হিমাগার ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে মহাসড়কে বিক্ষোভ
Published: 7th, February 2025 GMT
কালাইয়ের ১১টি হিমাগারে আলু সংরক্ষণে ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে জয়পুরহাট-বগুড়া মহাসড়কে বিক্ষোভ করা হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বৃহস্পতিবার শত শত শিক্ষার্থী, আলুচাষি ও জনতা এ কর্মসূচি পালন করেন। তারা বাড়তি ভাড়া বাতিল করার দাবি জানান।
আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, এমনিতে আলুর দাম কম, তার ওপর হিমাগারের ভাড়া অযৌক্তিকভাবে বাড়িয়ে কৃষকদের সংকটে ফেলে দেওয়া হয়েছে। এতে প্রান্তিক চাষিরা ক্ষতির মুখে পড়বেন, যার প্রভাব অর্থনীতিতে পড়বে।
আগের ভাড়া বহালে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে ইউএনওর কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। ইউএনও শামীমা আক্তার জাহান স্মারকলিপি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কৃষকরা বলছেন, এ বছর আলু উৎপাদনে খরচ বেড়েছে। মৌসুমের শুরুতে বাড়তি দামে বীজ, সার, কীটনাশক কিনে আবাদ করতে গিয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয়েছে। এমনিতেই তারা লোকসানে পড়েছেন। তার ওপর হিমাগারের ভাড়া বৃদ্ধি করায় আলু সংরক্ষণ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে গেছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, গত বছর এক বস্তা আলু সংরক্ষণের ভাড়া ছিল ২৮০ টাকা, যা এ বছর বেড়ে হয়েছে ৫২০ টাকা। অস্বাভাবিক ভাড়া বৃদ্ধি পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে, যাতে তারা কম দামে আলু বিক্রি করতে বাধ্য হন। পরে হিমাগার মালিকরা মজুত করে জুন মাসের পর সিন্ডিকেট করে উচ্চমূল্যে বিক্রি করবেন।
বিক্ষোভ চলাকালে আন্দোলনকারীরা বিভিন্ন স্লোগান দেন। হিমাগার মালিকদের স্বেচ্ছাচারী ও মনগড়া সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান তারা। আন্দোলনকারীরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যদি দ্রুত ভাড়া কমানো না হয়, তাহলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
জয়পুরহাটে ১৯টি হিমাগারের মধ্যে কালাইয়ে রয়েছে ১১টি। আলুচাষি আব্দুল হান্নান বলেন, ১১টি হিমাগারে প্রায় দেড় লাখ টন আলু সংরক্ষণ করা হয়। ৬৫ কেজির এক বস্তা আলু থেকে এ মৌসুমে ২৪০ টাকা বেশি নিলে, হিমাগার মালিকরা এক টনে ৩ হাজার ৭২০ টাকা লুটে নেবে। দেড় লাখ টনে কত টাকা হয়? এ টাকা কৃষকের পকেট থেকেই নেওয়া হবে। এ সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া জরুরি।
আরেক আলুচাষি ফজলুল করিমের ভাষ্য, হিমাগার মালিকদের উদ্দেশ্য হচ্ছে, কৃষকরা আলু সংরক্ষণ করতে না পারলে তারা কম দামে কিনে নেবেন। পরে বেশি দামে বিক্রি করবেন। এটা হতে দেওয়া যাবে না। কেউ খাবে কেউ খাবে না, তা হবে না তা হবে না।
দেশের কৃষকরা সংকটে রয়েছেন উল্লেখ করে কালাই উপজেলার সমন্বয়ক নেওয়াজ মোরশেদ বলেন, অমানবিক ভাড়া বৃদ্ধি তাদের আরও বিপদে ফেলছে। তাদের ওপর জুলুম চালানো হচ্ছে। হিমাগার মালিকরা নিজেদের স্বার্থে কৃষকদের সর্বস্ব লুটতে চাইছেন, কিন্তু তা হতে দেওয়া যাবে না।
জেলা সমন্বয়ক এহসান আহমেদ নাহিদ বলেন, ভাড়া বৃদ্ধি সরাসরি কৃষকদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। যদি অবিলম্বে এ ঘোষণা প্রত্যাহার করা না হয়, তাহলে বড় আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে। প্রয়োজনে পুরো জেলা অচল করে দেওয়া হবে বলে জানান।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বিএসইসির ১৩ কর্মকর্তার জামিন
নাশকতার মামলায় পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ১৩ কর্মকর্তাকে জামিন দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (১০ মার্চ) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান ছয় জনের এবং গতকাল রবিবার আরেক মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল রানা সাত জনের জামিনের আদেশ দেন।
জামিন পাওয়া আসামিরা হলেন—বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল আলম (৫৭) ও রেজাউল করিম (৫৪), যুগ্ম পরিচালক রাশেদুল ইসলাম (৪৮), উপ-পরিচালক বনী ইয়ামিন (৪৫) ও শহিদুল ইসলাম (৪২), লাইব্রেরিয়ান মো. সেলিম রেজা বাপ্পী (৩১), অতিরিক্ত পরিচালক নজরুল ইসলাম (৫০), সহকারী পরিচালক জনি হোসেন (৩১), রায়হান কবীর (৩০), আব্দুল বাতেন (৩২), সাজ্জাদ হোসেন (৩০), ব্যক্তিগত কর্মকর্তা আবু ইউসুফ (২৯) এবং উপ-পরিচালক আল ইসলাম (৩৮)। তাদের মধ্যে প্রথম সাত জন রবিবার এবং পরের ৬ জন আজ সোমবার জামিন পান।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার উপ-পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম জামিনের তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গতকাল সাত জন এবং আজ ছয় জন আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। আদালত তাদের আবেদন মঞ্জুর করেছেন।
গত ৬ মার্চ রাতে শেরেবাংলা নগর থানায় ১৬ জনকে আসামিকে করে মামলা দায়ের করেন বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের গানম্যান মো. আশিকুর রহমান।
অপর আসামিরা হলেন—বিএসইসির সাবেক নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান (৫৮), পরিচালক আবু রায়হান মো. মোহতাছিন বিল্লা (৫১) এবং উপ-পরিচালক তৌহিদুল ইসলাম (৩২)।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ৫ মার্চ বিএসইসির চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের অবরুদ্ধ করেছিলেন সংস্থাটির কর্মকর্তা–কর্মচারীরা। তারা পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী কমিশনের মূল ফটকে তালা দেন। সিসি ক্যামেরা, ওয়াই-ফাই ও লিফট বন্ধ করে দেন এবং বৈদ্যুতিক সংযোগ বন্ধ করে মারাত্মক অরাজকতা ও ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে গুরুতর জখমের চেষ্টা করেন।
বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে এবং কমিশনার মো. মহসিন চৌধুরী, মো. আলী আকবর ও ফারজানা লালারুখের উপস্থিতিতে কমিশনের নির্ধারিত সভা চলাকালে অভিযুক্তরাসহ আরো কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী কমিশনের সভাকক্ষে জোরপূর্বক ঢুকে কমিশনের চেয়ারম্যান ও কমিশনারদেরকে অবরুদ্ধ করেন।
ঢাকা/মামুন/এনটি/রফিক