‘বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম’ ‘বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব’ আর নেই
Published: 7th, February 2025 GMT
যমুনা সেতুর দুই প্রান্তের স্টেশনের নাম পরিবর্তন করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এখন থেকে আগের নামে ওয়েবসাইট বা মোবাইল অ্যাপে স্টেশন দুুটি আর খুঁজে পাওয়া যাবে না।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ রেলওয়ের অনলাইনে টিকিটি বিক্রির সহযোগী প্রতিষ্ঠান সহজ-সিনেসিস-ভিনসেন-জেভি এ তথ্য জানায়।
প্রতিষ্ঠানটি বলছে, স্টেশনগুলোর নতুন নাম ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে অনলাইনে প্রদর্শিত হচ্ছে।
ওয়েবসাইটে প্রবেশ করলেই একটি ছোট নোটিশ দেখা যাচ্ছে। সেখানে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ রেলওয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পশ্চিমাঞ্চলের দুইটি স্টেশনের নাম (বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম ও বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব) পরিবর্তন হয়েছে। বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিমের পরিবর্তে সায়দাবাদ এবং বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্বের পরিবর্তে ইব্রাহিমাবাদ দিয়ে ওয়েবসাইট ও রেলসেবা অ্যাপে টিকিট কেনার জন্য অনুসন্ধান করতে বলা হয়েছে।
ঢাকা/এনএইচ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
২৫ বছর পর বদলা নিয়ে চ্যাম্পিয়ন ভারত
জাদেজার ব্যাটের ছোঁয়ায় বল সীমানা পার হতেই হুড়মুড় করে মাঠে ঢুকে পড়েন ভারতীয় ক্রিকেটাররা। ক্রিজে থাকা লোকেশ রাহুল ও রবীন্দ্র জাদেজার সঙ্গে উদযাপনে মেতে ওঠেন তারা। এর পরই স্মারক হিসেবে স্টাম্প সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। এভাবে সংগৃহীত দুটি স্টাম্প চলে যায় রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলির হাতে। দুবাই স্টেডিয়ামের সবুজ জমিনে দু’জন স্টাম্প দিয়ে ডান্ডিয়া খেলা শুরু করেন। দুই কিংবদন্তির এমন অভিনব উদযাপন ভারতের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ের পোস্টার হয়ে রইল।
ভারতের এটি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির তৃতীয় শিরোপা। অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়ে ২৫ বছর আগের বদলার পাশাপাশি কিউইদের বিপক্ষে আইসিসি ইভেন্টের ফাইনালে পরাজিত হওয়ার ইতিহাসও পাল্টে দিয়েছে ভারত। দুবাই স্টেডিয়ামে নিউজিল্যান্ডের ২৫১ রান ১ ওভার হাতে রেখে ৬ উইকেটে টপকে যায় তারা। রোহিতের নেতৃত্বে ৯ মাসের ব্যবধানে এটি ভারতের দ্বিতীয় আইসিসি ট্রফি। ৭৬ রানের দারুণ ইনিংস খেলে সামনে থেকে শিরোপা জয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন অধিনায়ক রোহিত; ইনিংসটির জন্য ফাইনালসেরাও হয়েছেন তিনি। নিউজিল্যান্ডের রাচিন রবীন্দ্র আসরের সর্বোচ্চ ২৬৩ রান ও ৩ উইকেটের জন্য টুর্নামেন্টসেরা হয়েছেন।
কিউইদের ২৫১ রান তাড়া করতে নেমে দুরন্ত গতিতে শুরু করে ভারত। জেমিসনকে ছয় মেরে শুরুটা করেন রোহিত শর্মা। ৪১ বলে তিনি পৌঁছে যান হাফ সেঞ্চুরিতে। অধিনায়কের দাপটে ১৭ ওভারেই ১০০ রান তুলে নেয় ভারত। রোহিত-শুভমান ওপেনিং জুটির ব্যাটিং দেখে মনে হচ্ছিল, হেসে-খেলে ফাইনাল জিততে যাচ্ছে ভারত। এর মধ্যে শুভমানের একটি ক্যাচ ফেলেন ড্যারেল মিচেল। শেষ পর্যন্ত গ্লেন ফিলিপস বাজপাখির মতো উড়ে গিয়ে ক্যাচ ধরে ফেরান শুভমানকে। পরের ওভারেই এলবি হয়ে যান দুরন্ত ছন্দে থাকা বিরাট কোহলি। সেটা ছিল কিউই স্পিনার মিচেল ব্রেসওয়েলের প্রথম ডেলিভারি। এর পর এগিয়ে এসে রাচিন রবীন্দ্রকে খেলতে গিয়ে স্টাম্পড হয়ে যান ৮৩ বলে ৭৬ রান করা রোহিত। মাত্র ১৭ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে আচমকা চাপে পড়ে যায় ভারত। তবে চতুর্থ উইকেটে শ্রেয়াস আয়ার ও অক্ষর প্যাটেল ৬১ রান যোগ করে দলকে ভালো অবস্থানে পৌঁছে দেন। এর মধ্যে ৪৪ রানের সময় শ্রেয়াসের লোপ্পা ক্যাচ ফেলেন জেমিসন। নতুন জীবন অবশ্য কাজে লাগাতে পারেননি তিনি। মাত্র ৪ রান যোগ করে স্যান্টনারের বলে রাচিনের হাতে ক্যাচ দিয়ে আসেন শ্রেয়াস। এর পর অক্ষর প্যাটেল ক্যাচ দিলে আবার কিছুটা চাপে পড়ে যায় ভারত। তখনও উইকেটে ছিলেন লোকেশ রাহুল ও হার্দিক পান্ডিয়া। ঠান্ডা মাথায় ব্যাট চালিয়ে দলকে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে যান তারা। জয় থেকে ১১ রান দূরে থাকা অবস্থায় জেমিসনের হাতে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে আসেন পান্ডিয়া। জাদেজাকে নিয়ে ফিনিশিং দেন রাহুল।
টসে জিতে নিউজিল্যান্ড যেভাবে ব্যাটিং শুরু করেছিল, তাতে মোট রান কমই হয়েছে বলা যায়। উইলি ইয়াং ও রাচিন রবীন্দ্র ৭.৫ ওভারে ৫৭ রান তুলে নিয়েছিলেন। তবে পরবর্তী পাঁচ ওভারের মধ্যে ইয়াং, রাচিন ও উইলিয়ামসনকে তুলে নিয়ে দারুণভাবে খেলায় ফিরে আসে ভারত। ইয়াংকে এলবির ফাঁদে ফেলে ভারতের মুখে প্রথম হাসি ফোটান তুরুপের তাস হয়ে ওঠা বরুণ চক্রবর্তী। এমনিতে রোহিতের প্রধান স্পিন অস্ত্র হলেও গত কয়েক দিন ধরে বরুণের আলোয় কিছুটা ঢাকা পড়ে গিয়েছিলেন কুলদীপ যাদব। সে ক্ষোভেই কিনা পর পর দুই ওভারে রাচিন ও উইলিয়ামসনের উইকেট তুলে নিয়ে কুলদীপ বুঝিয়ে দিলেন তাঁর ধার। ১৮ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় কিউইরা। টম লাথামও বেশিক্ষণ উইকেটে টিকতে পারেননি, জাদেজার বলে এলবি হয়ে যান। তবে পঞ্চম উইকেটে ড্যারেল মিচেল ও গ্লেন ফিলিপস ৫৭ রান যোগ করে পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দেন। এর পর ষষ্ঠ উইকেট ড্যারেল মিচেল ও মিচেল ব্রেসওয়েল ৪৬ রান যোগ করেন। পরিস্থিতি সামাল দিতেই ড্যারেল মিচেল বেশ মন্থর ব্যাটিং করেন। ৬৩ রান করতে তিনি ব্যয় করে ফেলেন ১০১ বল। এর মধ্যে ৩৮ রানের সময় রোহিত শর্মার হাতে একটি জীবনও পেয়েছেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ব্রেসওয়েলের হাফ সেঞ্চুরিতে আড়াইশ পার করে কিউইরা। ৪০ বলে ৫৩ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। তাঁর জন্যই শেষ ১০ ওভারে ৭৯ রান তোলে কিউইরা।
কিউইদের ২৫১ রানে আটকে দিতে প্রত্যাশামতোই মূল ভূমিকা পালন করেন স্পিনাররা। ভারতের চার স্পিনার ৩৮ ওভারে ১৪৪ রান ব্যয় করে ৫ উইকেট তুলে নেন। আর দুই পেসার ১২ ওভারে ১০৪ রানে উইকেট তোলেন মাত্র একটি। অক্ষর প্যাটেলের দুই ওভার বাকি রাখায় হয়তো আক্ষেপে পুড়বেন ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা। আর নিউজিল্যান্ড আক্ষেপ করবে দলের সেরা বোলার ম্যাট হেনরিকে না পাওয়ায়। সেমিতে পাওয়া কাঁধের চোট থেকে সেরে উঠতে পারেননি ডানহাতি এ পেসার।