বিশেষ কোম্পানির স্বার্থে দরপত্রে অদ্ভুত শর্ত
Published: 7th, February 2025 GMT
মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওষুধ, রাসায়নিক ও কিট কিনতে সাতটি প্যাকেজে ৯ কোটি টাকার দরপত্র ডাকা হয়েছে। কয়েকজন ঠিকাদার অভিযোগ করেছেন, পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ দিতে দরপত্রে অদ্ভুত শর্ত আরোপ করা হয়েছে। এতে অনেকে দরপত্র কিনলেও জমা দিতে পারেননি। এমনকি এক ঠিকাদারের প্রতিনিধিকে দরপত্র জমা দিতে বাধা দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ নভেম্বর মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সাতটি প্যাকেজে ৯ কোটি ২২ লাখ টাকার দরপত্র ডাকা হয়। জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল গত ২ ডিসেম্বর। শর্তের বেড়াজালে বঞ্চিত হয়েছে অনেক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
একাধিক ঠিকাদারের অভিযোগ, ৩ নম্বর প্যাকেজে পাঁচ কোটি টাকার রাসায়নিক ও কিট কেনার দরপত্র ডাকা হয়েছে। তবে তিন মাস আগে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ব্যাংকে পাঁচ কোটি টাকার আমানতের স্থিতি চাওয়া হয়েছে। এ ছাড়া চাওয়া হয়েছে পাঁচ কোটি টাকার ঋণপত্র (এলসি)। এমন অদ্ভুত শর্তের কারণে অনেকে দরপত্র জমা দিতে পারেননি। ১৩ জন ঠিকাদার দরপত্র কিনলেও জমা পড়েছে পাঁচটি। গত ২ ডিসেম্বর দরপত্র জমা দেওয়া শেষ হলেও এখনও ঠিকাদার চূড়ান্ত করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে তিন দফা বৈঠক হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রথম প্যাকেজে দুই কোটি টাকার ওষুধ কেনার দরপত্রে ৯টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দরপত্র কেনে। শর্তের কারণে পাঁচটি প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দিতে পারেনি। দ্বিতীয় প্যাকেজে ১ কোটি ৫০ লাখ টাকার সার্জিক্যাল যন্ত্রপাতি কেনার দরপত্র বেচা হয় ১২টি। এর বিপরীতে জমা পড়ে চারটি। ৪ নম্বর প্যাকেজে ৩০ লাখ টাকার গজ-ব্যান্ডেজ কেনার দরপত্র বেচা হয় ৯টি। এর বিপরীতে জমা পড়ে চারটি। ৫ নম্বর প্যাকেজে ২০ লাখ টাকার লিলেন কাপড় কেনার দরপত্র বেচা হয় ১০টি। এর বিপরীতে দরপত্র জমা পড়ে চারটি। ৬ নম্বর প্যাকেজে ১০ লাখ টাকার আসবাব কেনার দরপত্র বেচা হয় ১০টি। এর বিপরীতে দরপত্র জমা পড়ে চারটি। ৭ নম্বর প্যাকেজে ১২ লাখ টাকার যন্ত্রপাতি কেনার দরপত্র বেচা হয় ৯টি। এর বিপরীতে দরপত্র জমা পড়ে চারটি। এরই মধ্যে দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি গত ১৫, ১৬ ও ২৩ ডিসেম্বর বৈঠক করেছে। গত রোববার ফের বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি।
একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি জানান, গত ২ ডিসেম্বর দরপত্র জমা দিতে যাওয়ার পথে হাসপাতালের গেট থেকে তাঁকে তুলে নিয়ে একটি ভবনে এক ঘণ্টা আটকে রাখা হয়। পরে ভয়ভীতি দেখিয়ে দরপত্র জমা দিতে দেয়নি প্রভাবশালীরা।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম ন কগঞ জ ক ন র দরপত র ব চ দরপত র ড ক
এছাড়াও পড়ুন:
৮৮৮ কোটি টাকার সার ও ফসফরিক এসিড কিনবে সরকার
দেশের কৃষি খাতে ব্যবহারের জন্য রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে পৃথক ৫টি চুক্তির আওতায় এক লাখ মেট্রিক টন বিভিন্ন ধরনের সার ও আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে সার উৎপাদনে ব্যবহারের জন্য ৪০ হাজার মেট্রিক টন ফসফরিক এসিড আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এতে মোট ব্যয় হবে ৮৮৮ কোটি ১৯ লাখ ৯৩ হাজার কোটি টাকা।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিটির সভায় প্রস্তাব ২টিতে অনুমোদন দেওয়া হয়।
সভা সূত্রে জানা গেছে, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় সৌদি আরব থেকে দ্বিতীয় লটে ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি (ডাই এ্যামোনিয়াম ফসফেট) সার আমদানির প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি।
সৌদি আরব থেকে ডিএপি সার আমদানি করা হবে। এতে আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যে মোট ব্যয় হবে ২ কোটি ৪৪ লাখ ৪০ হাজার মার্কিন ডলার সমপরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় ২৯৮ কোটি ১৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা। প্রতি মেট্রিক টন ডিএপি সারের দাম পড়বে ৬১১ মার্কিন ডলার। ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে বিএডিসি থেকে ডিএপি সার আমদানির লক্ষ্যমাত্রা ৮.৭৯ লাখ মেট্রিক টন; এ পর্যন্ত আমদানি হয়েছে ৩.৬৯ লাখ মেট্রিক টন।
সভায় কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো), বাংলাদেশ এর কাছ থেকে ১২তম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ক্রয়ের একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের পরিকল্পনা অনুযায়ী কাফকো, বাংলাদেশ থেকে ৫.৪০ লাখ মে. টন ইউরিয়া সার ক্রয়ের সংশোধিত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে ১২তম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ক্রয়ের জন্য প্রাইস অফার পাঠানোর অনুরোধ করা হলে কাফকো, বাংলাদেশ প্রাইস অফার পাঠায়। কাফকোর সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী সারের মূল্য নির্ধারণ করে ১২তম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার প্রতি মেট্রিক টন ৩৮৯.৭৫ মার্কিন ডলার হিসেবে মোট ব্যয় হবে ১ কোটি ১৬ লাখ ৯২ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার সমপরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৪২ কোটি ৬৪ লাখ ৮৫ হাজার টাকা।
সূত্র জানায়, সৌদি আরব থেকে ১৬তম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার আমদানির অনুমোদন দিয়েছে ক্রয় কমিটি। প্রতি মেট্রিক টন ৩৯৫.১৬ মার্কিন ডলার হিসাবে মোট ব্যয় হবে ১ কোটি ১৮ লাখ ৫৪ হাজার ৮০০ মার্কিন ডলার সমপরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৪৪ কোটি ৬২ লাখ ৮৫ হাজার ৬০০ টাকা।
এছাড়া, সভায় চট্রগ্রামের ডিএপিএফসিএল-এর জন্য ২০ হাজার মেট্রিক টন ফসফরিক এসিড আমদানির একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। ডিএপি সার উৎপাদনের প্রধান কাঁচামাল ফসফরিক এসিড বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান মেসার্স সান ইন্টারন্যাশনাল এফজেডই, ইউএই এই ২০ হাজার মেট্রিক টন ফসফরিক এসিড সরবরাহ করবে। প্রতি মেট্রিক টন ফসফরিক এসিডের দাম ৬৩৩.৪২ মার্কিন ডলার হিসাবে বাংলাদেশি মুদ্রায় মোট ব্যয় হবে ১৫২ কোটি ২ লাখ ৮ হাজার টাকা।
সূত্র জানায়, চট্টগ্রামের ডিএপিএফসিএল’র জন্য ২০ হাজার মেট্রিক টন ফসফরিক এসিড আমদানির অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এর জন্য আন্তর্জাতিক উম্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে মাত্র ১টি দরপত্র জমা পড়ে। প্রস্তাবটি কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসি থেকে সুপারিশকৃত রেসপনসিভ একমাত্র দরদাতা প্রতিষ্ঠান মেসার্স সান ইন্টারন্যাশনাল এফজেডই, ইউএই এই সার সরবরাহ করবে। এতে ব্যয় হবে ১৫০ কোটি ৭৩ লাখ ৩৪ হাজার ৪০০ টাকা।
ঢাকা/হাসনাত/ইভা