সয়াবিন তেলের দাম দফায় দফায় বাড়িয়েও ক্ষান্ত হয়নি সরবরাহকারী কোম্পানিগুলো। রমজানকে সামনে রেখে আরেক দফায় দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা করছে তারা। তাই, বাজারে চাহিদা অনুযায়ী তেল সরবরাহ না করে তীব্র সংকট সৃষ্টি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ খুচরা বিক্রেতাদের। 

এদিকে, চাল আমদানির খবরে বাজারে গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে দাম কিছুটা কমেছে। জাতভেদে প্রতি কেজি চালের দাম ১ থেকে ৪ টাকা কমেছে।

শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর নিউ মার্কেট ও কারওয়ান বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলো ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। 

বিক্রেতারা জানিয়েছেন, খুচরা বাজারে সয়াবিন তেলের সরবরাহ কম। তাই, অনেক ক্রেতা তেল না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন।

এখন বাজারে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭৫ টাকায়। প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন ও পাম অয়েলের দাম ১৫৭ টাকা। বোতলজাত দুই লিটার সয়াবিন তেল ৩৫০ টাকায় এবং পাঁচ লিটার সয়াবিন তেল ৮৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এ সপ্তাহে প্রতি কেজি মোটা চাল ৫২ থেকে ৫৫ টাকা, মাঝারি চাল ৫৮ থেকে ৬৪ টাকা, সরু চাল ৭২ থেকে ৮৫ টাকা এবং ব্রি-২৯ চাল ৫৮ থেকে ৬২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কমছে আলু ও পেঁয়াজসহ সবজির দাম:
এখন বাজারে প্রায় সব ধরনের সবজির কেজি ৫০ টাকার মধ্যে। রাজধানীর কয়েকটি কাঁচাবাজার ঘুরে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি কেজি বেগুন মানভেদে ২৫ থেকে ৩০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, গাজর ৩০ টাকা, সিম ২৫ টাকা, মুলা ২০ টাকা, কাঁচামরিচ ৫০ টাকা, টমেটো ২০ থেকে ৩০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, দেশি শসা ৩০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০ টাকা, প্রতিটি পিস লাউ ৪০ টাকা, জালি কুমড়া ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা এবং বড় সাইজের ফুলকপির জোড়া ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সরবরাহ ভালো থাকায় কমেছে আলু ও পেঁয়াজের দাম। প্রতি কেজি নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়। প্রতি কেজি নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। প্রতি কেজি রসুন ২৪০ টাকা ও দেশি আদা ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে মাছের সরবরাহও ভালো। গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে দাম কিছুটা কমেছে। তবে, নদীর মাছের দাম কিছুটা বেড়েছে। এখন মাঝারি সাইজের চাষের রুইয়ের কেজি ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা। প্রতি কেজি চাষের পাঙাস ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০ টাকা, কৈ ১৫০ টাকা, শিং ৫০০ টাকা, পাবদা ৩৫০ টাকা, চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, দেশি পাঁচমিশালি ছোট মাছ ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৪০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকায়।

ডিমের দামও কমেছে। প্রতি ডজন ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়।

ব্রয়লার মুরগির দাম স্বাভাবিক আছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ২০০ টাকায়। সোনালি জাতের মুরগি ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকায়। খাসির মাংসের কেজি ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা।

রাজধানীর সালেক গার্ডেন কাঁচাবাজারে কেনাকাটা করতে আসা কাকলী বেগম রাইজিংবিডি বলেছেন, “সবজির দাম কমছে। আমরা চাহিদামতো কিনতে পারছি। তবে, মুদিপণ্যের দাম আগের মতো। তেলের দাম কমলে আমাদের মতো মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষের জন্য উপকার হত।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারের মনোয়ারা জেনারেল স্টোরের স্বত্বাধিকারী রাসেল শিকদার রাইজিংবিডিকে বলেন, “বাজারে বর্তমানে চাহিদা অনুযায়ী সয়াবিন তেলের সরবরাহ নেই‌। আমরা অর্ডার দিয়ে ঠিকমতো তেল পাচ্ছি না। ডিলারদের ১০ কার্টন তেল অর্ডার দিলে ২ কার্টনও পাওয়া যায় না। ফলে, অনেক ক্রেতা সয়াবিন তেল কিনতে না পেরে ফিরে যাচ্ছেন। সামনে রমজানকে কেন্দ্র করে আরেক দফায় সয়াবিন তেলের দাম বাড়ার আশঙ্কা আছে।”

ঢাকা/রায়হান/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ২০০ ট ক সরবর হ ৩০ ট ক ৪০ ট ক ৫০ ট ক

এছাড়াও পড়ুন:

বিদ্যুৎ না থাকায় ডিইপিজেডে উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ

ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ডিইপিজেড) আজ সোমবার দুপুর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এ কারণে দুপুরের পর ডিইপিজেডের সব কারখানায় শ্রমিকদের ছুটি দেওয়া হয়েছে। ডিইপিজেডের জন্য নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড পাওয়ারের বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় এ সংকট তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মো. শরীফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ ইউনাইটেড পাওয়ারের ডিইপিজেডে বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রকল্পটিতে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এতে তারা উৎপাদন করতে না পারায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারছে না। ফলে ডিইপিজেডে প্রায় ৯০টি কারখানার এক লাখের মতো শ্রমিককে ছুটি দেওয়া হয়।

বিদ্যুতের সংযোগ না থাকায় বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয়েছে উল্লেখ করে মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার যদি এটি অব্যাহত থাকে, তবে সংকট আরও বাড়বে। শ্রমিকেরা কাজ না করতে পেরে বিক্ষুব্ধ হলে বিষয়টি আরও জটিল হয়ে উঠবে। কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়া এ ধরনের ঘটনায় বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘তিতাস বলছে, ইউনাইটেড পাওয়ারের কাছে বিল বকেয়া রয়েছে। তারা বকেয়া পরিশোধ করেনি। এ ব্যাপারে আদালতে দীর্ঘদিন ধরে মামলা চলছে। কিন্তু আমাদের কথা হচ্ছে, বেপজাকে কোনো ধরনের পূর্ব নোটিশ না দিয়ে হঠাৎ করে এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছেন। এ ধরনের পদক্ষেপের আগে ডিইপিজেডের গুরুত্ব বিবেচনা করে আলোচনার মধ্য দিয়ে বিষয়টির সমাধান করা উচিত ছিল।’

এ বিষয়ে ইউনাইটেড পাওয়ার প্ল্যান্টের ব্যবস্থাপক মো. মমতাজ হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘গ্যাসের কোনো প্রেশার নেই। প্রেশার শূন্য। কিন্তু কেন তিতাস কর্তৃপক্ষ এমনটি করল, সে ব্যাপারে এখানকার (আশুলিয়া অঞ্চলের) তিতাসের লোকজন কিছু বলতে পারেননি। আমরা নিজেরাও বিষয়টি নিয়ে জানি না। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমার জানামতে, বকেয়া নিয়ে কোনো ধরনের মামলা নেই। তিতাস কেন গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিল, সেটি জানা নেই।’

জানতে চাইলে তিতাসের আশুলিয়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আবু ছালেহ মুহাম্মদ খাদেমুদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, গ্যাসের বিল বকেয়া থাকায় গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এটি সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের সিদ্ধান্ত। দুপুরের দিকে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আদানির সঙ্গে চুক্তি ক‌রে শুল্ক ফাঁকি
  • শিল্প খাতের উৎপাদন যেন ব্যাহত না হয়
  • কারাগারে গাঁজা সরবরাহ করতে গিয়ে নিজেই কারাগারে
  • ‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে বৈশ্বিক অভিজ্ঞতা কী
  • ডিইপিজেডে বিদ্যুৎ নেই, ৯০ কারখানায় ছুটি
  • মঙ্গলবার ৭ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব জায়গায়
  • পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যে আরও ২৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান কিনছে ভারত
  • পর্তুগাল ও স্পেনে নজিরবিহীন বিদ্যুৎ বিপর্যয়, পর্যুদস্তু জনজীবন
  • হাসপাতালে ডায়রিয়ার প্রকোপ শয্যা ও স্যালাইন সংকট
  • বিদ্যুৎ না থাকায় ডিইপিজেডে উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ