আজকাল বিয়েতে বর-কনেই উল্টো উপহার দিচ্ছেন, কী থাকতে পারে উপহারের ব্যাগে
Published: 7th, February 2025 GMT
ছবি: সংগৃহীত
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
প্রত্যন্ত গ্রামে ক্লিনিক খুলে ‘এমবিবিএস ডাক্তার’ পরিচয়ে চিকিৎসা, এক বছরের কারাদণ্ড
বরিশালের উজিরপুর উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামে ক্লিনিক খুলে এমবিবিএস ডিগ্রিধারী চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে ১০ বছর ধরে চিকিৎসা দিয়ে আসছিলেন মো. রেজাউল করিম নামের এক ব্যক্তি। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আজ মঙ্গলবার দুপুরে ওই ক্লিনিকে অভিযান চালিয়ে তাঁকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। উজিরপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাইনুল ইসলাম খান এ দণ্ড দেন।
উজিরপুরের সাতলা ইউনিয়নের পশ্চিম সাতলা গ্রামে ‘মায়ের দোয়া ক্লিনিক অ্যান্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে’ নামের ওই ক্লিনিক এ অভিযান চালানো হয়। সেখানে দীর্ঘদিন ধরে এমবিবিএস ডিগ্রিধারী চিকিৎসক পরিচয়ে সাধারণ মানুষকে চিকিৎসা দিয়ে আসছিলেন রেজাউল করিম। মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাস করার পর চিকিৎসার নামে গ্রামের সহজ-সরল মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিলেন তিনি।
উজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, গত রোববার ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বরিশাল জেলার সহকারী পরিচালক সুমি রানী মিত্র ওই ক্লিনিকে অভিযান চালিয়ে নানা অনিয়ম পাওয়ায় ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেছিলেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, কোনো মেডিকেল ডিগ্রি ছাড়াই রেজাউল ১০ বছরের বেশি সময় ধরে এমবিবিএস চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে রোগনির্ণয়, চিকিৎসা, এমনকি জটিল অস্ত্রোপচার পর্যন্ত করে আসছিলেন। এলাকাটি যোগাযোগবিচ্ছিন্ন হওয়ায় ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের মদদ থাকায় এ নিয়ে কেউ উচ্চবাচ্য করতে পারেননি।
রেজাউল করিম অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি কেবল প্রাথমিক চিকিৎসা দিই। যেগুলো আমার দ্বারা সম্ভব।’
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্র জানায়, অভিযানের সময় রেজাউলের কাছে ‘চার্টার অব অল ইন্ডিয়া কাউন্সিল অব ইন্ডো অ্যালোপ্যাথি অ্যান্ড কমপ্লিমেন্টারি মেডিসিন’ নামে একটি ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসক সনদ পাওয়া যায়। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, এ নামে কোনো স্বীকৃত চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান ভারতে নেই। অভিযানে ক্লিনিকে কোনো রোগীর তথ্য রেজিস্টারে সংরক্ষণ করার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এমনকি চিকিৎসার ব্যবস্থাপত্র বা রোগনির্ণয়ের জন্য রোগীদের কাছ থেকে অর্থ নেওয়ার প্রমাণপত্র (রসিদ) পাওয়া যায়নি।
উজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শওকত আলী প্রথম আলোকে বলেন, রেজাউল করিম আসলে কোনো চিকিৎসক নন। তিনি ভারতের যে মেডিকেল কলেজের সনদ দেখিয়েছেন, তদন্তে তাঁরা ওই নামে কোনো মেডিকেল কলেজের অস্তিত্ব পাননি। তাঁর ব্যাপারে তিনি দুবার অভিযোগ পেয়ে তদন্ত করেছেন এবং ভুয়া চিকিৎসক মর্মে প্রতিবেদনও দিয়েছিলাম। রাজনৈতিক প্রভাবশালী একটি মহলকে ম্যানেজ করে চলায় তাঁর বিষয়ে ব্যবস্থা নেওযা যায়নি। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) রেজিস্ট্রেশন ছাড়া কেউ নিজেকে চিকিৎসক লিখতে পারেন না এবং কোনো রোগীকে চিকিৎসা দিতে পারেন না, এটা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাইনুল ইসলাম খান বলেন, তিনি যে সনদ দেখিয়েছেন, তা যাচাই করে দেখা গেছে, সেটির কোনো বৈধতা নেই। যেহেতু তাঁর এমবিবিএস ডিগ্রি নেই, তাই তিনি ভুয়া চিকিৎসক। আইনানুযায়ী তাঁকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুস সালাম বলেন, দণ্ডপ্রাপ্ত রেজাউল করিমকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।