রাতে পা ব্যথা হওয়ার কারণ এবং সমাধান
Published: 7th, February 2025 GMT
অনেক মানুষ রাতে ঘুমানোর আগে পায়ে ব্যথার সমস্যায় ভোগেন। এটি দৈনন্দিন জীবনের কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে এবং আরামের ঘুম পেতে সমস্যা সৃষ্টি করে। পায়ে ব্যথার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। নিচে এ সমস্যার সম্ভাব্য কারণ ও সমাধান নিয়ে আলোচনা করা হলো–
পায়ে ব্যথার কারণ
১. পেশি ক্লান্তি বা অতিরিক্ত ব্যবহার
সারাদিন হাঁটা, দাঁড়ানো বা ভারী কাজ করার ফলে পায়ের পেশি ক্লান্ত হয়ে যেতে পারে, যা ব্যথার কারণ হতে পারে।
২.
ম্যাগনেসিয়াম বা ক্যালসিয়ামের ঘাটতি
শরীরে মিনারেলের ঘাটতির কারণে পায়ের পেশি দুর্বল হয়ে ব্যথা বা ক্র্যাম্প হতে পারে।
৩. সার্কুলেশন সমস্যা
পায়ে রক্তপ্রবাহ ঠিকমতো না হলে ব্যথা অনুভূত হতে পারে। বিশেষ করে যাদের ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপ আছে, তাদের ক্ষেত্রে এটি বেশি দেখা যায়।
৪. নিউরোপ্যাথি
নার্ভের সমস্যার কারণে পায়ে ব্যথা বা ঝিঁঝিঁ ভাব হতে পারে।
৫. আর্থ্রাইটিস বা জয়েন্টের সমস্যা
সন্ধিতে প্রদাহ বা ক্ষয়জনিত কারণে রাতে ব্যথা বেড়ে যেতে পারে।
৬. প্ল্যান্টার ফ্যাসাইটিস
পায়ের গোড়ালিতে প্রদাহ থাকলে রাতে ব্যথা বাড়তে পারে।
৭. স্ট্রেস বা মানসিক চাপ
অতিরিক্ত মানসিক চাপ পেশির টান বা ব্যথার কারণ হতে পারে।
পায়ের ব্যথা কমাতে ঘরোয়া কিছু সমাধান অনুসরণ করতে পারেন। যেমন–
পায়ে গরম পানির সেঁক দিন
ঘুমানোর আগে গরম পানির সেঁক দিলে রক্তপ্রবাহ বাড়ে এবং পেশির ক্লান্তি দূর হয়।
স্ট্রেচিং ব্যায়াম করুন
পায়ের পেশি আরামদায়ক রাখতে হালকা স্ট্রেচিং করতে পারেন।
সুষম খাদ্য গ্রহণ করুন
প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ভিটামিন ডি-যুক্ত খাবার রাখুন।
ম্যাসাজ করুন
হালকা তেল (যেমন– নারকেল তেল বা অলিভ অয়েল) দিয়ে পায়ে ম্যাসাজ করলে ব্যথা কমে।
পর্যাপ্ত পানি পান করুন
দেহে পানির অভাবে পেশির ক্লান্তি ও ক্র্যাম্প হতে পারে। তাই দৈনিক পর্যাপ্ত পানি পান করুন।
সঠিক জুতা ব্যবহার করুন
আরামদায়ক এবং সঠিক ফিটিং জুতা পরুন, যা পায়ে চাপ কমাবে।
চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
যদি ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে সঠিক কারণ ও চিকিৎসা সম্পর্কে জানুন।
লেখক : মাস্কুলোস্কেলিটাল ডিজঅর্ডারস বিশেষজ্ঞ
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সমস য
এছাড়াও পড়ুন:
৩৬ ঘণ্টার মধ্যে হামলা চালাতে পারে ভারত: পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী
পাকিস্তানের তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার দাবি করেছেন, আগামী ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তানে হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছে ভারত, এমন ‘বিশ্বাসযোগ্য গোয়েন্দা তথ্য’ পাকিস্তানের হাতে আছে। খবর আল জাজিরার।
আজ বুধবার ভোরে একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে আতাউল্লাহ তারার অভিযোগ করে বলেছেন, “ভারত গত সপ্তাহের পহেলগামে হামলাকে ‘মিথ্যা অজুহাত হিসেবে’ ব্যবহার করে পাকিস্তানে সম্ভাব্য আক্রমণ চালানোর চেষ্টা করছে।”
মন্ত্রী তার দাবির সমর্থনে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রদান করেননি এবং ভারত সরকার তাৎক্ষণিকভাবে অভিযোগের বিষয়ে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেনি।
আরো পড়ুন:
‘আমি যাকে বিয়ে করতে যাচ্ছি, সে দেখতে চাকরানীর মতো’
পহেলগাম হামলা: প্রতিশোধ নিতে সামরিক বাহিনীকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিলেন মোদি
তারার ‘এক্স’ পোস্টে বলেছেন, “যেকোনো আগ্রাসনের কঠোর জবাব দেওয়া হবে। এই অঞ্চলে যেকোনো গুরুতর পরিণতির জন্য ভারত সম্পূর্ণরূপে দায়ী থাকবে।”
এর আগে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোহাম্মদ আসিফও রয়টার্সকে বলেছিলেন, পাকিস্তানে ভারতের হামলা ‘আসন্ন’ ইসলামাবাদ অত্যন্ত সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।
আসিফ বলেন, “ইসলামাবাদ উচ্চ সতর্কতায় রয়েছে। তবে, আমাদের অস্তিত্বের প্রতি সরাাসরি হুমকি সৃষ্টি হলে আমরা পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করব।”
গত ২২ এপ্রিল ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পহেলগ্রামে পর্যটকদের উপর ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে পাকিস্তান পরোক্ষাভাবে জড়িত থাকার কথা ভারত বলার পর থেকে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে।
দুই দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে ভারত-শাসিত কাশ্মীরে এটি ছিল সবচেয়ে মারাত্মক হামলা। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী হামলাকারীদের কঠোর শাস্তির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার একটি ছায়া সংগঠন হিসেবে ধারণা করা দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) এক বিবৃতিতে এই হামলার দায় স্বীকার করেছে।
কিন্তু ইসলামাবাদ ঘটনার সঙ্গে কোনো ভূমিকা অস্বীকার করেছে এবং নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।
পহেলগ্রামে হামলার ঘটনার পর, প্রতিবেশী দেশ দুটি একে অপরের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, যার মধ্যে ভিসা বাতিল এবং ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলোর জন্য পাকিস্তানি আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়া অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
ভারত সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত ঘোষণা করেছে।
এই পদক্ষেপের ফলে পাকিস্তানে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে এবং পাকিস্তান সরকার জানিয়েছে, তারা নয়াদিল্লির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ভারত ও পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের ৭৪০ কিলোমিটার (৪৬০ মাইল) বাস্তব সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) বরাবর গত কয়েকদিন ধরে গুলি বিনিময়ের ঘটনাও ঘটছে। উত্তেজনা কমানোর জন্য দুই পক্ষকে আন্তর্জাতিকভাবে আহ্বান জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দুই দেশকে একটি ‘দায়িত্বশীল সমাধান’ এর দিকে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর একটি বিবৃতি উদ্ধৃত করে সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা উভয় পক্ষের সাথে যোগাযোগ করছি এবং ... তাদের পরিস্থিতি আরও খারাপ না করার জন্য বলছি।”
মুখপাত্র আরো বলেন, “রুবিও মঙ্গলবার বা বুধবার ভারত ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সাথে কথা বলবেন এবং অন্যান্য পররাষ্ট্রমন্ত্রীদেরও একই কথা বলতে উৎসাহিত করবেন।”
জাতিসংঘ বলেছে, মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ এবং ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রহ্মণ্যম জয়শঙ্করের সাথে কথা বলেছেন এবং ‘এমন সংঘর্ষ এড়াতে প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছেন যার পরিণতি দুঃখজনক হতে পারে’।
ঢাকা/ফিরোজ