হোয়াটসঅ্যাপে ‘জিরো ক্লিক’ সাইবার হামলা, যেভাবে চুরি হচ্ছে ব্যক্তিগত তথ্য
Published: 7th, February 2025 GMT
ব্যক্তিগত ও পেশাগত যোগাযোগের জন্য বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষ হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করেন। তবে সম্প্রতি জনপ্রিয় এই মেসেজিং প্ল্যাটফর্মের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন শঙ্কা দেখা দিয়েছে। হোয়াটসঅ্যাপের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা জানিয়েছে, পারাগন সলিউশন নামের একটি স্পাইওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ‘জিরো ক্লিক’ নামের বিশেষ ধরনের সাইবার হামলা চালাচ্ছে। এরই মধ্যে নির্বাচিত ব্যক্তিদের হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট হ্যাকড করে তাদের ব্যবহৃত যন্ত্র থেকে তথ্য সংগ্রহ করছে প্রতিষ্ঠানটি।
হোয়াটসঅ্যাপের নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, জিরো ক্লিক নামের সাইবার হামলার পদ্ধতি এতটাই উন্নত ও সূক্ষ্ম যে ব্যবহারকারীরা বুঝতেই পারেন না তাঁদের যন্ত্র আক্রান্ত হয়েছে। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী ও নাগরিক সমাজের সদস্যরা রয়েছেন। জিরো ক্লিক অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ও বিপজ্জনক, কারণ, এটি শনাক্ত করা ও প্রতিরোধ করা কঠিন। সাধারণ অ্যান্টিভাইরাস বা নিরাপত্তা সফটওয়্যার দিয়ে এই হামলা ঠেকানো সম্ভব নয়।
আরও পড়ুনহোয়াটসঅ্যাপে ব্যক্তিগত চ্যাটের তথ্য লুকিয়ে রাখবেন যেভাবে০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫সাধারণত সাইবার হামলার ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীকে কোনো লিংকে ক্লিক করতে হয়, ফাইল ডাউনলোড বা অ্যাটাচমেন্ট খুলতে হয়। কিন্তু জিরো ক্লিক সাইবার হামলা একেবারেই আলাদা। এ ধরনের হামলার ক্ষেত্রে হ্যাকাররা সাধারণত বিশেষ ধরনের বার্তা, ছবি বা অডিও ফাইল পাঠায়, যা ব্যবহারকারীর হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্টে পৌঁছালেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে সক্রিয় হয়ে যায়। ফলে ব্যবহারকারী ক্লিক না করলেও যন্ত্রে থাকা তথ্য বা ছবি সংগ্রহের পাশাপাশি বার্তা বা ফোনকল রেকর্ড করতে পারে হ্যাকাররা।
আরও পড়ুনহোয়াটসঅ্যাপে কল করার নতুন চার সুবিধা১৪ ডিসেম্বর ২০২৪বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের সাইবার হামলা থেকে বাঁচতে ব্যবহারকারীদের যন্ত্রের নিরাপত্তাব্যবস্থা ও হোয়াটসঅ্যাপের সর্বশেষ সংস্করণ ব্যবহার করতে হবে। পাশাপাশি অপরিচিত ব্যক্তির পাঠানো সন্দেহজনক বার্তা বা কল এড়িয়ে চলাসহ দুই স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা ব্যবহার করতে হবে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
আরও পড়ুনহোয়াটসঅ্যাপের নতুন এই ৭ সুবিধা ব্যবহার করেছেন তো?২৩ নভেম্বর ২০২৪.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: হ য় টসঅ য প র ধরন র
এছাড়াও পড়ুন:
পাঁচ বছরের পর শিশুর রাতে বিছানা ভেজানো কি কোনো অসুখের লক্ষণ
শিশুর বিকাশের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো প্রস্রাব–পায়খানার বেগ হলে অভিভাবকদের বোঝাতে পারা বা বলতে পারা, প্রয়োজনমতো মলমূত্র ধরে রাখতে পারা। দিনের বেলা প্রস্রাব ধরে রাখার সক্ষমতা শিশুরা একটু আগে শেখে, আর রাতের বেলা প্রস্রাব ধরে রাখাটা সাধারণত তিন থেকে চার বছরের মাঝামাঝি শিখে যায়। সাধারণত মেয়েশিশুরা ছেলেশিশুদের চেয়ে একটু আগে শেখে।
কিন্তু দেখা যায়, অনেক শিশু পাঁচ বছরের ওপরে বয়স হয়ে গেলেও ঘুমের মধ্যে প্রস্রাব ধরে রাখতে পারে না। দিনে বা রাতে যেকোনো সময়ই এটা হতে পারে। তবে রাতের বেলা ঘুমের মধ্যেই বেশি দেখা যায়। একে ‘নকটারনাল এনিউরেসিস’ বলা হয়। সাধারণত ছেলেশিশুদের মধ্যে এ সমস্যা বেশি দেখা যায়। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, পরিবারের বেশ কয়েকজন সদস্যের মধ্যে এ অভ্যাস ছিল বা রয়েছে। সাধারণভাবে একে তেমন জটিল রোগ হিসেবে ধরা হয় না। তবে রাতে বিছানা ভেজানোর বেশ কিছু কারণ থাকতে পারে।
যদি শিশু পাঁচ বছর বয়স পার করে পরপর তিন মাস প্রতি সপ্তাহে অন্তত দুবার রাতে ঘুমের মধ্যে প্রস্রাব করে, তাহলে নকটারনাল এনিউরেসিস বলা হয়। একে মোটাদাগে দুই ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। কোনো কোনো শিশু আছে, যারা কখনোই রাতে প্রস্রাব ধরে রাখার ক্ষমতা অর্জন করেনি, এ ক্ষেত্রে বলা হয়, এরা প্রাইমারি নকটারনাল এনিউরেসিসে ভুগছে।
আবার একদল শিশু আছে, যারা হয়তো ছয় মাস অথবা তার বেশি সময় ধরে রাতে বিছানা ভেজায় না; তারপর আবার বিছানা ভেজানো শুরু করে। এরা সেকেন্ডারি নকটারনাল এনিউরেসিসে ভুগছে।
মূত্রনালির সংক্রমণ, শারীরিক অস্বাভাবিকতা, ডায়াবেটিস, কিডনির সমস্যা, স্নায়বিক ত্রুটি, মানসিক চাপ, জেনেটিক ত্রুটি, কোষ্ঠকাঠিন্য, বিভিন্ন ওষুধের প্রভাব, শিশুর বিকাশ বিলম্বিত হওয়ার কারণে নকটারনাল এনিউরেসিস হতে পারে।
এ সমস্যা নিয়ে অভিভাবক যারপরনাই দুশ্চিন্তাগ্রস্ত ও বিব্রত থাকেন। আবার শিশুদেরও আত্মসম্মানে বেশ আঘাত করে। এর থেকে মুক্তির জন্য শিশুর বেশ কিছু অভ্যাস পরিবর্তন করার পাশাপাশি ওষুধের মাধ্যমেও চিকিৎসা রয়েছে। তবে সবার আগে দেখতে হবে, শিশুর মূত্রনালির সংক্রমণ, ডায়াবেটিস, কিডনির সমস্যা, মানসিক সমস্যা অথবা কোনো ওষুধের প্রভাবে এমনটা হচ্ছে কি না।
প্রথমেই অভিভাবককে আশ্বস্ত করতে হবে। সম্ভব হলে তাঁরা চার্ট বা ডায়েরিতে রাতে শিশুর বিছানা ভেজানোর হিসাব রাখতে পারেন। যে রাতে শিশু বিছানা ভেজায় না, সেগুলোর জন্য শিশুকে ছোট ছোট পুরস্কার দিয়ে উৎসাহিত করা যেতে পারে।
শিশুর শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় পানির পরিমাণের বেশির ভাগটা দিনের বেলায় দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। সন্ধ্যার পর থেকে পানি কম খাওয়াতে হবে। শিশুকে অতিরিক্ত পানীয়জাতীয় জিনিস, যেমন কোল্ড ড্রিংকস, কফি, চা, চিনি ইত্যাদি কম খাওয়াতে হবে। ঘুমাতে যাওয়ার কমপক্ষে এক ঘণ্টা আগে থেকে পানি খাওয়া থেকে বিরত রাখতে হবে। শিশুকে বিছানায় নেওয়ার আগে ওয়াশরুম ব্যবহার করতে উৎসাহিত করতে হবে। শিশুকে ঘুমের মধ্যে তিন থেকে চার ঘণ্টার মাঝখানে তুলে প্রস্রাব করাতে হবে, এ জন্য অ্যালার্ম দিয়ে রাখা যেতে পারে।
শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে তার সমাধান করতে হবে, কৃমিনাশক ওষুধ খাওয়াতে হবে। শিশুকে নিয়মিত ওয়াশরুম ব্যবহারের ব্যাপারে অভ্যস্ত করতে হবে।
এত সব চেষ্টার পরও যদি রাতে বিছানা ভেজানোর অভ্যাস না কমে, সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খাওয়ানোর প্রয়োজন হতে পারে।
ডা. ফারাহ দোলা, বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
আরও পড়ুনজরায়ু ক্যানসার প্রতিরোধে টিকা বেশ কার্যকর২৫ অক্টোবর ২০২৩