কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগ অফিসে ‘পাবলিক টয়লেট’ করার ঘোষণা
Published: 7th, February 2025 GMT
গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের দিন বিক্ষুব্ধ ছাত্র জনতা কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগ অফিসে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও আসবাবপত্র লুট করে নেয়। এরপর কয়েক দফায় ৯তলা বিশিষ্ট ওই ভবনের মালামাল লুট চলে। বর্তমানে ওই ভবনের কাঠামো ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। এবার সেই ভবনকে পাবলিক টয়লেট করার ঘোষণা দিয়েছেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুমিল্লা মহানগর শাখার নেতাকর্মীরা।
বৃহস্পতিবার রাতে ভবনের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন শেষে এমন ঘোষণা দেন সংগঠনের মহানগর শাখার আহ্বায়ক মো.
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত ৮টার দিকে সংগঠনের কর্মীরা মহানগর আওয়ামী লীগের পাশের ভবনে জেলা আওয়ামী লীগের অফিসে স্থাপন করা নৌকার প্রতিকৃতি ভেঙে ফেলে। পরে সেখানে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের নেতারা।
মহানগর শাখার আহ্বায়ক মো. আবু রায়হান বক্তব্যে বলেন, ‘অফিসের সামনের খালি স্থানটি সিএনজি অটোরিকশা স্ট্যান্ড এবং মহানগর আওয়ামী লীগের অফিসটি পাবলিক টয়লেট হিসেবে আমরা তৈরি করে দিব।’
সমাবেশ শেষে আবু রায়হান সমকালকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কোনো নাম নিশানা কুমিল্লার মানুষ আর দেখতে চায় না। তাই এ সংগঠনের অফিস আর কুমিল্লায় থাকবে না। জনগণের জন্য এ অফিস ‘পাবলিক টয়লেট’ হিসেবে আমরা আগামী সপ্তাহে তৈরি করে দিব।’
এ সময় সংগঠনের সদস্য সচিব রাশেদুল হাসানসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশ শেষ হওয়ার পর অফিসের সামনের খালি স্থানে সিএনজি স্ট্যান্ড হিসেবে ব্যবহার করতে সিএনজি অটোরিকশা আনতে দেখা যায়।
আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ২১ অক্টোবর গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে নতুন মহানগর আওয়ামী লীগের অফিস হিসেবে এ ভবনের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
কুমিল্লা সদর আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার ও তার মেয়ে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের অপসারিত মেয়র ডা. তাহসিন বাহার সূচনা ভারতে অবস্থান করছেন। এছাড়াও অধিকাংশ নেতাকর্মীও আত্মগোপনে থাকায় এ বিষয়ে দলের দায়িত্বশীল কারও বক্তব্য জানা যায়নি।
এর আগে বুধবার রাত থেকেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা নগরীতে আওয়ামী লীগের দলীয় অফিস ও বাহারের বাড়িতে হামলা ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেয়। বৃহস্পতিবার সংগঠনটির ব্যানারে বিক্ষুব্ধ ছাত্র জনতা বিকেলে কুমিল্লার আদালত প্রাঙ্গণ এবং নগর উদ্যান গেটে স্থাপিত শেখ মুজিবুর রহমানের দুটি ম্যুরাল বুলডোজার দিয়ে ভেঙে গুড়িয়ে দেয়। পরে কুমিল্লা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান লিটন ও সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়ার কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। এ সময় আদালত চত্বরে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যাকারী ইন্ধনদাতা ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর’ আখ্যা দিয়ে ২০ জন আইনজীবীকে আদালত থেকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়ে তাদের নাম ও ছবি সম্বলিত ব্যানার আইনজীবী সমিতির সামনে টানিয়ে দেওয়া হয়।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আওয় ম ল গ ন ত কর ম স গঠন র র অফ স কর ম র র স মন স এনজ ভবন র
এছাড়াও পড়ুন:
দনিয়া কলেজের শিক্ষার্থী খুন: ৬ জন রিমান্ডে
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে দনিয়া কলেজের ছাত্র মিনহাজ হত্যা মামলায় ছয় জনের বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এ মামলার এক আসামি শিশু হওয়ায় তার রিমান্ড শুনানি শিশু আদালতে হবে।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জি এম ফারহান ইশতিয়াক শুনানি শেষে রিমান্ডের আদেশ দেন।
আসামিরা হলেন—মাহফুজ সরকার, জাহিদুল ভূঁইয়া শাওন, সাব্বির সরকার, আশিক, কাওছার মিয়া, শাহ আলম এবং সোহান মিয়া। তাদের মধ্যে মাহফুজ সরকারের ৫ দিন এবং পাঁচ জনের তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে।
সোহান শিশু হওয়ায় তার রিমান্ড শুনানি শিশু আদালতে হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জি এম ফারহান ইশতিয়াক।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যাত্রাবাড়ী থানার উপ-পরিদর্শক মো. আশরাফুজ্জামান সাত আসামিকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। গত ২ ফেব্রুয়ারি এ আবেদন করা হয়। আদালত শুনানির জন্য ৫ ফেব্রুয়ারি তারিখ ধার্য করেন।
এদিন আসামিদের আদালতে হাজির করা হয়। আসামিপক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শাওনকে শিশু দাবি করে আদালতে ডকুমেন্ট জমা দেন তার আইনজীবী।
বাদীপক্ষে সবুজ খান রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। শুনানি শেষে আদালত রিমান্ডের আদেশ দেন।
গত ৩১ জানুয়ারি পটুয়াখালী সদর থানা এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে জেলা পুলিশের সহযোগিতায় শাহ আলম ছাড়া বাকি ছয় জনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওয়ারী বিভাগের দল। পরদিন ছয় জনকে কারাগারে পাঠানো হয়।
মিনহাজুল যাত্রাবাড়ী থানাধীন শনিরআখড়ার দনিয়া কলেজের স্নাতক চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। গত ২৬ জানুয়ারি দনিয়া কলেজে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মিনহাজের সঙ্গে মাহফুজ ওরফে কিং মাহফুজসহ অন্য আসামিদের বাকবিতণ্ডা হয়। পরে ২৮ জানুয়ারি বিকেলে মিনহাজ ও তার বন্ধু আহাদ দনিয়া কলেজের সামনে গেলে সেখানে মাহফুজসহ অন্য আসামিরা পরিকল্পিতভাবে সুইচ গিয়ার চাকু, চাপাতি, রাম দাসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র দিয়ে মিনহাজকে এলোপাথারি কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। মিনহাজকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় মিনহাজের বড় ভাই আব্দুল্লাহ আল মামুন বাদী হয়ে মাহফুজসহ ৯ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরো ১০-১২ জনকে আসামি করে যাত্রাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ঢাকা/মামুন/রফিক