যুক্তরাষ্ট্রের গোল্ডেন স্টেট ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে বাংলাদেশের ‘নীলচক্র’
Published: 7th, February 2025 GMT
আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসে অস্টমবারের মত বসছে ‘গোল্ডেন স্টেট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল ২০২৫’। চলবে ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। লস অ্যাঞ্জেলসের চাইনিস থিয়েটার-৬ বসবে উদীয়মান স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতাদের এই আসর। এতে বাংলাদেশ থেকে ‘নীলচক্র’ সিনেমাটি প্রদর্শনের জন্য নির্বাচিত হয়েছে। উৎসবের ‘ফরেন ল্যাঙ্গুয়েজ’বিভাগে অফিসিয়াল নির্বাচিত হয়েছে সিনেমাটি। সমকালকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিনেমাটির পরিচালক মিঠু খান। এ ছাড়াও উৎসবের ওয়েব সাইটেও এ বিষয়ে তথ্য প্রকাশ করেছে কর্তৃপক্ষ।
নীলচক্র সিনেমার পরিচালক মিঠু খান জানান, গোল্ডেন স্টেট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল মূলত স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতাদের প্রতিভা প্রদর্শনের সুযোগ ও তাদের কাজের গতি বাড়াতে আয়োজিত হয়ে থাকে। পৃথিবীর নানা দেশের তরুণ ও উদীয়মান নির্মাতারা এই ফেস্টিভ্যালে তাদের সিনেমা অংশ নেন। এমন উৎসবে আমার সিনেমা ‘ফরেন ল্যাঙ্গুয়েজ’ বিভাগে অফিসিয়াল নির্বাচিত হয়েছে এটা আমার জন্য অবশ্যই বড় প্রাপ্তির।
এর আগে আমেরিকান ফিল্ম মার্কেটে ‘নীলচক্র’ আন্তর্জাতিক প্রিমিয়ার করা হয়। লাস ভেগাসের ওই প্রিমিয়ারে উপস্থিত ছিলেন সিনেমাটির প্রযোজক এনায়েত আকবর মিলন, আসিফ আকবর ও নীলচক্র সিনেমার আন্তর্জাতিক পরিবেশনার দায়িত্বে থাকা জে জে রজার্স।
সিনেমাটিতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন আরিফিন শুভ। তার সঙ্গে রয়েছেন মন্দিরা চক্রবর্তী। আরও আছেন ফজলুর রহমান বাবু, শিরীন আলম, খালেদা আক্তার কল্পনা, শাহেদ আলী, টাইগার রবি, মনির আহমেদ শাকিল, প্রিয়ন্তী ঊর্বী, মাসুম রেজওয়ান প্রমুখ। এ সিনেমায় প্রথমবারের মতো বড় পর্দায় দেখা যাবে সংগীতশিল্পী বালামকে।
গোল্ডেন স্টেট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল মূলত উদীয়মান স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতাদের তাদের প্রতিভা প্রদর্শনের সুযোগ হিসেবে কাজ আয়োজন করা হয়ে থাকে। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্ব নানা দেশ থেকে চলচ্চিত্র নির্মাতারা অংশ নিয়ে থাকেন।
ফেস্টিভ্যালাচ জন গুর্শা এবং পিটার গ্রিন পরিচালনা করে থাকেন। তারা উভয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি পেশাদার ও জনপ্রিয় নির্মাতা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ন ম র খবর চলচ চ ত র ন র ম ত
এছাড়াও পড়ুন:
‘আধুনিক’ পাহাড়ি গান-নৃত্য যাঁদের দিয়ে শুরু
নানা উৎসবে সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় শিহরণ জাগায় মারমা শিল্পীদের পাখানৃত্য। বিশেষ করে মারমাদের বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে ‘ত্নহ তাখা হ্নাসই পোয়ে, অপ্য পিরে সাংগ্রাইংলে, ঙেনি রাকমা জা ফ্রইতে, ম্রারে ফুরে তোয়ি নিংরে (বছর ঘুরে সাংগ্রাইং এসেছে/ আনন্দ ও উচ্ছ্বাসে/ উষ্ণ-শীতল আবেশ নিয়ে/ আমার প্রিয়তমের শীতল অনুভূতি জাগাব পাখা দিয়ে) গানের সঙ্গে পাখানৃত্য প্রতিবছরই দর্শকদের মাতিয়ে আসছে। হৃদয়কাড়া এই নৃত্য-গান দুটিরই স্রষ্টা হিসেবে রয়েছে ‘মারমা শিল্পীগোষ্ঠী। কেবল পাখানৃত্য নয়, মারমাদের ময়ূরনৃত্য, থালানৃত্য, মাছ ধরা নৃত্য, ছাতানৃত্য—সবকিছুরই রূপকার এই সংগঠন। নিজেদের সৃষ্টি করা অসংখ্য পাহাড়ি গানেও শ্রোতাদের আবেগে-উচ্ছ্বাসে মাতিয়ে রাখে সংগঠনটি। বলা যায়, পাহাড়িদের সাংস্কৃতিক চর্চায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে সংগঠনটি।
বান্দরবানে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘মারমা শিল্পীগোষ্ঠী’। যাত্রা শুরু ১৯৯৬ সালে। এই সংগঠনের শিল্পীরা নিজেদের সৃষ্টিশীলতায় ঝিমিয়ে পড়া মারমা সংস্কৃতির যেমন প্রাণ সঞ্চার করেছেন, তেমনি ত্রিপুরা, ম্রো, খুমি, খেয়াংসহ অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর সংস্কৃতিকেও জাগিয়ে তুলেছেন। বর্তমান সময়ে মারমাদের জনপ্রিয় অসংখ্য নৃত্য-গান মারমা শিল্পীগোষ্ঠীর সৃষ্টি। পুরোনোকে ধারণ করে এসব গান-নৃত্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়েও সমাদৃত হয়ে আসছে।
সাত-আটজন তরুণ-তরুণী পাহাড়ি সংস্কৃতিচর্চা ও বিকাশের জন্য সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন। গতানুগতিকতার বাইরে পাহাড়ের শিল্প-সংস্কৃতির নতুন পথরেখা সন্ধান ছিল তাঁদের উদ্দেশ্য। প্রাচীন সংস্কৃতির সঙ্গে সমকালকে মিলিয়ে নৃত্য-গানের রূপান্তর করেছেন। এ পর্যন্ত শিল্পীদের একক ও দলীয় গানের বহু অ্যালবাম বেরিয়েছে। নাটক ও নৃত্যও হয়েছে বহু।
মারমা শিল্পীগোষ্ঠীর গানের অ্যালবামের মধ্যে সবচেয়ে সাড়া জাগিয়েছে ‘টং অঙোয়ে’ (পাহাড়ের বাষ্প); নাটকের মধ্যে ওয়াকুসে বা তুলা ব্যবসায়ী। গান, নৃত্য ও নাটক ছাড়াও ২০০১ সালে মারমাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক–পরিচ্ছদ, গয়না ও ভাষা তুলে ধরার জন্য মিস্টার ও মিস মারমা প্রতিযোগিতা আয়োজন শুরু করা হয় সংগঠনের উদ্যোগে। সাংগ্রাইং উৎসবে এই আয়োজন তরুণ-তরুণীদের নিজেদের সমাজ-সংস্কৃতি নিয়ে সচেতন করে। তবে কয়েক বছর করার পর এর আর ধারাবাহিকতা রাখা যায়নি। মারমা ছাড়াও ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা, চাক, খেয়াং, খুমিসহ অন্য জাতিগোষ্ঠীগুলোর সংস্কৃতিচর্চা এবং বিকাশেও মারমা শিল্পীগোষ্ঠী কাজ করছে। ম্রো আধুনিক গানের প্রথম অ্যালবাম মারমা শিল্পীগোষ্ঠী থেকে বের করা হয়েছে।
ময়ূর নৃত্য পরিবেশন করছেন মারমা শিল্পীরা