ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ পৌরসভার প্রাচীর ঘেঁষে দীর্ঘদিন ধরে ময়লা-আবর্জনা ও বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। ময়লা-আবর্জনার স্তূপ জমে স্থানটি ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। এতে মশা-মাছির উপদ্রব ও দুর্গন্ধে পথচারী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ভাগাড়ের কারণে দীর্ঘদিন ধরে জনভোগান্তি সৃষ্টি হলেও এটি অপসারণে উদ্যোগ নেই পৌর কর্তৃপক্ষের। 

সরেজমিন দেখা গেছে, পৌরসভার প্রাচীরসংলগ্ন সরু সড়কের ড্রেনের পাশেই ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। প্রতিদিন সকালে পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা ময়লার ভ্যান নিয়ে এসে বর্জ্য ফেলছেন। তাদের দেখাদেখি কিছু বাসাবাড়ির বর্জ্যও এখানে ফেলা হয়। স্থানীয়রা জানান, প্রায় এক যুগ ধরে এখানে বর্জ্য ফেলা হলেও এখান থেকে আবর্জনা পরিষ্কার করেন না পৌরকর্মীরা। 

স্থানীয় বাসিন্দা বাচ্চু মিয়া জানান, আবর্জনার দুর্গন্ধে এই পথ দিয়ে যাওয়া-আসা দুষ্কর। এলাকাবাসী ও পথচারীর নাকে-মুখে রুমাল চেপে চলাচল করতে হয়।

শিবেন অধিকারী বলেন, দুর্গন্ধে বাড়িতেও বসবাস করা কষ্টকর। পৌর কর্তৃপক্ষ কোন বিবেচনায় একটি আবাসিক এলাকায় ময়লা ফেলছে, তা তাঁর বুঝে আসে না। দ্রুত ভাগাড় অপসারণের দাবি করেন ।  

অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান বলেন, তাঁর বাসার সামনেই আবর্জনার স্তূপ। ড্রেনের পচা পানির গন্ধ আর মশা-মাছির যন্ত্রণায় বাড়িতে থাকাও দায়। অনেক সময় সেখানে আসা কুকুরগুলো পথচারী ও পোষা প্রাণীদের তাড়া করে। অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না। 

কালীগঞ্জ উপজেলা পরিবেশবাদী সংগঠনের এক স্বেচ্ছাসেবী শিবুপদ বিশ্বাস বলেন, এটি শুধু একটা এলাকায় হচ্ছে এমনটা নয়। শহরের বিভিন্ন স্থানে ও মহল্লায় এই চিত্র চোখে পড়লেও পৌর কর্তৃপক্ষের চোখে পড়ে না। বিষয়টি তিনি উপজেলা মাসিক আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায়ও তুলেছেন। 

এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ পৌরসভার সচিব আব্দুল্লাহ আল মাসুম বলেন, ওখানে শুধু পৌরসভার ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে তা নয়, স্থানীয় বাসিন্দারাও ড্রেনের পাশে ময়লা-আবর্জনা ফেলে থাকেন। এ বিষয়ে পৌরসভার পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দাদেরও সচেতন হওয়া জরুরি। শিগগিরই সেখানকার ময়লা-আবর্জনা এবং ড্রেন পরিষ্কারের উদ্যোগ নেবেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ঝ ন ইদহ প রসভ র প

এছাড়াও পড়ুন:

মহিলা সমিতিতে ১৪ নাটক নিয়ে উৎসব শুরু

ঢাকার থিয়েটার চর্চায় গতি আনতে, দর্শককে থিয়েটারমুখী করতে এবং নাট্যদল ও নাট্যকর্মীদের উজ্জীবিত করার লক্ষ্য নিয়ে এক প্ল্যাটফর্মে এসেছে ঢাকা মহানগরীর ৭১টি নাট্যসংগঠন। গেল মাসে গঠিত এ প্ল্যাটফর্মের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ঢাকা মহানগর নাট্য পরিষদ’। এ পর্ষদের উদ্যোগে ফেব্রুয়ারি থেকে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন নাট্যমঞ্চে নাট্যোৎসব আয়োজনের কথা জানানো হয় সংগঠনটির পক্ষ থেকে। সে পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রথম পর্যায়ে ১৪ দিনব্যাপী আয়োজন করা হচ্ছে ‘ঢাকা মহানগর নাট্য উৎসব’।

আসছে ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে বাংলাদেশ মহিলা সমিতির নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে শুরু হবে এ উৎসব। এতে অংশ নেবে আরণ্যক, থিয়েটার, নাট্যকেন্দ্র, অনুস্বর, ঢাকা থিয়েটার, প্রাচ্যনাট, আগন্তুকসহ ঢাকার মঞ্চের এক ডজনের বেশি নাট্যদল। জানা গেছে, ঢাকা মহানগর নাট্যোৎসবের উদ্বোধনী দিনে প্রদর্শিত হবে থিয়েটারের প্রশংসিত প্রযোজনা ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’। মুক্তিযুদ্ধের সময় এক রাতে একটি গ্রামের নারী-পুরুষেরা এসেছেন মাতবরের কাছে। তাদের চোখে-মুখে উৎকণ্ঠা। গত রাতেও পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন মাতবরের সঙ্গে দেখা করেছেন জানিয়ে সবাইকে আশ্বস্ত করেছেন তিনি।

পাকিস্তানি বাহিনীর ওপর ভরসা রাখতে বলছেন উপস্থিত লোকজনকে। গ্রামবাসী সহজে আশ্বস্ত হতে পারেন না। সৈয়দ শামসুল হকের লেখা কালজয়ী নাটক ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’-এর পটভূমি এটি। উৎসবে ১৬ ফেব্রুয়ারি থাকছে লোক নাট্যদলের (বনানী) ‘কঞ্জুস’, ১৭ ফেব্রুয়ারি থিয়েটার আর্ট ইউনিটের ‘বলয়’, ১৮ ফেব্রুয়ারি নাট্যকেন্দ্রের ‘পুণ্যাহ’, ১৯ ফেব্রুয়ারি অনুস্বরের ‘হার্মাসিস ক্লিওপেট্রা’, ২০ ফেব্রুয়ারি ঢাকা থিয়েটার মঞ্চের ‘ঘরজামাই’, ২১ ফেব্রুয়ারি দেখা যাবে প্রাচ্যনাটের ‘কিনু কাহারের থেটার’।

এ ছাড়া ২২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা থিয়েটারের ‘একটি লৌকিক অথবা অলৌকিক স্টিমার’, ২৩ ফেব্রুয়ারি শৌখিন থিয়েটারের ‘অন্তরালের আয়না’, ২৪ ফেব্রুয়ারি নাট্যপালার ‘বাঘ’, ২৫ ফেব্রুয়ারি আরণ্যক নাট্যদলের ‘ময়ূর সিংহাসন’, ২৬ ফেব্রুয়ারি আগন্তুকের ‘অন্ধকারে মিথেন’, ২৭ ফেব্রুয়ারি পদাতিক নাট্য সংসদ টিএসসির প্রযোজনা ‘গুণজান বিবির পালা’ এবং উৎসবের শেষ দিন ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রদর্শিত হবে প্রাঙ্গণেমোর নাট্যদলের ‘শেষের কবিতা’।

আয়োজকেরা জানিয়েছেন, এ উৎসবের লক্ষ্য শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার তিনটি মিলনায়তন, মহিলা সমিতি মিলনায়তন, জহির রায়হান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রসহ ঢাকার মঞ্চগুলোকে থিয়েটারবান্ধব করে তোলা এবং দর্শকদের উপস্থিতি বাড়ানো। ফেব্রুয়ারিতে প্রথম পর্যায়ের এ উৎসবের পর ৭১টি নাট্যদল তাদের ৭১টি নাটক নিয়ে পর্যায়ক্রমে আরও পাঁচটি মিলনায়তনে এ উৎসবের আয়োজন করবে।


 

সম্পর্কিত নিবন্ধ