাধে শাস্তি ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা নতুন বাংলাদেশের প্রাধান্য। তবে এ জন্য প্রতিশোধপ্রবণ ও আত্মঘাতী মব জাস্টিস নয়, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক আইনের পথ অনুসরণ করা বাধ্যতামূলক।’

এদিকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়েছে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি। অনতিবিলম্বে গত দুই দিনব্যাপী সারাদেশে ঘটে যাওয়া সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবিও জানিয়েছে দলটি। গতকাল ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর এক বিবৃতিতে এই নিন্দা ও ক্ষোভ জানানো হয়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ট আইব সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

কামরাঙ্গীরচরে চা দোকানিকে মারধরের পর হাতবোমার বিস্ফোরণ, পরে গণপিটুনিতে দুজন নিহত

রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে গণপিটুনিতে মো. মাসুদ (২৯) ও নাদিম (৩৫) নামের দুই যুবক নিহত হয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন সোহাগ (৩০) নামের একজন। বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে কামরাঙ্গীরচরের সিলেটিয়া বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ জানিয়েছে, গণপিটুনির শিকার ৩ ব্যক্তিসহ ৯–১০ জন কয়েকটি মোটরসাইকেলে করে সিলেটি বাজার এলাকার চা দোকানদার নূর মোহাম্মদকে চাঁদাবাজির মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছিলেন। এতে রাজি না হলে তাঁরা নূর মোহাম্মদকে কুপিয়ে জখম করেন। নূর মোহাম্মদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন লাঠিসোঁটা নিয়ে আসেন। এ সময় ঘটনাস্থলে কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে মোটরসাইকেলে করে হামলাকারীরা পালানোর চেষ্টা করেন। পাঁচ–ছয়জন পালিয়ে যেতে পারলেও তিনজনকে কয়েক হাজার মানুষ ঘিরে ফেলে পিটুনি দেন।

পুলিশের লালবাগ অঞ্চলের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) জাহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, গণপিটুনিতে মাসুদ ঘটনাস্থলে মারা যান। থানা–পুলিশ, সেনাবাহিনী, র‌্যাব সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে এসে নাদিম ও সোহাগকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় নাদিমের মৃত্যু হয়। সোহাগ গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ