পারফেক্ট ফাইনাল! শের-ই-বাংলার বাইশ গজে রান উৎসব। কানায় কানায় পূর্ণ গ্যালারি। পরতে পরতে উত্তেজনা। যেদিকে চোখ যায় শুধু লাল আর লাল। সঙ্গে স্লোগান বরিশাল-বরিশাল! হ্যাঁ, শেষ পর্যন্ত চিটাগং কিংসকে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বার ট্রফি ঘরে তুলেছে ফরচুন বরিশাল।

তারায় ভরা বরিশালের শেষের নায়ক দলে আসা-যাওয়ার মধ্যে থাকা রিশাদ। ১২ বলে প্রয়োজন যখন ২০, তখন এক ছক্কায় ম্যাচ নিজেদের দিকে নিয়ে আসেন। শেষ ওভারের প্রথম বলে আরেক ছক্কায় চিটাগংয়ের স্বপ্ন মাটি করে দেন। ৩ বলে যখন ১ প্রয়োজন তখন ওয়াইড দিয়ে জয় নিশ্চিত করে দেন চিটাগংয়ের বোলার হুসেইন তালাত! রিশাদ ৬ বলে ১৮ রান করে অপরাজিত ছিলেন। 

মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ফিল্ডিং নেয় বরিশাল। ব্যাটিং করতে নেমে ৩ উইকেটে ১৯৪ রান করে চিটাগং কিংস। তাড়া করতে নেমে বরিশাল ৩ বল হাতে রেখে ৩ উইকেটে জিতে যায়।

আরো পড়ুন:

বিপিএল ফাইনাল
বরিশাল ব্যাক ‍টু ব্যাক চ্যাম্পিয়ন

জাল টিকিটে সয়লাব মিরপুর, চারগুণ দাম দিয়েও প্রতারিত দর্শকরা

জিততে হলে ওভার প্রতি রান প্রয়োজন প্রায় ১০। প্রয়োজন পরিস্থিতি বুঝে জ্বলে ওঠে তামিমের ব্যাট। অন্যপ্রান্তে দারুণ সঙ্গ দেন তাওহীদ হৃদয়। দুজনের জুটি থেকে ৪৯ বলে আসে ৭৬ রান। তাতে তামিমের অবদান ৫৪! 

আরাফাত সানিকে ছক্কা হাঁকিয়ে ২৪ বলে ফিফটি করেন বরিশালের অধিনায়ক। এর আগের ফাইনালেও তামিম ফিফটি হাঁকান। তার ইনিংস সাজানো ছিল ৯টি চার ও ১টি ছয়ে।  

তামিম আউট হওয়ার পর ক্রিজে এসেই দ্বিতীয় বলে ফেরেন ডেবিড মালান। শরিফুলের গতিতে পরাস্ত হন এই ইংলিশ ব্যাটার। বল পায়ে লাগলেও জোরালো আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার। রিভিউ নিলে চিটাগংয়ের পক্ষে আসে। 

এরপর কাইল মায়ার্স-হৃদয় জুটি গড়ে এগোতে থাকেন। সেট হয়ে হৃদয় যখন ব্যাট চালচ্ছিলেন তখন আউট হয়ে ফেরেন সাজঘরে। ২৮ বলে ৩২ রান করেন হৃদয়। মায়ার্সের সঙ্গী হন মুশফিক। ক্রিজে এসেই দ্রুত রান তোলার চেষ্টা করেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। ৯ বলে ১৬ রান করে ফেরেন তিনি। 

এক প্রান্তে উইকেট পড়লেও মায়ার্স বল-রানের পার্থ্যক্য কমিয়ে দেন। ২৮ বলে ৪৬ রান করেন এই ক্যারিবীয় ব্যাটার। শরিফুলের আঘাতে মায়ার্স ফিরলেও ততক্ষণে জয় যেন ছিল হাতের কাছে। কিন্তু একই ওভারে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ফেরায় বিপকে পড়ে দলটি। ১১ বলে ৭ করেন মাহমুদুল্লাহ। 

ক্রিজে মোহাম্মদ নবীর সঙ্গী হন রিশাদ হোসেন। ছক্কা হাঁকিয়ে এই লেগি বরিশালকে যেন বাঁচিয়ে তোলেন। সঙ্গে চিটাগংয়ের ফিল্ডারদের এলোমেলো ফিল্ডিং আরও সুবিধা পয় বরিশাল। ১৯তম ওভারে নবী ফিরলেও কোনো বিপদ হয়নি। চিটাগংয়ের হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন শরিফুল। 


খাজা নাফে-পারভেজ হোসেন ইমনের ওপেনিং জুটি চিটাগংয়ের বড় রানের ভিত্তি গড়ে দেয়। দুজনের ওপেনিং জুটি থেকে আসে ১২১ রান। ৭৬ বলে দুজনের জুটি থেকে এই রান আসে। খাজা নাফের আউটে ভাঙে জুটি। এই ব্যাটার ৩টি ছয় ও ৭টি চারের মারে ৪৪ বলে এই রান করেন নাফে। 

পাকিস্তানি এই ব্যাটার আউট হলেও ইমনকে আউট করতে পারেনি বরিশালের বোলাররা। ৪৯ বলে সর্বোচ্চ ৭৮ রান করেন তিনি। ৬টি চার ও ৪টি ছয়ের মারে এই রান করেন ইমন। এ ছাড়া ২৩ বলে ৪৬ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন গ্রাহাম ক্লার্ক। ৩টি ছয় ও ২টি চারের মারে এই রান করেন তিনি। 

ক্রিজের সেট ব্যাটার ইমন শেষ দিকে সুবিধা করতে পারেননি। এক প্রান্তে ইমন আগলে রাখলেও অন্য প্রান্তে উইকেটের মিছিলে চিটাগংয়ের রানের গতি কমে যায়। শেষ ওভারে মাত্র ৬ রান নিতে পারে। শেষ চার ওভারে দলটি মাত্র ৩১ রান নিতে পারে। এখানে পিছিয়ে যায় চিটাগং।

ঢাকা/রিয়াদ/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব প এল র ন কর ন এই র ন উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

ফের নিজের তৈরি বিমানে উড়লেন জুলহাস, যমুনাপাড়ে উৎসবের আমেজ

ফের নিজের তৈরি বিমানে আকাশে উড়েছেন ইলেকট্রিক মিস্ত্রি জুলহাস মোল্লা (২৮)। রবিবার (৯ মার্চ) দুপুর ১টার দিকে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার জাফরগঞ্জে যমুনার পাড়ে নিজের তৈরি বিমানে আকাশে উড়েন তিনি।

এ সময় বাংলাদেশ বিমানের অবসরপ্রাপ্ত পাইলট ক্যাপ্টেন আব্দুল্লাহ আল ফারুকসহ সিভিল এভিয়েশনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে, গত সোমবার (৩ মার্চ) পরীক্ষামূলক প্রথম ওড়েন তিনি।

জুলহাসের তৈরি বিমানে আকাশে উড়া দেখতে রবিবার সকাল থেকে হাজারো মানুষ যমুনার পাড়ে ভিড় করেন। লোকে লোকারণ্য যমুনাপাড়ে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ।

টাঙ্গাইলের নাগরপুর থেকে লোকমান রহমান ছেলে রোরহানকে নিয়ে এসেছেন জুলহাসের বিমান দেখতে। তিনি বলেন, ‘‘জুলহাসের তৈরি বিমান টিভিতে দেখার পর ছেলে সামনে থেকে দেখার বায়না ধরেছে। ছেলের আবদার পূরণে আজ সকালে যমুনার পাড়ে ছুটে আসি। বিমানটি সামনে থেকে দেখতে পেরে বোরহান খুবই খুশি।’’

মানিকগঞ্জ শহরের উত্তর সেওতা থেকে এসেছেন জুয়েল আহমেদ। তিনি বলেন, ‘‘ইচ্ছা এবং চেষ্টা থাকলে অনেক কঠিন কাজও সম্ভব। সেটাই প্রমাণ করেছেন মানিকগঞ্জের এক তরুণ। তিনি নিজের চেষ্টা ও পরিশ্রমে বিমান তৈরি করেছেন। শুধু তাই নয়, নিজেই সেটি সফলভাবে আকাশে উড়িয়েছেন।’’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জুলহাস মোল্লার বাড়ি মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার তেওতা ইউনিয়নের ষাইটঘর তেওতা গ্রামে। জুলহাসের বাবা জলিল মোল্লার গ্রামের বাড়ি ছিল জেলার দৌলতপুর উপজেলার বাঘুটিয়া এলাকায়।

নদীভাঙনের কারণে বর্তমানে তারা শিবালয় উপজেলার ষাইটঘর তেওতা এলাকায় পরিবারসহ বসবাস করেন। ছয় ভাই ও দুই বোনের মধ্যে জুলহাস পঞ্চম। তিনি জিয়নপুর উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেছেন। পরে অর্থাভাবে আর পড়তে পারেননি। পেশায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রি জুলহাস ঢাকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চুক্তিভিত্তিক কাজ করেন। ছুটিতে বাড়িতে এসে তৈরি করেছেন বিমানটি।

জুলহাস মোল্লা জানান, তিন বছর গবেষণা এবং এক বছর সময় লেগেছে বিমানটি তৈরি করতে। অ্যালুমিনিয়াম ও লোহা দিয়ে বিমানটির অবকাঠামো তৈরি। পানির পাম্পের ‘সেভেন হর্স পাওয়ারের’ ইঞ্জিন ব্যবহার করেছেন।

তিনি বলেন, ‘‘বিমানটি পরীক্ষামূলকভাবে প্রশিক্ষণের জন্য তৈরি করা হয়েছে। তবে, সরকারি অর্থায়ন ও পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এটি বাণিজ্যিকভাবে তৈরি করা যেতে পারে। বিমানটি ৫০ ফুট ওপরে উড়তে পারে।’’

বাংলাদেশ বিমানের অবসরপ্রাপ্ত পাইলট ক্যাপ্টেন আব্দুল্লাহ আল ফারুক বলেন, ‘‘জুলহাসের বিমানটি তৈরিতে যে গবেষণা হয়েছে, তা কীভাবে আরো উন্নয়ন ঘটানো যায় সে বিষয়ে সবাই কাজ করব। সেই সঙ্গে তার একাডেমিক রিসোর্স ও কারিগরি যেসব সহযোগিতা প্রয়োজন, সে বিষয়ে আমরা সহযোগিতা করব।’’

ঢাকা/চন্দন/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইফতার উৎসবে রাবি শিক্ষার্থীদের মিলনমেলা
  • খুশির খবর দিয়ে মেহজাবীন লিখলেন, ‘কী সুন্দর একটি সকাল’
  • ফের নিজের তৈরি বিমানে উড়লেন জুলহাস, যমুনাপাড়ে উৎসবের আমেজ
  • স্মার্টফোনে ঈদ উৎসব
  • জাতীয় নারী ফুটবল দলের অয়ন্তের বাড়িতে উৎসবের আমেজ
  • ঝোঁকের মাথায় অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনার বদভ্যাস ত্যাগ করবেন যেভাবে
  • রাজ মাসুদ ফরহাদের দুটি কাব্যগ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত
  • বেড়েছে রোমান্টিক-পারিবারিক গল্পের চাহিদা
  • ঈদ নাটকের প্রস্তুতি, বেড়েছে রোমান্টিক-পারিবারিক গল্পের চাহিদা
  • পবিত্র রমজান: দেশে দেশে যত আচার-রীতি