ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য যথেষ্ট জায়গা সৌদি আরবে আছে: সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহুর নতুন তত্ত্ব
Published: 7th, February 2025 GMT
ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য নতুন তত্ত্ব দিলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। সৌদি আরবের ভূখণ্ড ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার উদ্ভট তত্ত্ব দাঁড় করিয়েছেন তিনি। ফিলিস্তিনিদের প্রস্তাবিত গাজা, পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেম নিয়ে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিকে ঔদ্ধত্যের সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করেছেন ইসরায়েলের উগ্রবাদী এই প্রধানমন্ত্রী।
গতকাল বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের ডানপন্থী সংবাদমাধ্যম চ্যানেল ফোরটিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু দাবি করেন, ফিলিস্তিনিদের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে দেওয়ার মতো যথেষ্ট জায়গা সৌদি আরবে আছে। তিনি বলেন, ‘সৌদি কর্তৃপক্ষ সৌদি আরবে একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে পারে। সেখানে তাদের অনেক ভূমি আছে।’
আরও পড়ুনফিলিস্তিন রাষ্ট্র না হলে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক হবে না, বলেছে সৌদি আরব০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ক্ষেত্রে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার শর্ত দিয়েছে সৌদি আরব। সে প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে নেতানিয়াহু বলেন, ইসরায়েল রাষ্ট্রকে বিপন্ন করবে, এমন কোনো চুক্তি তিনি করবেন না।
নেতানিয়াহু বলেন, ‘বিশেষ করে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র তো নয়ই। ৭ অক্টোবরের পরও? আপনি কি জানেন সেটা কী? একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র ছিল, এটিকে গাজা বলা হতো। হামাসের নেতৃত্বে গাজা ছিল একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র এবং দেখুন, আমরা কী পেয়েছি, হলোকাস্টের পর সবচেয়ে বড় গণহত্যা।’
নেতানিয়াহুর যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে গতকাল সাক্ষাৎকারটি নিয়েছে চ্যানেল ফোরটিন। যুক্তরাষ্ট্র সফরের শুরুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেন নেতানিয়াহু। ওই সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ নিতে তাঁর পরিকল্পনা ঘোষণা করেন।
এ ছাড়া দুই নেতা সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন। সংবাদ সম্মেলনে নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমি মনে করি, ইসরায়েল এবং সৌদি আরবের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার বিষয়টি কেবল সম্ভাবনাই নয়, আমি মনে করি, এটি ঘটতে চলেছে।’
তবে ওই সংবাদ সম্মেলনের পরপরই সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করবে না।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র
এছাড়াও পড়ুন:
৩৬ ঘণ্টার মধ্যে হামলা চালাতে পারে ভারত: পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী
পাকিস্তানের তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার দাবি করেছেন, আগামী ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তানে হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছে ভারত, এমন ‘বিশ্বাসযোগ্য গোয়েন্দা তথ্য’ পাকিস্তানের হাতে আছে। খবর আল জাজিরার।
আজ বুধবার ভোরে একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে আতাউল্লাহ তারার অভিযোগ করে বলেছেন, “ভারত গত সপ্তাহের পহেলগামে হামলাকে ‘মিথ্যা অজুহাত হিসেবে’ ব্যবহার করে পাকিস্তানে সম্ভাব্য আক্রমণ চালানোর চেষ্টা করছে।”
মন্ত্রী তার দাবির সমর্থনে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রদান করেননি এবং ভারত সরকার তাৎক্ষণিকভাবে অভিযোগের বিষয়ে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেনি।
আরো পড়ুন:
‘আমি যাকে বিয়ে করতে যাচ্ছি, সে দেখতে চাকরানীর মতো’
পহেলগাম হামলা: প্রতিশোধ নিতে সামরিক বাহিনীকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিলেন মোদি
তারার ‘এক্স’ পোস্টে বলেছেন, “যেকোনো আগ্রাসনের কঠোর জবাব দেওয়া হবে। এই অঞ্চলে যেকোনো গুরুতর পরিণতির জন্য ভারত সম্পূর্ণরূপে দায়ী থাকবে।”
এর আগে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোহাম্মদ আসিফও রয়টার্সকে বলেছিলেন, পাকিস্তানে ভারতের হামলা ‘আসন্ন’ ইসলামাবাদ অত্যন্ত সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।
আসিফ বলেন, “ইসলামাবাদ উচ্চ সতর্কতায় রয়েছে। তবে, আমাদের অস্তিত্বের প্রতি সরাাসরি হুমকি সৃষ্টি হলে আমরা পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করব।”
গত ২২ এপ্রিল ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পহেলগ্রামে পর্যটকদের উপর ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে পাকিস্তান পরোক্ষাভাবে জড়িত থাকার কথা ভারত বলার পর থেকে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে।
দুই দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে ভারত-শাসিত কাশ্মীরে এটি ছিল সবচেয়ে মারাত্মক হামলা। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী হামলাকারীদের কঠোর শাস্তির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার একটি ছায়া সংগঠন হিসেবে ধারণা করা দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) এক বিবৃতিতে এই হামলার দায় স্বীকার করেছে।
কিন্তু ইসলামাবাদ ঘটনার সঙ্গে কোনো ভূমিকা অস্বীকার করেছে এবং নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।
পহেলগ্রামে হামলার ঘটনার পর, প্রতিবেশী দেশ দুটি একে অপরের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, যার মধ্যে ভিসা বাতিল এবং ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলোর জন্য পাকিস্তানি আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়া অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
ভারত সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত ঘোষণা করেছে।
এই পদক্ষেপের ফলে পাকিস্তানে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে এবং পাকিস্তান সরকার জানিয়েছে, তারা নয়াদিল্লির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ভারত ও পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের ৭৪০ কিলোমিটার (৪৬০ মাইল) বাস্তব সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) বরাবর গত কয়েকদিন ধরে গুলি বিনিময়ের ঘটনাও ঘটছে। উত্তেজনা কমানোর জন্য দুই পক্ষকে আন্তর্জাতিকভাবে আহ্বান জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দুই দেশকে একটি ‘দায়িত্বশীল সমাধান’ এর দিকে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর একটি বিবৃতি উদ্ধৃত করে সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা উভয় পক্ষের সাথে যোগাযোগ করছি এবং ... তাদের পরিস্থিতি আরও খারাপ না করার জন্য বলছি।”
মুখপাত্র আরো বলেন, “রুবিও মঙ্গলবার বা বুধবার ভারত ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সাথে কথা বলবেন এবং অন্যান্য পররাষ্ট্রমন্ত্রীদেরও একই কথা বলতে উৎসাহিত করবেন।”
জাতিসংঘ বলেছে, মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ এবং ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রহ্মণ্যম জয়শঙ্করের সাথে কথা বলেছেন এবং ‘এমন সংঘর্ষ এড়াতে প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছেন যার পরিণতি দুঃখজনক হতে পারে’।
ঢাকা/ফিরোজ