লিবিয়ার দক্ষিণ-পূর্ব ও পশ্চিমের দুটি এলাকা থেকে অন্তত ২৯ অভিবাসীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিরাপত্তা বিষয়ক একটি অধিদপ্তর ও লিবিয়ার রেড ক্রিসেন্ট বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানিয়েছে। খবর রয়টার্সের।

আলওয়াহাত জেলার নিরাপত্তা অধিদপ্তর এক বিবৃতিতে বলেছে, বেনগাজি শহর থেকে প্রায় ৪৪১ কিলোমিটার দূরে জিখারা অঞ্চলের একটি খামারে গণকবরে ১৯ জনের মরদেহ পাওয়া গেছে। চোরাচালানের ঘটনাকে কেন্দ্র করে এসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

এর আগের দিন লিবিয়ার রেড ক্রিসেন্ট জানায়, রাজধানী ত্রিপোলি থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে জাওইয়া শহরের দিলা বন্দর থেকে আরও ১০টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। অভিবাসীদের একটি নৌকা ডুবে যাওয়ার পর ওই দিন সকালে মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়। 

নিরাপত্তা অধিদপ্তর বলছে, জালুতে পাবলিক প্রসিকিউশন অফিসের উপস্থিতিতে অধিদপ্তর জিখারা এলাকায় চোরাচালান এবং অবৈধ অভিবাসনের কারণে মৃত্যু হওয়া ১৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে। তারা একটি পরিচিত চোরাচালান নেটওয়ার্কের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, খামারের মোট তিনটি কবরে মরদেহগুলো পাওয়া গেছে। এর মধ্যে একটি কবর থেকে একটি, আরেকটি কবর থেকে চারটি এবং অন্যটি থেকে ১৪টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য মরদেহগুলো ফরেনসিক চিকিৎসকদের কাছে পাঠানো হয়েছে বলেও জানায় অধিদপ্তর।

এশিয়া ও আফ্রিকার সংঘাত ও দারিদ্র্যের কবল থেকে মুক্তি পেতে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে যেতে অভিবাসীদের জন্য একটি ট্রানজিট লিবিয়া। গত জানুয়ারির শেষে আলওয়াহাত অপরাধ তদন্ত বিভাগ জানিয়েছিল, তারা সাব-সাহারান আফ্রিকা অঞ্চলের বিভিন্ন দেশের ২৬৩ জন অভিবাসীকে মুক্ত করেছে। তারা অত্যন্ত খারাপ মানবিক ও স্বাস্থ্যগত অবস্থায় একটি চোরাচালান দলের হাতে আটক ছিলেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র মরদ হ

এছাড়াও পড়ুন:

আবার আগুন ভারতের মহাকুম্ভে

দুর্ঘটনা পিছু ছাড়ছে না ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের প্রয়াগরাজের (সাবেক এলাহাবাদ) মহাকুম্ভ মেলার। আজ শুক্রবার সকালে আবার আগুন লাগল সেখানে। মহাকুম্ভের সেক্টর ১৮–তে সকালে লাগা আগুন নেভাতে দ্রুত চলে যায়  ফায়ার সার্ভিসের বেশ কয়েকটি ইঞ্জিন। মেলাপ্রাঙ্গণে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লেও প্রয়াগরাজের পুলিশ কর্তা সর্বেশ কুমার মিশ্র জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত হতাহতের কোনো খবর নেই। আগুন নেভানো ও তা যাতে ছড়িয়ে না পড়ে, সেই চেষ্টা চালাচ্ছে ফায়ার সার্ভিস বিভাগ।

মহাকুম্ভে এই নিয়ে আগুন লাগল তিনবার। দুবার ঘটেছে পদদলিত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা।

আজ সকালে হঠাৎই দেখা যায় সেক্টর ১৮–তে কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী পাকিয়ে ওপরের দিকে উঠছে। স্থানীয় পুলিশ চৌকির পরিদর্শক যোগেশ চতুর্বেদী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, খবর পাওয়ামাত্রই  ফায়ার সার্ভিসের বেশ কয়েকটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে চলে যায়। আগুন লাগে তুলসী চকের কাছে শঙ্করাচার্য মার্গের হরিহরনন্দ আখড়ায়। আগুনের শিখা ও কালো ধোঁয়া দেখে পুণ্যার্থীদের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। আশপাশের আখড়া থেকে বেরিয়ে আসেন সবাই। খবর পেয়ে  ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এসে পরিস্থিতির সামাল দেন আগুন বেশি ছড়িয়ে পড়ার আগে। হুড়োহুড়িতে কেউ কেউ পড়ে গিয়ে সামান্য আহত হয়েছেন বলে সংবাদ মাধ্যমগুলো জানিয়েছে।  

আজকের আগুন কীভাবে লাগল, এ বিষয়ে পুলিশ বা মেলা কর্তৃপক্ষ এখনই কিছু জানাতে পারেনি।

মহাকুম্ভ শুরু হয়েছিল গত ১৩ জানুয়ারি। প্রথমবার আগুন লাগে ১৯ জানুয়ারি। মেলাপ্রাঙ্গণে পুড়ে গিয়েছিল অন্তত ৫০টি শিবির। তখন সন্দেহ করা হয়েছিল, রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে আগুন ধরেছে। সেই আগুনে কেউ হতাহত হয়েছিলেন বলে পুলিশ জানায়নি। তারপর ৩০ জানুয়ারি আগুন লাগে সেক্টর ২২–এ। সেই দুর্ঘটনায় ১৫টি তাঁবু পুড়ে যায়। এর এক দিন আগেই ঘটে যায় পদপিষ্ট হওয়ার দুটি ঘটনা। একটি ঘটনায় ৩০ জনের মৃত্যুর কথা রাজ্য সরকার ঘোষণা করলেও অন্য ঘটনাটির কথা আজও স্বীকার করেনি। তবে তদন্তকারী দল জানিয়েছে, দ্বিতীয় ঘটনাটির প্রচার সত্য কি না, তা তাদের বিবেচ্য। বেসরকারি মত এবং বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর দাবি অবশ্য নিহতের সংখ্যা অনেক বেশি। রাজ্য সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে মৃত্যুর সংখ্যা চেপে যাচ্ছে। সংসদেও বিরোধীরা এই দাবি জানিয়েছে। সরকার যথারীতি নীরব।

পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনার পর ৩ ফেব্রুয়ারি একটি হট এয়ার বেলুন ফেটে আহত হয়েছিলেন ৬ জন। মেলাপ্রাঙ্গণে যেকোনো দুর্ঘটনার প্রচার যত কম হয়, তা নিশ্চিত করতে রাজ্য সরকার সচেষ্ট। সরকারি দাবি, শুক্রবার পর্যন্ত ৩৯ কোটি ৭৪ লাখ মানুষ প্রয়াগে স্নান সেরেছেন। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের দাবি ছিল, ৪০ কোটি পুণ্যার্থী প্রয়াগে আসবেন। পদপিষ্ট হওয়ার পরদিন তিনি জানিয়েছিলেন, পুণ্যার্থীরা ভীত হননি। স্নানযাত্রা অব্যাহত।

সম্পর্কিত নিবন্ধ