‘একগুঁয়ে’ বাটলারে অসন্তোষ বাফুফের!
Published: 7th, February 2025 GMT
দু’দিন আগেও বিদ্রোহী নারী ফুটবলারদের ওপর ক্ষুব্ধ ছিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। কোচ পিটার বাটলারের অধীনে অনুশীলন না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া মেয়েদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা ভঙ্গসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগের খসড়া চূড়ান্তও করে বাফুফের বিশেষ কমিটি। ব্রিটিশ এ কোচকে রেখে অধিনায়ক সাবিনা খাতুনসহ সাত ফুটবলারকে শাস্তি দেওয়ার চিন্তাও ঢুকে যায় বাফুফে কর্তাদের মাথায়। কিন্তু বুধবার ‘হয় ওরা থাকবে, না হয় আমি’ মন্তব্য করা বাটলারের ওপর অসন্তোষ ফুটবল ফেডারেশনের। বিশেষ করে তদন্ত চলার মধ্যেই তাঁর এমন বিস্ফোরক মন্তব্যকে শৃঙ্খলা ভঙ্গের শামিল হিসেবে দেখছে দেশের ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
দু’পক্ষের অনঢ় অবস্থানে বেকায়দায় পড়া বাফুফে হাঁটছিল সমাধানের পথে। বুধবার ঢাকায় ফেরা সভাপতি তাবিথ আউয়াল গতকাল বিকেল পর্যন্ত মেয়েদের ফুটবলের সংকট নিরসনের চেষ্টা করেন। চলমান ইস্যুর সমাধানে বৃহস্পতিবার কোচ বাটলারের সঙ্গে তাবিথ কথা বলেছেন বলে জানিয়েছে একটি সূত্র। সেখানে ব্রিটিশ কোচকে সব ভুলে এই মেয়েদের সঙ্গে কাজ করার প্রস্তাব দেন। কিন্তু বাটলার সরাসরি জানিয়ে দেন, সাত ফুটবলার থাকলে তিনি কোচিং করাবেন না। বিষয়টি ভালোভাবে নেননি সভাপতি তাবিথ। ‘কোচের ইউরোপিয়ান আর বাংলাদেশের সংস্কৃতি সম্পর্কে বোঝা উচিত বলে মনে করছে বিশেষ কমিটি। তবে সংবাদ মাধ্যমের কাছে তাঁর মন্তব্যটি সম্পূর্ণ অপেশাদার’– সমকালের কাছে বলেন ওই সূত্র।
জানা গেছে, এই মুহূর্তে মেয়েদের বাদ দেওয়ার মতো কঠিন পথে পা বাড়াতে চান না বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিষয়টি নিয়ে হস্তক্ষেপ না করলেও গতকাল নারী ফুটবল দলকে একুশে পদকের জন্য মনোনয়ন করায় দেশের ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রধানের বুঝতে বাকি নেই তাঁকে কোন দিকে যেতে হবে। একদিকে মেয়েদের কাউকে শাস্তি দিলে পুরো ১৮ জনের অবসরে যাওয়ার হুমকি, অন্যদিকে কোচ বাটলারকে অব্যাহতি দিলে বড় অঙ্কের ক্ষতির সঙ্গে ফিফার শাস্তির মুখোমুখিও হতে পারে বাফুফে। মাত্রই ব্রিটিশ কোচের সঙ্গে চুক্তি করা ফুটবল ফেডারেশনকে দিতে হবে পুরো দুই বছরের বেতন। তাই বাটলার-নারী ফুটবলারদের দ্বন্দ্বের বিষয়টি সমাধানে রাজনৈতিক কৌশল অবলম্বন করতে যাচ্ছেন তাবিথ। সে ক্ষেত্রে মেয়েদের পক্ষ নিয়ে বাটলারের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণ দর্শানোর নোটিশও ফেডারেশন থেকে দিতে পারে বলে গুঞ্জন আছে। সেটা না করে তাঁকে এলিট একাডেমির দায়িত্বে ফিরিয়ে দেওয়া হতে পারে।
বদমেজাজি এবং একগুঁয়েমি বাটলার অতীতে যেখানেই কাজ করেছেন, সেখানেই ঝামেলা পাকিয়েছেন। ফুটবলারদের বিরুদ্ধে ম্যাচ পাতানোর মিথ্যা অভিযোগে বরখাস্ত হওয়া, খেলোয়াড়কে কটাক্ষ করে চাকরি হারানো, জাতীয় দল নির্বাচনে পক্ষপাতিত্ব করা, এমনকি বর্ণবাদের মতো সবচেয়ে বাজে কাজ করার অভিযোগ আছে ব্রিটিশ এ কোচের বিরুদ্ধে। বাফুফে হয়তো তাঁর অতীত প্রোফাইল খুব একটা যাচাই-বাছাই না করেই নিয়োগ দিয়েছে। অতীতের বাজে অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা না নেওয়া বাটলারের কারণেই দেশের নারী ফুটবলে এমন অস্থিরতা হচ্ছে বলে মনে করছেন অনেকে।
পিটার বাটলারের সঙ্গে নারী ফুটবলারদের বিরোধের মীমাংসায় কাজ করা বাফুফের বিশেষ কমিটি বৃহস্পতিবার রিপোর্ট জমা দিয়েছে। দু’দিন ১৮ ফুটবলার এবং এক দিন কোচ বাটলারের কথা শুনেছে কমিটি। সাতজন আলাদা রিপোর্ট একসঙ্গে করে পূর্ণাঙ্গ একটি রিপোর্ট সভাপতি তাবিথের কাছে জমা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নারী ফুটবলের অস্থিরতার সময়ে গতকাল ভবনে আসেননি তিনি। এটা নিয়ে ফুটবলাঙ্গনে চলছে সমালোচনা। যদিও তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, পুরো রিপোর্টটি দেখার পরই সুন্দর সমাধানের জন্য বাফুফেতে আসবেন তাবিথ।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন র ফ টবল ত ব থ আওয় ল ফ টবল র ক জ কর
এছাড়াও পড়ুন:
চাঁদা না পেয়ে গুলি ছুড়ে ২ ট্রলার ছিনতাই, থানায় অভিযোগ
ঢাকার সাভারে দাবিকৃত চাঁদার টাকা না দেওয়ায় গুলি ছুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে যাত্রী পারাপারের দুটি ট্রলার ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সাভার পৌর এলাকার কাতলাপুরে বংশী নদীর মিলন ঘাটে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সাভার মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে আজ বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাভার মডেল থানার ওসি জুয়েল মিয়া।
সাভার পৌরসভা থেকে ইজারা নিয়ে স্থানীয় কামরুল ইসলাম এই ঘাটটি পরিচালনা আসছিলেন। ইজারাদার কামরুল ইসলামের ছেলে হেদায়েতুল্লাহ জানান, অন্তর খান, মোর্শেদ খানসহ আরও কয়েকজন আমার বাবার কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। চাঁদা না দেওয়ায় তারা বাবাকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছিলেন। গতকাল বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে অন্তরসহ আরও কয়েকজন ঘাট এলাকায় এসে বাবার কাছে দাবি করা চাঁদার ৫ লাখ টাকা চান। টাকা না দেওয়ায় তারা বাবাকে মারধর করতে থাকেন। এ সময় বাবার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে অন্তর তার হাতে থাকা পিস্তল দিয়ে গুলি করে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন। এরপর অস্ত্রের মুখে সবাইকে জিম্মি করে খেয়া পারাপারের ট্রলার দুটি নিয়ে যান।
হেদায়েতুল্লাহ জানান, ঘটনার পর তার বাবা অন্তরসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে সাভার থানায় অভিযোগ করেছেন।
অন্তর ও তার সহযোগীরা যুবদল ও ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। ঘটনার পর গা ঢাকা দেওয়ায় অভিযুক্ত কারও সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাভার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জুয়েল মিঞা সমকালকে বলেন, বুধবার বিকেলে মিলন ঘাটে ট্রলার ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় এক যুবককে পিস্তল হাতে দেখা গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে গুলির ঘটনার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। পুলিশ কাজ করছে এবং তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।