৫ আগস্টই ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িটি ধুলিস্যাৎ করা উচিত ছিল বলে মনে করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, পৃথিবীতে এমন কোনো জায়গা নেই, যেখানে ফ্যাসিবাদকে নির্মূলের পর তার প্রতীকগুলোকে রেখে দেওয়া হয়েছে। সুতরাং ধানমন্ডি ৩২ এর বাড়িটি ৫ আগস্টেই ধুলিস্যাৎ করে দেওয়ার কথা ছিল। একটা ঘৃণাস্তম্ভে পরিণত করা দরকার ছিল। সেটি পরবর্তীতে এসে মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে করেছে। শুক্রবার ফেসবুকে ভেরিফায়েড আইডিতে এক লাইভে  তিনি এসব কথা বলেন।

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, এখন আর এ দেশে নির্যাতকের জায়গা হবে না। বর্তমান আদর্শকে নিয়ে আওয়ামী লীগকে কোনোভাবে রাজনীতি করতে দেওয়া যাবে না। আওয়ামী লীগকে অপরাধ স্বীকার করতে হবে। তাদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। বিচার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। এরপর তাদের নেতাকর্মীদের ‘রিকনসিলিয়েশনের’ মাধ্যমে সমাজের মূলধারায় যুক্ত করা যায় কিনা- সেটা আলোচনা সাপেক্ষে নির্ধারণ করতে হবে। 

ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ি ভেঙে ফেলার বিষয়ে হাসনাত বলেন, এই বাড়িটিকে আওয়ামী লীগের তীর্থস্থান বলা হয়। এই তীর্থস্থানকে জনগণ ভেঙে গুড়িয়ে দিয়েছে। এটা আটকানোর জন্য আওয়ামী লীগের কাউকে পাওয়া গেছে? কাউকেই পাওয়া যায়নি। আওয়ামী লীগ ২৬০ বিলিয়নের বেশি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। সেই টাকা দিয়ে এখন এ দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। এই দেড় দশকে আওয়ামী লীগ নিপীড়কের শ্রেণিতে ছিল। আর বিএনপি, জামায়াতসহ অন্যান্য ফ্যাসিবাদ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো ছিল। আওয়ামী পরবর্তী লড়াইটা অব্যাহত রাখতে হবে। 

গত দেড় দশকে আওয়ামী লীগ এ দেশের মানুষকে নাগরিক নয়, বরং প্রজা বানিয়ে রেখেছিল বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বর্তমানে এ দেশে অপ্রাসঙ্গিক। দলটি প্রাসঙ্গিক থাকলে ৫ আগস্ট হতো না। 

আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের কোনো নেতাকর্মীর মধ্যে অপরাধবোধ নেই বলে মনে করেন এই ছাত্রনেতা। তার মতে, তাদের মধ্যে কোনো ধরনের অপরাধ বোধ নেই। বরং এত মানুষকে হত্যা করার পরও তারা হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। বরং ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে প্রহসনের তিনটি নির্বাচন কিংবা দুই হাজার ছাত্র-জনতা হত্যার পরও তাদের মধ্যে কোনো ধরনের অনুতাপ নেই। তাদের মধ্যে কোনো ধরনের ভীতিই নেই। ৫ আগস্টের আগে আমরা ফেসবুকে কিছু লিখলে আমাদের বাসা থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া হতো। কিন্তু এখন তারা ফেসবুকে নানা ধরনের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। ৫ আগস্টের পর তারাই বেশি স্বাধীনতা ভোগ করছে। আওয়ামী লীগের আদর্শকে ধারণ করে পরবর্তীতে আর কেউ রাজনীতিতে পুনর্বাসিত হতে পারবে না। 

আমলা ও পুলিশ প্রশাসনের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনাদের আওয়ামী লীগ হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে। জনগণের ক্ষমতাকে আপনারা বুঝুন। রাষ্ট্র যে জনগণের কাছে দায়বদ্ধ– এ বিষয়টাকে ধারণ করুন। আওয়ামী লীগ আপনাদের জনগণের বিপক্ষে দাঁড় করিয়েছে। আপনারা এটা বুঝুন। আমি মন থেকে চাইবো, সচিবালয়ের পরিণতি যেন ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের মতো না হয়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ৫ আগস ট ধ নমন ড আওয় ম ধরন র

এছাড়াও পড়ুন:

গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের মোকাবিলা করতে হবে

গণসংহতি আন্দোলন বলেছে, ভাঙচুর–অগ্নিসংযোগ নয় বরং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের মোকাবিলা করতে হবে।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি ও নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়। আজ শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে তাঁরা বলেন, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরসহ সারা দেশে বিভিন্ন স্থানে যে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে, তা কোনোভাবেই কাঙ্ক্ষিত নয়।

বিবৃতিতে গণসংহতির নেতারা বলেন, ‘জনগণের অভ্যুত্থানে পালিয়ে যাওয়া ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উসকানিমূলক বক্তব্যে জনগণের ভেতরে যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে, তার ফলে এসব ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু ক্ষোভ প্রকাশের এই প্রক্রিয়া আমাদের গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথকে সুগম না করে বরং জটিল করে তুলতে পারে।’

গণসংহতির নেতারা জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ফ্যাসিবাদকে রাজনৈতিক ও আদর্শিকভাবে মোকাবিলা করে দেশকে এগিয়ে নিতে ভূমিকা পালন করতে হবে।

বিবৃতিতে দুই নেতা আরও বলেন, সরকার থাকা অবস্থায় এ রকম কর্মকাণ্ড গ্রহণযোগ্য নয় এবং সরকারের অস্তিত্বকেই তা প্রশ্নবিদ্ধ করে।

গণসংহতির নেতারা জুলাই গণহত্যার বিচার এবং শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করার তৎপরতা জোরদার করার আহ্বান জানান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সংহতির অভাব সংস্কার প্রচেষ্টার জন্য গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে
  • আজহারীর মাহফিলকে কেন্দ্র করে চাঁদাবাজি চলছে: হারুনুর রশিদ
  • গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের মোকাবিলা করতে হবে
  • ৫ আগস্টই ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িটি ধূলিসাৎ করা উচিত ছিল: হাসনাত আবদুল্লাহ 
  • বইমেলায় ওয়ালিদ আহমেদের দুই বই
  • শেখ পরিবারের নাম ভেঙে দিলেন যবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা
  • ‘জুলাই অভ্যুত্থানকে সাহিত্য–সংস্কৃতিতে একটা আন্দোলন হিসেবে হাজির করা যেতে পারে’
  • ‘জেলা প্রশাসক’ ও ‘উপজেলা নির্বাহী অফিসার’ পদবি পরিবর্তনের সুপারিশ
  • কুবিতে বিপ্লব পরবর্তী শিক্ষাঙ্গন ও গণমাধ্যম নিয়ে আলোচনা