আমি আগেই লিখেছি আংটি পরাতে এসে আশরাফের সাথে আমার কাবিন পড়ানো হয়। কাবিনের চার মাস পরে আমার আয়োজন করে বিয়ে হয়।
কাবিনের কয়েক মাস আগে একটা ঘটনা ঘটে। আমরা মীনা বাজার করে একেকজন একেকটা রেস্টুরেন্ট দিয়েছিলাম।
তখন আনন্দ মোহনে পড়া একজন ছেলে যে ভালো গান গাইত এবং অভিনয় করত, সে রেস্টুরেন্টে চটপটি খেতে এসে আমার প্রেমে পড়ে যায়। শর্টকাটে লিখতে গেলে তা-ই হয়েছিল।
অনেক মেয়ে হ্যান্ডসাম সেই ছেলের প্রেমে পড়ত। যথারীতি আমাকে পাত্তা দিতে না দেখে সহজ হিসাবে আমার প্রতি তার আকর্ষণ বেড়ে যায়। সে আমার গতিবিধি লক্ষ করতে করতে একদিন আমাদের বাসায় চলে আসে। আমাকে নিজের ভালো লাগার কথা জানালে, আমি স্পষ্ট জানিয়ে দিই, আমি অন্য একজনকে ভালোবাসি, জলদিই আমাদের বিয়ে হবে। ছেলেটা প্রথম একটু ধাক্কা খায়, এরপর নিজেকে সামলে বলে, আমি আসলে আনন্দ মোহন কলেজের নবীন বরণ উৎসবের জন্য আপনার কাছ থেকে একটা স্ক্রিপ্ট চাইতে এসেছি। আমি প্রোগ্রামের সবকিছু আপনাকে দেব, প্লিজ আপনি একটা সুন্দর স্ক্রিপ্ট তৈরি করে দিলে খুব হেল্প হবে আমার।
আমি বলি, আমি যে সাহিত্য করি, আপনি কীভাবে জানেন?
সে তখন জানায় মীনা বাজারের আগেও দু’তিনটা সাহিত্য অনুষ্ঠানে আমাকে দেখেছে, কিন্তু সামনে আসেনি।
আমি যত তাকে এড়াতে চাই, তত তার অনুরোধ তীব্র হতে থাকে। একটা পর্যায়ে তাকে এড়ানোর জন্য আমি রাজি হয়ে যাই।
এর মধ্যে আমি নানা দিকে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। এ ধরনের কাজে আমার আগ্রহ নেই বলে আর এগোয় না কাজটা। এর মধ্যে এই স্ক্রিপ্টের জন্য দু’দিন এসে ঘুরে যাওয়ার মুখে বলে, এতটা অহংকার ঠিক না, কাউকে কথা দিলেও সেটার গুরুত্ব যখন থাকে না! জীবনে কথা দিয়ে মোটামুটি ভালো কিছু বিপদে পড়েছিলাম, এর মধ্যে এটা উল্লেখযোগ্য।
ছেলেটার কথা, সৌন্দর্য আমাকে যে টানেনি, তা নয়। কিন্তু এটা একটা তাৎক্ষণিক বিষয়। আমি তো ঢাকায় আশরাফ আর আমার সংসার করার জন্য ততদিনে নিজেকে গুছিয়ে নিয়েছি।
ছেলেটার শহরে বিশাল বাড়ি। দেখা, শিল্পগুণ সব মিলিয়ে নিজের প্রতি গভীর আস্থায় সে ভেবেছিল, আমি বিয়ের কথা তাকে এড়াতে বলেছি। মিন করিনি। এর মধ্যেই আমার কাবিন হয়ে যায়। সেই ছেলে নাকি আমার কাবিনের পরদিন কার কাছে শুনে আমার বান্ধবী রুবীর বাসায় এসে খুব কেঁদেছিল। আমার মন খারাপ হয়ে যায়। এইসব কথাই আমি চিঠিতে, সামনাসামনি আশরাফকে শেয়ার করতাম।
ছেলেটা নিজেকে সামলে এক মাস পরে আসে। আমি স্ক্রিপ্ট তৈরি রেখেছিলাম। ভেবেছিলাম, রুবীর কাছে দিয়ে রাখব। যা হোক, সে স্ক্রিপ্ট নিয়ে চুপচাপ চলে যায়। আমার দিকে ঠিকঠাক তাকায় না পর্যন্ত। এর মধ্যে একজন আমাকে জানায়, আমাকে আনন্দ মোহন কলেজের বাংলার টিচার একবার যেতে বলেছেন। আমি যাই। দেখি সেখানে ছেলেটা দাঁড়িয়ে রয়েছে। সপ্তাহ পরে অনুষ্ঠান। টিচার বলেন, আমি নানা জায়গায় তোমাকে ছড়া, গল্প পড়তে শুনেছি, তোমার অসাধারণ স্ক্রিপ্ট উপস্থাপন করার মতো স্টুডেন্ট পাওয়া মুশকিল, আমি খুব খুশি হব, তুমি যদি উপস্থাপনা কর।
আমি যত এড়াতে চাই, ততই স্যার আমাকে নানাভাবে বোঝাতে থাকেন। পরে মনে হলো, এক-দুই মাস পরে তো ময়মনসিংহ ছেড়ে চলেই যাব, করে যাই না হয় অভিজ্ঞতার বাইরের একটা কাজ।
পুরো অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিল সেই ছেলে। আমি আশরাফকে উস্কাতে কেবলই ছেলেটার রূপ, অভিনয়, গানের প্রশংসা করতাম। আশরাফ কেমন যেন একটা প্রতিযোগিতার মধ্যে পড়ে গিয়ে নার্ভাস হয়ে যেত। আমি কল্পনাও করিনি, এইসবের জের অনেক দূর গিয়ে ঠেকবে।
আশরাফ যথারীতি ছেলেটাকে নিয়ে জেলাস ছিল, বলেছিল যথাসম্ভব এড়িয়ে চল, কিন্তু আমার কেবলই মনে হচ্ছিল, আমি ভুল কিছু করছি না।
তখন চিঠির যুগ।
আমি আশরাফের একটা চিঠি কীভাবে যেন মিস করি, যেখানে লেখা ছিল, সে আগের মতোই সারাদিনের জন্য ময়মনসিংহ আসছে।
যেদিন আসার কথা লিখেছিল, সেদিনই আমার আনন্দ মোহনের অনুষ্ঠান। আশরাফ পাশের বাসায় ফোন করে আমাকে ডেকেছিল, ওরা সব সময় ডেকে দেয়, সেবার ওদের বাড়িতে কেউ ছিল না বলে তারা আমাকে জানিয়ে দেবে বলে তাকে আশ্বস্ত করে। তারাও হঠাৎ একটা বিপাকে পড়ে ভুলে যায়। আমি যখন মঞ্চে অনুষ্ঠান করছি, আশরাফ আমাদের বাসায় আসে। বাসায় অত বিস্তারিত জানিয়ে যাইনি। সাহিত্যের অনুষ্ঠানে যাচ্ছি, আমাদের বাসায় এটুকু জানানোই যথেষ্ট ছিল। টেলিফোনহীন, মোবাইলহীন অবস্থায় আশরাফ বাসায় বসে আমার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। যখন বিকেল গড়াচ্ছে, আমার ছোট ভাই জুয়েল আশরাফকে বলে, একটা সুন্দর ছেলে দু’দিন এসেছিল, তারা কীসব কাগজ হাতে নিয়ে কথা বলেছে। আশরাফ তার নাম বললে জুয়েল বলে, হ্যাঁ, উনিই। আশরাফ আর কোনো কথা না বলে সবার অনুরোধ উপেক্ষা করে বেরিয়ে যায়। আমি সন্ধ্যায় ফিরি।
আমাদের বাড়ির সবাই তখন আমার ওপর মহা ক্ষিপ্ত! বাসায় তোলপাড় শুরু হয়। তুই কি ওই ছেলের প্রতি দুর্বল হয়ে পড়েছিস? তুই কী এই বিয়ে ভেঙে দিতে চাস? এরা এসব কী বলছে? মাথা খারাপ হয়ে গেছে এদের?
আমি অস্থির হয়ে বড় ভাই শিপনকে বলি, আমাকে জলদি ঢাকায় নিয়ে চলো। সারারাত জার্নি করে শংকরে আশরাফের দোতলা সুন্দর ফ্ল্যাটে এসে দেখি, ঘড়িতে সকাল এগারোটা বেজে গেছে। নিশ্চিত আশরাফ অফিসে চলে গেছে ভেবেও দরজার সামনে দাঁড়াই। ভেতর থেকে বন্ধ। আশ্চর্য!
সবচেয়ে তাজ্জব আমরা নক করে করে দরজা ভেঙে ফেলার উপক্রম করছি, দরজা খোলার নাম নেই। ভয়ে সারা শরীরে যেন অজগর পেঁচিয়ে ধরে। প্রচণ্ড শব্দে দরজা খুলে যায়। সামনে একেবারে অচেনা আশরাফ দাঁড়ানো। চোখ ডুমুরের মতো লাল, সারা মুখ ফুলে আছে, হাতে রংবাজের মতো হুইস্কির বোতল, সে টলছে। শিপন ভাই অপ্রস্তুত হয়ে বলে আমি একটু ঘুরে আসছি।
আমি তাকে ধাক্কা দিয়ে ভেতরে ঢুকি। আশরাফ আমাকে ঘোলা চোখে দেখে বলে, আপনি কে?
কাণ্ড!
আমি জানি আশরাফের ছোটবেলার বন্ধু মোহাম্মদ সাদিক এখানে থেকেই বিসিএসের পড়াশোনা করছে। বেশ ক’বার দেখা হয়েছে। সে তো সাহিত্যপাড়ায় ঘুরতে পারলে বাঁচে। (পরবর্তীকালে সে একদিকে কবি অন্যদিকে সচিব হয়। আশরাফের এই অবস্থায় সাদিক কোথায়? এ এক অদ্ভুত অবস্থা! সারা ঘরে বোতল ছড়ানো। আশরাফ সারারাত পান করে আমাকে তার প্রেমিকা নাসরীনের গল্প শোনাতে থাকে। যে একটা হ্যান্ডসাম ছেলের সাথে চলে গেছে। তাকে যত বোঝায়, নাসরীন যেতে পারে না, তত ক্ষুব্ধ হয়ে বলে, তুমি জানো না, এর আগে এমন হয়নি, আমার চিঠি পেয়ে, ফোনে খবর পেয়েও সে ওই ছেলের সাথে চলে যাওয়ার জন্য আমার যাওয়ার ব্যাপারে বাসায় কিচ্ছু জানায়নি। এটা আমার একতরফা ভালোবাসা, আমি বুঝতে পারতাম, আরও আরও অনেক কথায় আমি যখন অসহ্য হয়ে উঠেছি, খাবারদাবার নিয়ে সাদিক আসে। আমাকে দেখে সে হতভম্ব, তুই যাস নাই?
কই যাব?
আরে! শালা রাইত থাইকা আমার মাথা খাইয়া ফালাইছে, তুই কার সাথে জানি চইলা গেছস! উফ! বাঁচলাম।
আমি উল্টো ক্ষেপে যাই, তুইও এমন কথা বিশ্বাস করলি?
আশরাফ একটা তিলকে কেমন তাল করে এমন কাণ্ড করছে, সত্যটা যদি শুনিস, সাদিক বলে, তুই ওর সাথে টালবাহানা করিস না? ও আংটি পরাতে গিয়ে কেন কাবিন করল? তুই তো ওকে ভরসাই দিসনি।
এসব কাবিনের আগের কথা। আমি উল্টো চিল্লাই, ভরসা না দিয়ে কোনো বুদ্ধিমান মেয়ে কিন্তু কাবিন করে না।
সন্ধ্যে নাগাদ তাকে বমি করিয়ে মাথায় পানি ঢেলে ধাতস্থ করা হলে, আশরাফের সিনিয়র বন্ধু মাহবুব সাহেব ব্যাপারটাকে সিরিয়াসলি নিয়ে বলেন, তোমার অনুষ্ঠান তো এক মাস পরে, এই এক মাস তুমি এখানেই থাকো। কাবিন তো হয়েই গেছে।
আমি বলি, আমার শ্বশুরবাড়ির মানুষ কী ভাববে? শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার আগেই আমি তাদের ছেলের সাথে সংসার শুরু করেছি?
আশরাফ আমার হাত জোরে চেপে বলে, সে আমি দেখব।
বলি, দু’সপ্তাহ পরে মুমিনুন্নেসায় ইন্টারমিডিয়েট ফার্স্ট ইয়ার পরীক্ষা আমার।
দিতে হবে না। এক বছর গ্যাপ গেলে কিচ্ছু হবে না।
তুমি আমাকে বিশ্বাস কর না?
করি। কিন্তু আমি চাই না, তুমি ওর ছায়ার কাছেও থাকো। ঠিক ভুল যাই বুঝেই হোক, আমি একেবারে শেষ হয়ে যাচ্ছিলাম, ওই ছেলে কোনো না কোনো ছুতো ধরে তোমার পাশে চক্কর খাবে, প্লিজ।
ঠিক আছে। আর বলতে হবে না। অবশ্য আমাকে অ্যাডভেঞ্চারের মজাও পেয়ে বসেছিল। একেবারেই প্রস্তুতিহীন একটা সংসার করব দুজন। যথাসম্ভব গোপনে। সন্ধ্যার পর বেড়াতে বেরোব। পড়াশোনার টেনশন নেই! আমি দেড় মাসের জন্য থেকে যাই।
কারণ সপ্তাহ পরে ময়মনসিংহ থেকে আয়োজন করে সুনামগঞ্জ থেকে শ্বশুরবাড়ির মানুষ আসবে আমাকে নিয়ে যেতে। কিন্তু আমি অলরেডি এখানে সংসার করছি, এটা লিক হয়ে গেলে যথারীতি তারা মহা আপসেট। আমি এত বছর দাম্পত্যের মধ্যে আশরাফের তেমন রূপ আর দেখিনি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আম র ক ব আম দ র ব আশর ফ র ম স পর র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
আলোচনায় রাজি হিজবুল্লাহ
ইসরায়েল দক্ষিণ লেবানন থেকে সেনা প্রত্যাহার করলে এবং আকাশপথে হামলা বন্ধ করলে অস্ত্রসমর্পণের বিষয়ে লেবাননের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনায় রাজি হিজবুল্লাহ। সশস্ত্র সংগঠনটির জ্যেষ্ঠ এক নেতা রয়টার্সকে এ কথা জানিয়েছেন। হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করার ক্রমবর্ধমান চাপের মধ্যে তিনি সংগঠনটির এ অবস্থানের কথা জানান।
মাত্র দুই বছর আগে যখন হিজবুল্লাহ নিজেদের ক্ষমতার চূড়ায় অবস্থান করছিল, তখন সংগঠনটিকে নিরস্ত্র করা নিয়ে আলোচনার সম্ভাবনাই ছিল অকল্পনীয়। কিন্তু ফিলিস্তিনের গাজা যুদ্ধ ঘিরে বিধ্বংসী এক সংঘাতে ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোকে ইসরায়েল রীতিমতো ধসিয়ে দেয়। এতে মধ্যপ্রাচ্যের ক্ষমতার ভারসাম্যে নাটকীয় পরিবর্তন আসে। হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করার এ আলোচনা সেই পরিবর্তনই তুলে ধরছে।
গত জানুয়ারিতে দায়িত্ব নেন যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত লেবাননের প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন। ওই সময় তিনি অস্ত্রের ওপর রাষ্ট্রের একক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার করেন। দ্রুততম সময়ের মধ্যেই হিজবুল্লাহর হাতে থাকা অস্ত্রের বিষয়ে সংগঠনটির সঙ্গে আলোচনার ইচ্ছা পোষণ করেন। লেবাননের তিনটি রাজনৈতিক সূত্র এমনটি জানিয়েছে।
হিজবুল্লাহ ২০২৪ সালের লড়াইয়ে ব্যাপকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে। ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় সংগঠনটির শীর্ষ নেতারা এবং হাজারো যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। তাঁদের রকেটের মজুতের বেশির ভাগই ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। সিরিয়ায় প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতন হলে আরও চাপে পড়ে হিজবুল্লাহ। ইরান থেকে অস্ত্র সরবরাহের পথ বন্ধ হয়ে যায়।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে হিজবুল্লাহর ওই নেতা বলেন, জাতীয় প্রতিরক্ষা কৌশলের প্রেক্ষাপটে অস্ত্রের বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় প্রস্তুত সংগঠনটি। তবে বিষয়টি নির্ভর করছে দক্ষিণ লেবাননের পাঁচটি পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থান নেওয়া ইসরায়েলি সেনাদের প্রত্যাহারের ওপর।
হিজবুল্লাহর জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, ‘পাঁচটি অবস্থান থেকে ইসরায়েল সেনা প্রত্যাহার করলে এবং লেবাননের জনগণের বিরুদ্ধে আগ্রাসন বন্ধ করলে নিজেদের অস্ত্রের বিষয়ে আলোচনায় প্রস্তুত হিজবুল্লাহ।’
অস্ত্রের বিষয়ে আলোচনা নিয়ে হিজবুল্লাহর অবস্থান এর আগে প্রকাশ্যে আসেনি। রাজনৈতিক স্পর্শকাতর বিষয় হওয়ায় নাম প্রকাশ করতে চায়নি সূত্রগুলো।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি হিজবুল্লাহর গণমাধ্যম দপ্তর। প্রেসিডেন্টের দপ্তরও এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
যুদ্ধের সময় দক্ষিণ লেবাননে স্থল অভিযান চালিয়েছিল ইসরায়েল। যুদ্ধবিরতি চুক্তির অধীনে সেখান থেকে বেশির ভাগ সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। তবে ফেব্রুয়ারিতে দেশটি জানায়, পাঁচটি পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থান নেওয়া সেনারা সেখানে অবস্থান করবেন।
নভেম্বরে হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি সত্ত্বেও হিজবুল্লাহর অবস্থানে হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। ঠিক একই সময়ে হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করার দাবি জানিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। এ অবস্থায় চাপে পড়েছে সংগঠনটি। হিজবুল্লাহকে মধ্যপ্রাচ্যে ইরান-সমর্থিত সবচেয়ে শক্তিশালী আধা সামরিক গোষ্ঠী মনে করা হয়।
গত সোমবার রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান সংঘাত এড়াতে অস্ত্রসমর্পণের বিষয়ে প্রস্তুত আছে বলে প্রথমবারের মতো জানিয়েছে ইরান-সমর্থিত কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠী।
মার্কিন ড্রোন ভূপাতিত করল হুতিরাআল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, ইয়েমেনের উত্তরাঞ্চলীয় আল-জাওফ প্রদেশে যুক্তরাষ্ট্রের একটি এমকিউ-৯ রিপার ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি করেছে হুতিরা। হুতি-সমর্থিত আল মাসিরাহ টিভি চ্যানেল এ কথা জানিয়েছে। ১০ দিনের মধ্যে এ ধরনের তিনটি ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে বলে খবরে বলা হয়।
অত্যাধুনিক এই ড্রোন ১৫ হাজার ২৪০ মিটার উঁচুতে ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত উড়তে পারে। ইয়েমেনে বছরের পর বছর যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এই ড্রোন ব্যবহার করে আসছে।
গোয়েন্দা নজরদারির পাশাপাশি রিপার ড্রোন হামলা চালাতেও সক্ষম।