‘জীবনের সঙ্গী’কে বিদায়ী বার্তা রোনালদোর
Published: 7th, February 2025 GMT
মার্সেলো ২০০৭ সালে যোগ দেন রিয়াল মাদ্রিদে। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো সেখানে তাঁর সতীর্থ হন দুই বছর পর। তারপর দুজনের গল্পটা শুধু সতীর্থ হিসেবে ডালপালা মেলেনি। তাঁরা দুজন একে অপরের মধ্যে খুঁজে পেয়েছেন অকৃত্রিম বন্ধুত্ব। দুই কিংবদন্তির রিয়াল অধ্যায় শেষ হয়েছে বেশ আগেই। কিন্তু বন্ধুত্ব টিকে আছে আজও। গতকাল মার্সেলো ফুটবলকে বিদায় জানানোর পর তাঁকে বিদায়ী শুভেচ্ছা বার্তায় সেই বন্ধুত্বেরই ছাপ রাখলেন রোনালদো।
আরও পড়ুনমার্সেলো জানালেন, গল্পটা এখানেই শেষ১৭ ঘণ্টা আগেসামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ মার্সেলোকে ‘জীবনের সহচর’ বা ‘জীবনসঙ্গী’ হিসেবে উল্লেখ করেন রোনালদো। শুধু তা–ই নয়, ‘ভাই’ বলেও ডেকেছেন। সেটার কারণও আছে। রিয়ালের সোনালি দিনগুলোতে আক্রমণভাগে রোনালদোকে বাঁ প্রান্ত থেকে পাসের অন্যতম জোগানদাতা ছিলেন মার্সেলো। ব্রাজিলের সাবেক এই লেফটব্যাকের সঙ্গে রিয়ালে রোনালদোর গোল উদ্যাপনও আলোচনার জন্ম দিয়েছে মাঝেমধ্যে। বিশেষ কেউ গোল করার পর দুজনের নাচ ঠাঁই করে নিয়েছে রিয়াল সমর্থকদের মনের মণিকোঠায়।
রোনালদোর পরিবারের সঙ্গে মার্সেলোর পরিবারের সম্পর্কও চমৎকার। পর্তুগিজ কিংবদন্তি ২০১৮ সালে রিয়াল ছেড়ে জুভেন্টাসে যোগ দেওয়ার পরের বছর মার্সেলোর স্ত্রী ক্ল্যারিস আলভেস বলেছিলেন, ‘ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর রিয়াল ছেড়ে চলে যাওয়ায় আমাদের জন্য খারাপ হয়েছে। আমরা একসঙ্গে অনেক সময় কাটিয়েছি। তার মা এবং জর্জিনার (রোনালদোর প্রেমিকা) সঙ্গেও ভালো সম্পর্ক। সে (জর্জিনা) দুর্দান্ত। আমার ছেলে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর ছেলে জুনিয়রেরও খুব ভালো বন্ধু। মাদ্রিদ থেকে তার প্রস্থানে আমরা শূন্যতা অনুভব করি।’
মার্সেলো ফুটবল থেকে অবসর ঘোষণার পর গতকাল তাঁকে বিদায়ী বার্তায় রোনালদোর ভেরিফায়েড এক্স হ্যান্ডল থেকে পোস্ট করা হয় এই কথাগুলো, ‘আমার ভাই, কী অবিশ্বাস্য ক্যারিয়ার! আমরা একসঙ্গে অনেক সময় কাটিয়েছি, বছরের পর বছর অর্জন করেছি, জিতেছি এবং অবিস্মরণীয় সব মুহূর্ত আছে। তুমি সতীর্থের চেয়েও বেশি কিছু, আমার জীবনের সঙ্গী। সবকিছুর জন্য ধন্যবাদ বন্ধু। জীবনের নতুন মঞ্চে তোমার সব রকম ভালো কামনা করছি।’
আরও পড়ুনসব রহস্য লুকিয়ে রোনালদোর শরীরে৬ ঘণ্টা আগেরোনালদো রিয়াল ছাড়ার চার বছর পর মাদ্রিদের ক্লাবটি ছাড়েন মার্সেলো। তার আগে দুজনে একসঙ্গে ক্লাবটিতে ৯ মৌসুম কাটিয়ে জিতেছেন চারটি চ্যাম্পিয়নস লিগ, তিনটি ক্লাব বিশ্বকাপ, তিনটি ইউরোপিয়ান সুপার কাপ, দুটি লা লিগা, দুটি কোপা দেল রে এবং দুটি স্প্যানিশ সুপার কাপ। ট্রান্সফার মার্কেটের হিসাব অনুযায়ী, রিয়ালে রোনালদোর সঙ্গে ৩৩২ ম্যাচ খেলেছেন মার্সেলো।
রিয়ালে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে রোনালদো ও মার্সেলোর.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
তিক্ততা ভুলে শহিদকে জড়িয়ে ধরলেন কারিনা (ভিডিও)
বলিউডের তারকা জুটি কারিনা কাপুর ও শহিদ কাপুর। তাদের রুপালি পর্দার রসায়ন ব্যক্তিগত জীবনেও গড়িয়েছিল। দীর্ঘদিন চুটিয়ে প্রেম করার পরও ভেঙে যায় সেই সম্পর্ক।
প্রেমের ভাঙন কারিনা-শহিদের মনে তিক্ততা তৈরি করে। মুখ দেখাদেখিও বন্ধ ছিল তাদের। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে এক পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন কারিনা কাপুর খান ও শহিদ কাপুর। ঝলমলে এই অনুষ্ঠানে কথা তো দূরের কথা, শহিদ কাপুরকে পাত্তাই দেননি কারিনা। এবার সেই শহিদ কাপুরকে বুকে জড়িয়ে ধরলেন কারিনা।
গতকাল জয়পুরে অনুষ্ঠিত হয় আইফা অ্যাওয়ার্ডের সংবাদ সম্মেলন। সেই মঞ্চের একটি ভিডিও ক্লিপ এখন নেট দুনিয়ায় ভাইরাল। তাতে দেখা যায়, মঞ্চে পাশাপাশি দাঁড়ানো করন জোহর, শহিদ কাপুরসহ অনেকে। মঞ্চে গিয়ে শহিদকে জড়িয়ে ধরেন কারিনা। এরপর খানিকটা সময় তারা কথাও বলেন।
আরো পড়ুন:
ছাবা ঝড়: ২৩ দিনে আয় ১ হাজার কোটির দুয়ারে
সবচেয়ে বেশি আয় করা নারীকেন্দ্রিক পাঁচ সিনেমা
এ দৃশ্য দেখে বিস্মিত নেটিজেনরা। একজন লেখেন, “ওহ মাই গড, শহিদ-কারিনা একসঙ্গে।” আরেকজন লেখেন, “কি রসায়ন।” জুনায়েদ নামে একজন লেখেন, “নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছি না।” এমন অসংখ্য মন্তব্য ভেসে বেড়াচ্ছে অন্তর্জালে।
কারিনাকে জড়িয়ে ধরা ও তার সঙ্গে কথা বলার ব্যাপার নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রশ্নের মুখে পড়েন শহিদ। এ অভিনেতা বলেন, “আমাদের জন্য এটি নতুন কিছু নয়। আমাদের আজ মঞ্চে দেখা হয়েছে। কিন্তু আমরা এখানে-সেখানে একে অপরের সঙ্গে দৌড়াদৌড়ি করি। এটা আমাদের জন্য সম্পূর্ণ স্বাভাবিক ব্যাপার। মানুষ যদি এটাকে ভালোভাবে নেয় তাহলে এটা ভালো।”
বলিউডের অন্যতম আলোচিত জুটি শহিদ ও কারিনা কাপুর। তাদের প্রেম কাহিনিও ঠিক তেমন। ২০০৩ সালে ‘ইশক ভিশক’ সিনেমার মাধ্যমে নায়ক হিসেবে শহিদের বলিউডে অভিষেক হয়। তাকে দেখে প্রেমে পড়েন কারিনা। ‘কফি উইথ করন’ অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় সিজনে হাজির হয়ে এ অভিনেত্রী জানিয়েছিলেন, শহিদের সঙ্গে দেখা করার জন্য তাকে কল করতেন, মেসেজ পাঠাতেন। এমনকি, এই অভিনেতাকে বিয়েও করতে চান বলে জানান।
বাস্তবে তাদের প্রেমের গল্প মধুর হলেও শুরুতে রিল লাইফে তাদের রসায়ন দর্শকের খুব একটা মনে ধরেনি। তাদের প্রেমের গুঞ্জন যখন বলিপাড়ায় উড়ছে তখন, ‘ফিদা’ (২০০৪) সিনেমায় প্রথম জুটিবদ্ধ হন তারা। কিন্তু বক্স অফিসে খুব বেশি সুবিধা করতে পারেনি। ২০০৬ সালে ‘থার্টি সিক্স চায়না টাউন’ ও ‘চুপ চুপ কে’ সিনেমায় একসঙ্গে পর্দায় হাজির হলেও বক্স অফিস মাতাতে পারেননি তারা। তবে এই জুটিকে দর্শকের মন মতো পর্দায় তুলে ধরতে পেরেছিলেন নির্মাতা ইমতিয়াজ আলী। ‘জব উই মেট’ সিনেমায় তাদের রসায়ন আজও ভক্তদের মনে গেঁথে রয়েছে। কিন্তু পর্দায় রসায়ন জমে উঠলেও ততদিনে ম্লান হয়ে যায় তাদের বাস্তব জীবনের প্রেম। এই সিনেমার সেটেই তাদের ব্রেকআপ হয়। এমনকি সিনেমার ‘তুমসে হি’ গানের শুটিংও আলাদাভাবে করেন শহিদ-কারিনা।
তবে কী কারণে তাদের সম্পর্কে ভাঙন ধরেছিল তা আজও অজানা। গুঞ্জন শোনা যায়, শহিদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক মেনে নেয়নি কারিনার মা ববিতা কাপুর। তা ছাড়া সিনেমায় নায়কের চরিত্রে শহিদকে নেওয়ার সুপারিশ করতেন কারিনা। তার মা সেটিও পছন্দ করতেন না। এছাড়া ব্যক্তিত্বের দিক থেকে শহিদ ও কারিনা ছিলেন সম্পূর্ণ আলাদা। শহিদ চুপচাপ থাকতে পছন্দ করেন। অন্যদিকে কারিনা হাসিখুশি থাকেন ও একটু বেশি কথা বলতে পছন্দ করেন। প্রেমে পড়ার পর তাদের এই ব্যাপারগুলো সম্মুখে আসে। তাদের মধ্যে ঝগড়া হতো, বিভিন্ন বিষয়ে মতপার্থক্য ছিল এবং এ সকল কারণে তাদের মধ্যে ধীরে ধীরে দূরত্ব তৈরি হতে থাকে।
২০০৭ সালে ‘কিসমত কানেকশন’ সিনেমার শুটিং করতে বিদ্যা বালানের সঙ্গে কানাডা যান শহিদ। অন্যদিকে ভারতের লাদাখে সাইফ আলী খানের সঙ্গে ‘তাশান’ সিনেমার শুটিং করছিলেন কারিনা। সেই সময় বিদ্যার সঙ্গে শহিদ কাপুরের প্রেমের গুঞ্জন চাউর হয়, যা শুনে কষ্টে পেয়েছিলেন কারিনা। সেই সময় এই অভিনেত্রীর পাশে দাঁড়ান সাইফ আলী খান। পরবর্তীতে তাদের ঘনিষ্ঠতা তৈরি হতে থাকে। এরপর প্রেম। এদিকে ‘কামিনে’ সিনেমা করতে গিয়ে প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান শহিদ। তবে এই অভিনেতার সেই সম্পর্কও বেশিদিন টেকেনি।
২০১৬ সালে অভিষেক চৌবের ‘উড়তা পাঞ্জাব’ আবারো এক মঞ্চে হাজির করে শহিদ-কারিনাকে। সিনেমাটিতে তাদের একসঙ্গে কোনো দৃশ্য ছিল না। কিন্তু ট্রেইলার প্রকাশ অনুষ্ঠানে একসঙ্গে হাজির হয়েছিলেন তারা।
ব্যক্তিগত জীবনে বর্তমানে শহিদ ও কারিনা দুজনই নিজ নিজ পরিবার নিয়ে সুখী। ২০১২ সালে সাইফকে বিয়ে করেন কারিনা। এই দম্পতির দুটো পুত্রসন্তান রয়েছে। অন্যদিকে অনেক জল্পনার অবসান ঘটিয়ে ২০১৫ সালের ৭ জুলাই মিরা রাজপুতকে বিয়ে করেন শহিদ কাপুর। ২০১৬ সালের ২৬ আগস্ট এ দম্পতির মেয়ে মিশা এবং ২০১৮ সালের ৫ সেপ্টেম্বর তাদের পুত্র জেইন কাপুরের জন্ম হয়।
তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়া টুডে
ঢাকা/শান্ত