আদ্-দ্বীন উইমেন্স মেডিকেল কলেজে পিঠা উৎসব
Published: 7th, February 2025 GMT
বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে আছে পিঠা-পুলি। যখনই শীত আসে তখনি পিঠা-পুলি, পায়েস কিংবা নাড়ুর কথা আমাদের মনে ভেসে ওঠে। আধুনিকতার ছোঁয়ায় ও নগরায়নের ফলে এই পিঠা উৎসব বিলুপ্তির পথে। বাঙালির এই পিঠা উৎসবের সংস্কৃতিকে ধরে রাখতে রাজধানীর মগবাজারে অবস্থিত আদ্-দ্বীন উইমেন্স মেডিকেল কলেজে বণার্ঢ্য পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) আদ্-দ্বীন উইমেন্স মেডিকেল কলেজ প্রাঙ্গণে এ পিঠা উৎসবের আয়োজন করেন কর্তৃপক্ষ।
অনুষ্ঠানে হরেক রকমের পিঠার পসরা নিয়ে বিভিন্ন স্টল সাজান কলেজের শিক্ষার্থীরা। স্টলগুলোতে পুলি পিঠা, চিতাই পিঠা, ভাপা পিঠা, জামাই পিঠা, নকশি পিঠা, পাটিসাপটা, দুধ চিতই, গোলাপ পিঠা, ঝাল পিঠা, পদ্ম সেমাইসহ নাম না জানা অসংখ্য পিঠাপুলির আয়োজন ছিল।
সকাল ১০টায় ফিতা কেটে পিঠা উৎসব আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন আদ্-দ্বীন উইমেন্স মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা.
এ সময় উপস্থিত ছিলেন আদ্-দ্বীন হাসপাতাল ও নার্সিংসমূহের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাহিদ ইয়াসমিন, আদ্-দ্বীন ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. আফিকুর রহমান, উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মাজহারুল ইসলাম প্রমুখ।
পিঠা উৎসবে বিভিন্ন ধরনের গ্রামীণ পিঠা-পুলির পাশাপাশি ভারত, নেপাল, ভুটানসহ কয়েকটি দেশের পিঠা স্থান পায় স্টলগুলোতে। অতিথিরা প্রতিটি স্টল ঘুরে ঘুরে দেখেন এবং পিঠার স্বাদ উপভোগ করেন।
অনুষ্ঠানে আসা শিক্ষার্থীরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, “পিঠা শুধু খাবার নয়, এর সাথে জড়িয়ে আছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য। এই উৎসবের মধ্য দিয়ে বাঙালি ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ছড়িয়ে পড়ুক সবার প্রাণে।”
আদ্-দ্বীন হাসপাতাল ও নার্সিংসমূহের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাহিদ ইয়াসমিন বলেন, “পিঠা উৎসব বাঙালি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। আদ্-দ্বীন মেডিকেল কলেজ গ্রামের পিঠা-পুলির আমেজকে ফুটিয়ে তুলতে পিঠা উৎসবের আয়োজন করেছে। এই উৎসবের কারণে আমরা আমাদের গ্রামের সেই পিঠা-পুলির ঘ্রাণ নিতে পারছি-স্বাদ নিতে পারছি।”
আদ্-দ্বীন মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মাহমুদা হাসান বলেন, “পিঠা উৎসব পিঠা উৎসব আমাদের আবহমান বাংলার ঐতিহ্যের প্রতিচ্ছবি। কিন্তু সময়ের বিবর্তনে তা খুব একটা দেখা মেলে না। পিঠা উৎসবের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন অঞ্চলের পিঠা-পুলি সম্পর্কে জানতে পারে। একইসাথে তাদের মধ্যে পারস্পরিক মেলবন্ধন আরও সুদৃঢ় হয়।”
পিঠা উৎসবে আদ্-দ্বীন উইমেন্স মেডিকেল কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও দর্শনার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/সাজ্জাদ/এসবি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উৎসব র কল জ র
এছাড়াও পড়ুন:
ফের নিজের তৈরি বিমানে উড়লেন জুলহাস, যমুনাপাড়ে উৎসবের আমেজ
ফের নিজের তৈরি বিমানে আকাশে উড়েছেন ইলেকট্রিক মিস্ত্রি জুলহাস মোল্লা (২৮)। রবিবার (৯ মার্চ) দুপুর ১টার দিকে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার জাফরগঞ্জে যমুনার পাড়ে নিজের তৈরি বিমানে আকাশে উড়েন তিনি।
এ সময় বাংলাদেশ বিমানের অবসরপ্রাপ্ত পাইলট ক্যাপ্টেন আব্দুল্লাহ আল ফারুকসহ সিভিল এভিয়েশনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে, গত সোমবার (৩ মার্চ) পরীক্ষামূলক প্রথম ওড়েন তিনি।
জুলহাসের তৈরি বিমানে আকাশে উড়া দেখতে রবিবার সকাল থেকে হাজারো মানুষ যমুনার পাড়ে ভিড় করেন। লোকে লোকারণ্য যমুনাপাড়ে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ।
টাঙ্গাইলের নাগরপুর থেকে লোকমান রহমান ছেলে রোরহানকে নিয়ে এসেছেন জুলহাসের বিমান দেখতে। তিনি বলেন, ‘‘জুলহাসের তৈরি বিমান টিভিতে দেখার পর ছেলে সামনে থেকে দেখার বায়না ধরেছে। ছেলের আবদার পূরণে আজ সকালে যমুনার পাড়ে ছুটে আসি। বিমানটি সামনে থেকে দেখতে পেরে বোরহান খুবই খুশি।’’
মানিকগঞ্জ শহরের উত্তর সেওতা থেকে এসেছেন জুয়েল আহমেদ। তিনি বলেন, ‘‘ইচ্ছা এবং চেষ্টা থাকলে অনেক কঠিন কাজও সম্ভব। সেটাই প্রমাণ করেছেন মানিকগঞ্জের এক তরুণ। তিনি নিজের চেষ্টা ও পরিশ্রমে বিমান তৈরি করেছেন। শুধু তাই নয়, নিজেই সেটি সফলভাবে আকাশে উড়িয়েছেন।’’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জুলহাস মোল্লার বাড়ি মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার তেওতা ইউনিয়নের ষাইটঘর তেওতা গ্রামে। জুলহাসের বাবা জলিল মোল্লার গ্রামের বাড়ি ছিল জেলার দৌলতপুর উপজেলার বাঘুটিয়া এলাকায়।
নদীভাঙনের কারণে বর্তমানে তারা শিবালয় উপজেলার ষাইটঘর তেওতা এলাকায় পরিবারসহ বসবাস করেন। ছয় ভাই ও দুই বোনের মধ্যে জুলহাস পঞ্চম। তিনি জিয়নপুর উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেছেন। পরে অর্থাভাবে আর পড়তে পারেননি। পেশায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রি জুলহাস ঢাকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চুক্তিভিত্তিক কাজ করেন। ছুটিতে বাড়িতে এসে তৈরি করেছেন বিমানটি।
জুলহাস মোল্লা জানান, তিন বছর গবেষণা এবং এক বছর সময় লেগেছে বিমানটি তৈরি করতে। অ্যালুমিনিয়াম ও লোহা দিয়ে বিমানটির অবকাঠামো তৈরি। পানির পাম্পের ‘সেভেন হর্স পাওয়ারের’ ইঞ্জিন ব্যবহার করেছেন।
তিনি বলেন, ‘‘বিমানটি পরীক্ষামূলকভাবে প্রশিক্ষণের জন্য তৈরি করা হয়েছে। তবে, সরকারি অর্থায়ন ও পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এটি বাণিজ্যিকভাবে তৈরি করা যেতে পারে। বিমানটি ৫০ ফুট ওপরে উড়তে পারে।’’
বাংলাদেশ বিমানের অবসরপ্রাপ্ত পাইলট ক্যাপ্টেন আব্দুল্লাহ আল ফারুক বলেন, ‘‘জুলহাসের বিমানটি তৈরিতে যে গবেষণা হয়েছে, তা কীভাবে আরো উন্নয়ন ঘটানো যায় সে বিষয়ে সবাই কাজ করব। সেই সঙ্গে তার একাডেমিক রিসোর্স ও কারিগরি যেসব সহযোগিতা প্রয়োজন, সে বিষয়ে আমরা সহযোগিতা করব।’’
ঢাকা/চন্দন/রাজীব