ভারতে অবৈধভাবে বসবাসের অভিযোগে ১৯ বাংলাদেশি গ্রেপ্তার
Published: 7th, February 2025 GMT
অবৈধভাবে ভারতে বসবাসের অভিযোগে ১৯ বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দেশটির মহারাষ্ট্র ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিন মহারাষ্ট্র রাজ্যের নাসিকে একটি কন্সট্রাকশন সাইট থেকে আট বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কেউই ভারতে বসবাসের বৈধ নথি দেখাতে পারেনি। তাদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, ভারতীয় আধার কার্ড, প্যান কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, প্রায় ১২ বছর আগে সুমন কালাম গাজী নামে এক বাংলাদেশি দালাল অবৈধভাবে ভারতের প্রবেশ করেন। এরপর তার হাত ধরেই একে একে অন্যরা সেখানে বসবাস গড়ে তোলে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধারায় মামলা করা হয়েছে।
নাসিক পুলিশ কমিশনার সন্দীপ কার্নিক বলেন, একটি কন্সট্রাকশন সাইটে প্রায় ৮ শতাধিক শ্রমিক কাজ করছিলেন। আমাদের কাছে খবর ছিল সেখানে বেশকিছু বাংলাদেশিও রয়েছেন। এরপরই গোপনে সেখানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিকে, ভারত থেকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময়ে ৭ বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে বিএসএফ। এছাড়া তাদের সহযোগিতা করা অভিযোগে তিন ভারতীয় দালালকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এক বিবৃতিতে বিএসএফ জানায়, বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলা সংলগ্ন জলঙ্গী সীমান্ত এলাকা থেকে ৭ বাংলাদেশিসহ ৩ ভারতীয় দালালকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার দুই অনুপ্রবেশকারীকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা সবাই ভারতের সীমান্তবর্তী গ্রাম মধুবানার তিন দালালের সহায়তা নিয়ে অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু সীমান্ত অতিক্রম করার আগেই বিএসএফ জওয়ানদের হাতে ধরা পড়েন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, দীর্ঘ কয়েক মাস আগে ভারতে কাজের সন্ধানে প্রবেশ করেছিলেন ওই ৭ বাংলাদেশি। এরপর কাজকর্ম শেষে দালালের হাত ধরে ফের ভারত থেকে বাংলাদেশে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এজন্য মাথাপিছু ৭ হাজার রুপি করে ভারতীয় দালালকে দিয়েছিল। বৃহস্পতিবার ভারত থেকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময়ে তিন দালালসহ ৭ বাংলাদেশি গ্রেপ্তার হন।
অন্যদিকে, পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলায় ধনতলা সীমান্ত এলাকা থেকে দুই বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার ধানতলা থানার বহিরগাছি বাজার এলাকায় দুই বাংলাদেশি যুবককে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরি করতে দেখে পুলিশ।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানান, কয়েক মাস আগে অবৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে তারা ভারতে প্রবেশ করেন। আবার বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাদের।
গ্রেপ্তার দুই বাংলাদেশি হলেন- হাসিফ শেখ (৩২) ও আমিনুর শেখ (২৫)। তাদের বাড়ি বাংলাদেশের মহেশপুর থানার নল পাতুয়া এলাকায়।
এছাড়া পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এগারা এলাকা থেকেও অবৈধ দুই বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কুরবান মণ্ডল ও ইমরান হোসেন নামে ওই দুই যুবক রাজমিস্ত্রি পরিচয় দিয়ে এগরার প্রত্যন্ত গ্রামীণ অঞ্চলে বসবাস করছিলেন। তাদের কাছ থেকে একাধিক ভুয়া ভারতীয় পরিচয়পত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর বসব স
এছাড়াও পড়ুন:
হিযবুত তাহরীরের ৫ জন কারাগারে
‘মার্চ ফর খেলাফত’ কর্মসূচিতে পুলিশের সাথে সংঘর্ষের ঘটনায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনের মামলায় গ্রেপ্তার নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীরের ৫ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
রবিবার (৯ মার্চ) ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ওয়াহিদুজ্জামান এ আদেশ দেন।
আসামিরা হলেন-মাসরাফি রহমান মাহি (২০), ইরফান শাহরিয়ার (২০), মো. সাইফুল ইসলাম (১৯), মো. আনাসুর রহমান (২০) ও মো. সোহেল রানা (৩৯)।
এদিন আসামিদের আদালতে হাজির করে প্রত্যেকের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। আদালত আসামিদের কারাগারে পাঠিয়ে আগামী ১৩ মার্চ রিমান্ড শুনানির তারিখ ধার্য করেন।
এর আগে শনিবার (৮ মার্চ) মার্চ ফর খেলাফত কর্মসূচি ঘিরে পুলিশের সাথে সংঘর্ষের ঘটনায় গ্রেপ্তার ১৭ হিযবুত তাহরীর কর্মীর পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এর আগের দিন শুক্রবার ৩ জনের বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
গত ৭ মার্চ দুপুরে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেট থেকে মার্চ ফর খেলাফত, হিযবুত তাহরীর, উলাইয়াহ্ বাংলাদেশ ব্যানারে সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের সদস্যরা মিছিল বের করেন। এরপর তারা পল্টন মোড়ের দিকে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। আসামিরা পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে পল্টন মডেল থানার এল মল্লিকের সামনে পাকা রাস্তার ওপর সরকারবিরোধী, দেশের সার্বভৌমত্বকে আঘাত করার প্রয়াসে পতাকা, ব্যানার, লাঠিসোটা নিয়ে শ্লোগান দিয়ে মিছিল করতে থাকেন। তখন পল্টন মোড় এলাকায় ডিউটিরত পুলিশ মিছিলে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে তারা পুলিশের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করেন।
তখন পুলিশ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখাসহ জান-মাল রক্ষার্থে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে অবৈধ মিছিলকে ছত্রভঙ্গ করার জন্য গ্যাসগান ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। তবুও নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ অব্যাহত রাখে। এরপর আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে তাদের ব্যবহৃত পতাকা, শ্লোগান ও আনুষঙ্গিক কার্যক্রম দেখে নিশ্চিত হওয়া যায়, তারা নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন হিযবুত তাহরীরের সক্রিয় সদস্য ও সমর্থক।
এ ঘটনায় পল্টন থানায় উপপরিদর্শক রাসেল মিয়া বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করেন।
ঢাকা/মামুন/এসবি