আমার সঙ্গে রাজনীতি করতে হলে, জনগণের কল্যাণে কাজ করতে হবে : মামুন মাহমুদ
Published: 7th, February 2025 GMT
বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ বলেছেন, জনগণের বিপক্ষে যায় এমন কোন কাজ করা যাবেনা।
কারণ অন্যায় করে কেউ পার পাবে না। বিগত দিনে যারা মানুষের বাড়ি ঘর দখল করেছে, জনগণ তাদের বাড়ি-ঘর গুরিয়ে দিয়েছে। আমরা তাদের কর্মকাণ্ড থেকে শিক্ষা নিতে চাই।
আমরা এমন কাজ করতে চাইনা, যেন জনগণ আমাদের বাড়ি-ঘর গুরিয়ে দেয়। তাই কোন লোভ লালসা দেখিয়ে আমাকে কেউ দুর্বল করতে পারবেন না। আমার সঙ্গে যারা বিএনপির রাজনীতি করতে চান, তাদের লোভ লালসা ত্যাগ করে দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করতে হবে।
শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির উদ্যোগে গোদনাইল ২ নং ঢাকেশ^রী ইব্রাহীম টেক্সটাইল মিলস বালুর মাঠে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদকে গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে অধ্যাপক মামুন মাহমুদ বলেন, আমরা টের পাচ্ছি রাষ্ট্রীয়ক্ষমতাকে ব্যবহার করে আপনারা একটি নতুন দল গঠন করার চিন্তা করছেন। আপনারা দল গঠন করেন আমাদের অপত্তি নাই। তবে যদি আপনারা দল গঠন করতে চান, তাহলে সরকারের ছায়া থেকে বেরিয়ে আসেন। কিংস পার্টি জনগণ মেনে নিবেনা।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান কাজ হলো একটি সুন্দর, সুষ্ঠু ভোটের আয়োজন করা। যে ভোটের মাধ্যমে জনগণ তাদের প্রধিনিধি নির্বাচন করবে। তারা তাদের সরকার গঠন করবে। যে সরকার হবে জনগণের সরকার। আমরা জনগণের উপর আস্থা রাখি। জনগণের ভোটের উপর নির্ভর করি। জনগণের ভোট ছাড়া অন্যকোন উপায়ে রাষ্ট্রীয়ক্ষমতায় যাওয়ার পথ বিএনপির জানা নেই।
হাসিনা সরকার আমলে আমাদের দাবি ছিল, নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটে সরকার গঠন ও আমাদের নেতা তারেক জিয়াকে দেশে ফিরিয়ে আনা। হাসিনা সরকারের পতন হলেও আমাদের সে দুটি দাবি এখনো পুরণ হয়নি। তাই ষড়যন্ত্র এখনো হতে পারে। সে ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করার জন্য সবাইকে প্রস্তুত থাকতে হবে।
তিনি আরো বলেন, আমরা বিগত ১৫ বছরে দেখিছি পারিবার তন্ত্র কায়েম করে একটি গোষ্ঠীকে নিয়ে ফ্যাসিবাদ তৈরি করে হাসিনা সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য মানুষকে খুন ও গুম করেছেন। এ ধরণের স্বৈরাশাসক দেশের মানুষ আর দেখতে চায়না।
কারণ শাসক যদি নিষ্ঠুর হয়, তাহলে সে দেশের জনগণ কিভাবে বাস করবে। শাসকের হতে হবে মায়ার অন্তর। মায়ার শরীর। জনগণ যখন শাসকের কাছে কোন সমস্য নিয়ে যাবে, তখন সব ভুলে গিয়ে কিভাবে সে সমস্যা সমাধান করবে, সে চেষ্টায় তার ঘুম আসার কথা নয়।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাবেক যুগ্নআহ্বায়ক অকিল উদ্দিন ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনিপর সাবেক দপ্তর সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাবুল, বিএনপি নেতা রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজ, দেলোয়ার হোসেন খোকন, সামছুদ্দিন শেখ, কামাল হোসেন, মাসুদর রহমান, মোসলেহা কামাল, বাবুল প্রধান, রাকিবুল দেওয়ান, মনির হোসেন, গাজী মনির হোসেন প্রমুখ।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: র জন ত ব এনপ ন র য়ণগঞ জ ব এনপ র জনগণ র আম দ র ক জ কর সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
নিরাপদ অঞ্চলেও অরক্ষিত গাজাবাসী
বাড়ি, আশ্রয়শিবির কিংবা ইসরায়েল ঘোষিত নিরাপদ অঞ্চল কোথাও যেন নিরাপত্তা মিলছে না গাজাবাসীর। গতকাল বুধবার রাতের অন্ধকারে নুসেইরাহ শরণার্থী শিবির ও ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ‘নিরাপদ অঞ্চল’ হিসেবে ঘোষিত আল-মাওয়াসি আশ্রয়কেন্দ্রে ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত চারজন নিহতের সঙ্গে আহত হয়েছেন আরও অনেকে।
এর মধ্যে নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে নিহত হয়েছেন দু’জন পুরুষ এবং গুরুতর আহত হয়েছেন সাতজন। এ ছাড়া আল-মাওয়াসি আশ্রয়কেন্দ্রে এক ব্যক্তির সঙ্গে প্রাণ গেছে এক নারী ও এক শিশুর। গত ২৪ ঘণ্টায় গাজার ৪৫টি স্থাপনায় হামলার কথা স্বীকার করেছে আইডিএফ। নিজেদের এক প্রতিবেদনে আলজাজিরা জানিয়েছে, গাজার কোথাও এখন নিরাপত্তা নেই। আছে শুধুই মৃত্যু আর ধ্বংস। খবর আলজাজিরা ও এএফপির
এদিকে গাজার পূর্বাঞ্চলের শুজাইয়া অঞ্চলে একাধিক ইসরায়েলি বিমান হামলায় কমপক্ষে ২৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু। আহত হয়েছেন অন্তত ৫৫ জন। এ ছাড়া নিখোঁজ রয়েছেন আরও ৮০ জন। এসব হামলায় অন্তত ১০টি বাড়ি সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ইসরায়েলি বোমাবর্ষণে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে এলাকাটি। জীবিত বাসিন্দারা ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া নারী ও শিশুদের উদ্ধারে চেষ্টা চালাচ্ছেন। তবে উদ্ধারকাজ চালানোর সময় এলাকাটিতে উড়ছিল ইসরায়েলি ড্রোন। উদ্ধারকারীরা জানান, ভারী বোমায় মৃতদেহগুলো এমনভাবে ছিন্নভিন্ন হয়েছে, সেগুলো শনাক্ত করাও কষ্টকর। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ হাজার ৮৪৬ জনে। তবে গাজার মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, নিহতের প্রকৃত সংখ্যা ৬১ হাজার ৭শর বেশি।
গাজা শহরের শুজাইয়া এলাকায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর চালানো ব্যাপক হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। বিবৃতিতে সংগঠনটি বলেছে, ‘ফিলিস্তিনের জনগণের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে চলমান হত্যাযজ্ঞ, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য কলঙ্ক।’ এদিকে গাজাকে ‘মৃত্যু উপত্যকা’ হিসেবে সম্বোধন করে ইসরায়েলের অবরোধ নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
তিনি বলেন, ‘গাজা এখন একটি মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত হয়েছে এবং সেখানকার বেসামরিক জনগণ মৃত্যুর গোলক ধাঁধায় আটকে পড়েছে।’ গুতেরেসের এই মন্তব্যের আগে জাতিসংঘের ছয়টি সংস্থার প্রধানরা বিশ্বনেতাদের কাছে গাজার অধিবাসীদের জন্য জরুরি সহায়তা পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন। তবে এ মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, গাজায় খাদ্য সরবরাহের কোনো সংকট নেই এবং গুতেরেস ‘ইসরায়েলের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার’ করছেন।
অন্যদিকে, হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য হোসাম বদরান মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘এই যুদ্ধ চিরকাল চলতে পারে না। তাই যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানো অত্যাবশ্যক।’
গাজায় ইসরায়েল খাদ্য সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ায় ব্যাপকভাবে অপুষ্টির শিকার হচ্ছে শিশুরা। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ৬০ হাজার শিশু অপুষ্টির ফলে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে। ইসরায়েলি সামরিক হুমকির কারণে ২১টি পুষ্টি কেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ৩৫০ গুরুতর অপুষ্ট শিশু।