অর্থ বুঝে কোরআন পড়া ও বিশ্লেষণের গুরুত্ব
Published: 7th, February 2025 GMT
আল্লাহ সর্বজ্ঞানী, তিনিই সব সত্য জ্ঞানের মূল উৎস। জ্ঞানের অন্যতম মাধ্যম বা বাহন হলো গ্রন্থ। কোনো ব্যক্তিকে মুসলমান হতে হলে প্রাথমিক যে সাতটি বিষয়ে বিশ্বাস করতে হয়, তার অন্যতম হলো ‘কিতাব’–এর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা। কিতাব মানে বই বা গ্রন্থ। শত সহিফা ও চারটি কিতাবের মধ্যে কোরআন হলো সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ আসমানি গ্রন্থ।
আল্লাহর পাক কালাম বা পবিত্র বাণী কোরআন কারিম। কোরআন অধ্যয়ন বা গবেষণা ও তিলাওয়াত দুটি স্বতন্ত্র ইবাদত এবং একটি অন্যটির পরিপূরক বা সহায়ক। কোরআনে কারিমে অবতীর্ণ প্রথম সুরার প্রথম আয়াতের প্রথম শব্দেই পাঠের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ‘পড়ো তোমার রবের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন।’ (সুরা-৯৬ আলাক, আয়াত: ১)
কোরআন নাজিলের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো তা থেকে হিদায়াত ও শিক্ষা গ্রহণ করা। আর এ জন্যই অর্থ বুঝে পড়ার গুরুত্ব বেশি। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি এই কোরআনকে উপদেশ গ্রহণের জন্য সহজ করেছি। আছে কি কোনো শিক্ষা গ্রহণকারী?’ (সুরা-৫৪ কামার, আয়াত: ২২)কোরআন তিলাওয়াত করা আল্লাহর সঙ্গে কথোপকথন করার মতোই। ‘দয়াময় আল্লাহ কোরআন শেখানোর নিমিত্তে মানব সৃষ্টি করলেন, তাকে ভাব প্রকাশ শেখালেন।’ (সুরা-৫৫ রহমান, আয়াত: ১-৪)
হাদিস শরিফে বলা আছে, ‘তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ওই ব্যক্তি, যিনি কোরআন মাজিদ শিক্ষা করেন এবং শিক্ষা দেন।’ (বুখারি ও মুসলিম) ‘কোরআনওয়ালাই আল্লাহওয়ালা এবং আল্লাহর বিশেষ আপন–স্বজন।’ (বুখারি)
কোরআন তিলাওয়াত, অধ্যয়ন ও অনুশীলন থেকে বঞ্চিতদের সম্পর্কে হাদিস শরিফে আছে, ‘যার অন্তরে কোরআন নেই, সে যেন পরিত্যক্ত বাড়ি।’ (তিরমিজি) কোরআনকে যারা দূরে সরিয়ে রেখেছিল বা কোরআন থেকে দূরে সরে গিয়েছিল, তাদের প্রসঙ্গে কোরআন কারিমে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘(বিচারের দিনে) রাসুল (সা.
কোরআনের রয়েছে মানব ইতিহাসের আদি উৎস, সৃষ্টিতত্ত্ব, প্রকৃতির বিবর্তন ও সমাজ পরিবর্তনের ক্রমিক বিবরণ। স্বজনের প্রতি ভালোবাসা, প্রেম-প্রণয়, দাম্পত্য ও পারিবারিক উপাখ্যান, সমাজবিজ্ঞান, রাষ্ট্রনীতি ও দর্শন। এতে আছে মনস্তত্ত্ব, অপরাধবিজ্ঞান, মানবাধিকার, দায়িত্বজ্ঞান, কর্তব্যপালনে সচেতন করাসহ জীবনের সব বিষয়।
যাঁরা কোরআন শুধু তিলাওয়াত করে যাচ্ছেন, তা বোঝার ও আমল করার চেষ্টা করছেন না; তাঁদের বিষয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যাদের তাওরাত কিতাব বহনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, তারা তা প্রকৃতরূপে বহন করেনি। তাদের দৃষ্টান্ত ওই গর্দভতুল্য যে পুস্তক বোঝা বহন করে (কিন্তু তা অনুধাবন ও অনুসরণ করে না)।’ (সুরা-৬২ জুমুআ, আয়াত: ৫)
আল্লাহ তাআলা কিয়ামত পর্যন্ত সমগ্র মানবজাতির জন্য জীবনের সব সমস্যার পূর্ণ সমাধানসহ যে গ্রন্থ নাজিল করেছেন, তা হচ্ছে পবিত্র কোরআন কারিম। ইরশাদ হয়েছে, ‘আর এই (কোরআন) মানবজাতির জন্য পথের দিশা, সৎ পথের সুস্পষ্ট নিদর্শন ও (হক বাতিলের) পার্থক্যকারী।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৮৫) ‘(এই) সেই মহাগ্রন্থ (আল–কোরআন), তাতে (কোনো) সন্দেহ নেই, যারা (আল্লাহকে) ভয় করে, (এই কিতাব কেবল) তাদের জন্যই পথপ্রদর্শক।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ২)
কোরআন নাজিলের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো তা থেকে হিদায়াত ও শিক্ষা গ্রহণ করা। আর এ জন্যই অর্থ বুঝে পড়ার গুরুত্ব বেশি। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি এই কোরআনকে উপদেশ গ্রহণের জন্য সহজ করেছি। আছে কি কোনো শিক্ষাগ্রহণকারী?’ (সুরা-৫৪ কামার, আয়াত: ২২) ‘আপনার কাছে নাজিল করা আমার এই বরকতময় কিতাব এ জন্য, যেন তারা ভাবনাচিন্তা করে এবং জ্ঞানীরা এখান থেকে উপদেশ গ্রহণ করে।’ (সুরা-৩৮ ছদ, আয়াত: ২৯) ‘এরা কি কোরআন নিয়ে চিন্তা– গবেষণা করে না?’ (সুরা-৪ নিসা, আয়াত: ৮২) ‘নিঃসন্দেহে এই (কোরআন) হচ্ছে তোমার ও তোমার জাতির জন্য উপদেশ, অচিরেই তোমাদের (এ সম্পর্কে) জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’ (সুরা-৪৩ জুখরুফ, আয়াত: ৪৪) ‘তবে কি এরা কোরআন সম্পর্কে গবেষণা করে না, নাকি এদের অন্তরসমূহে তালা দেওয়া আছে!’ (সুরা-৪৭ মুহাম্মদ, আয়াত: ২৪)
মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী
যুগ্ম মহাসচিব, বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি; সহকারী অধ্যাপক, আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজম
[email protected]
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আল ল হ ত আল ক রআন ন র জন য উপদ শ গ রহণ
এছাড়াও পড়ুন:
লেভা-রাফিনিয়া-ইয়ামালের নৈপুণ্যে সেমিফাইনালের দুয়ারে বার্সেলোনা
বার্সেলোনা ৪ : ০ বরুসিয়া ডর্টমুন্ড
অবিশ্বাস্য! ২০২৫ সালে বার্সেলোনার পারফরম্যান্সকে এই একটি শব্দেই শুধু ব্যাখ্যা করা যায়। এই বছর ২৩ ম্যাচ খেলে এখন পর্যন্ত হারেনি তারা। যার শেষটি বার্সা পেয়েছে আজ বুধবার রাতে। চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ আটের প্রথম লেগের ম্যাচে বার্সার সামনে দাঁড়াতেই পারেনি বরুসিয়া ডর্টমুন্ড।
প্রথমার্ধে কোনোরকমে এক গোল হজম করে ঠেকিয়ে রাখলেও, দ্বিতীয়ার্ধে বার্সার সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ করেছে গতবারের রানার্সআপরা। বার্সার কাছে ডর্টমুন্ড হেরেছে ৪-০ গোলে। এই হারে অ্যাওয়ে ম্যাচ হাতে রেখেই সেমিফাইনালের দুয়ারে পৌঁছে গেল বার্সা।
বার্সার জয়ে আজ গোল করেছেন বার্সার আক্রমণভাগের তিন তারকার প্রত্যেকেই। রবার্ট লেভানডফস্কি করেছেন জোড়া গোল। আর একটি করে গোল করেছেন রাফিনিয়া ও লামিনে ইয়ামাল।
আরও পড়ুনঘুরে দাঁড়ানো কাকে বলে দেখিয়ে দিল বার্সেলোনা১৭ মার্চ ২০২৫ম্যাচের প্রথম মিনিট থেকেই ডর্টমুন্ডের ওপর চড়াও হয় বার্সেলোনা। ৫ ও ৭ মিনিটে পরপর দুইবার দারুণ দক্ষতায় ডর্টমুন্ডকে গোল খাওয়া থেকে বাঁচিয়ে দেন গোলরক্ষক গ্রেগর কোবেল। ইয়ামালের প্রচেষ্টা নষ্ট করার ২ মিনিট পর ঠেকিয়ে দেন লেভানডফস্কিকে।
শুরুর ঝড় সামলে ধীরে ধীরে থিতু হওয়ার চেষ্টা করলেও, বার্সার আক্রমণে বেশ চাপেই থাকতে হয়েছে সিগনাল ইদুনা পার্কের দলটিকে। ম্যাচের ১৪ মিনিটের মাথায় বলার মতো কোনো আক্রমণে যায় ডর্টমুন্ড, যদিও তা বার্সাকে দুশ্চিন্তায় ফেলার মতো ছিল না।
ইয়ামাল ও রাফিনিয়ার গোল উদ্যাপন