চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করেছে থাই এয়ারওয়েজের একটি উড়োজাহাজ। এক যাত্রী হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ায় শুক্রবার রাত ১টার দিকে উড়োজাহাজটি জরুরি অবতরণ করে।

শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রকৌশলী (জনসংযোগ) মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল বলেন, থাই এয়ারওয়েজের ব্যাংকক টু ঢাকা ফ্লাইটের মো.

সাজ্জা নামের এক যাত্রী অন বোর্ডে (উড্ডয়নরত অবস্থায়) হার্ট অ্যাটাক করেন। এ জন্য মেডিকেল ইমার্জেন্সি ঘোষণা করে উড়োজাহাজটির ক্যাপ্টেন সবচেয়ে কাছাকাছি চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণের অনুমতি চান। অনুমতি সাপেক্ষে উড়োজাহাজটি শুক্রবার রাত ১টায় চট্টগ্রামে নিরাপদে অবতরণ করে। 

তিনি বলেন, বিমানবন্দরের চিকিৎসক ওই রোগীকে দেখে প্রাথমিকভাবে মৃত বলে ধারণা করেন। পরে বিমানবন্দর কন্ট্রোল টাওয়ারকে জানান, ইসিজি ছাড়া নিশ্চিত মৃত্যু ঘোষণা করা সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে তিনি রোগীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেন। পরে রাত ৩টা ৪০মিনিটে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায় উড়োজাহাজটি।


 

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

উড়োজাহাজে ৪০ ঘণ্টার নরকযন্ত্রণা: হাতে হাতকড়া, পায়ে শিকল, টেনেহিঁচড়ে নেওয়া হয় শৌচাগারে

‘দীর্ঘ ৪০ ঘণ্টার বিমানযাত্রা। আমাদের সবার হাতকড়া পরানো ছিল। পা ছিল শিকলে বাঁধা। আসন থেকে এক ইঞ্চিও সরতে দেওয়া হয়নি। এমনকি শৌচাগারে যেতে বারবার অনুরোধ করতে হয়। টেনেহিঁচড়ে শৌচাগারে নেওয়া হয়। শৌচাগারের দরজা খুলে ক্রুরা ধাক্কা দিয়ে ভেতরে ঠেলে দেন।’

কথাগুলো বলছিলেন হরবিন্দর সিং। তাঁর বয়স ৪০ বছর। বাড়ি ভারতের পাঞ্জাবের হোশিয়ারপুরের তাহলি গ্রামে। ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর দেশটি থেকে প্রথম ব্যাচে নথিপত্রবিহীন যে ১০৪ জন অভিবাসীকে ভারতে ফেরত পাঠানো হয়েছে, তাঁদেরই একজন হরবিন্দর।

নথিপত্রবিহীন ভারতীয় অভিবাসীদের নিয়ে মার্কিন সামরিক উড়োজাহাজ গতকাল বুধবার দুপুরে পাঞ্জাবের অমৃতসর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভারত—৪০ ঘণ্টার এই উড়োজাহাজযাত্রাকে ‘নরকের চেয়েও জঘন্য’ বলে মন্তব্য করেন হরবিন্দর।

এই ভারতীয় নাগরিকের ভাষ্য, ৪০ ঘণ্টার যাত্রায় ঠিকমতো খেতেও দেওয়া হয়নি। হরবিন্দর বলেন, ‘হাতকড়া পরেই খেতে বাধ্য করা হয় আমাদের। নিরাপত্তাকর্মীদের কাছে কয়েক মিনিটের জন্য হলেও হাতকড়া খুলে দেওয়ার অনুরোধ করেও লাভ হয়নি। এই যাত্রা শুধু শারীরিকভাবে যন্ত্রণার ছিল না, মানসিকভাবেও ক্লান্তিকর ছিল।’

তবে একজন ‘দয়ালু’ ক্রু তাঁদের ফল খেতে দিয়েছিলেন বলে জানান হরবিন্দর।

মাত্র আট মাস আগে ‘ডাঙ্কি রুট’ ধরে ভারত ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রের পথে পাড়ি জমিয়েছিলেন হরবিন্দর। ভারতে রেখে যাওয়া স্ত্রীকে আরও সমৃদ্ধ জীবনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছিলেন তিনি। হরবিন্দর বলেন, দীর্ঘ যাত্রাপথে তিনি একটুও ঘুমাতে পারেননি। সারাক্ষণ শুধু স্ত্রীকে দিয়ে যাওয়া প্রতিশ্রুতির কথা মনে পড়ছিল।

হরবিন্দরের স্ত্রীর নাম কুলজিন্দর কউর। ১৩ বছরের বিবাহিত জীবন তাঁদের। দুই সন্তান রয়েছে। ছেলেটির বয়স ১২ বছর। আর মেয়ের ১১ বছর। পরিবারটি জমি চাষ করে আর গরুর দুধ বিক্রি করে জীবন চালাতে হিমশিম খাচ্ছিল। ২০২৪ সালের জুনে হরবিন্দর ও তাঁর স্ত্রী একটি সিদ্ধান্ত নেন।

নথিপত্রহীন ভারতীয় অভিবাসীদের নিয়ে পাঞ্জাবের অমৃতসরে অবতরণ করে একটি মার্কিন সামরিক বিমান। ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • উড়োজাহাজে যাত্রীর হার্ট অ্যাটাক, শাহ আমানতে জরুরি অবতরণ
  • উড়োজাহাজে ৪০ ঘণ্টার নরকযন্ত্রণা: হাতে হাতকড়া, পায়ে শিকল, টেনেহিঁচড়ে নেওয়া হয় শৌচাগারে