কলেজশিক্ষকদের পদোন্নতি পেতে লাগবে গবেষণা
Published: 7th, February 2025 GMT
শিক্ষাকে অন্যান্য সার্ভিস থেকে আলাদা করার পাশাপাশি কর্মকর্তারা যাতে চাকরির সর্বোচ্চ গ্রেডে যেতে পারেন, সেই সুপারিশ করেছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। তবে কলেজ ও সমপর্যায়ে সহযোগী অধ্যাপক ও অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পেতে হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বাধ্যতামূলকভাবে মৌলিক গবেষণা থাকতে হবে। পিএইচডিধারী অধ্যাপকেরা ওপরের পদে যেতে অগ্রাধিকার পাবেন।
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে এমন সুপারিশ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে শিক্ষার মতো স্বাস্থ্য সার্ভিসকেও অন্যান্য সার্ভিস থেকে আলাদা করার পাশাপাশি জনবলকাঠামো পুনর্গঠনের সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া বিদ্যমান ‘সিনিয়র সচিব’ পদবি বাদ দিয়ে এ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মুখ্য সচিব করার প্রস্তাব করেছে কমিশন।
শিক্ষার মতো স্বাস্থ্য সার্ভিসকেও অন্যান্য সার্ভিস থেকে আলাদা করার পাশাপাশি জনবলকাঠামো পুনর্গঠনের সুপারিশ।গত বুধবার জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেন কমিশনের প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী।
বর্তমানে সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসির) মাধ্যমে বিসিএসের ২৬টি ক্যাডারে নিয়োগ হয়। এখন ক্যাডার বাদ দিয়ে কাজের ধরন অনুযায়ী ১৩টি সার্ভিসে বিভক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে। পাশাপাশি নিয়োগ ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে তিনটি পিএসসি করার সুপারিশ করা হয়েছে।
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে বিসিএস (শিক্ষা) ক্যাডারের পরিবর্তে ‘বাংলাদেশ শিক্ষা সার্ভিস’ নামকরণের সুপারিশ করা হয়েছে। এই সার্ভিসের জনবল নিয়োগ, পদোন্নতির পরীক্ষা হবে পিএসসির (শিক্ষা) অধীনে।
সংখ্যার দিক দিয়ে বিসিএস স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ক্যাডার বড়। শিক্ষা ক্যাডারে কর্মকর্তা প্রায় ১৬ হাজার। আর স্বাস্থ্য ক্যাডারের সদস্য ৩০ হাজারের বেশি। এই দুই ক্যাডারের কর্মকর্তারা পদোন্নতিতে পিছিয়ে থাকেন বলে অভিযোগ আছে। তাঁরা যেতে পারেন সর্বোচ্চ চতুর্থ গ্রেড পর্যন্ত।
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন বলছে, শিক্ষার কর্মকর্তাদের নবম গ্রেড থেকে গ্রেড-১–এ পৌঁছানোর সুযোগসহ নিয়মিত পদোন্নতির ব্যবস্থা রাখতে হবে। পদোন্নতির জন্য পরীক্ষা বা মূল্যায়ন হবে। অন্তত ৫ শতাংশ অধ্যাপককে জাতীয় বেতন স্কেলের দ্বিতীয় গ্রেডে উন্নীত করতে হবে। যাঁরা পিএইচডি ডিগ্রিধারী এবং অধ্যাপক হিসেবে পাঁচ বছর চাকরি করেছেন, তাঁরা দ্বিতীয় গ্রেডে উন্নীত হবেন।
কমিশন বলছে, মানসম্মত শিক্ষক তৈরির জন্য সহযোগী অধ্যাপক পর্যায়ে পদোন্নতিতে অন্তত তিনটি মৌলিক গবেষণা এবং অধ্যাপক পদের জন্য অন্তত পাঁচটি গবেষণা বাধ্যতামূলক করতে হবে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জার্নালে গবেষণা প্রকাশিত হতে হবে।
কলেজকে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন
সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ২ হাজার ২০০–এর বেশি কলেজ রয়েছে। ৮৮১টিতে স্নাতক (সম্মান) পড়ানো হয়। সংস্কার কমিশন বলছে, এই বিশ্ববিদ্যালয় কার্যত শিক্ষা বোর্ডের মতো কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। প্রায় ৩৪ লাখ শিক্ষার্থীর মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে দুরূহ কাজ। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন বিভাগ ও জেলায় অনেক সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট এলাকার ডিগ্রি পর্যায়ের কলেজগুলোকে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে।
কমিশন বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ে একটি প্রধান কলেজ নির্বাচন করে সেগুলোকে ‘উচ্চশিক্ষার বিশেষ প্রতিষ্ঠান’ হিসেবে গড়ে তোলার সুপারিশ করেছে। পিএইচডি ডিগ্রিধারী এবং যাঁদের গবেষণা প্রকাশনা আছে, এমন শিক্ষকদের এসব প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ বা পদায়ন করতে হবে। অন্যদিকে সব বিভাগে সরকারি পর্যায়ে বিশেষায়িত (উচ্চশিক্ষা) মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার সুপারিশ করেছে কমিশন।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরকে কলেজ ও স্কুলের জন্য ভাগ করে দুটি অধিদপ্তর করার সুপারিশ করা হয়েছে। স্কুল–কলেজ পরিচালনা কমিটিতে রাজনৈতিক ব্যক্তিরা সংশ্লিষ্ট থাকায় নানা রকম সমস্যা হয়। এ জন্য সরকারি কর্মকর্তাদের পরিচালনা কমিটির দায়িত্ব দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছে তারা।
৫ শতাংশ নিয়োগ বাইরে থেকে
সব সার্ভিসের মেধাবী ও দক্ষ কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে সচিবালয়ে উপসচিব থেকে অতিরিক্ত সচিব পর্যন্ত পদগুলো নিয়ে একটি ‘সুপিরিয়র এক্সিকিউটিভ সার্ভিস (এসইএস)’ গঠনের সুপারিশ করেছে সংস্কার কমিশন। তবে সার্ভিসের বাইরে ৫ শতাংশ পদে সরকার বিশেষ যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিকে যুগ্ম সচিব বা সংস্থাপ্রধান পদে নিয়োগ দিতে পারবে।
এ ছাড়া একজন মন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি মন্ত্রিসভা কমিটি অতিরিক্ত সচিবদের মধ্য থেকে বাছাই করে সচিব এবং সচিবদের মধ্য থেকে মুখ্য সচিব পদে পদোন্নতির প্রস্তাব করবে।
মন্ত্রণালয়ের সংখ্যা ৪৩ থেকে কমিয়ে ২৫টি করার সুপারিশ করেছে কমিশন। বলা হয়েছে, মন্ত্রণালয়গুলো পুনর্বিন্যস্ত করা হলে একাধিক বিভাগ সৃষ্টি হবে। তাই একজনকে মুখ্য সচিব নিয়োগ করা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে বর্তমান ‘সিনিয়র সচিব’ পদ বাদ দিতে বলেছে কমিশন। এ ছাড়া মন্ত্রিপরিষদ সচিব, মুখ্য সচিব এবং সচিব পদে কোনো বেতন গ্রেড বা স্কেল থাকবে না। সরকার তাঁদের বেতন-ভাতা ও সুবিধা নির্ধারণ করবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর র স প র শ কর র স প র শ কর ছ মন ত র কর র প র জন য পর য য় সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
আরব আমিরাতের খলিফা বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃত্তি, প্রয়োজন ইংরেজি দক্ষতার সনদ
সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) অন্যতম একটি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান খলিফা বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯৮৯ সালে যাত্রা শুরু করা বিশ্ববিদ্যালয়টি আবুধাবিতে অবস্থিত বিজ্ঞানকেন্দ্রিক বিশ্ববিদ্যালয়। বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়টি দিচ্ছে বৃত্তি। পাবলিক রিসার্চ বিশ্ববিদ্যালয়টির এ বৃত্তির আওতায় শিক্ষার্থীরা সম্পূর্ণ টিউশন ফি মওকুফ পাবেন। এ ছাড়া আবাসন খরচ, বিমানে যাতায়াতের খরচসহ নানা সুযোগ-সুবিধাও আছে।
বিদেশি ও দেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ফুল ফান্ডেড বৃত্তি আছে। সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি প্রোগ্রামের সুযোগ আছে খলিফা বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃত্তিতে। ২০২৫–২০২৬ শিক্ষাবর্ষের জন্য এ বৃত্তি দেবে বিশ্ববিদ্যালয়টি। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরাও এ বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। খলিফা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ বৃত্তিটি সম্পূর্ণ অর্থায়িত। শিক্ষার্থীরা অনলাইনের মাধ্যমে এ বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন।
আরও পড়ুনবাংলাদেশিদের জন্য গ্রেট স্কলারশিপ, আবেদন যেভাবে০২ ডিসেম্বর ২০২৩আবেদনের যোগ্যতা-স্নাতকোত্তরের জন্য স্নাতক এবং পিএইচডির জন্য স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী থাকতে হবে
একাডেমিক ফলাফল ভালো থাকতে হবে
ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা থাকতে হবে। আইইএলটিএসে স্কোর থাকতে হবে ৬ দশমিক ৫
স্যাট-এ স্কোর ১৫৫০
টোয়েফলে (ইন্টারনেট-বেসড টেস্ট) স্কোর ৯১
স্টেটমেন্ট অব পারপাস-এসওপি (৫০০ থেকে ১০০০ শব্দ)
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সব প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে হবে
রেফারেন্স লেটার দুটি
ইংরেজি ভাষা দক্ষতার সনদ
রিকমেন্ডেশন লেটার
পিএইচডিরর জন্য গবেষণাকর্ম থাকতে হবে।
খলিফা বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃত্তির আবেদনে ৫০০ থেকে ১০০০ শব্দের স্টেটমেন্ট অব পারপাস-এসওপি লিখতে হবে