বগুড়া জেলা যুবদলের কমিটিতে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের অন্তত পাঁচজনকে পদ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তাদের পদ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পদবঞ্চিতরা।

গত মঙ্গলবার ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমকে সভাপতি ও সাবেক আরেক সভাপতি আবু হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে জেলা যুবদলের ১০১ সদস্যের কমিটি অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় সংগঠন। এতে সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক সুজাউল ইসলাম সুজা, স্বাস্থ্য সম্পাদক মো.

ইনসান, তথ্যপ্রযুক্তি যোগাযোগ ও বিজ্ঞান সম্পাদক ফয়সাল ইসলাম, মৎস্য ও পশু পালন সম্পাদক গোলাম মোস্তফা ও সহকর্মসংস্থান সম্পাদক মাসুদ রানার বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ এবং যুবলীগের রাজনীতি করার অভিযোগ রয়েছে।

নতুন কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক আহসান হাবিব সেলিম, সহকোষাধ্যক্ষ আল মাহমুদ প্রিন্স ও সহআইন সম্পাদক মাহামুদুল হাসান জিতুকে হাইব্রিড নেতা আখ্যা দিয়েছেন পদবঞ্চিতরা। ফেসবুকে তাদের বিগত দিনে আওয়ামী লীগ, এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীর সঙ্গে তোলা ও কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের ছবি ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

ছবিতে সুজাকে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমান মজনু ও সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপুর সঙ্গে দলটির বিভিন্ন কর্মসূচিতে দেখা যায়। ফয়সাল দুপচাঁচিয়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আহমেদুর রহমান বিপ্লবের সঙ্গে বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। গোলাম মোস্তফা জেলা যুবলীগের সভাপতি শুভাশিষ পোদ্দার লিটন ও সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলামের সঙ্গে দলীয় নানা কর্মসূচিতে ছিলেন। বগুড়া পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিনেওয়াজ খান রবিনের সঙ্গে ইনসান এবং মাসুদকেও দেখা যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পদবঞ্চিত কয়েকজন জানান, যুবদলের শীর্ষ নেতারা পদ বাণিজ্য করেছেন। তারা মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে ফ্যাসিবাদের দোসরদের যুবদলে পদ দিয়েছেন।

কমিটিতে স্থান পাওয়া ইনসান জানান, ওষুধ ব্যবসায় জড়িত থাকায় জেলা ড্রাগ সমিতির সাবেক সভাপতি আওয়ামী লীগ নেতা রফিনেওয়াজ খান রবিনের সঙ্গে তিনি সমিতির একটি কর্মসূচিতে অংশ নেন। সে ছবিই ভাইরাল করা হয়েছে। আহসান হাবিব সেলিমের দাবি, তিনি হাইব্রিড নন। দীর্ঘদিন ছাত্রদল করার কারণে যুবদলে পদ পেয়েছেন।

যুবদলের নতুন কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘যে দুয়েকজনের বিষয়ে কথা উঠেছে, তারা যুবদল ও ছাত্রদলের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। পরিবারও বিএনপির রাজনীতি করে। পদ না পেয়ে একটি মহল টাকা নিয়ে কমিটিতে স্থান দেওয়ার মিথ্যা অভিযোগ করছে।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: য বল গ র য বদল র কম ট ত আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

তিতুমীর কলেজ ছাত্রদলে পদ পেলেন সাংবাদিক হেনস্তাকারীরাও 

তিতুমীর কলেজ ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হয়েছে। গত সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভাপতি মো. রাকিবুল ইসলাম রাকিব এবং সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির এ কমিটির অনুমোদন দেন।

জানা গেছে, নবগঠিত এ কমিটির একাধিক নেতার বিরুদ্ধে রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। একইসঙ্গে ত্যাগী নেতাদের পদবঞ্চিত হওয়া, ৫ আগস্টের পর নতুন করে অনুপ্রবেশ ও ছাত্রলীগ থেকে ছাত্রদলে অনুপ্রবেশ করা নেতারাও রয়েছে এ কমিটিতে। নবগঠিত এ কমিটিতে রয়েছেন তিতুমীর কলেজ সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে প্রবেশ করে সাংবাদিক হেনস্তাকারীরাও। রয়েছেন চাঁদাবাজির অভিযোগে অভিযুক্ত ও বিভিন্ন সময় বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে শোকজ হওয়া নেতারাও।

১৬ জানুয়ারি ‘ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে তিতুমীর ঐক্যের বাকবিতণ্ডা, তিতুমীর ঐক্যের কমিটি স্থগিত’ নামের ভিডিও সরকারি তিতুমীর কলেজ সাংবাদিক সমিতির ফেসবুক পেইজে প্রকাশ করা হয়। এরপর তিতুমীর কলেজ সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে ঢুকে কলেজে কর্মরত সাংবাদিকদের জবাবদিহির নামে হেনস্তা করে ছাত্রদলের জাবেদ ইকবাল, আব্দুল হামিদের নেতৃত্বে একটি দল।

এ সময় ঘটনার ভিডিও করতে গেলে নারী সাংবাদিককে হেনস্তা করে ছাত্রদলের জিহাদ হাওলাদার। ঘটনায় ছাত্রদল ও কলেজ প্রশাসন কর্তৃক তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সেই জাবেদ ইকবাল কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক, আব্দুল হামিদ সদস্য ও জিহাদ হাওলাদার যুগ্ন-আহ্বায়ক পদে রয়েছেন। একইসঙ্গে জিহাদ হাওলাদারের ছত্রছায়ায় ক্যাম্পাসে ‘কাকা বাহিনী’র উত্থানের অভিযোগ রয়েছে।

আরো জানা গেছে, গত বছরের ১০ সেপ্টেম্বর সরকারি তিতুমীর কলেজের এক শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে ১৬ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানটির বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত তিতুমীর কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সহ-স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক জিসান বর্তমান কমিটিতে পেয়েছে সদস্যপদ। এছাড়া এ ঘটনায় জড়িত আশিক মাহমুদ, হেলাল উদ্দিন‌ও আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হিসেবে রয়েছেন।

গত বছরের ৪ ডিসেম্বর তিতুমীর কলেজ শাখা ছাত্রদলের আক্কাসুর রহমান আঁখি হল শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক নিয়াজ হোসাইনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, মারধর ও মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠে। মহাখালী বক্ষব্যাধি হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স গ্যারেজের সামনে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়। সেই নিয়াজ বর্তমান কমিটিতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন।

তিতুমীর কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক পদে রয়েছেন রিমু হোসাইন। দল ভারী করতে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের নেতাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

এদিকে কমিটি গঠনের পর গত ৩ ফেব্রুয়ারি বেলা ১২টার দিকে ক্যাম্পাসের শহীদ বরকত মিলনায়তনের সামনে ছাত্রদলের দুই গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় সাংবাদিকরা ভিডিও করতে গেলে বাধা দেন ছাত্রদলের একাধিক কর্মী।

অভিযোগ রয়েছে, দল ভারী করতে ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে ছাত্রদলে আসা নেতৃবৃন্দ ও ছাত্রলীগ থেকে অনুপ্রবেশকারী নেতারাও এ কমিটিতে স্থান পেয়েছেন। একইসঙ্গে পদবঞ্চিত হয়েছেন দুঃসময়ে রাজনীতিতে থাকা অনেক কর্মী। বিষয়টি নিয়ে পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি প্রকাশের দিন ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায় একাধিক কর্মীকে।

অভিযোগের বিষয়ে ছাত্রদলের আহ্বায়ক ইমাম হোসেন বলেন, “ত্যাগী কেউ বাদ পড়েনি। যারা জেল খেটেছে, মামলা হামলার শিকার হয়েছে তারা কেউ বাদ পড়েনি। নতুনদের জায়গা দেওয়ার জন্যই কমিটি বড় হয়েছে। আর বিতর্কিত কেউ থেকে থাকলে সংগঠন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।”

অভিযোগগুলোর বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তাদের পাওয়া যায়নি।

ঢাকা/হাফছা/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • তিতুমীর কলেজ ছাত্রদলে পদ পেলেন সাংবাদিক হেনস্তাকারীরাও 
  • ‘আওয়ামী লীগ স্টাইলে লুটপাট করছেন কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির নেতারা’
  • নাটোরে বিএনপির নতুন কমিটি: ‘হৃদয়ে রক্তক্ষরণ’ নিয়ে পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীদের প্রতিবাদ