বুটজোড়া তুলে রাখলেন মার্সেলো, রোনালদোর আবেগী বার্তা
Published: 7th, February 2025 GMT
লেফটব্যাক এবং মার্সেলো ভিয়েরা, এই যেন সমার্থক ফুটবল বিশ্বে। ইতিহাসের অন্যতম সফল এই লেফটব্যাক তার ক্যারিয়ারের সেরাটা ফেলে এসেছিলেন আগেই। এবার তিনি ইতি টানলেন তার খেলোয়াড়ি জীবনের। সব ধরনের ফুটবলকে বিদায় বলে দিলেন ব্রাজিল ও রিয়াল মাদ্রিদের কিংবদন্তি এই ডিফেন্ডার। বৃহস্পতিবার সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত একটি ভিডিওতে অবসর ঘোষণা করেছেন ৩৬ বছর বয়সী এই তারকা ফুটবলার। মার্সেলোর বিদায়ে আবেগী এক বার্তা দিয়েছেন তার বন্ধু এবং এক সময়ের সতীর্থ ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো।
মার্সেলো খ্যাতি অর্জন করেন মূলত রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেওয়ার পর। এই ব্রাজিলিয়ান ২০০৭ সালের জানুয়ারিতে মাত্র ১৮ বছর বয়সে ফ্লুমিনেন্স থেকে রিয়ালে যোগ দেন। মাদ্রিদে সাড়ে ১৫ বছর কাটিয়ে ক্লাবটির ইতিহাসে সর্বাধিক ট্রফি জেতা খেলোয়াড় হিসেবে বিদায় নেন তিনি। মার্সেলো লস ব্ল্যাঙ্কসদের হয়ে ৫৪৬টি ম্যাচ খেলে করেন ৩৮টি গোল; করিয়েছেন ১০৩টি। অন্যদিকে রিয়ালের হয়ে ৫টি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ এবং ৬টি লা লিগা শিরোপা জিতেছেন তিনি। মার্সেলো ক্যারিয়ারে সর্বমোট ৭২১ ম্যাচে করেছেন ৫৮টি গোল এবং অ্যাসিস্ট পেয়েছেন ১১৭টি।
আরো পড়ুন:
শেষ মুহূর্তের গোলে সেমিফাইনালে রিয়াল
ম্যানসিটির সামনে রিয়াল: চ্যাম্পিয়নস লিগ প্লে-অফ
বিদায়ী ভিডিওতে মার্সেলো বলেন, “একজন খেলোয়াড় হিসেবে আমার গল্প এখানেই শেষ। কিন্তু ফুটবলকে দেওয়ার মতো আমার অনেক কিছু এখনও বাকি।”
রিয়াল মাদ্রিদ ছাড়ার পর ২০২৩ সালে ব্রাজিলিয়ান ক্লাব ফ্লুমিনেন্সের হয়ে কোপা লিবার্তাদোরেস জয় অর্জন ছিল ম্যার্সেলোর ক্যারিয়ারের একটি বড় সাফল্য। তবে, ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে গ্রেমিওর বিপক্ষে একটি ম্যাচ চলাকালীন কোচ মানো মেনেজেসের সঙ্গে বিতর্কের পর ফ্লুমিনেন্সের সাথে তিনি চুক্তি বাতিল করেন।
মার্সেলো যোগ দেওয়ার ২ বছর পর রিয়ালে যান রোনালদো। এরপর এই দুইনের সম্পর্কটা সতীর্থ থেকে ধীরে ধীরে বন্ধুত্বে গড়ায় আর সেখানে থেকে ভ্রাতৃত্বে। ম্যাচে বাঁ প্রান্ত থেকে রোনালদোকে বেশিরভাগ বলের যোগান দিতেন মার্সেলো। গোলের পর ব্রাজিলের সাবেক এই লেফটব্যাকের সঙ্গে ‘সিআর৭’এর আইকনিক উদযাপনটি স্থান করে নিয়েছিল সমর্থকদের হৃদয়ে। বন্ধু অবসর তাই আবেগী করেছে পর্তুগিজ মহাতারকাকে।
মার্সেলো ফুটবল থেকে অবসর ঘোষণার পর রোনালদো তার এক্স হ্যান্ডল থেকে লিখেন, “আমার ভাই, কী অবিশ্বাস্য ক্যারিয়ার! আমরা একসঙ্গে অনেক সময় কাটিয়েছি, বছরের পর বছর অর্জন করেছি, জিতেছি এবং অবিস্মরণীয় সব মুহূর্ত আছে। তুমি সতীর্থের চেয়েও বেশি কিছু, আমার জীবনের সঙ্গী। সবকিছুর জন্য ধন্যবাদ বন্ধু। জীবনের নতুন মঞ্চে তোমার সব রকম ভালো কামনা করছি।”
মার্সেলো ব্রাজিল জাতীয় দলের হয়ে ৫৮টি ম্যাচ খেলেছেন মার্সেলো। গোল করেছেন ৬টি। জাতীয় দলের হয়ে ২০১৩ সালে ফিফা কনফেডারেশন্স কাপ এই তারকা।
ঢাকা/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
রোহিতের অবসর নিয়ে মন্তব্য ‘এক্সপাঞ্জ’ করে নিলেন গিল
নিউজিল্যান্ড নিয়ে এক-দুটি প্রশ্নই হলো। বাকি সব ভারত আর ভারতীয় ক্রিকেটারদের নিয়ে। ভারতীয় দলের সংবাদ সম্মেলন অবশ্য এ রকমই হয় সব সময়। এক দলেই এত তারকা, প্রশ্ন করার এত উপজীব্য বিষয়; প্রতিপক্ষ নিয়ে কথা বলার সময় কই! হোক সে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ফাইনালের প্রতিপক্ষ।
ফাইনালের আগে আজ দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ভারতীয় দলের সহ-অধিনায়ক শুবমান গিলের সংবাদ সম্মেলনও অনেকটা সেরকমই হলো। সহ-অধিনায়ক হিসেবে তাঁর অভিজ্ঞতা নিয়ে প্রশ্ন, বিরাট কোহলি-রোহিত শর্মাকে নিয়ে প্রশ্ন, ভারতের ব্যাটিং গভীরতা নিয়ে প্রশ্ন, চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আগের ম্যাচগুলো নিয়ে প্রশ্ন, আইসিসি ইভেন্টের ফাইনালে ভারতের পারফরম্যান্স নিয়ে প্রশ্ন। এসব নিয়েও গিলের কথায় বাড়তি কিছু ছিল না, অনেকটা যেন ভারতীয় দল সম্পর্কে একটা লিখিত রচনা পড়ে যাওয়া।
কিন্তু সংবাদ সম্মেলনের একেবারে শেষ প্রশ্নে গিলের উত্তরের রেশ থেকে গেল সংবাদ সম্মেলনের পরেও। গিলকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, শোনা যাচ্ছে কাল ফাইনালের পর ওয়ানডে ক্রিকেটকে বিদায় বলতে পারেন রোহিত শর্মা। ড্রেসিংরুমে এ নিয়ে কোনো আলোচনা আছে কি না, বা রোহিত ড্রেসিংরুমে এ নিয়ে কিছু বলেছেন কিনা।
শুবমান গিল এতক্ষণ যেরকম চোখে-মুখে স্বাভাবিক অভিব্যক্তি নিয়ে সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে আসছিলেন, এমন চাঞ্চল্য জাগানো প্রশ্নেও তার ব্যতিক্রম হলো না। সংবাদ সম্মেলন কক্ষে সবাই নড়েচড়ে বসলেও গিল একই রকমভাবেই বলে গেলেন, ভারতীয় দলের ড্রেসিংরুমে এ নিয়ে কোনো আলোচনা নেই। রোহিত শর্মাও এ নিয়ে ড্রেসিংরুমে কোনো কথা বলেননি। কিন্তু স্বাভাবিকভাবে বলা এই কথাটারই শেষ দিকে তিনি এমন এক ক্লু দিয়ে গেলেন, যেটার অর্থ হতে পারে অনেক কিছু। সম্মেলন ওখানেই শেষ হয়ে গেলেও তার রেশ তাই থেকে গেল পরেও।
ওই প্রশ্নে গিলের হুবহু উত্তর ছিল এ রকম, ‘এখন পর্যন্ত তো আমাদের সব আলোচনা আমাদের ম্যাচ জয় এবং চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জয় নিয়েই হয়েছে। এ রকম কিছু বা এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে দলের সঙ্গে বা আমাদের সঙ্গে কোনো কথা হয়নি। আমার মনে হয় না রোহিত ভাইও এটা নিয়ে এখন খুব একটা ভাবছেন। আমাদের কালকের ম্যাচ শেষ হলে হয়তো তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন। দলের মধ্যে এটা নিয়ে কোনো আলোচনা নেই।’
শেষ বাক্যের আগের বাক্যটাকে মনে হতেই পারে, কাল চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ফাইনাল শেষে রোহিত শর্মা ওয়ানডে ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিলেও নিতে পারেন। তিনি এটা নিয়ে তখন ভাববেন। কিন্তু গিল নাকি কথাটা ওভাবে বলেননি, বা বলতে চাননি। সংবাদ সম্মেলন কক্ষ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর যে কোনো কারণেই হোক চৈতন্য ফেরায় তিনি আবার ফিরে আসেন সেখানে, স্পষ্ট করেন তাঁর বক্তব্য। ‘এক্সপাঞ্জ’ করে নেন তাঁর বলা ‘আমাদের কালকের ম্যাচ শেষ হলে হয়তো তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন’ কথাটা।’
ততক্ষণে বেশির ভাগ সাংবাদিক প্রেস বক্সে ফিরে আসায় গিলের সেই বার্তা নিয়ে প্রেসবক্সে ছুটে আসেন আইসিসির এক মিডিয়া কর্মী। বক্তব্যের শেষ অংশটা সবাইকে শুধরে নিতে অনুরোধ করে তিনি বললেন, গিল এটা বোঝাতে চাননি যে কাল ফাইনালের পর রোহিত ওয়ানডে থেকে অবসর নেবেন বা সেরকম কোনো কিছু ভাবছেন। এই বক্তব্য যেহেতু ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি করতে পারে, কেউ যেন গিলের বক্তব্যের ওই অংশটুকু না লেখেন।
অর্থাৎ, রোহিত শর্মার অবসর নিয়ে ভারতীয় ড্রেসিংরুমে কোনো আলোচনা আছে কিনা প্রশ্নে গিলের সংশোধিত উত্তরটা হবে এ রকম, ‘এখন পর্যন্ত তো আমাদের সব আলোচনা আমাদের ম্যাচ জয় এবং চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জয় নিয়েই হয়েছে। এ রকম কিছু বা এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে দলের সঙ্গে বা আমাদের সঙ্গে কোনো কথা হয়নি। আমার মনে হয় না রোহিত ভাইও এটা নিয়ে এখন খুব একটা ভাবছেন। দলের মধ্যে এটা নিয়ে কোনো আলোচনা নেই।’
বাকিটা বোঝা যাবে কাল ফাইনাল শেষেই।