গণ অধিকার পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতা বিষয়ক সহ-সম্পাদক রবিউল আউয়াল অন্তর (৩০) নিখোঁজ রয়েছেন। 

বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে কলাপাড়া পৌর শহরের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে মোটরসাইকেলে করে বাড়িতে যাওয়ার পথে তিনি নিখোঁজ হন। 

এদিকে, অন্তরের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি কলাপাড়া-পটুয়াখালী মহাসড়কের পায়রা পোর্ট ফোরলেন ও সিক্সলেন সড়কের রজপাড়া মাদরাসা সংলগ্ন সড়ক থেকে পার্কিং অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। এর কিছুটা দূর থেকে অন্তরের ব্যবহৃত একটি হেলমেটও উদ্ধার করে তারা। 

আরো পড়ুন:

চসিকের সাবেক কাউন্সিলর গ্রেপ্তার

সুনামগঞ্জের এসপি আনোয়ার
আমি আজ চাকরি ছাড়লে কালই নির্বাচন করতে পারব

এ ঘটনায় অন্তরের বড় ভাই তুষার আল মামুন পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ছয় কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করে থানায় এখন একটি অভিযোগ দিয়েছেন। তিনি জানান, কলাপাড়া পৌর শহরের  ডিজিটাল প্রিন্টিং প্রেস ‘গ্রাফিক্স ওয়াল’ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে রাতে ১১ টার দিকে মোটরসাইকেলে বাড়িতে ফিরছিলেন অন্তর। এরপর গভীর রাতে থানা থেকে তারা বিষয়টি ফোনের মাধ্যমে জানতে পারেন। 

অন্তরের বাবা মো.

সোলায়মান বলেন, “আমার ছেলে পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের ক্ষতিপূরণ আদায়, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের চাকরিসহ আট দফা দাবি আদায়ে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছেন। আমরা এখন আতঙ্ক আর উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছি।” 

কলাপাড়া থানার ওসি মো. জুয়েল ইসলাম বলেন, “মোটরসাইকেলটি পার্কিং করা দেখে পায়রা পোর্ট ফোরলেন সড়কের নিরাপত্তা কর্মীরা থানায় খবর দেয়। পুলিশ গিয়ে মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করে। সেটির সামনে রবিউল আউয়াল অন্তর লেখা রয়েছে।” 

তিনি আরো বলেন, “পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থার একাধিক ইউনিট রবিউল ইসলাম অন্তরের সন্ধানে মাঠে নেমেছে। আমরা এই মুহূর্তে মাঠ পর্যায়ে কাজে ব্যস্ত রয়েছি।”

ঢাকা/ইমরান/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কল প ড়

এছাড়াও পড়ুন:

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি ছাত্র ফ্রন্টের

সারাদেশে অব্যাহত ধর্ষণ, নারী-শিশু নির্যাতনের ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং জননিরাপত্তা দানে ব্যর্থ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে অপসারণের দাবি জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট।

সোমবার (১০ মার্চ) দুপুর ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে এ দাবি জানানো হয়েছে। 

সমাবেশে কেন্দ্রীয় সভাপতি সালমান সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক প্রগতি বর্মণ তমার সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন, কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক নওশিন মুশতারী সাথী, সদস্য পঙ্কজনাথ সূর্য, ইডেন কলেজ শাখার সভাপতি শাহিনুর আক্তার সুমি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংগঠনিক সম্পাদক মোজাম্মেল হক প্রমুখ। 

সমাবেশে বক্তারা বলেন, আমরা এমন একটা সময়ে সমাবেশ করছি, যখন ৮ বছরের শিশু আছিয়া হাসপাতালে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। আছিয়ার মেডিক্যাল রিপোর্ট দেখলে স্বাভাবিক থাকা যায় না। এর আগে আমরা দেখেছি সিলেটের এমসি কলেজে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা স্বামীকে বেধে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণ করে। তার আগে নুসরাতকে ধর্ষণ করে পুড়িয়ে মারা হয়েছিল।

কুমিল্লায় তনুকে ক্যান্টনমেন্টের ভেতরে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছিলো। তনুর বাবা গত ৮ বছর ধরে বিচার চেয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। নোয়াখালীর সুবর্ণচরে নৌকায় ভোট না দেওয়ায় যুবলীগের নেতারা চার সন্তানের জননীকে ধর্ষণ করে ফেসবুকে ছবি ছড়িয়ে দিয়েছিল। এ রকম ঘটনা প্রতিদিন খবরের কাগজ খুললেই আমরা দেখতাম, কিন্তু বিচার পাইনি। 

বক্তারা আরো বলেন, বাংলাদেশের সমস্ত গণ-আন্দোলনে নারীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকা সত্ত্বেও তাদের কোন সামাজিক নিরাপত্তা নেই। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সুমাইয়া শিকদারসহ যে নারীরা জুলাই অভ্যুত্থানে সামনে সারিতে দাঁড়িয়ে লড়াই করেছিল, তাদের সেখানে বহিষ্কার করা হয়েছে। প্রক্টর তাদের নিয়ে নোংরা বক্তব্য দিয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একজন শিক্ষার্থীকে তার পোশাক ও শরীর নিয়ে নোংরা মন্তব্য করার পরেও কথিত ‘তৌহিদী জনতা’ নারী নিপীড়ককে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে।

এ ‘তৌহিদী জনতা’ জনগণের উপর শাসকদের জুলুম-নির্যাতনের বিরুদ্ধে, জিনিসপত্রের দাম বাড়লে, নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামেন না। তারা অত্যাচার, নির্যাতন, শোষণের বিরুদ্ধে জনগণের লড়াইয়ের আকাঙ্ক্ষাকে ধ্বংস করে দিতে চায়। তারা জনগণের পক্ষের শক্তি না। তারা নারীর উপর নিপীড়ন হলে নিপীড়কের পক্ষে দাঁড়ায়। এভাবে সমাজে চলমান সমস্ত অন্যায়- অত্যাচার ও নারী নিপীড়ন-ধর্ষণকে তারা বৈধতা দেয়। 

ধর্মীয় বক্তব্য, ওয়াজ মাহফিলে নারীদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য রাখা হয়। সিনেমা, টেলিভিশন, বিজ্ঞাপনে, সাহিত্যে– বিভিন্নভাবে নারীদের পণ্য হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। এর মধ্য দিয়ে নারীর উপর পুরুষের যে আধিপত্যমূলক মানসিকতা, তার বীজ তৈরি হয়। এসব অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। মুনিয়া, নুসরাত, তনু, আছিয়াসহ বাংলাদেশে ঘটা সমস্ত ধর্ষণের বিচার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

এসময় তারা সারাদেশে অব্যাহত ধর্ষণ, নারী- শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে জনগণের ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের আহ্বান জানিয়ে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও জন-নিরাপত্তাদানে ব্যর্থ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে অপসারণের দাবি করেন।

সমাবেশ শেষে একটি মিছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবন, মধুর ক্যান্টিন প্রদক্ষিণ করে সেন্ট্রাল লাইব্রেরির সামনে শেষ হয়।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ