আবারও বাংলাদেশ দূতকে তলব করল ভারত। দিল্লিতে বসে শেখ হাসিনার মন্তব্য তাঁর ব্যক্তিগত ও এর সঙ্গে দিল্লির কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে দূতকে জানানো হয়েছে। শেখ হাসিনার বক্তব্যকে কেন্দ্র করে ‘বাংলাদেশ নেতিবাচকভাবে ভারতকে চিত্রিত করছে’ বলেও দিল্লির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শুক্রবার ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার মো.

নূরুল ইসলামকে তলব করে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ সময় ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে জানানো হয়, বাংলাদেশের সঙ্গে একটি ইতিবাচক, গঠনমূলক ও পরস্পরের জন্য লাভজনক সম্পর্ক চায় ভারত, যা সাম্প্রতিক সময়ের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকগুলোতে বেশ কয়েকবার পুনরাবৃত্তি করা হয়েছে। তবে দুঃখজনক, বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের নিয়মিত বিবৃতি ভারতকে নেতিবাচকভাবে চিত্রিত করে, অভ্যন্তরীণ শাসন-সংক্রান্ত সমস্যাগুলোর জন্য ভারতকে দায়ী করে। বাংলাদেশের এসব বিবৃতি ক্রমাগত নেতিবাচকতার জন্য দায়ী।

এর আগে জানুয়ারির মাঝামাঝি সীমান্তে স্থাপনা নির্মাণ নিয়ে বাংলাদেশের দূতকে তলব করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন্তব্য একান্ত তাঁর ব্যক্তিগত; এর সঙ্গে ভারতের কোনো সম্পর্ক নেই। তাঁর এসব বক্তব্যের সঙ্গে ভারতের অবস্থানকে মিশিয়ে দেখা, দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে ইতিবাচকতায় সাহায্য করবে না। যদিও ভারত সরকার পরস্পরের জন্য উপকারমূলক সম্পর্কের জন্য প্রচেষ্টা করবে। সেই সঙ্গে ভারত আশা করে, বাংলাদেশ পরিবেশকে নষ্ট না করে একইভাবে প্রতিদান দেবে।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার ঢাকায় ভারতের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে তলব করেছিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ভারতে পালিয়ে আশ্রয় নেওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লিতে বসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করে ক্রমাগত মিথ্যা ও বানোয়াট মন্তব্য ও বিবৃতি দিয়ে যাচ্ছেন। এসব বক্তব্য থামাতে ভারতের দূতকে তলব করে তাঁকে শক্ত একটি প্রতিবাদ পত্র দেওয়া হয়।

শেখ হাসিনার বক্তব্যকে কেন্দ্র করে দুই দেশের কূটনীতিকদের পাল্টাপাল্টি তলবের মধ্যে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্রিফিংয়েও বিষয়টি উঠে এসেছে। শুক্রবার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল দাবি করেন, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের জন্য ভারত দায়ী নয়। এটা  তাঁর একান্তই ব্যক্তিগত; এতে ভারতের কোনো ভূমিকা নেই।


 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

সরকারের নমনীয়তা অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সাংঘর্ষিক

মবের মাধ্যমে মানুষ হত্যা ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে সরকারের সমর্থনমূলক নমনীয় মনোভাব গণ-অভ্যুত্থানে জনগণের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে মনে করে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন।

প্রাথমিক নিয়োগ বাতিল হওয়া শিক্ষকদের ওপর পুলিশি হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে গতকাল শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এমন মন্তব্য করেছে তারা।

বিবৃতিতে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মশিউর রহমান খান রিচার্ড ও সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ বলেন, যেকোনো অধিকার ও দাবি আদায়ে গণতান্ত্রিকভাবে সংগঠিত হওয়া, প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সংগঠিত করা সবার গণতান্ত্রিক অধিকার। দীর্ঘ ফ্যাসিবাদী শাসনে বাংলাদেশের জনগণের সব গণতান্ত্রিক বিক্ষোভের অধিকার হরণ করা হয়েছিল, যার বিরুদ্ধে দীর্ঘ সংগ্রামে জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মানুষ তার গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পেয়েছে। সরকারের জনগণের সেই ন্যায্য গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।

বিবৃতিতে প্রাথমিক নিয়োগ বাতিল হওয়া শিক্ষকদের বিক্ষোভে পুলিশের হামলার তীব্র নিন্দা জানানোর পাশাপাশি অবিলম্বে হামলাকারী পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানানো হয়।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর থেকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যক্রমে সরকারের নিষ্ক্রিয়তা আমরা লক্ষ করেছি, কিন্তু এই সময়ে বিভিন্ন ন্যায্য সংগ্রামে আমরা জনগণের ওপর পুলিশের নির্মম হামলা আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। আদিবাসী ছাত্র-জনতার ওপর স্টুডেন্ট ফর সভারেন্টির হামলা; সেই বিচারের দাবিতে সংক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতার ওপর পুলিশি হামলা, শিক্ষকদের ওপর পুলিশি হামলা, মবের মাধ্যমে মানুষ হত্যা ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে সরকারের সমর্থনমূলক নমনীয় মনোভাব গণ-অভ্যুত্থানে জনগণের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ