জাল টিকিটে সয়লাব মিরপুর, চারগুণ দাম দিয়েও প্রতারিত দর্শকরা
Published: 7th, February 2025 GMT
ভৈরব থেকে এসেছেন ওমর নামে ফরচুন বরিশালের এক ভক্ত। স্টেডিয়াম সংলগ্ন সুইমিংপুল এলাকা থেকে চারশ টাকার টিকিট কিনেছেন ১৫০০ টাকা দিয়ে। কিন্তু প্রবেশ করতে গিয়ে পারেননি, স্ক্যানে ধরা পড়ে জাল টিকিট।
শুক্রবার (৭ জানুয়ারি) বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ফাইনালে দেখতে গিয়ে এমন ঘটনার সাক্ষী হওয়ার পর চার নাম্বার গেটের সামনে কাঁদছিলেন ওমর। তাকে ঘিরে রয়েছে উৎসুক জনতা। কেউ কেউ এসে স্ক্যান করছেন, এ প্রশ্ন ও প্রশ্ন জিজ্ঞেষ করছেন। হতাশার সঙ্গে উত্তরও দিচ্ছিলেন সব ওমর।
রাইজিংবিডিকে ওমর বলেন, “আমি ভৈরব থেকে এসে এখানের একজনের কাছ থেকে টিকিট কিনি। কিন্তু ঢুকতে গিয়ে পারিনি। স্ক্যান করে আমাকে বের করে দেয়। এখন আমার চলে যাওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই। চারগুণ টাকা খরচ করেছি। আসা যাওয়ার ভাড়াও লস।”
আরো পড়ুন:
বদলে গেলো বিপিএল ফাইনালের সময়
বেড়েছে বিপিএলের প্রাইজমানি
ওমর যখন জাল টিকিট নিয়ে চেঁচামেচি করছিলেন তখন আরও চারজন আসেন জাল টিকিট হাতে। তাদের মধ্যে একজন সাভারের তরিকুল ইসলাম। চাকরিসূত্রে থাকেন রাজধানীর শ্যামলীতে। গতকাল সন্ধ্যায় তারা ১০টি টিকিট কেনেন। তার মধ্যে ৩টি ছিল জাল।
রাইজিংবিডিকে তরিকুল বলেন, “আমরা ১০টা টিকিট কিনি। প্রতিটির দাম ১৫০০ টাকা। ৬ জন ঢুকতে পেরেছে, আমরা চারজন ঢুকতে গিয়ে পারিনি। এভাবে ঠকলাম, বুঝতেও পারিনি।”
তরিকুল প্রশ্ন তোলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডসহ (বিসিবি) আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি, “আগে ব্ল্যাক হতো, এখনও হচ্ছে। অনলাইনে ছাড়ার পর টিকিট জাল করে বিক্রি হচ্ছে। আমরা বাধ্য হয়ে কিনেছি। আমরা যাব কোথায়?”
সন্ধ্যা ৬টায় ফাইনালের লড়াইয়ে মুখোমুখো হবে ফরচুন বরিশাল-চিটাগং কিংস। কিন্তু দুপুরের আগেই মিরপুর শের-ই-বাংলা এলাকা লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। এদিকে টিকিট ছাড়া প্রধান ফটক সংলগ্ন রাস্তায় কাউকে ঢুকতে দিচ্ছে না সেনাবাহীনী।
ঢাকা/রিয়াদ/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
‘ট্রাম্প একজন উন্মাদ’: যুক্তরাষ্ট্রের গাজা দখলের পরিকল্পনায় ফিলিস্তিনির প্রতিক্রিয়া
লাঠিতে ভর দিয়ে ৭২ বছর বয়সী ফাতি আবু আল-সাঈদ ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার খান ইউনিসের আল-কাতিবা মহল্লায় ধ্বংসস্তূপে একাকার হয়ে যাওয়া রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। গত ১৯ জানুয়ারি ইসরায়েলের সঙ্গে হামাসের যুদ্ধবিরতি শুরুর পর গাজার উপকূলীয় আল-মাওয়াসি এলাকা থেকে বাস্তুচ্যুত অবস্থায় খান ইউনিসে ফেরেন তিনি। এর পর থেকে এভাবে হাঁটা তাঁর নিত্যদিনের নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে।
টানা ১৫ মাস ধরে ইসরায়েলের ভয়াবহ বোমা হামলায় সৃষ্ট ধ্বংসস্তূপের ওপর সাবধানে পা ফেলে হাতের লাঠি উঁচিয়ে বিধ্বস্ত একটি বাড়ির দিকে ইঙ্গিত করলেন সাঈদ। বললেন, ‘আপনি কি ওই মূল্যহীন ধ্বংসস্তূপ দেখতে পাচ্ছেন? ওটা যুক্তরাষ্ট্র ও দেশটির ভেতরে থাকা সবকিছুর চেয়ে বেশি মূল্যবান।’
আবু আল-সাঈদের কাছে ফিলিস্তিনিদের গণহারে ঘরছাড়া করার বিষয়টি নতুন নয়। ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সময় তাঁর বাবাকে বন্দরনগরী জাফা থেকে জোরপূর্বক বের করে দেওয়া হয়েছিল। নগরীটি এখন ইসরায়েলের অংশ। তাঁর মায়ের পরিবারকে কাছের সারাফান্দ গ্রাম থেকে বিতাড়িত করা হয়েছিল। তিনি সেই প্রথম বিপর্যয় ‘নাকবা’র গল্প শুনে বড় হয়েছেন এবং এখন অন্য একটি বিপর্যয়ের মধ্যে বেঁচে আছেন।আবু আল–সাঈদের ৫০ সন্তান ও নাতি-নাতনির কয়েকজনসহ একদল শিশু তাঁর শ্রোতা। ভারী বৃষ্টি ও বাতাসের পূর্বাভাসেও বিচলিত না হয়ে তারা মনোযোগ দিয়ে তাঁর কথা শোনে। তাদের সঙ্গে আরও কয়েকটি শিশু যোগ দেয়। বাস্তুচ্যুত এসব শিশুর পরিবারও নিজেদের এলাকায় ফিরেছে। কিন্তু ফিরে ঘরবাড়ি অক্ষত পায়নি। একসময়ের সাজানো-গোছানো বাড়িঘরগুলো এখন শুধুই ধ্বংসস্তূপ। পরিবারগুলো এখন ধ্বংসস্তূপের মধ্যেই নতুন করে জীবন শুরুর চেষ্টা করছে।
প্রতিদিন সকালে সাঈদ তাঁদের জীবন আবারও স্বাভাবিক ছন্দে ফেরানো নিয়ে প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু গাজা দখল করে নেওয়া প্রসঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সাম্প্রতিক মন্তব্য সাঈদের জন্য নতুন করে ব্যঙ্গাত্মক কথাবার্তার খোরাক হয়েছে। ট্রাম্প ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে গাজায় ‘মধ্যপ্রাচ্যের সমুদ্রসৈকত’ গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখছেন।
যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর রাফায় ধ্বংসস্তূপের ভেতর দিয়ে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা হাঁটছেন