চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে বিএসএফের নির্যাতনে বাংলাদেশি নিহতের অভিযোগ
Published: 7th, February 2025 GMT
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে বিএসএফের নির্যাতনে বারিকুল ইসলাম নামে এক বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহত বারিকুল শিবগঞ্জের দুর্লভপুর ইউনিয়নের নামোজগনাথপুর স্কুলমাঠ এলাকার সেতাউর রহমানের ছেলে। পরিবারের দাবি, রঘুনাথপুর সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় ভূখণ্ডে অনুপ্রবেশের অভিযোগে তাকে হত্যা করা হয়েছে।
নিহতের ছোটভাই সুমন আলীর অভিযোগ, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে উপজেলার ফতেপুর ও রঘুনাথপুর ক্যাম্পের মাঝ এলাকা দিয়ে ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশের অভিযোগে ভারতের ১১৫ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের রেস ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যরা বারিকুলকে আটক করে। পরে নির্যাতন চালালে সে মারা যায়। তবে বিজিবির পক্ষ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়নি।
দুর্লভপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম আযম নিহতের পরিবারের সদস্যদের উদ্ধৃতি দিয়ে জানান, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে শিবগঞ্জ উপজেলার রঘুনাথপুর এলাকার পাশ দিয়ে কয়েকজন ব্যক্তিসহ বারিকুল ভারতে অনুপ্রবেশ করলে বিএসএফ সদস্যরা গুলি করে। এ সময় বারিকুল পড়ে গেলেও বাকিরা বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে সমর্থ হয়। পরে রেস ক্যাম্পের সদস্যরা বারিকুলকে ধরে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন চালানোর একপর্যায়ে মারা যায়। বর্তমানে তার মরদেহ বিএসএফ ক্যাম্পে রয়েছে। তার শরীরে আঘাতে নমুমা পাওয়া গেছে বলে নিহতের ভারতীয়ভূখণ্ডে বাস করা স্বজনরা শুক্রবার দুপুরে জানিয়েছেন।
নিহতের ছোটভাই সুমন আলী দাবি করেন, তার ভাই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পদ্মা নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। পরে ভারতের স্বজনদের মাধ্যমে জানতে পারেন, তার ভাইয়ের মরদেহ ভারতের মহিষালবাড়ি হাসপাতালে রাখা আছে।
তিনি আরও জানান, বিজিবি সদস্যরা তাদের বাড়িতে এসেছিল। মরদেহ ফেরতের জন্য বিষয়টি তাদের জানানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে ৫৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে.
শিবগঞ্জ থানার ওসি গোলাম কিবরিয়া এ ধরনের একটি খবর তিনি বিভিন্ন মাধ্যমে ও পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে জেনেছেন বলে জানান।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: চ প ইনব বগঞ জ শ বগঞ জ ব এসএফ
এছাড়াও পড়ুন:
পঞ্চগড় সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নাগরিক নিহত, পতাকা বৈঠক
পঞ্চগড়ের ভিতরগড় সীমান্তে ভারতের অভ্যন্তরে বিএসএফের গুলিতে মো. আল আমিন (৩৬) নামের এক বাংলাদেশি নাগরিক নিহত হয়েছেন। লাশটি ভারতীয় পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে বিএসএফ।
গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত তিনটার পর পঞ্চগড় সদর উপজেলার অমরখানা ইউনিয়নের ভিতরগড় সীমান্তের ৭৪৪ নম্বর মেইন পিলারের ৭ নম্বর সাব–পিলার–সংলগ্ন এলাকার ওপারে ভারতের ভাটপাড়ায় কাঁটাতারের বেড়ার লিংক রোড–সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে ওই সীমান্তে বিজিবি–বিএসএফ ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক করে ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে লাশ ফেরত চেয়েছে বিজিবি। নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ মো. বদরুদ্দোজা প্রথম আলোকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিহত মো. আল আমিন পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের জিন্নাতপাড়া এলাকার সুরুজ আলীর ছেলে। তিনি সীমান্তে চোরাকারবারির সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে জানিয়েছে বিজিবি।
শেখ মো. বদরুদ্দোজা জানান, আল আমিন নামের ওই ব্যক্তি প্রায়ই সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশ করতেন বলে জানা গেছে। তিনি চোরাকারবারের সঙ্গে জড়িত এবং ভারতীয় চোরাকারবারিরা তাঁদের পৃষ্ঠপোষকতা করতেন। পাঁচ থেকে ছয় দিন আগে আল আমিন ভারতে গিয়েছিলেন বলে জানা গেছে। গতকাল দিবাগত রাত তিনটার পর ১০ থেকে ১৫ চোরাকারবারি ভারত থেকে গরু নিয়ে বাংলাদেশের দিকে আসছিলেন। এ সময় ভারতের ৪৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের ভাটপাড়া বিএসএফ সদস্যরা তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। এতে আল আমিন ভারতের অভ্যন্তরেই মারা যান। বিষয়টি জানতে পেরে বিজিবি ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে পতাকা বৈঠক আহ্বান করে।
বদরুদ্দোজা বলেন, পতাকা বৈঠকে বিএসএফ দাবি করেছে, গরু নিয়ে চোরাকারবারিরা বাংলাদেশে আসার সময় বিএসএফ বাধা দিলে তাঁরা বিএসএফের ওপর আক্রমণ করেন। এতে তাদের বিএসএফ সদস্যরা আহত হয়েছেন। পরে আত্মরক্ষার্থে তারা গুলি চালালে ওই ব্যক্তি মারা যায় বলে দাবি করেছে বিএসএফ।
লাশ হস্তান্তরের বিষয়ে বদরুদ্দোজা বলেন, ‘পতাকা বৈঠকে আমরা জানিয়েছি, কেউ অপরাধ করলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। কিন্তু গুলি করে হত্যা কখনোই কাম্য নয়। এ ঘটনায় আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাই। পরে আমরা লাশ ফেরত চাইলে আইনগত প্রক্রিয়া শেষে বিজিবি–বিএসএফের উপস্থিতিতে দুই দেশের পুলিশের মাধ্যমে লাশ হস্তান্তর করবে বলে জানিয়েছে বিএসএফ।’