ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আইনের শাসনকে অবজ্ঞা করার অভিযোগ আনলেন মার্কিন বিচারক
Published: 7th, February 2025 GMT
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত স্বার্থে আইনের শাসন অবজ্ঞা করছেন বলে অভিযোগ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যের সিয়াটলের একজন ফেডারেল বিচারক। জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের অধিকার বাতিল করে ট্রাম্পের স্বাক্ষরিত নির্বাহী আদেশকে অসাংবিধানিক বলে ঘোষণা করেছেন তিনি।
মার্কিন ডিস্ট্রিক্ট বিচারক জন কফেনোর দুই সপ্তাহ আগে ট্রাম্পের ওই নির্বাহী আদেশকে সাময়িক স্থগিত করেছিলেন। এবার সেটিকে দেশজুড়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষিদ্ধ করে একটি আদেশ জারি করেছেন তিনি।
রিপাবলিকান দলের সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান ১৯৮১ সালে জন কফেনোরকে নিয়োগ দিয়েছিলেন। এই বিচারক বলেন, ‘এটি ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, আমাদের প্রেসিডেন্টের কাছে আইনের শাসন তাঁর নীতি বাস্তবায়নের পথে একটি বাধা ছাড়া আর কিছুই নয়। রাজনৈতিক বা ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্যই হোক না কেন—ট্রাম্পের কাছে আইনের শাসন পাশ কাটিয়ে যাওয়া বা শুধু উপেক্ষা করা সাধারণ একটি বিষয়।’
গতকাল বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ট্রাম্প প্রশাসন ওই বিচারকের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করতে যাচ্ছে বলে একটি নোটিস দাখিল করে। তবে এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও হোয়াইট হাউস থেকে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া পাওয়া যায়নি।
ডেমোক্র্যাটিক শাসিত অঙ্গরাজ্য ওয়াশিংটন, অ্যারিজোনা, ইলিনয় ও ওরেগনের কর্তৃপক্ষ এবং বেশ কয়েকজন গর্ভবতী নারীর মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক এই আদেশ দিয়েছেন। এই আদেশ মামলাটিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। মামলার বাদীদের যুক্তি, ট্রাম্পের ওই নির্বাহী আদেশ মার্কিন সংবিধানের ১৪তম সংশোধনীতে অন্তর্ভুক্ত একটি অধিকারের লঙ্ঘন। যেখানে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী যেকেউ–ই দেশটির নাগরিক হিসেবে গণ্য হবে।
ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ অনুযায়ী, ১৯ ফেব্রুয়ারির পর যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া কোনো শিশুর মা–বাবার কেউই মার্কিন নাগরিক বা বৈধ স্থায়ী বাসিন্দা না হলে সেই শিশুর নাগরিকত্বের স্বীকৃতি না দিতে মার্কিন সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ট্রাম্প ২০ জানুয়ারি ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রথম দিনেই এই আদেশে স্বাক্ষর করেছেন, যা তাঁর কঠোর অভিবাসন নীতির অংশ।
অন্যদিকে মেরিল্যান্ডের এক ফেডারেল বিচারকও গত বুধবার ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের ওপর একই রকম নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন এবং বোস্টন ও নিউ হ্যাম্পশায়ারের বিচারকেরা ডেমোক্র্যাট–শাসিত রাজ্য ও অভিবাসী অধিকার সমর্থকদের পক্ষে আদেশ দেবেন কিনা, সেটা দেখার অপেক্ষায় আছেন অভিবাসী অধিকারকর্মীরা। আজ শুক্রবার ও আগামী সোমবার এই দুই আদালত আদেশ দিতে পারেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
পাল্টা ৩৭ শতাংশে বাংলাদেশি পণ্যে শুল্ক দাঁড়াত ৫২%
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প উচ্চহারে যে পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছিলেন, তা বহাল থাকলে বড় বিপাকে পড়ত দেশগুলো। তবে গতকাল বুধবারই তা তিন মাসের জন্য স্থগিত করা হয়। অবশ্য ন্যূনতম ১০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক বহাল রাখা হয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসন বাংলাদেশের ওপর নতুন করে আরোপ করেছিল ৩৭ শতাংশ শুল্ক। ৭ এপ্রিল জারি করা ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে বলা হয়েছিল, এই হার হবে এত দিন থাকা শুল্ক হারের অতিরিক্ত। মানে হলো, এত দিন বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশের পণ্য যে হারে শুল্ক দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যেত, তার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার কথা ছিল নতুন এই পাল্টা শুল্ক।
ইউএস ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রপ্তানি হওয়া বাংলাদেশি পণ্যে যত শুল্ক আদায় করা হয়েছে, তা গড় করলে হার দাঁড়ায় ১৫ শতাংশের মতো। পাল্টা শুল্কসহ নতুন শুল্কহার দাঁড়ানোর কথা ছিল প্রায় ৫২ শতাংশ।
ভারতের ক্ষেত্রে ২৬, ভিয়েতনামের ৪৬, ইন্দোনেশিয়ার ৩২, কম্বোডিয়ার ৪৯ এবং পাকিস্তানের ক্ষেত্রে ২৯ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল। এসব দেশ আগে কত হারে গড় শুল্ক দিত, নতুন হার মোট কত দাঁড়িয়েছিল, তা আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি।
অবশ্য বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় একটি তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান পোশাক রপ্তানিতে দেশভিত্তিক শুল্কের একটি হিসাব করেছে। স্থগিত করার আগের হার ধরে করা হিসাবটি মার্কিন একটি ক্রেতা প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে যাচাই করা হয়েছে। ওই হিসাবে দেখা যায়, এত দিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রবেশে বাংলাদেশি তৈরি পোশাককে গড়ে ১১ দশমিক ৫৬ শতাংশ শুল্ক দিতে হতো। পাল্টা শুল্কের কারণে তা বেড়ে ৪৮ দশমিক ৫৬ শতাংশে দাঁড়ানোর কথা ছিল।
নতুন হারে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে কম্বোডিয়াকে গড়ে ৬০ দশমিক ৭০, ভিয়েতনামকে সাড়ে ৫৭, ভারতকে ৩৮ দশমিক ৪৭, ইন্দোনেশিয়াকে ৪৩ দশমিক ৪৫ এবং পাকিস্তানকে ৪১ দশমিক ৪৬ শতাংশ হারে শুল্ক দিতে হতো, যা স্থগিত হয়েছে। এসব দেশ বাংলাদেশের প্রতিযোগী। উল্লেখ্য, পোশাকের বিভিন্ন ধরনের ওপর আলাদা শুল্কহার রয়েছে। হিসাবটি করা হয়েছে গড় ধরে।
চীনের ওপর ট্রাম্প শুরুতে ৩৪ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করেন। পরে আরও শুল্ক আরোপ করা হয়। গতকাল দেশটির ওপর ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক স্থগিত না হলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চীন, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়াকে বাংলাদেশের চেয়ে বেশি শুল্ক দিতে হতো। তবে ভারত, ইন্দোনেশিয়া ও পাকিস্তানের শুল্কহার বাংলাদেশের চেয়ে কম হতো।
পাল্টা শুল্ক স্থগিত হওয়ার আগে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সাবেক সদস্য ও বাণিজ্য বিশ্লেষক মোস্তফা আবিদ খান প্রথম আলোকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কহার যদি অন্যদের চেয়ে কমও হয়, তবু দুশ্চিন্তা রয়েছে। প্রথমত, বাড়তি শুল্কের কারণে যে খরচ বাড়বে, তার একটি অংশ বাংলাদেশি কারখানাগুলোর ওপর চাপানোর চেষ্টা করবে ক্রেতারা। সেই চাপ নেওয়ার সক্ষমতা বাংলাদেশি কারখানাগুলোর থাকবে বলে মনে হয় না। দ্বিতীয়ত, মূল্যবৃদ্ধির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চাহিদা কমে যেতে পারে। তিনি বলেন, দীর্ঘ মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো কম শুল্ক থাকা দেশ থেকে পণ্য কিনতে উৎসাহিত হতে পারে। সেটা হবে বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর জন্য বড় দুশ্চিন্তার কারণ।
দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়া ডোনাল্ড ট্রাম্প আগেই শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়ে রেখেছিলেন। হোয়াইট হাউসের গোলাপবাগানে ২ এপ্রিল স্থানীয় সময় বিকেল চারটায় নতুন শুল্কনীতি ঘোষণা করেন ট্রাম্প। তিনি বিশ্বের সব আমদানিকারক দেশের ওপর গড়ে ন্যূনতম ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন। একই সঙ্গে ৬০টি দেশ ও অঞ্চলকে ‘বড় অপরাধী’ হিসেবে চিহ্নিত করে বাড়তি শুল্ক বসিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এসব দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য-ঘাটতি বেশি।
ট্রাম্পের পাল্টা শুল্কের ঘোষণার পর থেকে বিশ্বজুড়ে তোলপাড় চলছিল, শেয়ারবাজারে ধস নেমেছিল, কমে গিয়েছিল জ্বালানি তেল ও ডলারের দাম। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার আশঙ্কাও করা হচ্ছিল। এমন পরিস্থিতিতে গতকাল ট্রাম্প পাল্টা শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত করার ঘোষণা দেন।
এর আগে বিভিন্ন দেশ মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে পাল্টা শুল্ক স্থগিত করার অনুরোধ জানায়। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস গত সোমবার পাল্টা শুল্ক আরোপ তিন মাসের জন্য স্থগিত করার অনুরোধ জানিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি দেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, ওই দিনই হোয়াইট হাউসকে চিঠি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করে সে দেশে থাকা বাংলাদেশের দূতাবাস। অন্যদিকে একই দিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি (ইউএসটিআর) জেমিসন গ্রিয়ারের কাছে এক চিঠি পাঠিয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, বাংলাদেশের শুল্ক তালিকায় বর্তমানে ১৯০টি পণ্যের ওপর শুল্কহার শূন্য অর্থাৎ কোনো শুল্ক নেই। বাংলাদেশের ট্যারিফ লাইনের আরও ১০০টি পণ্যকে শুল্কমুক্ত তালিকায় যুক্ত করার চিন্তা করা হচ্ছে বলে জানান বাণিজ্য উপদেষ্টা।
এককভাবে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি বাজার। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হিসাবে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ ৭৬০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে, যা দেশের মোট রপ্তানি আয়ের ১৭ শতাংশের কিছু বেশি।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্যানুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হওয়া বাংলাদেশি পণ্যের ৮৭ শতাংশই ছিল তৈরি পোশাক। এ ছাড়া মাথার টুপি বা ক্যাপ, চামড়ার জুতা, হোমটেক্সটাইল, পরচুলা এবং অন্যান্য চামড়াজাত পণ্য বেশি রপ্তানি হয়। বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পণ্য রপ্তানি করে ২ হাজার ৩২৬টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে ৯৫৭টির মোট রপ্তানির এক-চতুর্থাংশের বেশি পণ্যের গন্তব্য ছিল যুক্তরাষ্ট্র। ফলে পাল্টা শুল্কের প্রভাবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ক্রয়াদেশ কমলে এই প্রতিষ্ঠানগুলো বিপাকে পড়ত। এসব প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশই তৈরি পোশাক রপ্তানি করে।
ক্রয়াদেশ স্থগিত হচ্ছিল
ট্রাম্পের নতুন শুল্ক ঘোষণার পরপরই বাংলাদেশের তৈরি পোশাক, চামড়া পণ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের রপ্তানিকারকেরা মার্কিন ক্রেতাপ্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে চলমান ক্রয়াদেশের ওপর স্থগিতাদেশ পাচ্ছিলেন। ক্রেতাদের একটা অংশ বাড়তি শুল্কের লোকসান কমাতে মূল্যছাড় দাবি করছিল। এমনকি পণ্য জাহাজীকরণ (শিপমেন্ট) পিছিয়ে দিতে বলছিল কোনো কোনো মার্কিন ক্রেতাপ্রতিষ্ঠান।
চট্টগ্রামের ড্রেস কিং নামের তৈরি পোশাক কারখানা গত বছর ৫৬ লাখ তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। তাদের পণ্য রপ্তানির ৬০ শতাংশের গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র। পাল্টা শুল্ক আরোপের পর মার্কিন ক্রেতারা প্রতিষ্ঠানটির কাছে মূল্যছাড় দাবি করছিল। বিষয়টি নিশ্চিত করে ড্রেস কিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল শুক্কুর প্রথম আলোকে বলেন, মার্কিন ক্রেতারা মূল্যছাড় চাইছেন। তবে এখনো কোনো ক্রয়াদেশ স্থগিত হয়নি।
দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান স্প্যারো গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ। তাদের কিছু ক্রয়াদেশ স্থগিত রাখতে বলেছে মার্কিন ক্রেতা প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া কিছু ক্রয়াদেশের মূল্যছাড়ও চাইছে ক্রেতারা। কী পরিমাণ রপ্তানি পণ্য স্থগিত ও মূল্যছাড়ের মুখে পড়ছে, সেটি এখনো হিসাব করতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি।
স্প্যারো গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শোভন ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, পাল্টা শুল্কে স্বল্পমেয়াদি প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।
বাংলাদেশের শঙ্কা
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শীর্ষ তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক দেশ হচ্ছে চীন, ভিয়েতনাম, বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া, ভারত, মেক্সিকো, হন্ডুরাস, কম্বোডিয়া, পাকিস্তান ও দক্ষিণ কোরিয়া। কিছু কিছু দেশ আছে, যাদের পোশাক রপ্তানির সক্ষমতা কম। কিন্তু সেসব দেশে শুল্কহার কম রেখেছিলেন ট্রাম্প। যেমন হন্ডুরাস, ডমিনিকান প্রজাতন্ত্র, তুরস্ক ও মিসর।
বাংলাদেশের রপ্তানিকারকেরা বলছেন, পাল্টা শুল্কের কারণে স্বল্প মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চলমান ক্রয়াদেশের পণ্য রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা ছিল।
ট্রাম্প পাল্টা শুল্ক স্থগিতের আগে নিট পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সাবেক সভাপতি ফজলুল হক প্রথম আলোকে বলেন, পাল্টা শুল্কের কারণে সাময়িক চ্যালেঞ্জই মূল। এই সময়টা কাটাতে পারলে বড় ধাক্কা এড়ানো সম্ভব। মূল্যছাড় ও ক্রয়াদেশ স্থগিত হওয়ার কারণে বিপাকে পড়া ছোট ও মাঝারি কারখানাগুলো যাতে টিকে থাকতে পারে, সেদিকে সরকারকে নজর দিতে হবে। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ মেয়াদে আমাদের সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ, প্রতিযোগী যেসব দেশে শুল্ক কম, তারা অভিজ্ঞতা ও উৎপাদন সক্ষমতায় অনেক পিছিয়ে।’
ট্রাম্প তিন মাসের জন্য পাল্টা শুল্ক স্থগিত করেছেন। ফলে আপাতত বড় দুশ্চিন্তা নেই। তিন মাস পর কোন দেশের ক্ষেত্রে শুল্কহার কত দাঁড়ায়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।