পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের সহকারী পরিচালক পদে মৌখিক পরীক্ষার প্রস্তুতিতে করণীয়
Published: 7th, February 2025 GMT
বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের সহকারী পরিচালক পদে নিয়োগপ্রক্রিয়া দ্রুততম সময়ের মধ্যে শেষ হয়। প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষার পরপরই মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়। তাই আগে থেকে ভাইভার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি। মৌখিক পরীক্ষার জন্য প্রথমেই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুছিয়ে নেওয়া উচিত। ভাইভায় ইংরেজিতেও প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার প্রস্তুতি নিতে হবে। পরীক্ষার সময় নার্ভাস হওয়া বা অপ্রাসঙ্গিক আচরণ, যেমন অহেতুক তর্ক, বারবার প্রশ্ন করা বা আমতা আমতা করা এড়িয়ে চলতে হবে। আত্মবিশ্বাসী এবং পরিষ্কারভাবে নিজের বক্তব্য উপস্থাপন করতে হবে। মৌখিক পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য পাঁচটি প্রধান ক্ষেত্রে জোর দেওয়া প্রয়োজন।
সাম্প্রতিক বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা সম্পর্কে জানতে হবে। পত্রিকা থেকে তথ্য সংগ্রহ এবং তা বিশ্লেষণ করতে শিখতে হবে। বিশেষত জুলাই বিপ্লব, অন্তর্বর্তী সরকার, তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং সাম্প্রতিক যুদ্ধ বা সম্মেলনের প্রেক্ষাপট সম্পর্কে জানতে হবে।
বাংলাদেশের ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধ
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস, বিশেষ করে ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত সময়কাল ভালোভাবে বুঝতে হবে। বর্তমান বাংলাদেশের উন্নয়ন বা চ্যালেঞ্জগুলো কীভাবে ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের সঙ্গে সম্পর্কিত, তা বুঝে উত্তর প্রস্তুত করতে হবে। একই সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধকালীন স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ের ঘটনা সম্পর্কে ধারণা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুনসহকারী জজ নিয়োগে মৌখিক পরীক্ষার শেষ সময়ের প্রস্তুতি২৩ জানুয়ারি ২০২৫একাডেমিক বিষয়ের জ্ঞান
যে বিষয়ে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন, সেটি নিয়ে ভালো জ্ঞান থাকতে হবে। পরীক্ষায় আপনার একাডেমিক জ্ঞান এই পদের জন্য কীভাবে কার্যকর হবে, তা বোঝাতে হবে। তাত্ত্বিক জ্ঞান, প্রাসঙ্গিক বই এবং বিষয়টির ব্যবহারিক প্রয়োগ নিয়ে প্রস্তুতি নেওয়া উচিত। পরীক্ষার্থীর একাডেমিক বিষয়ের গুরুত্বপূর্ণ থিওরি, বাংলাদেশে সেসব থিওরির প্রয়োগ, বিখ্যাত তাত্ত্বিক অথবা বিজ্ঞানী এবং কিছু উল্লেখযোগ্য বইয়ের নাম অবশ্যই ভাইভা বোর্ডে পারতে হবে।
বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড এবং বিদ্যুৎ খাত
বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের কার্যক্রম, লক্ষ্য ও ভূমিকা সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে হবে। ওয়েবসাইট ঘেঁটে প্রতিষ্ঠানটির সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাত, শতভাগ বিদ্যুতায়ন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং নতুন বিদ্যুৎ প্রকল্প সম্পর্কেও বিস্তারিত ধারণা রাখতে হবে।
ব্যক্তিগত পরিচিতি ও নিজ এলাকা
নিজের নামের অর্থ, নামের সঙ্গে সম্পর্কিত বিখ্যাত ব্যক্তি বা ঘটনা সম্পর্কে জানতে হবে। নিজ জেলার ইতিহাস, বিদ্যুৎ খাতের কার্যক্রম এবং মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা রাখা আবশ্যক।
পরীক্ষার সময় সুন্দর করে সাজিয়ে তথ্যবহুল উত্তর দেওয়া এবং সময়ের মধ্যে সব প্রশ্নের উত্তর করার দক্ষতা থাকলে চূড়ান্তভাবে ভালো ফল অর্জন করা সম্ভব।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম খ ক পর ক ষ র র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহীতে নির্ধারিত দামে সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে না, অন্য পণ্যের দামও বাড়তি
রাজশাহীর বাজারে সবজিসহ বেশ কিছু নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। বাজারে সয়াবিন তেলেরও সংকট রয়েছে। এ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ক্রেতারা। যদিও রমজান মাস শুরুর আগেও বাজারে স্বস্তি ছিল। রোববার রাজশাহী নগরের সাহেববাজার কাঁচাবাজার ও বিনোদপুর কাঁচাবাজারের ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ চিত্র পাওয়া গেছে।
ক্রেতারা বলছেন, বাজারে কাঁচা সবজির সংকট রয়েছে। বেগুন, ফুলকপি, আলু, মরিচ, পেঁয়াজের দাম আগের চেয়ে বেড়েছে। এ ছাড়া মুরগির দামও রোজা শুরু হওয়ার পর থেকে ১৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে কাঁচা সবজির সরবরাহ কিছুটা কমেছে, এ কারণে কিছুটা বেড়েছে। তবে গত বছর রমজান মাসের তুলনায় বাজার এবার অনেকটা ক্রেতার জন্য ভালো।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রোজা শুরু হওয়ার পর ৩৫ টাকা কেজির বেগুন ৫০ টাকা, ৩০ টাকা কেজির কাঁচা মরিচ ৫০ টাকা, ১৬ থেকে ২০ টাকা কেজির আলু ২০ থেকে ২৫ টাকা, ২০ টাকার পেঁয়াজ ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৭ থেকে ১০ টাকার প্রতিটি ফুলকপি ২০ টাকা, ১০ টাকার বাঁধাকপি ২০ টাকায়, ১০ টাকা আঁটির লালশাক ও পালংশাক ১৫ টাকায়, ২৫ টাকার লাউ ৫০ টাকায় উঠেছে। প্রকারভেদে ১০ থেকে ১৫ টাকা হালির লেবু বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৬০ টাকায়। বাজারে টমেটো ও শসার দাম কিছুটা কমেছে। এ ছাড়া বাজারে নতুন আসা সবজির মধ্যে পটোল ১২০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ১০০ টাকা, করলা ১০০ টাকা, বরবটি ১৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে রমজানের আগে ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল ১৬০ থেকে ১৭০ টাকার মধ্যে। এখন সেই মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৮৫ থেকে ১৯০ টাকায়। বাজারে ডিমের দামও হালিতে দুই টাকা করে বেড়েছে। দাম বেড়ে লাল ডিম ৪০ ও সাদা ডিম ৩৬ টাকা হালি বিক্রি হচ্ছে। এদিকে বাজার ঘুরে পাঁচ লিটারের সয়াবিন তেলের খোঁজ পাওয়া যায়নি। বাজারে সরকার নির্ধারিত খোলা সয়াবিন ১৫৭ টাকা লিটারে বিক্রির কথা থাকলেও বিক্রি হচ্ছে ১৭৫ টাকায়। এ ছাড়া ১ লিটার ও ২ লিটার সয়াবিন তেলের বোতল পাওয়া যাচ্ছে। সরকার নির্ধারিত বোতলজাত সয়াবিনের দাম ১৭৫ টাকা নির্ধারণ করা হলেও বাজারে তা ১৮৫ থেকে ১৯০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
নগরের বিনোদপুর কাঁচাবাজার থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়–সংলগ্ন এলাকার বেশির ভাগ ক্রেতা শিক্ষক, শিক্ষার্থী। একটি সবজির দোকান থেকে বেগুন কিনতে এসে শিক্ষার্থী রাব্বি হোসেন বলেন, দুইটা বেগুনের দামই পড়ল ১৮ টাকা। কয়েকজন মিলে আজকে ইফতারের আয়োজন করেছেন। আগে ১৮ টাকায় আধা কেজি বেগুন কেনা যেত। রমজানে এসে দাম বেড়ে গেছে।
একই বাজারে ব্রয়লার মুরগি কিনতে এসেও হোঁচট খেতে হচ্ছে ক্রেতাদের। সাবিনা খাতুন নামের এক ক্রেতা বলেন, ব্রয়লার মুরগির দাম রমজানের আগে ১৬০ বা ১৭০ টাকায় ছিল। এখন সেই মুরগি কিনতে হচ্ছে বাড়তি দাম দিয়ে। ওই বাজারের ব্যবসায়ী রায়হান আলী বলেন, বাজারে সবজির সরবরাহ কিছুটা কম। নতুন সবজিও এখনো আসছে না। এ কারণে দাম বেড়েছে। তবে গত রমজানের চেয়ে অনেক কম।
নগরের সাহেববাজার কাঁচাবাজার থেকে ইফতারের আগে বাজার করছিলেন নগরের আলুপট্টি এলাকার বাসিন্দা রমজান আলী। লেবুর দোকানে দাঁড়িয়ে দামদর করছিলেন তিনি। রমজান বলেন, কয়েক দিনের ব্যবধানে বাজারে সবজির দাম বেড়েছে। এ ছাড়া মুরগির দামও চড়া। লেবুর কাছে তো ভেড়াও যায় না। তখন লেবু ব্যবসায়ী আলী হোসেন বলেন, উৎপাদন এলাকা থেকে লেবু বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। এ কারণে দাম বেশি।
সয়াবিনের পাঁচ লিটারের বোতল না পেয়ে কয়েকটা দুই লিটারের বোতল কিনলেন হাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, দোকানগুলোতে লিখেই দেওয়া হয়েছে, অমুক কোম্পানির পাঁচ লিটারের তেল নেই। বাড়িতে একটি অনুষ্ঠান আছে। তাই বেশি সয়াবিন তেল কিনতে হয়েছে। ব্যবসায়ী রতন আলী বলেন, রোজা শুরুর আগে থেকেই বাজারে পাঁচ লিটারের সয়াবিন তেলের সংকট রয়েছে। কোম্পানিগুলোই তেল দিচ্ছে না। বাজারে সংকট রয়েছে। তাঁদেরও বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। এ কারণে দাম একটু বেশি।
এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের রাজশাহী জেলার সহকারী পরিচালক বিপুল বিশ্বাসের মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি ধরেননি। কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) রাজশাহী জেলার সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বলেন, বাজারে সয়াবিন তেলের সংকট তৈরি করা হয়েছে। অন্য পণ্যগুলো মোটামুটিভাবে নাগালের মধ্যে। তবে কয়েক দিন কিছু সবজির দাম বেড়েছে। সরবরাহ কমবেশি হওয়ার কারণে এমনটা হতে পারে। বাজার মনিটরিং জোরদার করে অসাধু ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনলে বাজার স্থিতিশীল থাকবে।