৫ আগস্টই ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িটি ধূলিসাৎ করা উচিত ছিল: হাসনাত আবদুল্লাহ
Published: 7th, February 2025 GMT
৫ আগস্টই ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িটি ধূলিসাৎ করা উচিত ছিল বলে মনে করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, পৃথিবীতে এমন কোনো জায়গা নেই, যেখানে ফ্যাসিবাদকে নির্মূলের পর তার প্রতীকগুলোকে রেখে দেওয়া হয়েছে। সুতরাং ধানমন্ডি ৩২ এর বাড়িটি ৫ আগস্টেই ধুলিস্যাৎ করে দেওয়ার কথা ছিল। একটা ঘৃণাস্তম্ভে পরিণত করা দরকার ছিল। সেটি পরবর্তীতে এসে মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে করেছে। শুক্রবার ফেসবুকে ভেরিফায়েড আইডিতে এক লাইভে তিনি এসব কথা বলেন।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, এখন আর এ দেশে নির্যাতকের জায়গা হবে না। বর্তমান আদর্শকে নিয়ে আওয়ামী লীগকে কোনোভাবে রাজনীতি করতে দেওয়া যাবে না। আওয়ামী লীগকে অপরাধ স্বীকার করতে হবে। তাদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। বিচার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। এরপর তাদের নেতাকর্মীদের ‘রিকনসিলিয়েশনের’ মাধ্যমে সমাজের মূলধারায় যুক্ত করা যায় কিনা- সেটা আলোচনা সাপেক্ষে নির্ধারণ করতে হবে।
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ি ভেঙে ফেলার বিষয়ে হাসনাত বলেন, এই বাড়িটিকে আওয়ামী লীগের তীর্থস্থান বলা হয়। এই তীর্থস্থানকে জনগণ ভেঙে গুড়িয়ে দিয়েছে। এটা আটকানোর জন্য আওয়ামী লীগের কাউকে পাওয়া গেছে? কাউকেই পাওয়া যায়নি। আওয়ামী লীগ ২৬০ বিলিয়নের বেশি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। সেই টাকা দিয়ে এখন এ দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। এই দেড় দশকে আওয়ামী লীগ নিপীড়কের শ্রেণিতে ছিল। আর বিএনপি, জামায়াতসহ অন্যান্য ফ্যাসিবাদ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো ছিল। আওয়ামী পরবর্তী লড়াইটা অব্যাহত রাখতে হবে।
গত দেড় দশকে আওয়ামী লীগ এ দেশের মানুষকে নাগরিক নয়, বরং প্রজা বানিয়ে রেখেছিল বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বর্তমানে এ দেশে অপ্রাসঙ্গিক। দলটি প্রাসঙ্গিক থাকলে ৫ আগস্ট হতো না।
আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের কোনো নেতাকর্মীর মধ্যে অপরাধবোধ নেই বলে মনে করেন এই ছাত্রনেতা। তার মতে, তাদের মধ্যে কোনো ধরনের অপরাধ বোধ নেই। বরং এত মানুষকে হত্যা করার পরও তারা হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। বরং ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে প্রহসনের তিনটি নির্বাচন কিংবা দুই হাজার ছাত্র-জনতা হত্যার পরও তাদের মধ্যে কোনো ধরনের অনুতাপ নেই। তাদের মধ্যে কোনো ধরনের ভীতিই নেই। ৫ আগস্টের আগে আমরা ফেসবুকে কিছু লিখলে আমাদের বাসা থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া হতো। কিন্তু এখন তারা ফেসবুকে নানা ধরনের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। ৫ আগস্টের পর তারাই বেশি স্বাধীনতা ভোগ করছে। আওয়ামী লীগের আদর্শকে ধারণ করে পরবর্তীতে আর কেউ রাজনীতিতে পুনর্বাসিত হতে পারবে না।
আমলা ও পুলিশ প্রশাসনের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনাদের আওয়ামী লীগ হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে। জনগণের ক্ষমতাকে আপনারা বুঝুন। রাষ্ট্র যে জনগণের কাছে দায়বদ্ধ– এ বিষয়টাকে ধারণ করুন। আওয়ামী লীগ আপনাদের জনগণের বিপক্ষে দাঁড় করিয়েছে। আপনারা এটা বুঝুন। আমি মন থেকে চাইবো, সচিবালয়ের পরিণতি যেন ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের মতো না হয়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ৫ আগস ট ধ নমন ড আওয় ম ধরন র
এছাড়াও পড়ুন:
আজহারীর মাহফিলকে কেন্দ্র করে চাঁদাবাজি চলছে: হারুনুর রশিদ
চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সংসদ ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা হারুনুর রশিদ বলেছেন, আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি আমার বাড়ির কাছে একটি তাফসীর মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে মিজানুর রহমান আজহারী আসবেন। মাসব্যাপী জেলাজুড়ে প্রচার চলছে। আর মাসব্যাপী চাঁদাবাজিও চলছে। সমস্ত জায়গায় চাঁদাবাজি চলছে। ব্যাংক, শিল্পকারখানায় চাঁদাবাজি এবং মানুষের বাড়ি বাড়িতে গিয়ে চাঁদাবাজি চলছে।
শুক্রবার বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের টাউন হাইস্কুল মাঠে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর বিএনপির ১৫ নম্বর ওয়ার্ড আয়োজিত আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, যারা বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধিকার কেঁড়ে নিয়েছিল, সারা দেশে তাদের নির্মম পরিণতি হয়েছে এবং জনগণের বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। হারাম টাকা দিয়ে তারা যেসব বাড়িঘর ও স্থাপনা নির্মাণ করেছিল সেগুলো আজ বুলডোজার দিয়ে ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। কারণ, দীর্ঘ পনেরো বছর তারা দেশের মানুষকে গুম করেছে, বিচারবহির্ভূত হত্যা করেছে এবং হাজার হাজার মানুষকে মিথ্যা মামলা দিয়ে বাড়িছাড়া করেছে। তার বহি:প্রকাশ এখনো থেমে নেই।
বিএনপির এই নেতা আরো বলেন, প্রফেসর ইউনূসের কাছে আমাদের আহ্বান থাকবে স্বল্পতম সংস্কারের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে যতদূত সম্ভব নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে একটি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা হোক। কিন্তু এখনো দৃশ্যমান নির্বাচনের ব্যাপারে সরকারের কোনো আগ্রহ আছে কি না তা প্রতীয়মান হচ্ছে না। সরকারের জায়গা থেকে এখনো সুস্পষ্ট কোনো ঘোষণা নেই। তাই আমরা দাবি করবো যতদ্রুত সম্ভব নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করুন। নির্বাচনের পথে হাঁটুন। জনগণের মধ্যে স্বস্তি ও আশ্বাস ফিরিয়ে দেন। জনগণের আকাংঙ্খা, তারা তাদের নির্বাচিত প্রার্থী নির্বাচিত করবে এবং সব সমস্যা সংসদে নিরসন হবে। সংস্কার একটি দীর্ঘ ও চলমান প্রক্রিয়া। তাই সংস্কার কার্যক্রম চলবে এবং পাশাপাশি দেশের গণতান্ত্রিক যাত্রাও আমাদের শুরু করতে হবে।
এ সময় চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিল মাসিদুল হক নিখিলের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, পৌর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম, পৌর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল বারেক, থানা কৃষক দলের সদস্য সচিব তাসেম আলী, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক তবিউল ইসলাম তারিফ ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান অনু, যুবদল নেতা মজিবুর রহমান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক জামিউল হক সোহেল ও সাংগঠনিক সম্পাদক সামিরুল ইসলাম পলাশ ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শাহিন আক্তার, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সারোয়ার জাহান ও সহ-সভাপতি মিম ফজলে আজিমসহ প্রমুখ।