অবৈধভাবে বসবাস এবং অনুপ্রবেশের অভিযোগে ভারত থেকে ১৯ বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বৃহস্পতিবার দেশটির মহারাষ্ট্র ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। 

মহারাষ্ট্র রাজ্যের নাসিক এলাকায় একটি কন্সট্রাকশন সাইট থেকে অবৈধভাবে বসবাসের অভিযোগে ৮ বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কেউই ভারতে বসবাসের বৈধ নথি দেখাতে পারেননি। 

ভারতের পুলিশ জানিয়েছে, প্রায় ১২ বছর আগে সুমন কালাম গাজী নামে এক বাংলাদেশি দালাল অবৈধভাবে প্রথম ভারতে যান। এরপর তার হাত ধরেই একে একে অন্যরা সেখানে বসবাস গড়ে তোলে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধারায় মামলা করা হয়েছে। 

নাসিক পুলিশ কমিশনার সন্দীপ কার্নিক বলেন, একটি কন্সট্রাকশন সাইটে প্রায় ৮ শতাধিক শ্রমিক কাজ করছিলেন। আমাদের কাছে খবর ছিল সেখানে বেশকিছু বাংলাদেশিও রয়েছেন। এরপরই গোপনে সেখানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। 

এদিকে, ভারত থেকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময়ে ৭ বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে বিএসএফ। এছাড়া তাদের সহযোগিতা করা অভিযোগে তিন ভারতীয় দালালকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

এক বিবৃতিতে বিএসএফ জানায়, বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলা সংলগ্ন জলঙ্গী সীমান্ত এলাকা থেকে ৭ বাংলাদেশিসহ ৩ ভারতীয় দালালকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার দুই অনুপ্রবেশকারীকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা সবাই ভারতের সীমান্তবর্তী গ্রাম মধুবানার তিন দালালের সহায়তা নিয়ে অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু সীমান্ত অতিক্রম করার আগেই বিএসএফ জওয়ানদের হাতে ধরা পড়েন। 

স্থানীয় সূত্র জানায়, দীর্ঘ কয়েক মাস আগে ভারতে কাজের সন্ধানে প্রবেশ করেছিলেন ওই ৭ বাংলাদেশি। এরপর কাজকর্ম শেষে দালালের হাত ধরে ফের ভারত থেকে বাংলাদেশে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এজন্য মাথাপিছু ৭ হাজার রুপি করে ভারতীয় দালালকে দিয়েছিল। বৃহস্পতিবার ভারত থেকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময়ে তিন দালালসহ ৭ বাংলাদেশি গ্রেপ্তার হন।  

অন্যদিকে, পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলায় ধনতলা সীমান্ত এলাকা থেকে দুই বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার ধানতলা থানার বহিরগাছি বাজার এলাকায় দুই বাংলাদেশি যুবককে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরি করতে দেখে পুলিশ।   

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানান, কয়েক মাস আগে অবৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে তারা ভারতে প্রবেশ করেন। আবার বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাদের।

গ্রেপ্তার দুই বাংলাদেশি হলেন- হাসিফ শেখ (৩২) ও আমিনুর শেখ (২৫)। তাদের বাড়ি বাংলাদেশের মহেশপুর থানার নল পাতুয়া এলাকায়।

এছাড়া পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এগারা এলাকা থেকেও অবৈধ দুই বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কুরবান মণ্ডল ও ইমরান হোসেন নামে ওই দুই যুবক রাজমিস্ত্রি পরিচয় দিয়ে এগরার প্রত্যন্ত গ্রামীণ অঞ্চলে বসবাস করছিলেন। তাদের কাছ থেকে একাধিক ভুয়া ভারতীয় পরিচয়পত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর বসব স

এছাড়াও পড়ুন:

টাঙ্গাইলে সালিশে ধর্ষণের মূল্য দেড় লাখ টাকা!

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে নানিবাড়ি বেড়াতে গিয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া মাদরাসা শিক্ষার্থী ধর্ষণের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ঘটনা ঘটলে সম্প্রতি বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এরপর স্থানীয় মাতব্বররা গ্রাম্যসালিশের আয়োজন করে অভিযুক্তকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করেন। 

অভিযুক্ত ফিরোজ (৪৫) মির্জাপুরের কুড়িপাড়া গ্রামের নওশের আলীর ছেলে। তিনি পেশায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঘটনার পর ভুক্তভোগী ওই শিশু এবং  তার পরিবার ভয়ে মুখ না খুললেও সম্প্রতি ঘটনাটি জানাজানি হয়। ধর্ষণের অভিযোগ ধামাচাপা দিতে স্থানীয় মাতব্বররা গ্রাম্যসালিশের আয়োজন করে। সালিশে অভিযুক্ত ধর্ষককে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এর মধ্যে ৯২ হাজার টাকা ভুক্তভোগী পরিবার পেয়েছে। ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শনিবার (৮ মার্চ) দুপুরে  পুলিশ ভুক্তভোগী পরিবারকে থানায় ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এরপর ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। 

মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ফিরোজ শিশুটির নানিবাড়ির পাশের জমিতে সার দিচ্ছিল। এ সময় শিশুটি বড়ই কুড়াচ্ছিল। তখন অভিযুক্ত ফিরোজ কৌশলে  শিশুটিকে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করে। এরপর ঘটনার কথা কাউকে বললে মোবাইলে ধারণ করা ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়াসহ শিশুটিকে প্রাণে মেরে ফেলার ভয় দেখায়। ঘটনার পর বাড়ি ফিরে শিশুটি চুপচাপ থাকায় পরিবারের সন্দেহ হয়। কারণ জানতে চাইলে এক পর্যায়ে শিশুটি পরিবারকে বিষয়টি জানায়। ঘটনাটি জানাজানি হলে স্থানীয় আব্দুল মালেক, ইউনূস, বাবলু, নূরুল ইসলামসহ কয়েকজন মাতব্বর দ্রুত গ্রাম্যসালিশের আয়োজন করে। সালিশে অভিযুক্ত ধর্ষক ফিরোজকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। মাতব্বরদের চাপের মুখে সালিশ মেনে নেয় অসহায় পরিবার। তবে জরিমানার পুরো টাকা এখনও তারা পায়নি। এদিকে ঘটনার পর থেকেই ফিরোজ আত্মগোপনে রয়েছে।

ভুক্তভোগী শিশুটির মা জানান, তার স্বামী সৌদি প্রবাসী। তিনি পোশাক শ্রমিক। শুরুতে ঘটনার কথা কাউকে ভয়ে প্রকাশ করতে পারেননি। লোকলজ্জার কারণে মাতব্বরদের করা বিচার তিনি মেনে নিয়েছেন। কিন্তু ঘটনা থানা পর্যন্ত গড়ালে তিনি সাহস পেয়ে মামলা করেছেন। এখন তিনি অপরাধীদের উপযুক্ত বিচার চান। 

মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন বলেন, ‘‘অভিযুক্ত ফিরোজকে প্রধান করে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। অভিযুক্তরা পলাতক। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’’

কাওছার//

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সীমান্তের শূন্যরেখায় বাবা-মেয়ের সাক্ষাতের যে দৃশ্য হৃদয়ছোঁয়া
  • চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির চ্যাম্পিয়ন ভারত
  • টাঙ্গাইলে সালিশে ধর্ষণের মূল্য দেড় লাখ টাকা!
  • বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত, কড়া প্রতিবাদ বিজিবির 
  • ভারতীয় খাসিয়াদের হামলায় নিহত যুবকের লাশ ফেরত দিল বিএসএফ
  • পঞ্চগড় সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নাগরিক নিহত, পতাকা বৈঠক
  • পঞ্চগড়ে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশির মৃত্যু
  • পঞ্চগড় সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত
  • ভারতীয় খাসিয়াদের হামলায় বাংলাদেশি যুবক নিহত
  • ভারতীয় খাসিয়াদের সঙ্গে চোরাচালান দ্বন্দ্ব, নিহত বাংলাদেশি যুবক