গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের দিন বিক্ষুব্ধ ছাত্র জনতা কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগ অফিসে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও আসবাবপত্র লুট করে নেয়। এরপর কয়েক দফায় ৯তলা বিশিষ্ট ওই ভবনের মালামাল লুট চলে। বর্তমানে ওই ভবনের কাঠামো ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। এবার সেই ভবনকে পাবলিক টয়লেট করার ঘোষণা দিয়েছেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুমিল্লা মহানগর শাখার নেতাকর্মীরা। 

বৃহস্পতিবার রাতে ভবনের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন শেষে এমন ঘোষণা দেন সংগঠনের মহানগর শাখার আহ্বায়ক মো.

আবু রায়হান। এছাড়াও ওই ভবনের সামনের খালি স্থানটি সিএনজি অটোরিকশা স্ট্যান্ড হিসেবে ঘোষণা দিয়ে রাত থেকেই সেখানে কার্যক্রম শুরু করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত ৮টার দিকে সংগঠনের কর্মীরা মহানগর আওয়ামী লীগের পাশের ভবনে জেলা আওয়ামী লীগের অফিসে স্থাপন করা নৌকার প্রতিকৃতি ভেঙে ফেলে। পরে সেখানে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের নেতারা। 

মহানগর শাখার আহ্বায়ক মো. আবু রায়হান বক্তব্যে বলেন, ‘অফিসের সামনের খালি স্থানটি সিএনজি অটোরিকশা স্ট্যান্ড এবং মহানগর আওয়ামী লীগের অফিসটি পাবলিক টয়লেট হিসেবে আমরা তৈরি করে দিব।’ 

সমাবেশ শেষে আবু রায়হান সমকালকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কোনো নাম নিশানা কুমিল্লার মানুষ আর দেখতে চায় না। তাই এ সংগঠনের অফিস আর কুমিল্লায় থাকবে না। জনগণের জন্য এ অফিস ‘পাবলিক টয়লেট’ হিসেবে আমরা আগামী সপ্তাহে তৈরি করে দিব।’ 

এ সময় সংগঠনের সদস্য সচিব রাশেদুল হাসানসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশ শেষ হওয়ার পর অফিসের সামনের খালি স্থানে সিএনজি স্ট্যান্ড হিসেবে ব্যবহার করতে সিএনজি অটোরিকশা আনতে দেখা যায়। 

আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ২১ অক্টোবর গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে নতুন মহানগর আওয়ামী লীগের অফিস হিসেবে এ ভবনের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

কুমিল্লা সদর আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার ও তার মেয়ে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের অপসারিত মেয়র ডা. তাহসিন বাহার সূচনা ভারতে অবস্থান করছেন। এছাড়াও অধিকাংশ নেতাকর্মীও আত্মগোপনে থাকায় এ বিষয়ে দলের দায়িত্বশীল কারও বক্তব্য জানা যায়নি।

এর আগে বুধবার রাত থেকেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা নগরীতে আওয়ামী লীগের দলীয় অফিস ও বাহারের বাড়িতে হামলা ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেয়। বৃহস্পতিবার সংগঠনটির ব্যানারে বিক্ষুব্ধ ছাত্র জনতা বিকেলে কুমিল্লার আদালত প্রাঙ্গণ এবং নগর উদ্যান গেটে স্থাপিত শেখ মুজিবুর রহমানের দুটি ম্যুরাল বুলডোজার দিয়ে ভেঙে গুড়িয়ে দেয়। পরে কুমিল্লা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান লিটন ও সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়ার কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। এ সময় আদালত চত্বরে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যাকারী ইন্ধনদাতা ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর’ আখ্যা দিয়ে ২০ জন আইনজীবীকে আদালত থেকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়ে তাদের নাম ও ছবি সম্বলিত ব্যানার আইনজীবী সমিতির সামনে টানিয়ে দেওয়া হয়।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আওয় ম ল গ ন ত কর ম স গঠন র র অফ স কর ম র র স মন স এনজ ভবন র

এছাড়াও পড়ুন:

বিএনপিপন্থি আইনজীবীর সুদিন

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে দেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর কিশোরগঞ্জের আদালতের চিত্র পাল্টে গেছে। পিপি, জিপিসহ সব আইন কর্মকর্তার পদ এখন আওয়ামীপন্থি আইনজীবীদের হাত থেকে চলে গেছে বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের হাতে। নতুন নতুন মামলাও পাচ্ছেন  বিএনপির আইনজীবীরা।
জানা গেছে, দেশে প্রতিবার সরকার পরিবর্তনের পর স্বাভাবিক নিয়মেই সরকারি আইন কর্মকর্তাদেরও পরিবর্তন হয়ে থাকে। সাধারণ মানুষের ধারণা, বিএনপির আইনজীবীদের এখন ক্ষমতা বেশি। প্রতিটি আদালতে তাদের কিছু বাড়তি প্রভাব রয়েছে। যে কারণে বিএনপির আইনজীবীদের কাছে মামলা যাচ্ছে বেশি। এমনকি কিছু পুরোনো মামলাও আওয়ামীপন্থি আইনজীবীদের হাত থেকে মক্কেলরা নিয়ে গিয়ে বিএনপির আইনজীবীদের দিচ্ছেন। এমনকি বৈষম্যবিরোধী মিছিলে হামলা মামলায় আসামি হওয়া আওয়ামী পরিবারের ব্যক্তিরাও এখন সহজে জামিনের আশায় যাচ্ছেন বিএনপির আইনজীবীদের কাছে। 
আওয়ামী ও বিএনপি বলয়ের বাইরে থাকা সাধারণ আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আদালতপাড়ায় আওয়ামীপন্থি আইনজীবীদের পাশাপাশি সাধারণ আইনজীবীদেরও দুর্দিন যাচ্ছে। তাদের ভাষ্য, ফৌজদারি মামলার মধ্যে সবচেয়ে স্পর্শকাতর মামলা হচ্ছে হত্যা মামলা। হত্যা মামলায় সাধারণত আসামিপক্ষ মোটা টাকার বিনিময়ে সবসময় জ্যেষ্ঠ ও অভিজ্ঞ আইনজীবীদের  রাখার চেষ্টা করেন। দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে জ্যেষ্ঠ ও অভিজ্ঞ আইনজীবীদের হাত থেকে বেশ কিছু পুরোনো হত্যা মামলা মক্কেলরা নিয়ে গেছেন। এসব মামলায় এখন শুনানি করছেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা। অনেক মামলার আসামিরা এখন আওয়ামী বলয়ের আইনজীবীদের কাছে যেতে ভরসা পাচ্ছেন না। 
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের এক নেতার ভাষ্য, আসামিপক্ষের লোকজনের  ধারণা, আওয়ামী আইনজীবীরা এখন একটা বদনামের মধ্যে আছেন। আদালতে জোর গলায় শুনানি করতে পারেন না। অন্যদিকে বিএনপির আইনজীবীরা সাহস নিয়ে শুনানি করতে পারেন বলে তারা মনে করেন। সে কারণেও তারা বিএনপির আইনজীবীদের কাছে আসেন।
এদিকে জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি ও জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) জালাল উদ্দিন জানান, সরকারি আইন কর্মকর্তাদের পদগুলো মূলত রাজনৈতিক পদ। ফলে সরকার বদলের পর এসব পদে স্বভাবতই বদল ঘটে থাকে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের আসামিদের বিএনপির আইনজীবীরা মামলায় সহায়তা দিচ্ছেন বলে এক ধরনের অভিযোগ উঠেছে। আইন কর্মকর্তারা কখনও আসামিপক্ষে শুনানি করতে পারেন না। তারা সরকার পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন। কিন্তু বিএনপির যারা আইন কর্মকর্তা হননি, তাদের কেউ কেউ পেশাগত কারণে এসব মামলা পরিচালনা করছেন। এটা আইনের দৃষ্টিতে কোনো অন্যায় নয়। কারণ আইনজীবীরা একটি পেশায় আছেন। 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাজধানীতে ছিনতাইকারীর কবলে আইনজীবী
  • আদালত প্রাঙ্গণে ইনু বললেন, আমি ঠিক আছি, চিন্তা করবেন না
  • চকবাজার থানার মামলায় আসামি শেখ হাসিনাসহ ১৩ জন
  • ইনু বললেন, আমি ঠিক আছি, আপনারা চিন্তা করবেন না
  • গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বিশেষ নিরাপত্তা প্ররক্ষা নির্দেশিকা বাতিল
  • অন্তর্বর্তী পরিষদ পুনর্গঠন প্রশ্নে রুল, দুজন সদস্যের কার্যক্রম পরিচালনা স্থগিত
  • কুষ্টিয়ার আদালতে হাস্যোজ্জ্বল ইনু, আইনজীবীদের বললেন ‘কোনো চিন্তা কইরেন না’
  • মাগুরার সেই শিশুটির জন্য আইনি সহায়তায় বিএনপির আইনজীবী প্যানেল
  • বিচারালয়ের দুর্নীতি তুলে ধরতে সাংবাদিকদের আহ্বান অ্যাটর্নি জেনারেলের
  • বিএনপিপন্থি আইনজীবীর সুদিন